গন্ধ - ৯ম পর্ব ( শেষ পর্ব )
( আগের সংখ্যার পর )
অর্ক ঘাড় ঘুরিয়ে হেসে বলল – তুইও ভাল করে দেখলে বুঝতে পারতিস, আসল কার্ডে একটা হলোগ্রাম স্টিকার লাগানো ছিল, যা নকলটাতে নেই, আবার আসলটাতে, বিশ্ববিদ্দ্যালয়ের ঠিকানাটা জাপানীস আর ইংরাজী দুটো ভাষাতেই লেখা ছিল, কিন্তু সঞ্জয়বাবু নকলটাতে, জাপানীস ভাষা ব্যাবহার করেননি, আমার মনে হয়, উনি ভেবেছিলেন, শুধু ইংরাজীটা রাখলেই আমরা ওনার দেখানো ভুল পথে চলব। তবে তখনও বুঝতে পারিনি যে সঞ্জয়বাবুই আমাদের সামনে, মিঃ তিচেরো হয়ে অভিনয় করে যাচ্ছিলেন।
মিঃ ভদ্র, আপনারও নিশ্চই মনে আছে আমি ওনাদের টিকিটের একটা ফটো নিজের মোবাইলে তুলে এনেছিলাম –অর্কর কথায় ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি, মিঃ ভদ্র কখন যে এসে উপ্সথিত হয়েছেন, তা বুঝতেই পারিনি। ভদ্রমশাই ঘাড় নাড়াতে অর্ক বলল – তো আমি যখন, বুঝলাম, যে আমরা কিছু একটা মিস করছি, তখন আমি জাপান এয়ারলাইন্সের ওয়েবসাইেট টিকিটের পি•এন•আর চেক করতে গিয়েই চমকে উঠলাম, কারণ, আমি যে টিকিট কপি পেলাম ওই পি•এন•আরে, তাতে যে দুজন ব্যক্তি জাপান যাচ্ছেন, তাদের নাম হল – মিঃ একেরা তাকাহাসি আর মিঃ সঞ্জয় সান তাকাহাসি। টিকিটের একটা কপি আমি প্রিন্ট করে রেখে দিয়েছিলাম, সাথে সাথে সঞ্জয়বাবুর চালাকি আমার কাছে ধরা পরে গেলো, আর বাকি অংকগুলোও পরপর মিলে গেলো।
ভদ্রমশাই আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলেন – ও মশাই, এর মানে? তাহলে ওনারা কি করে দেশে ফিরতেন? আর অংকগুলোই বা কি করে মিলল? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। আমিও মনে মনে ভাবছিলাম যে আমার মনের অবস্থাও ওনার মত। কিন্তু মুখে কিছু না বলে ওনাকে অর্কর দিকে ইশারা করলাম।
আসলে ব্যাপারটা আর কিছুই নয়, আমারই বুদ্ধির ভুল, ওই যে লাশটার হাতে “এস•টি•” লেখা ছিল, যা দিয়ে আমরা ওনাকে সঞ্জয় তাকাহাসি বলে ভুল বুঝেছিলাম, আসলে উনি হলেন, মিঃ সুযুকি তিচেরো, কারণ নকল তিচেরোর হাতে লেখা ছিল “টি•এস•” – আমি বিশ্লেষণ করে বুঝতে পারলাম যে ইনিই আমাদের আসল সঞ্জয়বাবু- মিঃ তাকাহাসি সঞ্জয়, কারণ ওই যে বললাম, জাপানীরা সারনেমটা তার নিজের নামের আগে রাখে, আর সে জন্যই আসল সুযুকি, নিজের নেমপ্লেটের ভুল লেখাটা হাত দিয়ে কেটে, ঠিক করে পেন দিয়ে লিখে রেখেছিলেন। তারপর আমি জায়গাগুলো মিলে যাবার কাকতলীয়তা, সঞ্জয়বাবুর আচরণ, হাঁটা, গবেষণার জ্ঞ্যান, ওনার ইংরাজীর সাবলীলতা, জুতোজোড়া, রুমাল, সলিউশনের গন্ধ, সব পরপর বসিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যাই যে, আমরা যে মিঃ তিচেরোকে দেখেছি আসলে উনিই হলেন আমাদের কাছে মৃত সঞ্জয়বাবু। আজ ভোরবেলা ওনাকে আরও কাছ থেকে দেখে বুঝতে পারি, যে আমার ধারনাই ঠিক, উনি মিঃ তিচেরোর মুখের একটি খুব সূক্ষ মুখোশ পরে আছেন, কারণ, আমরা যখন যাই, তখন উনি একটি জাপানীস কিমোনো পরে আমাদেরকে দরজা খুলে দিয়েছিলেন, ঘরে ঢুকে ওনার খালি পাএর ঊর্ধ্বাংশ আর ওনার মুখের চামড়ার রঙের পার্থক্য খুব সহজেই আমার চোখে ধরা পরে গেলো, বুঝে গেলাম উনি মুখোশ পরে আছেন, যার জন্যই অতর্কিতে এত রাত্রে আমাদের হোটেলে যাত্রা।
হোটেলে গিয়ে আমরা দেখতে পেলাম নকল মিঃ তিচেরো সঞ্জয়বাবুর রুম থেকে বেরোলেন, শুধু তাই নয়, যিনি কিনা ইংরাজীতে এতটাই সাবলীল যে ওনাকে স্পীচ তৈরি করে দিতে হয়, আবার ওনার দোভাষীর কাজ অন্যকে করে দিতে হয়, তিনি কিনা দরকারী কাগজপত্র খুঁজতে গিয়েও ইংরাজী গান শুনছিলেন, কি অদ্ভুত সমাপতন - অর্ক হেসে প্রিতমদার দিকে তাকাল।
আমার দুটো খটকা আছে – একটা হল, ওই টিকিট নিয়ে ওনারা কি করে এখান থেকে দিল্লী পাড়ি দিতেন আর কি করেই বা জাপানে পাড়ি দিতেন? আর একটা ওই সলিউশনটাতে কি আছে টা কি করে আপনি বুঝলেন? – এই প্রথম মিঃ কাতসুমি নীরবতা ভেঙ্গে অর্কর দিকে প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিলেন।
অর্ক বলল, সেদিন যে দুটো কাগজের টুকরো আমি কুরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম, তার একটা ছিল একটি ভলভো বাসের টিকিট বাইপাসের হোটেলের কাছ থেকে গড়িয়ার। আর একটি ছিল, বাইপাস সনলগ্ন একটি বড় চিকেন শপের বিল, যা থেকে আমি বুঝতে পারি যে ওই সলিউশনটাতে কাঁচা মাংস মেশানও হয়েছিলো। তার মানে, ঐদিন, সঞ্জয়বাবু, হোটেল থেকে বাস ধরে সুকুমারবাবুর কাছে গিয়েছিলেন গাড়ি নেবার জন্য, শুধু নিজের গতিবিধি আমাদের কাছে লুকোবার জন্য আর ওখান থেকে, ফেরার সময়ে চিকেনশপে গিয়ে সেই মাংসর পেস্টটা নিয়ে এসে গাড়িতে রেখে, হোটেলে চলে যান, এরপর কাজ হয়ে যাবার পরে গাড়িটা হোটেলের পিছনে পরিত্যক্ত জায়গায় ফেলে আবার মিঃ তিচেরোর ছদ্মবেশ ধরে হোটেলে ফিরে যান। কিন্তু নিজের জুতোজোড়া বদল করতে ভুলে যান, যা আমরা ওনার খাটের তলা থকে পেলাম।
দুই নম্বর, ওনারা ওই টিকিটে কলকাতা থেকে দিল্লী যেতেন না, আমি সেটাও খোঁজ নিয়ে দেখেছি, সঞ্জয়বাবু সুযুকিবাবুর ছদ্মবেশেই দিল্লী জেতেন, কিন্তু ওখানে, আন্তর্জাতিক টার্মিনালে ঢুকে উনি নিজের আসল রূপে ফিরে আসতেন, কারণ তখন আর কেউ ওনাকে চিনত না ওখানে। সে জন্যই আমি ভদ্রমশাইকে বলেছিলাম ঘরটা ভাল করে সার্চ করতে, যাতে ওনাদের আসল টিকিটের কপি, আর ওনার আসল পাসপোর্টটাও পাওয়া যায়।
মিঃ ভদ্র সাথে সাথে বলে উঠলেন, হ্যাঁ, মশাই, আমি ওগুলো নিয়ে এসেছি, আর একজোড়া একইরকমের উইগ আর গোঁফ পেয়েছি ওখানে, যা হয়ত উনি আবার দিল্লী গিয়ে ব্যাবহার করতেন।
ওগুলো আর আমার কাছের এই জিনিসগুলো সব এভিড্যান্স হিসাবে ব্যাবহার হবে, এই নাও প্রিতমদা এগুলো সব তোমার জিম্মায় থাক, এই বলে অর্ক জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা ভাল কথা, মার্ডার উইপনটা কি পাওয়া গেছে? প্রিতমদা ঘাড় নেড়ে সায় সায় দেওয়াতে, অর্ক বলে উঠল, সঞ্জয়বাবু অনেক চালাকি করে প্রতি পদে পদে আমাদেরকে ভুল পথে চালনা করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ওই যে বললাম না - ক্রাইম নেভার পেয়েইড।
তাও কিছু ছোট ভুলের জন্য উনি বাঁ ওনারা ধরা পরে গেলেন। বাসের টিকিট বা দোকানের বিল বা, রুমাল খুবই ছোট্ট জিনিস, কিন্তু তাও একজন খুনিকে ধরিয়ে দেবার জন্য যথেষ্ট। তবে হ্যাঁ, পুলিশের তরফ থেকেও এরকম সাহায্য না পেলে বোধহয় আমরাও একাজ করতে পারতাম না, তার জন্য প্রিতমদা তুমি, আর বিশেষ করে মিঃ ভদ্রকে আমাদের বিশেশ ধন্যবাদ।
হঠাৎ হাততালির আওয়াজে চমকে উঠে দেখি, মিঃ কাতসুমি উঠে দাঁড়িয়ে ক্ল্যাপিং করছেন, আর মুখে বিড় বিড় বলে চলেছেন - ব্রিলিয়ান্ত ব্রিলিয়ান্ত...মিঃ অর্ক।
অসাধারণ আনালাইজিং ক্ষমতা তোমার – অর্ক, কথাটা বলেই প্রিতমদা, জ্যেঠুর দিকে ঘুরে বললেন, কাকু, ভাজ্ঞ্যিস তুমি সেদিন পারমিশনটা দিয়েছিলে, তাই না আজকে এত বড় রহস্যের সমাধান হল, হ্যাটস অফ টু ইউ অর্ক অ্যান্ড মৈনাক।
কিন্তু আমার আরও একটা প্রশ্ন আছে, কিন্তু এই গবেষণার জন্য এতও কাড়াকাড়ি কেন? কি এমন মঙ্গল হবে মনুষ্যজাতির? – আমি কথাটা বলে, সবার দিকে তাকিয়েই বুঝলাম নিশ্চই, আমি আবার বোকার মত কোনও প্রশ্ন করে ফেলেছি।
জ্যেঠু হেসে বলল – মানিকচাঁদ, এতে আর কি হবে মানে? তুমি ওই আটতলা থেকে বিরিয়ানির গন্ধ তোমার ডেস্কে বসেই পেয়ে যাবে। বোকা, এটা যদি সত্যি হয়, তাহলে, এর উপকারিতার কথা একবার শুধু ভাব, সেনাবাহিনীতে, পুলিশের কাছে, আর স্নিফার ডগ রাখার দরকার পরবে না। আমরাই বোমা, মাইন, সব কিছু খুঁজে নিতে পারব, আর শুধু কি তাই, একটা গোটা ট্রেনের ১২ টা কামরা থেকে একটা ৫০ গ্রামের মারিজুয়ানা ড্রাগের প্যাকেটও মানুষ অনায়েসে খুঁজে নিতে পারবে কয়েক সেকেন্ডে, শুধু গন্ধ বিচার করে। কোথাও অগ্নিকাণ্ড হলে, শুধু গন্ধ শুঁকে এক সেকেন্ডে বোঝা যাবে, যে ওটা কোনও সর্টসার্কিট থেকে হয়েছে, না পেট্রোল বা অন্য কোনও তেল থেকে আগুন লাগানো হয়েছে, আরও অনেক কিছু আছে, যা আমরা চট করে ধরে নিতে পারব।
আমার চোখের মণিগুলো আকাশে উঠে যাবার ঠিক আগের মুহূর্ততে জিজ্ঞাসা করলাম - তাহলে এইবারে ওই গবেষণার আর কি হবে? ওনারা তো এবারে জেলে চলে গেলেন।
এর উত্তরে মিঃ কাতসুমি বললেন, দেখা যাক কি হয়? নিশ্চই জাপান সরকার কিছু ব্যাবস্থা করবেন।
গবেষণার যাই হোক, আমার বুকটা গর্বে ভরে গেলো, ভাবলাম – ভাজ্ঞিস সেদিন, অর্কর অংকগুলো মিলছিল না বলে ঘুমিয়ে পরেছিলাম !! অর্কর দিকে তাকিয়ে দেখি, ওর চোখের কোণাটা যুদ্ধ জয়ের আনন্দে চিকচিক করছে,
----------------------
এরপরে অনেকদিন কেটে গেছে। জাপান কনস্যুলেট আর ভারত সরকারের মিলীত উদ্যোগে আমাকে আর অর্ককে এক সম্বর্ধনা দেওয়া হয়ে গেছে, আমরা এখন আমাদের পাড়ার এক পরিচিত মুখ, অর্ক ঠিকই বলেছিল, আজ আমাদের, আর সাথে আমাদের পাড়ার নাম হয়ত পৃথিবীর অনেকে জেনে গেছে এই কেসটার জন্য।
অর্ক অফিসিয়ালী নিজের এক অফিস খুলে ফেলেছে, নাম দিয়েছে – এ•এম• প্রাইভেট কনসালটেন্সী, মানে অর্ক আর মৈনাক আর কি...অর্ক বলে এই কেসটা আমাদের আরও দায়িত্ব বাড়িয়ে দিল রে, যদিও আমরা এখনও আমাদের এখনকার কাজও চালিয়ে যাচ্ছি।
আমি প্রতিদিন এখন খবরের কাগজগুলো ভাল করে ফলো করি, কারণ বিশেষ বিশেষ রহস্যর গন্ধতো খবরের কাগজেই পাওয়া যায়। একদিন হঠাৎ খবরের কাগজ মারফৎ খবর পেলাম, জাপান সরকার এই জঘন্য অপরাধের জন্য সঞ্জয়বাবুকে মৃত্যুদণ্ড ও মিঃ তাকাহাসি কে আজীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে। খবরটা শুনে অর্ক বলল – মনটা খারাপ হয়ে গেলো রে, ভদ্রলোক অনেক দুঃখ পেয়েছেন জীবনে, কিন্তু তাও ওনার জীবনভর পরিশ্রমের দাম পেলেন না। আর ওই গবেষণা পুরো হবে না বলেই মনে হচ্ছে। এটাই মানুষের ভাগ্য, বুঝলি মৈনাক? কি অদ্ভুত সমাপাতন না, যিনি, সারাজীবন, গন্ধ বিচার নিয়ে গবেষণা চালিয়ে গেলেন, তাকেও সেই গন্ধ শেষ সময়ে ছাড়ল না, তার অপরাধের দুর্গন্ধ ঠিক আমাদের মাধ্যমে তাকে ধরিয়ে ছাড়ল।
আমি অর্কর মুড ঠিক করার জন্য বললাম, ভাবিস না, যেটা হবার ছিল, তাই হয়েছে, ভগবান নিশ্চই এটা চান নি, আর আমাদের তাতেই খুশি থাকা উচিত। ওই কৃত্তিম কোষগুলো ছাড়াও আমাদের মধ্যে কেউ কেউ যে বিশেষ গন্ধ পায়, সেটাও বা কি করে অস্বীকার করব বল। সেদিন যদি ওই খবরের কাগজ থেকে এই গন্ধরহস্য তুই না চিনতে পারতিস তাহলে কি আর এর কোনও সমাধান হতো? আর আমি এখন যদি কাকিমার সেই লুচি আর আলুর দমের গন্ধ না চিনতে পারতাম, তাহলে কি, তুই এখন জানতে পারতিস যে কাকিমা আসছেন খাবার নিয়ে, তাড়াতাড়ি সিগারেটটা ফেলে আয় ব্যালকনী থেকে।
অর্ক তরাক করে লাফিয়ে উঠে, দৌড়ে গিয়ে ওটা ফেলে দিয়ে এসে। আমাকে জরিয়ে ধরে বলল – এই জন্যই তো তুই আমার এত কাছের বন্ধু, আর তোকে এত ভালবাসি, মানিকচাঁদ।
আমরা দুজনেই হো হো করে হেসে উঠলাম।
******************************************
******************************************
( সমাপ্ত )
সকল পাঠকবন্ধুকে জানাই অশেষ ধন্যবাদ। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, অর্ক ও মৈনাক জুটি ফের আসবে অন্য আরেকটি জটিল কেস সমাধান করতে।
" পাড়ায় নতুন আসা এক ভাড়াটে পরিবারের কিশোরী মেয়ে তমালিকা কুণ্ডু এক বিকেলে হঠাৎ ফুচকা খেতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। দুদিন পরে তার লাশ পাওয়া যায় এক পুকুরের পাশে। ঘটনাচক্রে এই কেসে জড়িয়ে যায় অর্ক ও মৈনাক, কিন্তু কেস সল্ভ করতে গিয়ে একেবারে নাকানি চোবানি খায় তারা। শখের বশে তদন্ত শুরু করা এই জুটি এবারে পড়ে একেবারে প্রফেশনাল অপরাধীদের পাল্লায়। কিন্তু কে খুন করল তমালিকাকে আর কেনই বা করল ? এবারে পাড়বে কি অর্ক ও মৈনাক এই রহস্যের সমাধান করতে ? নাকি ব্যর্থ হয়ে আবার যে যার নিজের কাজ নিয়েই থাকবে ... জানতে হলে চোখ রাখুন আমার পাতায় পরবর্তী থ্রিলার সিরিজের জন্য।
গল্পের নাম " চোরকাঁটা " আসছে খুব শীঘ্রই !! এখানে , এই পাতাতে।
অর্ক ঘাড় ঘুরিয়ে হেসে বলল – তুইও ভাল করে দেখলে বুঝতে পারতিস, আসল কার্ডে একটা হলোগ্রাম স্টিকার লাগানো ছিল, যা নকলটাতে নেই, আবার আসলটাতে, বিশ্ববিদ্দ্যালয়ের ঠিকানাটা জাপানীস আর ইংরাজী দুটো ভাষাতেই লেখা ছিল, কিন্তু সঞ্জয়বাবু নকলটাতে, জাপানীস ভাষা ব্যাবহার করেননি, আমার মনে হয়, উনি ভেবেছিলেন, শুধু ইংরাজীটা রাখলেই আমরা ওনার দেখানো ভুল পথে চলব। তবে তখনও বুঝতে পারিনি যে সঞ্জয়বাবুই আমাদের সামনে, মিঃ তিচেরো হয়ে অভিনয় করে যাচ্ছিলেন।
মিঃ ভদ্র, আপনারও নিশ্চই মনে আছে আমি ওনাদের টিকিটের একটা ফটো নিজের মোবাইলে তুলে এনেছিলাম –অর্কর কথায় ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি, মিঃ ভদ্র কখন যে এসে উপ্সথিত হয়েছেন, তা বুঝতেই পারিনি। ভদ্রমশাই ঘাড় নাড়াতে অর্ক বলল – তো আমি যখন, বুঝলাম, যে আমরা কিছু একটা মিস করছি, তখন আমি জাপান এয়ারলাইন্সের ওয়েবসাইেট টিকিটের পি•এন•আর চেক করতে গিয়েই চমকে উঠলাম, কারণ, আমি যে টিকিট কপি পেলাম ওই পি•এন•আরে, তাতে যে দুজন ব্যক্তি জাপান যাচ্ছেন, তাদের নাম হল – মিঃ একেরা তাকাহাসি আর মিঃ সঞ্জয় সান তাকাহাসি। টিকিটের একটা কপি আমি প্রিন্ট করে রেখে দিয়েছিলাম, সাথে সাথে সঞ্জয়বাবুর চালাকি আমার কাছে ধরা পরে গেলো, আর বাকি অংকগুলোও পরপর মিলে গেলো।
ভদ্রমশাই আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলেন – ও মশাই, এর মানে? তাহলে ওনারা কি করে দেশে ফিরতেন? আর অংকগুলোই বা কি করে মিলল? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। আমিও মনে মনে ভাবছিলাম যে আমার মনের অবস্থাও ওনার মত। কিন্তু মুখে কিছু না বলে ওনাকে অর্কর দিকে ইশারা করলাম।
আসলে ব্যাপারটা আর কিছুই নয়, আমারই বুদ্ধির ভুল, ওই যে লাশটার হাতে “এস•টি•” লেখা ছিল, যা দিয়ে আমরা ওনাকে সঞ্জয় তাকাহাসি বলে ভুল বুঝেছিলাম, আসলে উনি হলেন, মিঃ সুযুকি তিচেরো, কারণ নকল তিচেরোর হাতে লেখা ছিল “টি•এস•” – আমি বিশ্লেষণ করে বুঝতে পারলাম যে ইনিই আমাদের আসল সঞ্জয়বাবু- মিঃ তাকাহাসি সঞ্জয়, কারণ ওই যে বললাম, জাপানীরা সারনেমটা তার নিজের নামের আগে রাখে, আর সে জন্যই আসল সুযুকি, নিজের নেমপ্লেটের ভুল লেখাটা হাত দিয়ে কেটে, ঠিক করে পেন দিয়ে লিখে রেখেছিলেন। তারপর আমি জায়গাগুলো মিলে যাবার কাকতলীয়তা, সঞ্জয়বাবুর আচরণ, হাঁটা, গবেষণার জ্ঞ্যান, ওনার ইংরাজীর সাবলীলতা, জুতোজোড়া, রুমাল, সলিউশনের গন্ধ, সব পরপর বসিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যাই যে, আমরা যে মিঃ তিচেরোকে দেখেছি আসলে উনিই হলেন আমাদের কাছে মৃত সঞ্জয়বাবু। আজ ভোরবেলা ওনাকে আরও কাছ থেকে দেখে বুঝতে পারি, যে আমার ধারনাই ঠিক, উনি মিঃ তিচেরোর মুখের একটি খুব সূক্ষ মুখোশ পরে আছেন, কারণ, আমরা যখন যাই, তখন উনি একটি জাপানীস কিমোনো পরে আমাদেরকে দরজা খুলে দিয়েছিলেন, ঘরে ঢুকে ওনার খালি পাএর ঊর্ধ্বাংশ আর ওনার মুখের চামড়ার রঙের পার্থক্য খুব সহজেই আমার চোখে ধরা পরে গেলো, বুঝে গেলাম উনি মুখোশ পরে আছেন, যার জন্যই অতর্কিতে এত রাত্রে আমাদের হোটেলে যাত্রা।
হোটেলে গিয়ে আমরা দেখতে পেলাম নকল মিঃ তিচেরো সঞ্জয়বাবুর রুম থেকে বেরোলেন, শুধু তাই নয়, যিনি কিনা ইংরাজীতে এতটাই সাবলীল যে ওনাকে স্পীচ তৈরি করে দিতে হয়, আবার ওনার দোভাষীর কাজ অন্যকে করে দিতে হয়, তিনি কিনা দরকারী কাগজপত্র খুঁজতে গিয়েও ইংরাজী গান শুনছিলেন, কি অদ্ভুত সমাপতন - অর্ক হেসে প্রিতমদার দিকে তাকাল।
আমার দুটো খটকা আছে – একটা হল, ওই টিকিট নিয়ে ওনারা কি করে এখান থেকে দিল্লী পাড়ি দিতেন আর কি করেই বা জাপানে পাড়ি দিতেন? আর একটা ওই সলিউশনটাতে কি আছে টা কি করে আপনি বুঝলেন? – এই প্রথম মিঃ কাতসুমি নীরবতা ভেঙ্গে অর্কর দিকে প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিলেন।
অর্ক বলল, সেদিন যে দুটো কাগজের টুকরো আমি কুরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম, তার একটা ছিল একটি ভলভো বাসের টিকিট বাইপাসের হোটেলের কাছ থেকে গড়িয়ার। আর একটি ছিল, বাইপাস সনলগ্ন একটি বড় চিকেন শপের বিল, যা থেকে আমি বুঝতে পারি যে ওই সলিউশনটাতে কাঁচা মাংস মেশানও হয়েছিলো। তার মানে, ঐদিন, সঞ্জয়বাবু, হোটেল থেকে বাস ধরে সুকুমারবাবুর কাছে গিয়েছিলেন গাড়ি নেবার জন্য, শুধু নিজের গতিবিধি আমাদের কাছে লুকোবার জন্য আর ওখান থেকে, ফেরার সময়ে চিকেনশপে গিয়ে সেই মাংসর পেস্টটা নিয়ে এসে গাড়িতে রেখে, হোটেলে চলে যান, এরপর কাজ হয়ে যাবার পরে গাড়িটা হোটেলের পিছনে পরিত্যক্ত জায়গায় ফেলে আবার মিঃ তিচেরোর ছদ্মবেশ ধরে হোটেলে ফিরে যান। কিন্তু নিজের জুতোজোড়া বদল করতে ভুলে যান, যা আমরা ওনার খাটের তলা থকে পেলাম।
দুই নম্বর, ওনারা ওই টিকিটে কলকাতা থেকে দিল্লী যেতেন না, আমি সেটাও খোঁজ নিয়ে দেখেছি, সঞ্জয়বাবু সুযুকিবাবুর ছদ্মবেশেই দিল্লী জেতেন, কিন্তু ওখানে, আন্তর্জাতিক টার্মিনালে ঢুকে উনি নিজের আসল রূপে ফিরে আসতেন, কারণ তখন আর কেউ ওনাকে চিনত না ওখানে। সে জন্যই আমি ভদ্রমশাইকে বলেছিলাম ঘরটা ভাল করে সার্চ করতে, যাতে ওনাদের আসল টিকিটের কপি, আর ওনার আসল পাসপোর্টটাও পাওয়া যায়।
মিঃ ভদ্র সাথে সাথে বলে উঠলেন, হ্যাঁ, মশাই, আমি ওগুলো নিয়ে এসেছি, আর একজোড়া একইরকমের উইগ আর গোঁফ পেয়েছি ওখানে, যা হয়ত উনি আবার দিল্লী গিয়ে ব্যাবহার করতেন।
ওগুলো আর আমার কাছের এই জিনিসগুলো সব এভিড্যান্স হিসাবে ব্যাবহার হবে, এই নাও প্রিতমদা এগুলো সব তোমার জিম্মায় থাক, এই বলে অর্ক জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা ভাল কথা, মার্ডার উইপনটা কি পাওয়া গেছে? প্রিতমদা ঘাড় নেড়ে সায় সায় দেওয়াতে, অর্ক বলে উঠল, সঞ্জয়বাবু অনেক চালাকি করে প্রতি পদে পদে আমাদেরকে ভুল পথে চালনা করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ওই যে বললাম না - ক্রাইম নেভার পেয়েইড।
তাও কিছু ছোট ভুলের জন্য উনি বাঁ ওনারা ধরা পরে গেলেন। বাসের টিকিট বা দোকানের বিল বা, রুমাল খুবই ছোট্ট জিনিস, কিন্তু তাও একজন খুনিকে ধরিয়ে দেবার জন্য যথেষ্ট। তবে হ্যাঁ, পুলিশের তরফ থেকেও এরকম সাহায্য না পেলে বোধহয় আমরাও একাজ করতে পারতাম না, তার জন্য প্রিতমদা তুমি, আর বিশেষ করে মিঃ ভদ্রকে আমাদের বিশেশ ধন্যবাদ।
হঠাৎ হাততালির আওয়াজে চমকে উঠে দেখি, মিঃ কাতসুমি উঠে দাঁড়িয়ে ক্ল্যাপিং করছেন, আর মুখে বিড় বিড় বলে চলেছেন - ব্রিলিয়ান্ত ব্রিলিয়ান্ত...মিঃ অর্ক।
অসাধারণ আনালাইজিং ক্ষমতা তোমার – অর্ক, কথাটা বলেই প্রিতমদা, জ্যেঠুর দিকে ঘুরে বললেন, কাকু, ভাজ্ঞ্যিস তুমি সেদিন পারমিশনটা দিয়েছিলে, তাই না আজকে এত বড় রহস্যের সমাধান হল, হ্যাটস অফ টু ইউ অর্ক অ্যান্ড মৈনাক।
কিন্তু আমার আরও একটা প্রশ্ন আছে, কিন্তু এই গবেষণার জন্য এতও কাড়াকাড়ি কেন? কি এমন মঙ্গল হবে মনুষ্যজাতির? – আমি কথাটা বলে, সবার দিকে তাকিয়েই বুঝলাম নিশ্চই, আমি আবার বোকার মত কোনও প্রশ্ন করে ফেলেছি।
জ্যেঠু হেসে বলল – মানিকচাঁদ, এতে আর কি হবে মানে? তুমি ওই আটতলা থেকে বিরিয়ানির গন্ধ তোমার ডেস্কে বসেই পেয়ে যাবে। বোকা, এটা যদি সত্যি হয়, তাহলে, এর উপকারিতার কথা একবার শুধু ভাব, সেনাবাহিনীতে, পুলিশের কাছে, আর স্নিফার ডগ রাখার দরকার পরবে না। আমরাই বোমা, মাইন, সব কিছু খুঁজে নিতে পারব, আর শুধু কি তাই, একটা গোটা ট্রেনের ১২ টা কামরা থেকে একটা ৫০ গ্রামের মারিজুয়ানা ড্রাগের প্যাকেটও মানুষ অনায়েসে খুঁজে নিতে পারবে কয়েক সেকেন্ডে, শুধু গন্ধ বিচার করে। কোথাও অগ্নিকাণ্ড হলে, শুধু গন্ধ শুঁকে এক সেকেন্ডে বোঝা যাবে, যে ওটা কোনও সর্টসার্কিট থেকে হয়েছে, না পেট্রোল বা অন্য কোনও তেল থেকে আগুন লাগানো হয়েছে, আরও অনেক কিছু আছে, যা আমরা চট করে ধরে নিতে পারব।
আমার চোখের মণিগুলো আকাশে উঠে যাবার ঠিক আগের মুহূর্ততে জিজ্ঞাসা করলাম - তাহলে এইবারে ওই গবেষণার আর কি হবে? ওনারা তো এবারে জেলে চলে গেলেন।
এর উত্তরে মিঃ কাতসুমি বললেন, দেখা যাক কি হয়? নিশ্চই জাপান সরকার কিছু ব্যাবস্থা করবেন।
গবেষণার যাই হোক, আমার বুকটা গর্বে ভরে গেলো, ভাবলাম – ভাজ্ঞিস সেদিন, অর্কর অংকগুলো মিলছিল না বলে ঘুমিয়ে পরেছিলাম !! অর্কর দিকে তাকিয়ে দেখি, ওর চোখের কোণাটা যুদ্ধ জয়ের আনন্দে চিকচিক করছে,
----------------------
এরপরে অনেকদিন কেটে গেছে। জাপান কনস্যুলেট আর ভারত সরকারের মিলীত উদ্যোগে আমাকে আর অর্ককে এক সম্বর্ধনা দেওয়া হয়ে গেছে, আমরা এখন আমাদের পাড়ার এক পরিচিত মুখ, অর্ক ঠিকই বলেছিল, আজ আমাদের, আর সাথে আমাদের পাড়ার নাম হয়ত পৃথিবীর অনেকে জেনে গেছে এই কেসটার জন্য।
অর্ক অফিসিয়ালী নিজের এক অফিস খুলে ফেলেছে, নাম দিয়েছে – এ•এম• প্রাইভেট কনসালটেন্সী, মানে অর্ক আর মৈনাক আর কি...অর্ক বলে এই কেসটা আমাদের আরও দায়িত্ব বাড়িয়ে দিল রে, যদিও আমরা এখনও আমাদের এখনকার কাজও চালিয়ে যাচ্ছি।
আমি প্রতিদিন এখন খবরের কাগজগুলো ভাল করে ফলো করি, কারণ বিশেষ বিশেষ রহস্যর গন্ধতো খবরের কাগজেই পাওয়া যায়। একদিন হঠাৎ খবরের কাগজ মারফৎ খবর পেলাম, জাপান সরকার এই জঘন্য অপরাধের জন্য সঞ্জয়বাবুকে মৃত্যুদণ্ড ও মিঃ তাকাহাসি কে আজীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে। খবরটা শুনে অর্ক বলল – মনটা খারাপ হয়ে গেলো রে, ভদ্রলোক অনেক দুঃখ পেয়েছেন জীবনে, কিন্তু তাও ওনার জীবনভর পরিশ্রমের দাম পেলেন না। আর ওই গবেষণা পুরো হবে না বলেই মনে হচ্ছে। এটাই মানুষের ভাগ্য, বুঝলি মৈনাক? কি অদ্ভুত সমাপাতন না, যিনি, সারাজীবন, গন্ধ বিচার নিয়ে গবেষণা চালিয়ে গেলেন, তাকেও সেই গন্ধ শেষ সময়ে ছাড়ল না, তার অপরাধের দুর্গন্ধ ঠিক আমাদের মাধ্যমে তাকে ধরিয়ে ছাড়ল।
আমি অর্কর মুড ঠিক করার জন্য বললাম, ভাবিস না, যেটা হবার ছিল, তাই হয়েছে, ভগবান নিশ্চই এটা চান নি, আর আমাদের তাতেই খুশি থাকা উচিত। ওই কৃত্তিম কোষগুলো ছাড়াও আমাদের মধ্যে কেউ কেউ যে বিশেষ গন্ধ পায়, সেটাও বা কি করে অস্বীকার করব বল। সেদিন যদি ওই খবরের কাগজ থেকে এই গন্ধরহস্য তুই না চিনতে পারতিস তাহলে কি আর এর কোনও সমাধান হতো? আর আমি এখন যদি কাকিমার সেই লুচি আর আলুর দমের গন্ধ না চিনতে পারতাম, তাহলে কি, তুই এখন জানতে পারতিস যে কাকিমা আসছেন খাবার নিয়ে, তাড়াতাড়ি সিগারেটটা ফেলে আয় ব্যালকনী থেকে।
অর্ক তরাক করে লাফিয়ে উঠে, দৌড়ে গিয়ে ওটা ফেলে দিয়ে এসে। আমাকে জরিয়ে ধরে বলল – এই জন্যই তো তুই আমার এত কাছের বন্ধু, আর তোকে এত ভালবাসি, মানিকচাঁদ।
আমরা দুজনেই হো হো করে হেসে উঠলাম।
******************************************
******************************************
( সমাপ্ত )
সকল পাঠকবন্ধুকে জানাই অশেষ ধন্যবাদ। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, অর্ক ও মৈনাক জুটি ফের আসবে অন্য আরেকটি জটিল কেস সমাধান করতে।
" পাড়ায় নতুন আসা এক ভাড়াটে পরিবারের কিশোরী মেয়ে তমালিকা কুণ্ডু এক বিকেলে হঠাৎ ফুচকা খেতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। দুদিন পরে তার লাশ পাওয়া যায় এক পুকুরের পাশে। ঘটনাচক্রে এই কেসে জড়িয়ে যায় অর্ক ও মৈনাক, কিন্তু কেস সল্ভ করতে গিয়ে একেবারে নাকানি চোবানি খায় তারা। শখের বশে তদন্ত শুরু করা এই জুটি এবারে পড়ে একেবারে প্রফেশনাল অপরাধীদের পাল্লায়। কিন্তু কে খুন করল তমালিকাকে আর কেনই বা করল ? এবারে পাড়বে কি অর্ক ও মৈনাক এই রহস্যের সমাধান করতে ? নাকি ব্যর্থ হয়ে আবার যে যার নিজের কাজ নিয়েই থাকবে ... জানতে হলে চোখ রাখুন আমার পাতায় পরবর্তী থ্রিলার সিরিজের জন্য।
গল্পের নাম " চোরকাঁটা " আসছে খুব শীঘ্রই !! এখানে , এই পাতাতে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
দেবব্রত সান্যাল ২৬/০৯/২০১৫
-
কল্লোল বেপারী ৩১/০৮/২০১৫বেশ, সমাপ্তি খুব ভালো করেছেন।পরের গল্পের অপেক্ষায় রইলাম।
-
সাইদুর রহমান ২৯/০৮/২০১৫ভালোই লাগছিল।
আরো চলতে থাকতো। -
অভিষেক মিত্র ২৯/০৮/২০১৫briliant
-
সজিব ২৯/০৮/২০১৫ভাল
-
সজিব ২৯/০৮/২০১৫ভাল হইচে
চোর কাঁটা শেষ হলে একসাথে পড়ব। আমার আবার কৌতুহলটা একটু বেশী।
সিরিজটা চালান , জানি অনেক খাটনি। কিন্তু ভাবুন আমরা তো আনন্দ পাচ্ছি।