রেষারেষি
দুটো বাসের মধ্যে রেষারেষি হয় দেখেছি। কে আগে পৌঁছবে স্ট্যান্ডে। যে আগে স্ট্যান্ডে পৌঁছবে, সে আগে রওয়ানা দেবে। দুটো অটোর মধ্যেও দেখেছি রেষারেষি। দেখেছি দুটো বাইকের মধ্যেও। এখন দুটো পরিবারের মধ্যে রেষারেষি।
কেমন রেষারেষি ব্যাখ্যা করা যাক। পাশের বাড়ির লোক নতুন টিভি কিনেছে। ফ্ল্যাট টিভি। পিসতুতো ভাইয়ের বউ নতুন লিপস্টিক কিনেছে। রেভলন ব্রান্ডের। মামা শ্বশুর নতুন গাড়ি কিনেছে। এস্টিম গাড়ি। টাকার রেষারেষি, সঠিক অর্থে টাকা কামানো ও খরচের রেষারেষি, এই ভাবেই জন্ম নেয়। কেউ আবার কামায় কম, কিন্তু দেখায় বেশি। এসব মানুষদের সংখ্যা সমাজে অধিক। কারো চালচুলো কম, ভালো কামিয়েও সে সাদামাটা। যাদের অল্প বিদ্যা, তারা ভয়ঙ্কর। যারা প্রকৃত শিক্ষিত, তারা অমায়িক। আবার খেটে যে বড় লোক হয়, সে শত মূর্খ হলেও টাকার মর্ম বোঝে। বিনা পরিশ্রমে যারা হঠাৎ প্রচুর টাকা পেয়ে যায়, তারা অতি আলোয় অন্ধ। অসৎ পথেও লোকে রোজগার করে চাল দেখায়- তবে বেশি দিনের জন্য নয়।
এবার বলি মানের রেষারেষির কথা। টাকা থাকলে মান থাকে, এ কথা মিথ্যে ও সত্যি দুটোই। শিক্ষিত মানুষ সব জায়গায় পূজিত হন। মূর্খ ব্যবসায়ী সব জায়গায় পাত্তা পায় না। আবার টাকা না থাকলে কেউ তোমার জ্ঞান শুনবে না। পয়সা থাকলে পাগলকেও লোকে দার্শনিক বলে, আবার পয়সা না থাকলে দার্শনিককে পাগলা গারদে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যে কথা বলছিলাম, তাতে ফিরে আসি। মানের লড়াই কেমন? পাশের বাড়ির লোকের হয়তো গাড়ি থাকতে পারে, কিন্তু তাদের ছেলে বা মেয়ে মাধ্যমিকে কম নম্বর পেয়েছে। পাড়ায় যাদের গাড়ি নেই তাদের ছেলে বা মেয়ে লেটার মার্ক পেয়েছে। কারো দু দুটো বাড়ি আছে, আবার কারো পরিবারে আছেন দুজন পিএইচডি, তারা হয়তো ভাড়া থেকে মানুষ। কেউ লেখাপড়া না করলে কী হবে, সিরিয়াল করে নাম কামিয়েছে!
এবার আসি প্রজন্মের লড়াইয়ে। একজন মানুষ জীবনে কিছু করতে পারেনি, কিন্তু তার ছেলে অনেক উঁচুতে উঠেছে। যারা তাকে টিটকিরি মারতো, তাদের ছেলেরা বেশি দূর উঠতে পারেনি। আবার কারো মেয়ের ভালো বিয়ে হয়েছে। তার বন্ধুর মেয়ে হয়তো বিরাট চাকরি করে রেলা দেখায়, কিন্তু তার ডিভোর্স হয়ে গেছে।
আরেকটা ছোট লড়াই হয়। খাবার লড়াই। কী খাই দেখানোর জন্য ফেসবুকে পোস্ট করা চাই। যে পোস্ট করেছে, সে ভাবে যে সে একাই খেতে পায়, অন্য কেউ তার মতো ভালো খেতে পায় না। কিন্তু যে যার টাকায় খায়। কেউ এত এত ভাত খেয়ে ভাবে যে সে দুনিয়ার সব কিছু খেয়ে ফেলেছে। ভাত সর্বদা মেপে খেতে হয়। আবার কম খেলে কেউ মরে না, মরে বেশি খেলে।
বেড়াবার লড়াইও হয়। কেউ কাশ্মীর ঘুরেছে বহুবার। কেউ জীবনে একবার মাত্র দীঘায় গেছে। টাকা থাকলেও অযথা বাজে খরচে কেউ যায় না। এখানে বেড়াবার টাকা নেই বললে ভুল হবে, বেড়াবার মন নেই।
সংস্কৃতির লড়াইও হয়। কেউ লি লেভাইস পরে। কেউ দেশের জিন্স। সে হয়ত পয়সা জমিয়ে বই কেনে বা কোনও ভাল রেঁস্তোরায় খেতে যায়।
সবার সব কিছু থাকে না, তবু প্রত্যেকের কিছু না কিছু থাকে। আমি নিজের সাথে নিজে রেষারেষি করি। নিজের মত নিয়ে নিজে লড়ি। হয়তো আমার অনেক কিছু নেই, তবু আমার জন্য আমি আছি। নিজের ছোট গুণগুলোকে জাগিয়ে তুলতে চাই প্রতিভা রূপে। এতে শান্তি আছে। নিছক বোকারাই ইঁদুর দৌড়ে শামিল হয়। যে চালাক তার কারো সাথে কোনও লেনদেন নেই, নিজের সাথে ছাড়া। অন্যের থেকে বড় হয়ে কোনও লাভ নেই, নিজের জায়গায় সঠিক থাকাই আসল কথা।
কেমন রেষারেষি ব্যাখ্যা করা যাক। পাশের বাড়ির লোক নতুন টিভি কিনেছে। ফ্ল্যাট টিভি। পিসতুতো ভাইয়ের বউ নতুন লিপস্টিক কিনেছে। রেভলন ব্রান্ডের। মামা শ্বশুর নতুন গাড়ি কিনেছে। এস্টিম গাড়ি। টাকার রেষারেষি, সঠিক অর্থে টাকা কামানো ও খরচের রেষারেষি, এই ভাবেই জন্ম নেয়। কেউ আবার কামায় কম, কিন্তু দেখায় বেশি। এসব মানুষদের সংখ্যা সমাজে অধিক। কারো চালচুলো কম, ভালো কামিয়েও সে সাদামাটা। যাদের অল্প বিদ্যা, তারা ভয়ঙ্কর। যারা প্রকৃত শিক্ষিত, তারা অমায়িক। আবার খেটে যে বড় লোক হয়, সে শত মূর্খ হলেও টাকার মর্ম বোঝে। বিনা পরিশ্রমে যারা হঠাৎ প্রচুর টাকা পেয়ে যায়, তারা অতি আলোয় অন্ধ। অসৎ পথেও লোকে রোজগার করে চাল দেখায়- তবে বেশি দিনের জন্য নয়।
এবার বলি মানের রেষারেষির কথা। টাকা থাকলে মান থাকে, এ কথা মিথ্যে ও সত্যি দুটোই। শিক্ষিত মানুষ সব জায়গায় পূজিত হন। মূর্খ ব্যবসায়ী সব জায়গায় পাত্তা পায় না। আবার টাকা না থাকলে কেউ তোমার জ্ঞান শুনবে না। পয়সা থাকলে পাগলকেও লোকে দার্শনিক বলে, আবার পয়সা না থাকলে দার্শনিককে পাগলা গারদে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যে কথা বলছিলাম, তাতে ফিরে আসি। মানের লড়াই কেমন? পাশের বাড়ির লোকের হয়তো গাড়ি থাকতে পারে, কিন্তু তাদের ছেলে বা মেয়ে মাধ্যমিকে কম নম্বর পেয়েছে। পাড়ায় যাদের গাড়ি নেই তাদের ছেলে বা মেয়ে লেটার মার্ক পেয়েছে। কারো দু দুটো বাড়ি আছে, আবার কারো পরিবারে আছেন দুজন পিএইচডি, তারা হয়তো ভাড়া থেকে মানুষ। কেউ লেখাপড়া না করলে কী হবে, সিরিয়াল করে নাম কামিয়েছে!
এবার আসি প্রজন্মের লড়াইয়ে। একজন মানুষ জীবনে কিছু করতে পারেনি, কিন্তু তার ছেলে অনেক উঁচুতে উঠেছে। যারা তাকে টিটকিরি মারতো, তাদের ছেলেরা বেশি দূর উঠতে পারেনি। আবার কারো মেয়ের ভালো বিয়ে হয়েছে। তার বন্ধুর মেয়ে হয়তো বিরাট চাকরি করে রেলা দেখায়, কিন্তু তার ডিভোর্স হয়ে গেছে।
আরেকটা ছোট লড়াই হয়। খাবার লড়াই। কী খাই দেখানোর জন্য ফেসবুকে পোস্ট করা চাই। যে পোস্ট করেছে, সে ভাবে যে সে একাই খেতে পায়, অন্য কেউ তার মতো ভালো খেতে পায় না। কিন্তু যে যার টাকায় খায়। কেউ এত এত ভাত খেয়ে ভাবে যে সে দুনিয়ার সব কিছু খেয়ে ফেলেছে। ভাত সর্বদা মেপে খেতে হয়। আবার কম খেলে কেউ মরে না, মরে বেশি খেলে।
বেড়াবার লড়াইও হয়। কেউ কাশ্মীর ঘুরেছে বহুবার। কেউ জীবনে একবার মাত্র দীঘায় গেছে। টাকা থাকলেও অযথা বাজে খরচে কেউ যায় না। এখানে বেড়াবার টাকা নেই বললে ভুল হবে, বেড়াবার মন নেই।
সংস্কৃতির লড়াইও হয়। কেউ লি লেভাইস পরে। কেউ দেশের জিন্স। সে হয়ত পয়সা জমিয়ে বই কেনে বা কোনও ভাল রেঁস্তোরায় খেতে যায়।
সবার সব কিছু থাকে না, তবু প্রত্যেকের কিছু না কিছু থাকে। আমি নিজের সাথে নিজে রেষারেষি করি। নিজের মত নিয়ে নিজে লড়ি। হয়তো আমার অনেক কিছু নেই, তবু আমার জন্য আমি আছি। নিজের ছোট গুণগুলোকে জাগিয়ে তুলতে চাই প্রতিভা রূপে। এতে শান্তি আছে। নিছক বোকারাই ইঁদুর দৌড়ে শামিল হয়। যে চালাক তার কারো সাথে কোনও লেনদেন নেই, নিজের সাথে ছাড়া। অন্যের থেকে বড় হয়ে কোনও লাভ নেই, নিজের জায়গায় সঠিক থাকাই আসল কথা।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সেলিম রেজা সাগর ১০/০৪/২০২২সত্য কথা বলেছেন।
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ০৪/০৪/২০২২মনুষ্যত্বের অভাব ঘটেছে।
-
মোঃ বুলবুল হোসেন ০৪/০৩/২০২২অসাধারণ
-
আব্দুর রহমান আনসারী ০১/০৩/২০২২সুন্দর
-
শ.ম.ওয়াহিদুজ্জামান ২০/০২/২০২২তবুও চলছে ইঁদুর দৌঁড়।