চোরকাঁটা - ৫ম পর্ব
( আগের সংখ্যার পর )
আমরা চা-সিগারেট খেয়ে চেম্বারে এসে বসে আছি তা প্রায় মিনিট দশেক হয়ে গেল। ঘড়িতে প্রায় ০৭ টা ২০ বাজে। আমি অর্কর দিকে, তাকিয়ে বললাম, কিরে কি ব্যাপার বলত, ওনারা কি আসবেন না নাকি? নাকি আবার এসে ঘুরে চলে গেলেন না তো ?
অর্ক গম্ভীর ভাবে বলল – বাজে বকিস না তো, ওনারা আসলে ওয়েট করতেন, আমরা তো আর চেম্বার বন্ধ করে যাইনি। আমার মন বলছে, ওনারা আসছেন, কারণ সিঁড়িতে একের বেশি লোকের পায়ের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। তুই চুপ করে শান্ত হয়ে বস। সত্যি সত্যি, কিছুক্ষনের মধ্যেই ওনারা এসে পরলেন। প্রথমেই ঢুকলেন মুকুলিকার মা, তমালিকা দেবী। ওনার পিছু পিছু ভেতরে এসে দাঁড়ালেন এক ব্যাক্তি। ভদ্রমহিলা নমস্কার করে অর্কর দিকে তাকিয়ে বললেন, মৈনাক বাবু ?...আমার নাম তমালিকা সিনহা, আমার সাথেই আপনার ফোনে কথা হয়েছিলো।
অর্ক প্রতি নমস্কার করে বললেন, আমি অর্ক, আর ও হচ্ছে মৈনাক, আপনার ওর সাথেই কথা হয়েছিলো, বসুন আপনারা। তারপর ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে বলল – অবিনাশ বাবু, আপনি আবার দাঁড়িয়ে থাকলেন কেন? বসে পড়ুন।
ভদ্রলোক একটু আশ্চর্য হয়ে ইতস্তত বোধ করে বসলেন সামনের চেয়ারে ও তারপর অর্ক কে জিজ্ঞাসা করলেন আপনি কি করে জানলেন আমার নাম অবিনাশ ?
অর্ক হেসে বলল- না আসলে আপনার নাম তো খবরের কাগজে ছাপা হয়েছিল, তমালিকা দেবীর সাথে, আর বাকিটা অনুমান মাত্র। অবিনাশ বাবু ঘাড় নেড়ে বললেন – ও আচ্ছা। আমি আর সময় নষ্ট না করে সোজা কথাতে যেতে চাই অর্ক বাবু। আপনারা আমার ফুলের মত মেয়ের খুনি কে খুঁজে বার করে দিন, আর আমি কিছু চাই না। দেখুন, আমরা খুব সরল সোজা লোক, দিন আনি দিন খাই, আনেক কষ্ট করে ট্যাক্সি চালিয়ে সংসার চালাই। মেয়ে আমাদের চোখের মণি ছিল। একটাই মেয়ে আমাদের। খেয়ে না খেয়ে মেয়েকে স্কুলে দিয়েছিলাম সুদিনের আশায়। মেয়ে আমার বড্ড ভাল মেয়ে ছিল, হ্যাঁ একটু আদুরে ছিল ঠিকই, কিন্তু বাবা-মায়ের কষ্ট বুঝত। আমাদের যে এরকম ক্ষতি করল, তাকে উপযুক্ত শাস্তি দিতে চাই আমরা, আপনারা দয়া করে আমার মেয়ের......... বলতে বলতে অবিনাশ বাবু আর নিজেকে সামলাতে পারলেন না, চোখ দিয়ে জলের অবিরত ধারা নেমে এলো, তিনি দুহাত দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে রাখলেন ।
অর্ক, সাথে সাথে উঠে পরল চেয়ার থেকে, অবিনাশ বাবুর কাছে গিয়ে ওনার কাঁধে হাত রেখে স্বান্তনা দিতে দিতে পরম বন্ধুর মত বলে উঠল – অবিনাশ বাবু, আপনি আর কাঁদবেন না প্লীস। আপনার পরিবারের যে এই ক্ষতি করেছে, ভগবান নিশ্চয়ই তাকে ক্ষমা করবেন না। আপনারা আমাদের কাছে এসেছেন, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব খুনি কে খুঁজে বার করতে। এইবার একটু চুপ করে বসুন, আমাদের কে বলুন কি হয়েছিলো সেদিন, নাহলে আমরা তো আমাদের কাজটা গুছিয়ে করে উঠতে পারব না।
তমালিকা দেবী এতক্ষন চুপ করে বসেছিলেন স্বামীর পাশে। এইবারে তিনি নিঃশ্বব্দতা ভেঙ্গে স্বামীর উদ্দেশ্যে বলে উঠলেন – ওগো তুমি চুপ কর এখন, কি যে করি এই লোকটাকে নিয়ে, এইবারে আমাদের দিকে ফিরে বলে উঠলেন, জানেন, যেদিন থেকে ঘটনা ঘটেছে, সেদিন থেকে উনি নাওয়া খাওয়া ভুলে শুধু ওকে পাগলের মত খুঁজে গেছে, কত লোকে কত কথা বলেছে, বলেছে যে আমার মেয়ে নাকি কোন ছেলের সাথে পালিয়ে গেছে, আপনারা বলুন, কোন মা বাবার মাথা ঠিক থাকে, এইসব শুনে, আমার ওই একরত্তি মেয়ে কি করে কোনও ছেলের সাথে পালাতে পারে। এও কি সম্ভব কখনো ? আমার মেয়ের মাত্র এগারো বছর বয়স, পড়াশুনাতেও খুব ভালো ছিল জানেন... প্রতি বছর ক্লাসে ফার্স্ট হতো, পয়সার অভাবে একটু বেশী বয়সে স্কুলে ভর্তি করেছিলাম, কিন্তু কোনোদিন ও স্কুল কামাই করত না। ক্লাস ফাইভে পড়ছিল, এইবছর সিক্সে ভর্তি হতো। কিন্তু আমার পোড়া কপাল, কি করে যে এইসব হয়ে গেল আমি জানি না। আমরা এবারে কি নিয়ে বাঁচবো? মেয়ে সেদিন বিকেলে হঠাৎ আবদার করল যে ও একটু ফুচকা খেয়ে আসবে। আমি মেয়েকে ২০ টাকার একটা নোট দিয়ে ওকে বললাম, যে ঠিক আছে আমার জন্যও ৫ টাকার চুরমুর নিয়ে আসিস, সন্ধ্যা ৬ টা নাগাদ মেয়ে আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল, কিন্তু আর ফিরল না, ভদ্রমহিলা কথা শেষ করে আঁচলের খুঁট দিয়ে চোখের কোণা মুছে আবার অবিনাশ বাবুর উদ্দেশ্যে বললেন – বলি এবারে একটু চুপ কর দয়া করে, ওনাদের যা জানার তা জিজ্ঞাসা করতে দাও।
অবিনাশ বাবু এতক্ষন ধরে কেঁদে চলেছিলেন, এইবারে একটু শান্ত হয়ে বসে বললেন, বলুন আপনারা কি জানতে চান ? অর্ক নিজের জায়গায় ফিরে এসে বসে পরল, তারপর জলের গ্লাসটা অবিনাশ বাবুর দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল – নিন এটা খেয়ে নিন আগে, তারপর আমার দিকে ফিরে বলল – মৈনাক একটু চা-পকোড়ার ব্যাবস্থা করে আয়, তারপর সব শোনা যাবে।
আমি পাশের তেলেভাজার দোকানে অর্ডারটা দিয়ে ফেরত এসে বললাম, হ্যাঁ ব্যাবস্থা হয়ে গেছে, নে এবারে শুরু করা যাক।
অর্ক প্রথমে, অবিনাশ বাবুর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করল, আচ্ছা অবিনাশ বাবু, আপনারা শুনলাম এই পাড়াতে এসেছেন মাত্র সাতদিন হল... এর আগে আপনারা কোথায় ছিলেন?
অবিনাশ বাবু বললেন – আমরা এর আগে, নেতাজীনগরে থাকতাম, ওখানে বাড়িওয়ালা ঘর ছাড়ার কথা বলাতে, এখানে অনেক খুঁজে খুঁজে এই বাসাটা পেলাম।
আমি অবাক হয়ে বললাম, নেতাজীনগর মানে তো সেই টালিগঞ্জ? অবিনাশ বাবু ঘাড় নেড়ে তার সায় দিলেন। আমি আবার জিজ্ঞাসা করলাম - তা হঠাৎ সেই নেতাজীনগর ছেড়ে এত দূরে আপনাদের ভাড়া আসার কারণ জানতে পারি কি? অবিনাশ বাবু উত্তর দেওয়ার আগেই অর্ক বলে উঠল – দেখুন, অবিনাশ বাবু এবং তমালিকা দেবী, আমরা কিন্তু প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক ও সত্যি উত্তর জানতে চাই, তাহলেই শুধু মাত্র আমরা আপনাদের কোনও সাহায্য করতে পারব। আমাদের কাছে কিছু লুকোবেন না, না হলে আমাদের কাজ করতে অসুবিধা হবে, আর তাতে আপনাদেরও কোনও লাভ হবে না। আশা করি বুঝতে পারছেন কি বলতে চাইছি। নিঃসঙ্কোচে আমাদের কাছে সব খুলে বলতে পারেন, কোনও ভয় নেই, যদি কিছু গোপনীয় থাকে, তবে তা গোপনীয়ই থাকবে, কেউ তা জানতে পারবে না, যদি না তদন্তের খাতিরে তা সামনে আনতে হয়, তবে তাও আপনাদের অনুমতি ভিন্ন নয়।
আপনাদের কাছ থেকে এইতুকু সহযোগিতা আমরা আশা করতেই পারি কি বলেন ?
দুজনেই সম্মতিসূচক ঘাড় নেড়ে অর্কর কথায় সায় দিলেন। আমি বললাম – নিন এবারে সব গুছিয়ে বলুন তো। ততক্ষনে চা-পকোড়া এসে গেছিল। অর্ক হাতের ইশারায় ওনাদের নিতে বলে, নিজে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে অবিনাশ বাবুর দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে রইল উত্তরের অপেক্ষায়।
( চলবে )
আমরা চা-সিগারেট খেয়ে চেম্বারে এসে বসে আছি তা প্রায় মিনিট দশেক হয়ে গেল। ঘড়িতে প্রায় ০৭ টা ২০ বাজে। আমি অর্কর দিকে, তাকিয়ে বললাম, কিরে কি ব্যাপার বলত, ওনারা কি আসবেন না নাকি? নাকি আবার এসে ঘুরে চলে গেলেন না তো ?
অর্ক গম্ভীর ভাবে বলল – বাজে বকিস না তো, ওনারা আসলে ওয়েট করতেন, আমরা তো আর চেম্বার বন্ধ করে যাইনি। আমার মন বলছে, ওনারা আসছেন, কারণ সিঁড়িতে একের বেশি লোকের পায়ের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। তুই চুপ করে শান্ত হয়ে বস। সত্যি সত্যি, কিছুক্ষনের মধ্যেই ওনারা এসে পরলেন। প্রথমেই ঢুকলেন মুকুলিকার মা, তমালিকা দেবী। ওনার পিছু পিছু ভেতরে এসে দাঁড়ালেন এক ব্যাক্তি। ভদ্রমহিলা নমস্কার করে অর্কর দিকে তাকিয়ে বললেন, মৈনাক বাবু ?...আমার নাম তমালিকা সিনহা, আমার সাথেই আপনার ফোনে কথা হয়েছিলো।
অর্ক প্রতি নমস্কার করে বললেন, আমি অর্ক, আর ও হচ্ছে মৈনাক, আপনার ওর সাথেই কথা হয়েছিলো, বসুন আপনারা। তারপর ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে বলল – অবিনাশ বাবু, আপনি আবার দাঁড়িয়ে থাকলেন কেন? বসে পড়ুন।
ভদ্রলোক একটু আশ্চর্য হয়ে ইতস্তত বোধ করে বসলেন সামনের চেয়ারে ও তারপর অর্ক কে জিজ্ঞাসা করলেন আপনি কি করে জানলেন আমার নাম অবিনাশ ?
অর্ক হেসে বলল- না আসলে আপনার নাম তো খবরের কাগজে ছাপা হয়েছিল, তমালিকা দেবীর সাথে, আর বাকিটা অনুমান মাত্র। অবিনাশ বাবু ঘাড় নেড়ে বললেন – ও আচ্ছা। আমি আর সময় নষ্ট না করে সোজা কথাতে যেতে চাই অর্ক বাবু। আপনারা আমার ফুলের মত মেয়ের খুনি কে খুঁজে বার করে দিন, আর আমি কিছু চাই না। দেখুন, আমরা খুব সরল সোজা লোক, দিন আনি দিন খাই, আনেক কষ্ট করে ট্যাক্সি চালিয়ে সংসার চালাই। মেয়ে আমাদের চোখের মণি ছিল। একটাই মেয়ে আমাদের। খেয়ে না খেয়ে মেয়েকে স্কুলে দিয়েছিলাম সুদিনের আশায়। মেয়ে আমার বড্ড ভাল মেয়ে ছিল, হ্যাঁ একটু আদুরে ছিল ঠিকই, কিন্তু বাবা-মায়ের কষ্ট বুঝত। আমাদের যে এরকম ক্ষতি করল, তাকে উপযুক্ত শাস্তি দিতে চাই আমরা, আপনারা দয়া করে আমার মেয়ের......... বলতে বলতে অবিনাশ বাবু আর নিজেকে সামলাতে পারলেন না, চোখ দিয়ে জলের অবিরত ধারা নেমে এলো, তিনি দুহাত দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে রাখলেন ।
অর্ক, সাথে সাথে উঠে পরল চেয়ার থেকে, অবিনাশ বাবুর কাছে গিয়ে ওনার কাঁধে হাত রেখে স্বান্তনা দিতে দিতে পরম বন্ধুর মত বলে উঠল – অবিনাশ বাবু, আপনি আর কাঁদবেন না প্লীস। আপনার পরিবারের যে এই ক্ষতি করেছে, ভগবান নিশ্চয়ই তাকে ক্ষমা করবেন না। আপনারা আমাদের কাছে এসেছেন, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব খুনি কে খুঁজে বার করতে। এইবার একটু চুপ করে বসুন, আমাদের কে বলুন কি হয়েছিলো সেদিন, নাহলে আমরা তো আমাদের কাজটা গুছিয়ে করে উঠতে পারব না।
তমালিকা দেবী এতক্ষন চুপ করে বসেছিলেন স্বামীর পাশে। এইবারে তিনি নিঃশ্বব্দতা ভেঙ্গে স্বামীর উদ্দেশ্যে বলে উঠলেন – ওগো তুমি চুপ কর এখন, কি যে করি এই লোকটাকে নিয়ে, এইবারে আমাদের দিকে ফিরে বলে উঠলেন, জানেন, যেদিন থেকে ঘটনা ঘটেছে, সেদিন থেকে উনি নাওয়া খাওয়া ভুলে শুধু ওকে পাগলের মত খুঁজে গেছে, কত লোকে কত কথা বলেছে, বলেছে যে আমার মেয়ে নাকি কোন ছেলের সাথে পালিয়ে গেছে, আপনারা বলুন, কোন মা বাবার মাথা ঠিক থাকে, এইসব শুনে, আমার ওই একরত্তি মেয়ে কি করে কোনও ছেলের সাথে পালাতে পারে। এও কি সম্ভব কখনো ? আমার মেয়ের মাত্র এগারো বছর বয়স, পড়াশুনাতেও খুব ভালো ছিল জানেন... প্রতি বছর ক্লাসে ফার্স্ট হতো, পয়সার অভাবে একটু বেশী বয়সে স্কুলে ভর্তি করেছিলাম, কিন্তু কোনোদিন ও স্কুল কামাই করত না। ক্লাস ফাইভে পড়ছিল, এইবছর সিক্সে ভর্তি হতো। কিন্তু আমার পোড়া কপাল, কি করে যে এইসব হয়ে গেল আমি জানি না। আমরা এবারে কি নিয়ে বাঁচবো? মেয়ে সেদিন বিকেলে হঠাৎ আবদার করল যে ও একটু ফুচকা খেয়ে আসবে। আমি মেয়েকে ২০ টাকার একটা নোট দিয়ে ওকে বললাম, যে ঠিক আছে আমার জন্যও ৫ টাকার চুরমুর নিয়ে আসিস, সন্ধ্যা ৬ টা নাগাদ মেয়ে আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল, কিন্তু আর ফিরল না, ভদ্রমহিলা কথা শেষ করে আঁচলের খুঁট দিয়ে চোখের কোণা মুছে আবার অবিনাশ বাবুর উদ্দেশ্যে বললেন – বলি এবারে একটু চুপ কর দয়া করে, ওনাদের যা জানার তা জিজ্ঞাসা করতে দাও।
অবিনাশ বাবু এতক্ষন ধরে কেঁদে চলেছিলেন, এইবারে একটু শান্ত হয়ে বসে বললেন, বলুন আপনারা কি জানতে চান ? অর্ক নিজের জায়গায় ফিরে এসে বসে পরল, তারপর জলের গ্লাসটা অবিনাশ বাবুর দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল – নিন এটা খেয়ে নিন আগে, তারপর আমার দিকে ফিরে বলল – মৈনাক একটু চা-পকোড়ার ব্যাবস্থা করে আয়, তারপর সব শোনা যাবে।
আমি পাশের তেলেভাজার দোকানে অর্ডারটা দিয়ে ফেরত এসে বললাম, হ্যাঁ ব্যাবস্থা হয়ে গেছে, নে এবারে শুরু করা যাক।
অর্ক প্রথমে, অবিনাশ বাবুর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করল, আচ্ছা অবিনাশ বাবু, আপনারা শুনলাম এই পাড়াতে এসেছেন মাত্র সাতদিন হল... এর আগে আপনারা কোথায় ছিলেন?
অবিনাশ বাবু বললেন – আমরা এর আগে, নেতাজীনগরে থাকতাম, ওখানে বাড়িওয়ালা ঘর ছাড়ার কথা বলাতে, এখানে অনেক খুঁজে খুঁজে এই বাসাটা পেলাম।
আমি অবাক হয়ে বললাম, নেতাজীনগর মানে তো সেই টালিগঞ্জ? অবিনাশ বাবু ঘাড় নেড়ে তার সায় দিলেন। আমি আবার জিজ্ঞাসা করলাম - তা হঠাৎ সেই নেতাজীনগর ছেড়ে এত দূরে আপনাদের ভাড়া আসার কারণ জানতে পারি কি? অবিনাশ বাবু উত্তর দেওয়ার আগেই অর্ক বলে উঠল – দেখুন, অবিনাশ বাবু এবং তমালিকা দেবী, আমরা কিন্তু প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক ও সত্যি উত্তর জানতে চাই, তাহলেই শুধু মাত্র আমরা আপনাদের কোনও সাহায্য করতে পারব। আমাদের কাছে কিছু লুকোবেন না, না হলে আমাদের কাজ করতে অসুবিধা হবে, আর তাতে আপনাদেরও কোনও লাভ হবে না। আশা করি বুঝতে পারছেন কি বলতে চাইছি। নিঃসঙ্কোচে আমাদের কাছে সব খুলে বলতে পারেন, কোনও ভয় নেই, যদি কিছু গোপনীয় থাকে, তবে তা গোপনীয়ই থাকবে, কেউ তা জানতে পারবে না, যদি না তদন্তের খাতিরে তা সামনে আনতে হয়, তবে তাও আপনাদের অনুমতি ভিন্ন নয়।
আপনাদের কাছ থেকে এইতুকু সহযোগিতা আমরা আশা করতেই পারি কি বলেন ?
দুজনেই সম্মতিসূচক ঘাড় নেড়ে অর্কর কথায় সায় দিলেন। আমি বললাম – নিন এবারে সব গুছিয়ে বলুন তো। ততক্ষনে চা-পকোড়া এসে গেছিল। অর্ক হাতের ইশারায় ওনাদের নিতে বলে, নিজে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে অবিনাশ বাবুর দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে রইল উত্তরের অপেক্ষায়।
( চলবে )
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
দেবব্রত সান্যাল ৩০/০৯/২০১৫ধারাবাহিক লেখার যা ধর্ম , উত্সাহ বজায় রেখে যাওয়া। সেটা বেশ চলছে।
-
সমরেশ সুবোধ পড়্যা ২৪/০৯/২০১৫দারুন !
-
নাসিফ আমের চৌধুরী ২৪/০৯/২০১৫ভাল
-
রিয়েল আবদুল্লাহ ২২/০৯/২০১৫অনেক সুন্দর
-
নাসিফ আমের চৌধুরী ২১/০৯/২০১৫ভালই লাগল
-
দেবাশিস্ ভট্টাচার্য্য ২১/০৯/২০১৫পুরোটা পড়ে মন্তব্য দেব। শুরু থেকে পড়তে হবে।
-
অভিষেক মিত্র ২১/০৯/২০১৫বাঃ। ফাটাফাটি এগোচ্ছে।