পর্দার আড়ালের অগ্রদূত
ইতিহাসের গতি ও বিবর্তনের স্রোত দুটোই দ্রুতগামী। ইতিহাসের বিবর্তনের এই দ্রততম স্রোতে চাপা পরেছে পূর্বসূরিদের কত সংস্কৃতি ও সভ্যতা। মহাকালের গন্তব্যে আমরা হারিয়ে ফেলেছি, জানা-অজানা কত মনিষীদের। হারিয়ে ফেলা এসব সভ্যতা বা সংস্কৃতির কথা মনে রাখি না আমরা। রাখেনি হয়তো আমাদের পূর্বপুরুষরাও। হতেও পারে, কালের বহমান ধারাতে পূর্বপুরুষদের অধিকাংশই ডারউনের "সার্ভাইবাল অফ দ্যা ফিটেস্ট" অনুসারে চালিয়েছিলেন বেচে থাকার সংগ্রাম। আর কেউ কেউ হয়তো বা চলেছিলেন অন্য কক্ষপথে। হয়তো কারো মনে নাড়া দিয়েছিল মহাকালের গন্তব্য নিয়ে, কারো জিজ্ঞাসু মন উত্তর খুজেছিল সামাজিক জীবনের অর্থ নির্ধারনে। গুটিকয়েক মানুষগুলো আজ নেই, তবুও তাদের কাছে আমরা ঋণী। তাদের চিন্তার বীজ উর্বর করতে সাহায্য করেছিলো উত্তরসূরীদের প্রকৃতির গূঢ় তত্ত্ব বের করতে। একবিংশ শতাব্দীতে প্রযুক্তির এমন কোলাহলে কেউই হয়তো তাদের স্মরণ করেনা। কিংবা স্মরণ করতে যাওয়ার আগেই পূর্বপুরুষদের খামখেয়ালীতে বিবর্তনের স্রোত তাদের ভাসিয়ে নিয়েছে কালের অতল গহ্বরে। আজও এমন হাজারো মনীষীর অস্তিত্ব পাওয়া যাবে, যাদের কাছে আজকের প্রজন্ম ঋণী। কিন্তু পর্যালোচনার অভাবে ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলছি তাদের অস্তিত্ব। নির্দিষ্টকরে যদি বলি, মহামনীষী আল-রাযীর নাম আমরা আনতেই পারি। আধুনিক রসায়নসহ, চিকিৎসাশাস্ত্রের ভিত্তিতে এনার অবদান অনস্বীকার্য।
আল-রাযী সম্পর্কে জানতে হলে, আমাদের ফিরে যেতে হয় আরবের স্বর্ণালীযুগে। তার আগে ৭৫০ থেকে ৮৫০ খ্রিষ্টাব্দ ছিলো আরবের অনুবাদের যুগ। পারসিক ও গ্রীক সংস্কৃতির জ্ঞান-বিজ্ঞানের যে শাখা আরবরা আত্মস্থ করেছিলো তা নিজ সম্প্রদায়ের কাছে পৌছে দিতে অনুবাদকে মাধ্যম হিসেবে বেছে নেয় আরবরা। এরপর নবম শতাব্দীর শেষার্ধে আবির্ভাব হয় একদল অসাধারন প্রতিভাসম্পন্ন মনস্বীর। এই তীক্ষ্ণ প্রতিভার মনস্বীদের একজন হলো আল-রাজী। যার চিত্র এখনো প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিনের বিরাট সভাগৃহে অলঙ্কৃত। পুরো নাম আবু বক্বর মুহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাযী। জন্ম ৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দ মতান্তরে ৮৫৪ খ্রিষ্টাব্দ। জন্মস্থান পারস্যের রে শহরে। বাগদাদ শহরে তৎকালীন বড় একটি হাসপাতাল পরিচালনা করতেন তিনি। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার মতে, চিকিৎসাশাস্ত্রে একটি রোগ থেকে অন্য আরেকটি রোগকে আলাদা করার যে থিউরীটি হিউমোরাল থিউরী নামে পরিচিত, তার স্রষ্টা আল-রাযী। তার লেখা আল-মানসূরী এবং এ জেনারেল বুক অন থেরাপি বই দুটো স্হান করে নিয়েছিলো পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মেডিকেল কারিকুলাম এ। আরব:দ্যা রুটস অফ ইউরোপিয়ান মেডিসিন বইয়ে তাকে সকল চিকিৎসকের চিকিৎসক বলে অভিহিত করেন লেখক।
সমস্ত মধ্যযুগের তীক্ষ্ণতম মৌলিক চিন্তাবিদ ও শ্রেষ্ঠতম চিকিৎসকদের অন্যতম ছিলেন আল-রাযী। সার্জারিতে এনাকেই ধরা হয় সিটনের আবিস্কারকর্তা। রসায়ন নিয়ে লেখা "গোপনতত্ত্ব" নামক বইটি দ্বাদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে ল্যাটিন ভাষায় অনুবাদ করেন পশ্চিমারা। চতুর্দশ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত রসায়নশাস্ত্রের প্রধান আকর হিসেবে সমাধৃত ছিলো এই বইটি। রোজার বেকন বইটিকে অভিহিত করেন "ডি স্পিরিটিবাস এট করপোরিবাস" নামে। বসন্ত ও হাম রোগের উপর প্রথম বই লেখা হয় আল-রাযীর হাতে। আরবি চিকিৎসা সাহিত্যের অলঙ্কার ধরা হয় এই বইটিকে। আরেকটি বিখ্যাত বই হলো আল-হাবী। এ বইটিও ল্যাটিন ভাষায় অনুবাদ হয় ১২৭৯ খ্রিষ্টাব্দে। ২৩ খন্ডের এই বইটিতে গাইনোকোলজি সহ অন্যান্য রোগ সমূহের ভিত্তি তুলে ধরা হয়।
মহান এ মনীষীর পরলোকগমন হয় ৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে। ব্যক্তি হিসেবে হয়তো খুব একটা আলোচনা হয়না তাকে নিয়ে, কিন্তু তার লেখা আজও মাতিয়ে রেখেছে পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গভেষানাগারগুলোকে।
আল-রাযী সম্পর্কে জানতে হলে, আমাদের ফিরে যেতে হয় আরবের স্বর্ণালীযুগে। তার আগে ৭৫০ থেকে ৮৫০ খ্রিষ্টাব্দ ছিলো আরবের অনুবাদের যুগ। পারসিক ও গ্রীক সংস্কৃতির জ্ঞান-বিজ্ঞানের যে শাখা আরবরা আত্মস্থ করেছিলো তা নিজ সম্প্রদায়ের কাছে পৌছে দিতে অনুবাদকে মাধ্যম হিসেবে বেছে নেয় আরবরা। এরপর নবম শতাব্দীর শেষার্ধে আবির্ভাব হয় একদল অসাধারন প্রতিভাসম্পন্ন মনস্বীর। এই তীক্ষ্ণ প্রতিভার মনস্বীদের একজন হলো আল-রাজী। যার চিত্র এখনো প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিনের বিরাট সভাগৃহে অলঙ্কৃত। পুরো নাম আবু বক্বর মুহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাযী। জন্ম ৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দ মতান্তরে ৮৫৪ খ্রিষ্টাব্দ। জন্মস্থান পারস্যের রে শহরে। বাগদাদ শহরে তৎকালীন বড় একটি হাসপাতাল পরিচালনা করতেন তিনি। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার মতে, চিকিৎসাশাস্ত্রে একটি রোগ থেকে অন্য আরেকটি রোগকে আলাদা করার যে থিউরীটি হিউমোরাল থিউরী নামে পরিচিত, তার স্রষ্টা আল-রাযী। তার লেখা আল-মানসূরী এবং এ জেনারেল বুক অন থেরাপি বই দুটো স্হান করে নিয়েছিলো পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মেডিকেল কারিকুলাম এ। আরব:দ্যা রুটস অফ ইউরোপিয়ান মেডিসিন বইয়ে তাকে সকল চিকিৎসকের চিকিৎসক বলে অভিহিত করেন লেখক।
সমস্ত মধ্যযুগের তীক্ষ্ণতম মৌলিক চিন্তাবিদ ও শ্রেষ্ঠতম চিকিৎসকদের অন্যতম ছিলেন আল-রাযী। সার্জারিতে এনাকেই ধরা হয় সিটনের আবিস্কারকর্তা। রসায়ন নিয়ে লেখা "গোপনতত্ত্ব" নামক বইটি দ্বাদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে ল্যাটিন ভাষায় অনুবাদ করেন পশ্চিমারা। চতুর্দশ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত রসায়নশাস্ত্রের প্রধান আকর হিসেবে সমাধৃত ছিলো এই বইটি। রোজার বেকন বইটিকে অভিহিত করেন "ডি স্পিরিটিবাস এট করপোরিবাস" নামে। বসন্ত ও হাম রোগের উপর প্রথম বই লেখা হয় আল-রাযীর হাতে। আরবি চিকিৎসা সাহিত্যের অলঙ্কার ধরা হয় এই বইটিকে। আরেকটি বিখ্যাত বই হলো আল-হাবী। এ বইটিও ল্যাটিন ভাষায় অনুবাদ হয় ১২৭৯ খ্রিষ্টাব্দে। ২৩ খন্ডের এই বইটিতে গাইনোকোলজি সহ অন্যান্য রোগ সমূহের ভিত্তি তুলে ধরা হয়।
মহান এ মনীষীর পরলোকগমন হয় ৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে। ব্যক্তি হিসেবে হয়তো খুব একটা আলোচনা হয়না তাকে নিয়ে, কিন্তু তার লেখা আজও মাতিয়ে রেখেছে পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গভেষানাগারগুলোকে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
একনিষ্ঠ অনুগত ২২/১২/২০১৭সালাম এই মহান মনিষীকে।।
-
কামরুজ্জামান সাদ ২১/১২/২০১৭তথ্যবহুল