পুজো পুজো ভাব না পুজো পুজো বাতিক
হিন্দু ধর্মে দেব দেবীর শেষ নেই, তাই শেষ নেই পূজার্চনার | এক এক বিষয় এক একজন ভগবান মহান | সিদ্ধিদাতা হলেন গণেশ, বিদ্যার দেবী হলেন সরস্বতী, অর্থের দেবী হলেন লক্ষ্মী, সৃষ্টি করেন পিতামহ ব্রহ্মা, স্থিতি বজায় রাখেন শ্রী বিষ্ণু, ধ্বংস করে ভারসাম্য সামলান ভোলা মহেশ্বর, মৃত্যুর দেবতা যম........আরো কত কিছু | এক একটা বিষয়ের জন্য এক একজনকে আরাধনা করতে হয় | কেউ কেউ মজা করে বলেন, 'প্রথম জীবনে মা সরস্বতীকে ডাকো, তারপর ডাকো মা লক্ষ্মীকে '| অর্থাৎ প্রথম জীবনে বিদ্যা অর্জন করো, তারপর অর্থ উপার্জন করো | কিন্তু এত দেব দেবীর আমদানি হল কথা থেকে | শাস্ত্র যেখানে বলে, 'এক রাম তার হাজার নাম' | তাহলে যে কোনও একজনকে ডাকলেই তো হয় ! যদি একজন দেবতার পুজো হতো তাহলে পুজো নামক ব্যবসাটাই উঠে যেত | পুরোহিত, মূর্তি প্রস্তুত কারক, ফুলফল বিক্রেতা, ঢাকী, প্যান্ডেল ও আলোকসজ্জা প্রস্তুত কারক- সকলের রোজগার এই পুজো | যেখানে আমরা বেকারত্ব দূর করতে পারছি না সেখানে কারো রোজকার বন্ধ করার অধিকার আমাদের নেই |
পুজো মানে উৎসব আর উৎসবের আরেক নাম মিলন | গোটা পরিবার এক হয় এই পুজো উপলক্ষে | বন্ধু বান্ধবের সাথেও দেখা সাক্ষাৎ হয় এই পুজোর সময়েই | প্রযুক্তির দ্রুততম স্রোতে হারিয়ে যাওয়া এই মানুষগুলোকে একই মালায় গাঁথতে পারে এই পুজোই | তাই উৎসব খুবই গুরুত্বপূর্ণ- বিশেষ করে সমাজকে ধরে রাখতে | সেই কারণে উৎসবের প্রয়োজনীয়তাও অপরিসীম |
পুজো বলতে আমরা ঠিক কি বুঝি? অধিকাংশ মানুষ বোঝেন যে উপোস করে, মন্ত্র পরে, ফুলপাতা দিয়ে বিগ্রহের চরণে অঞ্জলি দিয়ে কিছু চাওয়াটাই পুজো | আমি এই পুজোতে বিশ্বাসী নোই | প্রথম কথা যিনি চিরন্তন তাকে মাটির ভঙ্গুর পুতুলের ভিতর আবদ্ধ রাখা যায় না | যদি কেউ বলেন, 'আমার হাত ঘড়ি আছে, তাই আমি সময়কে বেঁধে রেখেছি', তাহলে আমি বলবো সে অতি মূর্খ | সময় চিরন্তন- তার কোনও আদি অন্ত নেই | সময়কে বেঁধে রাখা যায় না, সে নদীর স্রোতের মতোই চঞ্চল | শক্তিও ঠিক তাই- অজেয় ও সর্বব্যাপী | যা সর্বত্র বিরাজমান, যা শাশ্বত, তার বিরাজ আমার অন্তরেই | তাই নিজের অন্তরকে জানো, তাকে বিকশিত করো | পশু থেকে মানুষ হও, মানুষ থেকে ভগবান হও | হৃদয়ের ফুলটা ভক্তিভরে ঝরে পড়ুক | মন্ত্র না পড়ে মানুষের মঙ্গলার্থে কাজ করো- নর খুশি হলেই নারায়ণ সন্তুষ্ট থাকেন | জীবের মধ্যেই শিবকে দেখো | পুজো মানে শুধু পুষ্পাঞ্জলি বা উৎসব নয়, আত্মশুদ্ধিও বটে | জীবন্ত বিগ্রহই অনন্ত শক্তির বহিঃপ্রকাশ | বুদ্ধিমান মানুষজন বলেন, 'উনি হাত পা দিয়েছেন, করে খাও | কিছু চেও না, প্রয়োজনে হাত বাড়িয়ে দাও' |
পুজো পুজো ভাবনাটার ভিতর ডুবে থাকা ভালো | কিন্তু পুজোটা যেন মানদ করার বাতিক না হয়ে দাঁড়ায় | কারণ সংকীর্ণ লেনদেনের মধ্যে ভণ্ডামি ভাঁড়ামি থাকে অথচ ভক্তির অভাব তাতে | স্বার্থ ত্যাগের মধ্যে দিয়েই চাহিদা মেটে, প্রার্থনা বা আবদার করে নয় | প্রাকৃতিক বা বাইরের শক্তি যখন অন্তর বা ভিতরের শক্তিকে প্রভাবিত করতে পারে না তখনই মানুষ সিদ্ধ হন | যিনি অক্ষরে অক্ষরে সাম্যবাদে বিশ্বাস করেন, সমান চোখে সব দেখেন, তিনিই পরম মানব | তাই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে না থেকে মনের আয়নায় নিজেকে দেখতে হয়- জানতে হয় নিজের অন্তরকে |
পুজো মানে উৎসব আর উৎসবের আরেক নাম মিলন | গোটা পরিবার এক হয় এই পুজো উপলক্ষে | বন্ধু বান্ধবের সাথেও দেখা সাক্ষাৎ হয় এই পুজোর সময়েই | প্রযুক্তির দ্রুততম স্রোতে হারিয়ে যাওয়া এই মানুষগুলোকে একই মালায় গাঁথতে পারে এই পুজোই | তাই উৎসব খুবই গুরুত্বপূর্ণ- বিশেষ করে সমাজকে ধরে রাখতে | সেই কারণে উৎসবের প্রয়োজনীয়তাও অপরিসীম |
পুজো বলতে আমরা ঠিক কি বুঝি? অধিকাংশ মানুষ বোঝেন যে উপোস করে, মন্ত্র পরে, ফুলপাতা দিয়ে বিগ্রহের চরণে অঞ্জলি দিয়ে কিছু চাওয়াটাই পুজো | আমি এই পুজোতে বিশ্বাসী নোই | প্রথম কথা যিনি চিরন্তন তাকে মাটির ভঙ্গুর পুতুলের ভিতর আবদ্ধ রাখা যায় না | যদি কেউ বলেন, 'আমার হাত ঘড়ি আছে, তাই আমি সময়কে বেঁধে রেখেছি', তাহলে আমি বলবো সে অতি মূর্খ | সময় চিরন্তন- তার কোনও আদি অন্ত নেই | সময়কে বেঁধে রাখা যায় না, সে নদীর স্রোতের মতোই চঞ্চল | শক্তিও ঠিক তাই- অজেয় ও সর্বব্যাপী | যা সর্বত্র বিরাজমান, যা শাশ্বত, তার বিরাজ আমার অন্তরেই | তাই নিজের অন্তরকে জানো, তাকে বিকশিত করো | পশু থেকে মানুষ হও, মানুষ থেকে ভগবান হও | হৃদয়ের ফুলটা ভক্তিভরে ঝরে পড়ুক | মন্ত্র না পড়ে মানুষের মঙ্গলার্থে কাজ করো- নর খুশি হলেই নারায়ণ সন্তুষ্ট থাকেন | জীবের মধ্যেই শিবকে দেখো | পুজো মানে শুধু পুষ্পাঞ্জলি বা উৎসব নয়, আত্মশুদ্ধিও বটে | জীবন্ত বিগ্রহই অনন্ত শক্তির বহিঃপ্রকাশ | বুদ্ধিমান মানুষজন বলেন, 'উনি হাত পা দিয়েছেন, করে খাও | কিছু চেও না, প্রয়োজনে হাত বাড়িয়ে দাও' |
পুজো পুজো ভাবনাটার ভিতর ডুবে থাকা ভালো | কিন্তু পুজোটা যেন মানদ করার বাতিক না হয়ে দাঁড়ায় | কারণ সংকীর্ণ লেনদেনের মধ্যে ভণ্ডামি ভাঁড়ামি থাকে অথচ ভক্তির অভাব তাতে | স্বার্থ ত্যাগের মধ্যে দিয়েই চাহিদা মেটে, প্রার্থনা বা আবদার করে নয় | প্রাকৃতিক বা বাইরের শক্তি যখন অন্তর বা ভিতরের শক্তিকে প্রভাবিত করতে পারে না তখনই মানুষ সিদ্ধ হন | যিনি অক্ষরে অক্ষরে সাম্যবাদে বিশ্বাস করেন, সমান চোখে সব দেখেন, তিনিই পরম মানব | তাই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে না থেকে মনের আয়নায় নিজেকে দেখতে হয়- জানতে হয় নিজের অন্তরকে |
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ১২/০৯/২০১৯উৎসব আনন্দের।
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ১১/০৯/২০১৯ধন্যবাদ
-
এন এস এম মঈনুল হাসান সজল ১০/০৯/২০১৯সেটাই- জানতে হয় নিজের অন্তরকে।