www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বল

বলের কোনো বল নেই। এই বল পদার্থবিদ্যার বল নয়। পদার্থবিজ্ঞানীরা এই কথা শুনলে আমাকে অপদার্থ ছাড়া আর কিছুই বলবেন না। তাহলে কোন বলের কথা আমি বলছি? এক কথায় বলা যেতে পারে- পেশী শক্তি। হ্যাঁ, বাঁচার জন্য মজবুত পেশীর প্রয়োজন আছে বৈকি- পেশী ছাড়া তো আমরা চলাফেরাই করতে পারবো না। কিন্তু সেই পেশী জামা কাপড়ের ভিতরেই ঢাকা থাক, কারোকে তার আকৃতি দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। পেশী শক্তি আছে মানেই যে সুস্থ এমনটা কখনোই নয়। বড় বড় বাহুবলীদের পেটের রোগ থাকে, মাঝে মধ্যে মাথার রোগও দেখা দেয়। এবার কাজের কথায় আসি- যা বলবার জন্য খাতা খুলে বসেছি।

পেশী শক্তির কোনো প্রয়োজন নেই, সব দেশ তা প্রমাণ করে ফেলেছে। একনায়কতন্ত্র কোনো দেশে স্থায়ী জায়গা করে উঠতে পারে নি। মানুষের রায় প্রথম এবং শেষ কথা। সারা বিশ্বের সকল দেশের সকল মানুষই গণতন্ত্রকে আপন করে নিয়েছে। গণতন্ত্রে গায়ের জোর চলে না, যেটা চলে সেটা বুদ্ধির জোর। গণতন্ত্র ক্ষমতাকে ঘৃণা করে। সে ভালোবাসে প্রজা পালন। প্রজার স্বার্থ রাজার স্বার্থের থেকে কোনো অংশে কম নয়। বরং বেশি বলতে পারেন। রাজ রাজাদের ভাগ্যের চাবিকাঠি এখন প্রজাদের হাতে। আগেকার দিনে প্রজারা রাজাকে ঈশ্বর মানত, এখন মানে- তারা নিজেরাও ঈশ্বরের অংশ। মানুষের চোখ খুলে গেছে, তাই চোখ বন্ধ করে সে আর কারোকে বিশ্বাস করে না, এমন কী ভগবানকেও না! সে কেবল যুক্তি দিয়ে সব কিছু গ্রহণ করে।

এখানে আপনি বলতে পারেন যে অন্যায় দমনে পেশী শক্তির বিশেষ প্রয়োজন। আপনার কথা সঠিক এবং বেঠিক। সঠিক কারণটা আপনার জানা আছে, তাই বেঠিক কারণটা আমি ব্যাখ্যা করছি। মানুষ কেন খারাপ কাজ করে? নিরানব্বই শতাংশ অভাবের কারণে। দারিদ্র্য সুস্থ মানুষকে চুরি করতে শেখায়। ওপর তলার শোষণ সুস্থ মানুষকে অস্ত্র তুলতে শেখায়। বঞ্চনা আর প্রতিবাদ করতে না দেওয়া সুস্থ মানুষকে আরো হিংস্র করে তোলে। সুস্থ মানুষ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে
অসুস্থ হয়ে পড়ে মানসিক ভাবে। ভাবুন, যদি অভাব না থাকতো, যদি শোষণ না থাকতো, যদি বঞ্চনা না থাকতো, যদি সকল মানুষকে তাদের সুখ দুঃখ জানাবার সুযোগ দেওয়া হতো, তাহলে কী বিশ্বে পাপ থাকতো? যারা এসি ঘরে থাকে, এসি গাড়িতে চেপে ঘুরে বেড়ায়, মলের জামা কাপড় পরে, রোজ রাতে খাবার ডাস্টবিনে ফেলে, তারা নীচের দিকে ফিরেও তাকায় না। তারা কেবল কর দিয়েই খালাস, কেউ কেউ আবার কর ফাঁকিও দেয়। এদের আমি উদাসীন বলি। আর যাদের হাতে অর্থের লাগাম, তারাই যত অনর্থের মূল কারণ। তাদের চিনতে বেশি ব্যাখ্যা লাগে না। অতি সহজেই তাদের চেনা যায়। তাদের আমি আসল পাপী বলি। তারা কোনো দিন কোনো শাস্তিও পায় না, ধরা পড়লেও প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেয়ে যায় সহজে। আইন ওপর তলার জন্য, নীচ তলার জন্য নয়।

সব শেষে বলি, পাপ কাজ করার পরিস্থিতি যারা তৈরী করে, তাদের আগে সাজা দাও। পরিস্থিতি মানুষকে ভগবান বানায়, পরিস্থিতিই মানুষকে শয়তান তৈরী করে। যেখানে পরিস্থিতি ভাল, সেখানে সব ভাল। আর যেখানে পরিস্থিতি খারাপ, সেখানে দশের চক্রে ভগবানও ভূত!
বিষয়শ্রেণী: অভিজ্ঞতা
ব্লগটি ৩৬৭ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৯/০২/২০২৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast