যে কারণে আমরা সবাই দেশপ্রেমিক
কিছুদিন আগে একটা সংগঠনের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম কর্তব্যের খাতিরে। সংগঠনটির নাম ছিল 'মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম ...... '। কৌতুহলবশত; সংগঠনটির একজন সদস্যকে জিজ্ঞেস করলাম,
ভাই, 'মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম ...... ' মানে কি? আর এই সংগঠনের উদ্দেশ্য কি?
জবাবে লোকটি বললো, এর মানে হলো আমরা এই প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা।
- বিষয়টি ঠিক বুঝলাম না। এখনো কি দেশে মুক্তিযুদ্ধ চলছে নাকি? বললাম আমি।
উনি আমাকে বললেন, আরে না ... এখন যদি মুক্তিযুদ্ধ হতো তাহলে আমরাও মুক্তিযুদ্ধ করতাম। তাই আমরা এই প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা।
লোকটির কথায় যুক্তি আছে বলতে হবে। তাইতো ভাবি এতো বিদেশপ্রীতি থাকা সত্বেও আমরা খাটি দেশপ্রেমিক কিভাবে?
আপনাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, আপনার পোশাকটা কোন দেশী? নিশ্চয়ই বুক ফুলিয়ে গর্ব করে মধ্যপ্রাচ্যের কোন দেশের নাম বলবেন। অথচ;আমার দেশের পোশাক জনপ্রিয়তার দিক থেকে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
একইভাবে পায়ের নখ থেকে শুরু করে মাথার চুল পর্যন্ত আমরা যত প্রসাধনী ব্যবহার করি তার ৯৯%ই বিদেশী। শুধু প্রসাধনীই নয় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, ইলেক্ট্রনিকস্ সামগ্রী সহ সর্বত্রই বিদেশী পন্যের জয়জয়কার। আর বিজয় দিবস,স্বাধীনতা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যখন আসে তখন লাল সবুজ পতাকা অথবা লাল সবুজ পোশাক পরে আমরা খাঁটি দেশপ্রেমিক সাজি। হায় দেশপ্রেম! যদি জানতে চাওয়া হয় আপনার প্রিয় টিভি চ্যানেল এর নাম। নিশ্চয়ই উত্তর আসবে স্টার জলসা, স্টার প্লাস, জি বাংলা অথবা ভারতীয় অন্য যে কোন টিভি চ্যানেল।
- এতো দেশপ্রেমিক হলে ভারতীয় চ্যানেল প্রিয় কেন?
- বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোতে যদি ভাল অনুষ্ঠান দেখাতো তাহলে আমিও দেখতাম।
চমৎকার উত্তর! তবে একটা দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা সবাই দেশপ্রেমিক ...
প্রিয় পাঠক, আলোচনার শুরুতেই একটি সংগঠনের একজন কর্মীর কথা বলেছিলাম। যিনি বলেছিলেন,'এখন যদি মুক্তিযুদ্ধ হতো তাহলে আমিও মুক্তিযুদ্ধ করতাম'। এরকম যুক্তিতে যদি উনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবী করতে পারেন,তাহলে সর্বদা বিদেশী পণ্য ব্যবহার করে একই যুক্তিতে আপনি-আমি কেন দেশপ্রেমিক হতে পারবনা...?
ভাই, 'মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম ...... ' মানে কি? আর এই সংগঠনের উদ্দেশ্য কি?
জবাবে লোকটি বললো, এর মানে হলো আমরা এই প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা।
- বিষয়টি ঠিক বুঝলাম না। এখনো কি দেশে মুক্তিযুদ্ধ চলছে নাকি? বললাম আমি।
উনি আমাকে বললেন, আরে না ... এখন যদি মুক্তিযুদ্ধ হতো তাহলে আমরাও মুক্তিযুদ্ধ করতাম। তাই আমরা এই প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা।
লোকটির কথায় যুক্তি আছে বলতে হবে। তাইতো ভাবি এতো বিদেশপ্রীতি থাকা সত্বেও আমরা খাটি দেশপ্রেমিক কিভাবে?
আপনাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, আপনার পোশাকটা কোন দেশী? নিশ্চয়ই বুক ফুলিয়ে গর্ব করে মধ্যপ্রাচ্যের কোন দেশের নাম বলবেন। অথচ;আমার দেশের পোশাক জনপ্রিয়তার দিক থেকে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
একইভাবে পায়ের নখ থেকে শুরু করে মাথার চুল পর্যন্ত আমরা যত প্রসাধনী ব্যবহার করি তার ৯৯%ই বিদেশী। শুধু প্রসাধনীই নয় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, ইলেক্ট্রনিকস্ সামগ্রী সহ সর্বত্রই বিদেশী পন্যের জয়জয়কার। আর বিজয় দিবস,স্বাধীনতা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যখন আসে তখন লাল সবুজ পতাকা অথবা লাল সবুজ পোশাক পরে আমরা খাঁটি দেশপ্রেমিক সাজি। হায় দেশপ্রেম! যদি জানতে চাওয়া হয় আপনার প্রিয় টিভি চ্যানেল এর নাম। নিশ্চয়ই উত্তর আসবে স্টার জলসা, স্টার প্লাস, জি বাংলা অথবা ভারতীয় অন্য যে কোন টিভি চ্যানেল।
- এতো দেশপ্রেমিক হলে ভারতীয় চ্যানেল প্রিয় কেন?
- বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোতে যদি ভাল অনুষ্ঠান দেখাতো তাহলে আমিও দেখতাম।
চমৎকার উত্তর! তবে একটা দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা সবাই দেশপ্রেমিক ...
প্রিয় পাঠক, আলোচনার শুরুতেই একটি সংগঠনের একজন কর্মীর কথা বলেছিলাম। যিনি বলেছিলেন,'এখন যদি মুক্তিযুদ্ধ হতো তাহলে আমিও মুক্তিযুদ্ধ করতাম'। এরকম যুক্তিতে যদি উনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবী করতে পারেন,তাহলে সর্বদা বিদেশী পণ্য ব্যবহার করে একই যুক্তিতে আপনি-আমি কেন দেশপ্রেমিক হতে পারবনা...?
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোহাম্মদ রফিক ১৫/০১/২০১৫৭১ এ যে মুক্তির লড়াই শুরু হয়েছিল তা এখনো শেষ হয়নি। এখনো মুক্তিযুদ্ধ চলছে। কেউ বুঝি কেউ বুঝি না। ৭১ এ আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি মাত্র। কিন্তু অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য লড়াই কি শেষ হয়েছে? সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কি লড়াই চলছে না? (যদিও ইদানিং সাংস্কৃতিক লড়াইতে হেরে গিয়ে আমরা পার্শবর্তী দেশের উলঙ্গ সংস্কৃতি আমদানী করা শুরু করেছি) আজো শ্রমিকের ন্যায্য মজুরির জন্য লড়াই করতে হয়, দু’মুঠো ভাত আর মোটা একটু কাপড়ের জন্য লড়াই করতে হয়, পানির ন্যায্য হিস্যার জন্য লড়াই করতে হয়, সারের দাবীতে-বিদ্যুতের দাবীতে লড়াই করতে হয়, বেঁচে থাকার অধিকারের জন্য লড়াই করতে হয়, কথা বলার-লেখার-মতামত প্রকাশের অধিকারের জন্য লড়াই করতে হয়। এখনো রাজপথে শ্লোগান শোনা যায়- “লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই”। আমরা নিজেদেরকে এ প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা দাবী করি কিন্তু অধিকারের লড়াই আমরা চোখে দেখি না। সীমান্তে হত্যার বিরুদ্ধে আমরা মুক্তিযোদ্ধা সাজতে পারি না, ফাঁরাক্কা আর তিস্তা বাঁধের বিরুদ্ধে আমরা মুক্তিযোদ্ধা সাজতে পারি না। আমরা দেশপ্রেমিক আর মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যাই শুধুমাত্র দিবস পালনের দিন কিছুক্ষনের জন্য।
-
এমএসবি নাজনীন লাকী ২৯/১২/২০১৪সময়োপযোগী লেখার জন্য ধন্যবাদ!!
-
সাইফুল্লাহ আল-জাহিদ ২১/১২/২০১৪অয়াও
-
সাইদুর রহমান ১৯/১২/২০১৪দারুণ সত্য।
এই তো দেশ প্রেম আজকাল।
শুভেচ্ছা নিবেন। -
স্বপন শর্মা ১৯/১২/২০১৪হায়রে দেশ প্রেম...!!
-
অনিরুদ্ধ বুলবুল ১৭/১২/২০১৪বিদেশী পণ্য 'ব্যবহার' করে দেশ প্রেমিক হবো না কি বর্জন করে?
-
ইঞ্জিনিয়ার সজীব ইমাম ১৭/১২/২০১৪আমার নিজেকে কেনো যেনো রাজাকার রাজাকার মনে হয়।
-
একনিষ্ঠ অনুগত ১৭/১২/২০১৪খুবই সত্য কথা। আমরা কেবল দিবস পালন করার জন্যই দিবস পালন করি... কিন্তু দিবসের তাৎপর্য কতটা অনুধাবন করতে চেষ্টা করি।