শঙ্খচিল
শিল্প সাহিত্যের পত্রিকা 'শঙ্খচিল' জানুয়ারি-২০১৮ সংখ্যাটি পেয়েছিলাম এর সম্পাদক মাফুজ পাঠক এর কাছ থেকে। গল্প, অনুগল্প, সংগীত, পুঁথি, ক্রোড়পত্র, অনুবাদ, আড্ডা, সিনেমা, চিত্রকথা, স্মরণ, সাক্ষাৎকার, পুনর্পাঠ এরকম আরো বিভিন্ন আয়োজনে সাজানো হয়েছে সংখ্যাটি।
স্মৃতিমেঘে সঞ্জীব চৌধুরী সম্পর্কে অনেক তথ্য রয়েছে।
-'একবার কবির বকুলকে ফোন করে বলতেই থাকলো, তুই মিটার চিনোস, কবিতা যে লেখোস!'
সিনেমা অংশে মনপুরা সিনেমার সাথে সামঞ্জস্য করে জীবনানন্দ দাশের 'আট বছর আগে একদিন কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ বর্ণনা সত্যিই অসাধারণ।
-জীবনানন্দ দাশ ও সিলভিয়া প্লাথ জীবনের এক পর্যায়ে এসে তারাও আত্মহত্যা করেছিলেন।
চিত্রকথায়- নাসির আলী মামুন তার ক্যামেরা ধার করে ফটোগ্রাফার হয়ে উঠার কাহিনী বর্ণনা করলেন।
-যখন ছবি তুলি, আমি বেদনা ইনভাইট করি। তার ছবিগুলোতে প্রতিফলিত হয় বেদনা।
ক্যামেরা ধার করে ফটোগ্রাফার হয়ে উঠার গল্প, সেই সময়ে দেশ ও রাজনীতিরও কিছুটা বর্ণনা করেন তার বক্তব্যে।
জলছায়া অংশের লেখায় রয়েছে পুরান ঢাকার গল্প আর কবিতা নিয়ে তাত্ত্বিক আলোচনা।
-আমাদের দিনযাপন তখন কবিতা যাপনের নামান্তর।
-কবিতা আমার মাটির ব্যাংক।
সাক্ষাৎকার অংশে রয়েছে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকার। বঙ্কিম পড়ে তার গদ্য লেখার ইচ্ছা হয়েছিল। সৃজনশীল সাহিত্য সৃষ্টি এক পরিশ্রমসাধ্য সাধনার কাজ।
-মানুষ বাচাল হয়েছে বেশি মোবাইল ফোন আসার পরে। যেখানে কথা বলার দরকার নেই, সেখানে কথা বলে যাচ্ছে। বাচালতা বেড়ে যাচ্ছে।
পুঁথি অংশে রয়েছে 'ছয়ফুলমুল্লুক-বাদিওজ্জামাল' এর রচয়িতা মুন্সী মালে মোহাম্মদ সম্পর্কে সাইমন জাকারিয়ার পরিশ্রমলব্ধ তথ্যবহুল লেখা।
- ওরে, হইবি কারা জিন্দা মরা জলদি চইলা আয়
আমার আশিক বাবার প্রেমাগুনে ওই মরা পুড়ায়।
-মুজিব ইরমের পুঁথির ভাষাব্যবহার বেশ চমৎকার।
গল্পে ডেভিড, লোকটা, ঝুলবারান্দা খুব ভাল লেগেছে। এই রয়েছে আরেকটা ভিন্নরকম গল্প - একটি টুথব্রাশ দিবস।
-মালিক মানেই যেন আবু ইসহাকের জোঁক।
-মূল রাস্তার পাশে দুটো কফিন পাশাপাশি রাখা। কফিনের গায় একটা মোবাইল নাম্বার লিখা। তার নিচে লিখা যোগাযোগ করুন। মরতে গেলেও যোগাযোগ!
আড্ডায় উঠে আসে- একদিকে জীবনধারণের খরচা বাড়ছে, অন্যদিকে সস্তা হচ্ছে শিল্প।
অনুগল্পগুলো সত্যিই চমকপ্রদ। বিশেষ করে অতনু তিয়াসের -মেকাপম্যান।
মুহম্মদ আবু রাজীনের 'বিভূতি তৃষ্ণার ছায়া' অনুগল্পটিও বেশ ভাল লেগেছে।
-যাইবি যহন আগেই যাইতি... কলিজায় বাসা বাইন্দা, হেই বাসায় ডিম পাইড়া রাইখা ক্যান গেলি!
-খামাখা ঝুলাইয়া রাইখা লাভ কী ভাই?
-ঝুলায়া রাখলাম না... রাস্তা খোলা রাখলাম। আবাত যুদি আইতে চায় যেন আইতে পারে...
পদাবলির কিছু কবিতা ভালো লেগেছে।
সংগীত অংশে রয়েছে কবীর সুমনের গান নিয়ে সায়ানের অনবদ্য লেখা।
অনুবাদে রয়েছে নোবেল বিজয়ী এলিস মানরোর সাক্ষাৎকার, আর কাফকার গল্পের অনুবাদ।
জটলা ছায়া জটলা ছায়া, মেঘলা ঘরবাড়ি
বুকের নিচে ঢালু হাওয়া ধরেছে তরবারি। আবিদ আজাদের কবিতা। তার স্মরণে সংকলিত হয়েছে কয়েকটি লেখা।
ভালোবাসতে হলে মানুষকে সমুদ্র হতে হয়।শ্বেতা শতাব্দী এষ। তার লেখা বই, কবিতা নিয়ে রয়েছে বিশদ আলোচনা।
- পৃথিবীর সমস্ত ট্র্যাজিক নাটকে সৌম্য শুধু এক করুণ মানব।
যুদ্ধবিজিত ক্ষত, ভাঙা রথ পড়ে রয় মঞ্চের পাশে-
সাজকক্ষে সে কখনো মুখোশ পড়ে না!
- এক বিকেল স্তব্ধতার কাছে বলা হয়ে যায় অনেক কথা, তোমার অশ্রুত।
পুনর্পাঠে রয়েছে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প লেখার গল্প। - বৈজ্ঞানিকও হতে পারলাম না, পণ্ডিত ব্যক্তি হওয়াও ঘটে উঠল না- জীবনটা কাটিয়ে দেবার ব্যবস্থা করতে হল উপন্যাস লিখে।
- বড় ঈর্ষা হত বই যাঁরা লেখেন তাদের ওপর। হয়তো সেই ঈর্ষার মধ্যেই লুকিয়ে ছিল একদিন লেখক হবার চেষ্টা করার সাধ। তার লেখা প্রথম গল্প 'অতসী মামী' একপ্রকার বাজি ধরেই লেখা বন্ধুদের সাথে। সেই থেকে শুরু।
সংখ্যা ৫। বর্ষ ৬। জানুয়ারি ২০১৮। পৌষ-মাঘ ১৪২৪।
স্মৃতিমেঘে সঞ্জীব চৌধুরী সম্পর্কে অনেক তথ্য রয়েছে।
-'একবার কবির বকুলকে ফোন করে বলতেই থাকলো, তুই মিটার চিনোস, কবিতা যে লেখোস!'
সিনেমা অংশে মনপুরা সিনেমার সাথে সামঞ্জস্য করে জীবনানন্দ দাশের 'আট বছর আগে একদিন কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ বর্ণনা সত্যিই অসাধারণ।
-জীবনানন্দ দাশ ও সিলভিয়া প্লাথ জীবনের এক পর্যায়ে এসে তারাও আত্মহত্যা করেছিলেন।
চিত্রকথায়- নাসির আলী মামুন তার ক্যামেরা ধার করে ফটোগ্রাফার হয়ে উঠার কাহিনী বর্ণনা করলেন।
-যখন ছবি তুলি, আমি বেদনা ইনভাইট করি। তার ছবিগুলোতে প্রতিফলিত হয় বেদনা।
ক্যামেরা ধার করে ফটোগ্রাফার হয়ে উঠার গল্প, সেই সময়ে দেশ ও রাজনীতিরও কিছুটা বর্ণনা করেন তার বক্তব্যে।
জলছায়া অংশের লেখায় রয়েছে পুরান ঢাকার গল্প আর কবিতা নিয়ে তাত্ত্বিক আলোচনা।
-আমাদের দিনযাপন তখন কবিতা যাপনের নামান্তর।
-কবিতা আমার মাটির ব্যাংক।
সাক্ষাৎকার অংশে রয়েছে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকার। বঙ্কিম পড়ে তার গদ্য লেখার ইচ্ছা হয়েছিল। সৃজনশীল সাহিত্য সৃষ্টি এক পরিশ্রমসাধ্য সাধনার কাজ।
-মানুষ বাচাল হয়েছে বেশি মোবাইল ফোন আসার পরে। যেখানে কথা বলার দরকার নেই, সেখানে কথা বলে যাচ্ছে। বাচালতা বেড়ে যাচ্ছে।
পুঁথি অংশে রয়েছে 'ছয়ফুলমুল্লুক-বাদিওজ্জামাল' এর রচয়িতা মুন্সী মালে মোহাম্মদ সম্পর্কে সাইমন জাকারিয়ার পরিশ্রমলব্ধ তথ্যবহুল লেখা।
- ওরে, হইবি কারা জিন্দা মরা জলদি চইলা আয়
আমার আশিক বাবার প্রেমাগুনে ওই মরা পুড়ায়।
-মুজিব ইরমের পুঁথির ভাষাব্যবহার বেশ চমৎকার।
গল্পে ডেভিড, লোকটা, ঝুলবারান্দা খুব ভাল লেগেছে। এই রয়েছে আরেকটা ভিন্নরকম গল্প - একটি টুথব্রাশ দিবস।
-মালিক মানেই যেন আবু ইসহাকের জোঁক।
-মূল রাস্তার পাশে দুটো কফিন পাশাপাশি রাখা। কফিনের গায় একটা মোবাইল নাম্বার লিখা। তার নিচে লিখা যোগাযোগ করুন। মরতে গেলেও যোগাযোগ!
আড্ডায় উঠে আসে- একদিকে জীবনধারণের খরচা বাড়ছে, অন্যদিকে সস্তা হচ্ছে শিল্প।
অনুগল্পগুলো সত্যিই চমকপ্রদ। বিশেষ করে অতনু তিয়াসের -মেকাপম্যান।
মুহম্মদ আবু রাজীনের 'বিভূতি তৃষ্ণার ছায়া' অনুগল্পটিও বেশ ভাল লেগেছে।
-যাইবি যহন আগেই যাইতি... কলিজায় বাসা বাইন্দা, হেই বাসায় ডিম পাইড়া রাইখা ক্যান গেলি!
-খামাখা ঝুলাইয়া রাইখা লাভ কী ভাই?
-ঝুলায়া রাখলাম না... রাস্তা খোলা রাখলাম। আবাত যুদি আইতে চায় যেন আইতে পারে...
পদাবলির কিছু কবিতা ভালো লেগেছে।
সংগীত অংশে রয়েছে কবীর সুমনের গান নিয়ে সায়ানের অনবদ্য লেখা।
অনুবাদে রয়েছে নোবেল বিজয়ী এলিস মানরোর সাক্ষাৎকার, আর কাফকার গল্পের অনুবাদ।
জটলা ছায়া জটলা ছায়া, মেঘলা ঘরবাড়ি
বুকের নিচে ঢালু হাওয়া ধরেছে তরবারি। আবিদ আজাদের কবিতা। তার স্মরণে সংকলিত হয়েছে কয়েকটি লেখা।
ভালোবাসতে হলে মানুষকে সমুদ্র হতে হয়।শ্বেতা শতাব্দী এষ। তার লেখা বই, কবিতা নিয়ে রয়েছে বিশদ আলোচনা।
- পৃথিবীর সমস্ত ট্র্যাজিক নাটকে সৌম্য শুধু এক করুণ মানব।
যুদ্ধবিজিত ক্ষত, ভাঙা রথ পড়ে রয় মঞ্চের পাশে-
সাজকক্ষে সে কখনো মুখোশ পড়ে না!
- এক বিকেল স্তব্ধতার কাছে বলা হয়ে যায় অনেক কথা, তোমার অশ্রুত।
পুনর্পাঠে রয়েছে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প লেখার গল্প। - বৈজ্ঞানিকও হতে পারলাম না, পণ্ডিত ব্যক্তি হওয়াও ঘটে উঠল না- জীবনটা কাটিয়ে দেবার ব্যবস্থা করতে হল উপন্যাস লিখে।
- বড় ঈর্ষা হত বই যাঁরা লেখেন তাদের ওপর। হয়তো সেই ঈর্ষার মধ্যেই লুকিয়ে ছিল একদিন লেখক হবার চেষ্টা করার সাধ। তার লেখা প্রথম গল্প 'অতসী মামী' একপ্রকার বাজি ধরেই লেখা বন্ধুদের সাথে। সেই থেকে শুরু।
সংখ্যা ৫। বর্ষ ৬। জানুয়ারি ২০১৮। পৌষ-মাঘ ১৪২৪।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোঃ মেহেদী হাসান মান্না ২৮/০৫/২০১৮খুব পড়তে ইচ্ছে করছে। কিভাবে পাবো?