নীরবতা - শুধুই শূন্যতা
কবিবন্ধুরা,
এই পোষ্টটি আমি গতকাল বাংলা কবিতা আসরের আলোচনা সভায় পোষ্ট করেছিলাম। মাননীয় অ্যাডমিন মহোদয়ের পরামর্শ অনুযায়ী ওখান থেকে মুছে এখানে পোষ্ট করলাম।
============================
আপনারা হয়ত অবাক হবেন অথবা যারপরনাই বিরক্ত বোধ করবেন আমার এই লেখা পড়ে। অবাক হবেন এই ভেবে যে হঠাৎ এই প্রসঙ্গ এখানে কেন। এখানে তো শুধু কবিতা ও কবি বিষয়ক বক্তব্য পোস্ট করা যায়। মাননীয় এডমিন মহাশয়ও হয়ত রাগ করে এই পোস্ট ব্যান করে দিতে পারেন ।
সর্বপ্রথমে আমি ক্ষমা চাইছি তাই আপনাদের সকলের কাছে, কিন্তু গত কয়েকদিনে যে নৃশংস ঘটনার সাক্ষী আপানারা হয়েছেন, তা আমি কালকেই জানলাম এখানে পোস্ট হওয়া কবিতাগুলো পড়ে। তারপর ইন্টারনেট ঘেঁটে পুরো ব্যাপারটা অবগত হয়ে চিন্তায় পড়ে গেলাম, সত্যি এ কোন সমাজে আমরা বাস করছি ? এত নিষ্ঠুর , এত নির্দয় , কোনও সভ্য সমাজের মানুষ হতে পারে ? সত্যি স্বীকার করতে বাধা নেই, গতরাত্রে আমি সত্যি দুচোখের পাতা এক করতে পারি নি, কারণ আমার নিজেরো একটি দুবছরের পুত্র সন্তান রয়েছে। রাজনের ওই করুন মুখের আর্তি আমায় সারা রাত ঘুমোতে দেয় নি, এর আগেও অনেক রাত জেগেছি, কিন্তু এত কষ্ট কখনো পাই নি।
আমি জানি আপনারা সকলেই আমারই মত বা আমার চেয়েও বেশী মনঃকষ্টে ভুগেছেন হয়ত গত কয়েকদিন, আমারই অজ্ঞতা আমিই খবরটা সময়ে জানতে পারি নি, একবার মনে হল না জানলেই বোধহয় ভালো হত, কারণ তাতে সহজেই পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়া যেত। কিন্তু তারপরেই ভাবলাম, কতদিন? আর কতদিন? এভাবে আমরা শুধু পাশ কাটিয়েই চলে যাব আর ওইসব নরপিশাচরা, নরখাদকরা বহাল তবিয়তে ছড়ি ঘোরাবে সমাজের উপরে। ভয় হল, ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে, আমার ছেলেও তো একদিন বাইরে বেরবে, একা একা, কতদিন আর ওকে নজরে নজরে রাখা যাবে। তাই ভয় হল, মনে হল যেন ছেলের মুখে রাজনের ওই নিষ্পাপ মুখটা দেখতে পেলাম। ওকে জড়িয়ে ধরে বাকি রাতটা শুয়ে কাটালাম। শান্তি পেলাম মনে হল, কিন্তু সত্যি পেলাম কি? পেলাম না ।
আর তাই মনে পড়ে গেলো, রাজনের বাবা - মায়ের কষ্টের কথা, আমার বা আপনাদের যা কষ্ট, তার থেকে কয়েক হাজারগুন বেশী নিশ্চয়ই। হা ভগবান, এই কি তোমার বিচার ? আর কতদিন গরীবরা পড়ে পড়ে মার খাবে শুধু ? ছোটবেলায় দুষ্টুমি করলে মা বলতেন, বড় হয়ে নিজেরা বাবা- মা হয়ে দেখ, তারপর বুঝবি, বাবা-মায়ের কষ্ট কি, আজ নিজের বিচ্ছুটাকে মানুষ করতে গিয়ে দেখছি, সত্যি এ এক অসাধ্যসাধন ব্যাপার, আর সেখানে কোনও বাবা-মায়ের কোল থেকে যখন জলজ্যান্ত ছেলেটি চিরতরে হারিয়ে গেলো, তখন বুঝি সে যে কি অপরিসীম কষ্টের মধ্যে দিয়ে যাওয়া, জানি আপনারা হয়ত অনেকে একমত হবেন না , যদি আমি বলি, এর থেকে ঢের ভালো যদি সন্তান ছোট্টবেলাতেই চলে যায়, ১৩ টা বছর ধরে তিল তিল করে তাকে গড়ার পড় যদি হঠাৎ ওইসব পাপিষ্ঠদের জন্য মাএর বুক খালি হয়ে যায়, সেই মায়ের কষ্ট কি কোনও আইন, কোনও জেল, কোনও প্রশাশন বুঝতে পারবে?
কিন্তু আমি বা আমরা কিই বা করতে পারি? মনে মনে ভগবানের উদ্দেশ্যে ওইটুকু ছেলের আত্মার শান্তির জন্য কামনা করতে পারি, মোমবাতি জ্বালিয়ে মিছিল করতে পারি, অবস্থান-বিক্ষোভ করতেও পারি, আর হ্যাঁ আমরা যারা নিজেদেরকে কবি ভাবি, তারা তার আত্মার শান্তির জন্য, বিদ্রোহের জন্য কবিতা লিখতে পারি বটে, কিন্তু তাকে কি আর তার মায়ের বুকে ফিরিয়ে আনতে পারি ?
না পারি না, আর তাই যেটা আমার অবশ্যকর্তব্য মনে হল, সবচেয়ে প্রথমে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া আপানাদের সবার কাছে যারা রাজনকে নিয়ে, রাজন কে ভালবেসে কবিতা লিখেছিলেন, তাদের লেখায় আমার করা মন্তব্য গুলোর জন্য, আমি না জেনেই না বুঝেই শুধু কবিতা পড়ে তার গুনাগুন বিচার করে মন্তব্য দিয়েছিলাম, এখন যখন জানলাম, বুঝলাম কত সহজে একটা ছোট্ট জীবনের উপরে কলমের আঁচড় কেটে দিয়েছি। অনেকটা ওই শক্ত রডের মতই।
তাই রাজন, পারলে ক্ষমা করিস বাপ আমার, আমি বা আমরা তোর জন্য কবিতা লেখা ছাড়া আর কিছুই হয়ত করতে পারব না, ভগবান বা আল্লাহ এর কাছে মিনতি ছাড়া কিছু করতে পারব না, তবে হ্যাঁ, আর একটা জিনিশ আমি করতে পারব, আশা করি হয়ত আপনারা অনেকেই ইতিমধ্যেই করেছেন বা করবেন হয়ত, তা হল কয়েকটা মুহূর্ত শুধু চোখের জলে নীরবতা পালন। আমি করছি রাজন, তোর জন্য কাল থেকে,
আজ আর কোনও কবিতা আমি লিখব না,
কোনও কলমের আঁচড় আজ টানব না,
আজ শুধু একলা আমি, আর আমার রাজন
আজ শুধু কবির যন্ত্রণা অনুধাবন
আর আজ শুধুই নীরবতা পালন।
হয়ত আপনাদের বিব্রত করলাম, তাই সর্বশেষে আর একবার সবার কাছে ক্ষমা চাইছি কিন্তু বিশ্বাস করুন সবার কাছে আমার বক্তব্য পৌঁছানোর আর অন্য কোনও উপায় ছিল না।
এই পোষ্টটি আমি গতকাল বাংলা কবিতা আসরের আলোচনা সভায় পোষ্ট করেছিলাম। মাননীয় অ্যাডমিন মহোদয়ের পরামর্শ অনুযায়ী ওখান থেকে মুছে এখানে পোষ্ট করলাম।
============================
আপনারা হয়ত অবাক হবেন অথবা যারপরনাই বিরক্ত বোধ করবেন আমার এই লেখা পড়ে। অবাক হবেন এই ভেবে যে হঠাৎ এই প্রসঙ্গ এখানে কেন। এখানে তো শুধু কবিতা ও কবি বিষয়ক বক্তব্য পোস্ট করা যায়। মাননীয় এডমিন মহাশয়ও হয়ত রাগ করে এই পোস্ট ব্যান করে দিতে পারেন ।
সর্বপ্রথমে আমি ক্ষমা চাইছি তাই আপনাদের সকলের কাছে, কিন্তু গত কয়েকদিনে যে নৃশংস ঘটনার সাক্ষী আপানারা হয়েছেন, তা আমি কালকেই জানলাম এখানে পোস্ট হওয়া কবিতাগুলো পড়ে। তারপর ইন্টারনেট ঘেঁটে পুরো ব্যাপারটা অবগত হয়ে চিন্তায় পড়ে গেলাম, সত্যি এ কোন সমাজে আমরা বাস করছি ? এত নিষ্ঠুর , এত নির্দয় , কোনও সভ্য সমাজের মানুষ হতে পারে ? সত্যি স্বীকার করতে বাধা নেই, গতরাত্রে আমি সত্যি দুচোখের পাতা এক করতে পারি নি, কারণ আমার নিজেরো একটি দুবছরের পুত্র সন্তান রয়েছে। রাজনের ওই করুন মুখের আর্তি আমায় সারা রাত ঘুমোতে দেয় নি, এর আগেও অনেক রাত জেগেছি, কিন্তু এত কষ্ট কখনো পাই নি।
আমি জানি আপনারা সকলেই আমারই মত বা আমার চেয়েও বেশী মনঃকষ্টে ভুগেছেন হয়ত গত কয়েকদিন, আমারই অজ্ঞতা আমিই খবরটা সময়ে জানতে পারি নি, একবার মনে হল না জানলেই বোধহয় ভালো হত, কারণ তাতে সহজেই পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়া যেত। কিন্তু তারপরেই ভাবলাম, কতদিন? আর কতদিন? এভাবে আমরা শুধু পাশ কাটিয়েই চলে যাব আর ওইসব নরপিশাচরা, নরখাদকরা বহাল তবিয়তে ছড়ি ঘোরাবে সমাজের উপরে। ভয় হল, ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে, আমার ছেলেও তো একদিন বাইরে বেরবে, একা একা, কতদিন আর ওকে নজরে নজরে রাখা যাবে। তাই ভয় হল, মনে হল যেন ছেলের মুখে রাজনের ওই নিষ্পাপ মুখটা দেখতে পেলাম। ওকে জড়িয়ে ধরে বাকি রাতটা শুয়ে কাটালাম। শান্তি পেলাম মনে হল, কিন্তু সত্যি পেলাম কি? পেলাম না ।
আর তাই মনে পড়ে গেলো, রাজনের বাবা - মায়ের কষ্টের কথা, আমার বা আপনাদের যা কষ্ট, তার থেকে কয়েক হাজারগুন বেশী নিশ্চয়ই। হা ভগবান, এই কি তোমার বিচার ? আর কতদিন গরীবরা পড়ে পড়ে মার খাবে শুধু ? ছোটবেলায় দুষ্টুমি করলে মা বলতেন, বড় হয়ে নিজেরা বাবা- মা হয়ে দেখ, তারপর বুঝবি, বাবা-মায়ের কষ্ট কি, আজ নিজের বিচ্ছুটাকে মানুষ করতে গিয়ে দেখছি, সত্যি এ এক অসাধ্যসাধন ব্যাপার, আর সেখানে কোনও বাবা-মায়ের কোল থেকে যখন জলজ্যান্ত ছেলেটি চিরতরে হারিয়ে গেলো, তখন বুঝি সে যে কি অপরিসীম কষ্টের মধ্যে দিয়ে যাওয়া, জানি আপনারা হয়ত অনেকে একমত হবেন না , যদি আমি বলি, এর থেকে ঢের ভালো যদি সন্তান ছোট্টবেলাতেই চলে যায়, ১৩ টা বছর ধরে তিল তিল করে তাকে গড়ার পড় যদি হঠাৎ ওইসব পাপিষ্ঠদের জন্য মাএর বুক খালি হয়ে যায়, সেই মায়ের কষ্ট কি কোনও আইন, কোনও জেল, কোনও প্রশাশন বুঝতে পারবে?
কিন্তু আমি বা আমরা কিই বা করতে পারি? মনে মনে ভগবানের উদ্দেশ্যে ওইটুকু ছেলের আত্মার শান্তির জন্য কামনা করতে পারি, মোমবাতি জ্বালিয়ে মিছিল করতে পারি, অবস্থান-বিক্ষোভ করতেও পারি, আর হ্যাঁ আমরা যারা নিজেদেরকে কবি ভাবি, তারা তার আত্মার শান্তির জন্য, বিদ্রোহের জন্য কবিতা লিখতে পারি বটে, কিন্তু তাকে কি আর তার মায়ের বুকে ফিরিয়ে আনতে পারি ?
না পারি না, আর তাই যেটা আমার অবশ্যকর্তব্য মনে হল, সবচেয়ে প্রথমে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া আপানাদের সবার কাছে যারা রাজনকে নিয়ে, রাজন কে ভালবেসে কবিতা লিখেছিলেন, তাদের লেখায় আমার করা মন্তব্য গুলোর জন্য, আমি না জেনেই না বুঝেই শুধু কবিতা পড়ে তার গুনাগুন বিচার করে মন্তব্য দিয়েছিলাম, এখন যখন জানলাম, বুঝলাম কত সহজে একটা ছোট্ট জীবনের উপরে কলমের আঁচড় কেটে দিয়েছি। অনেকটা ওই শক্ত রডের মতই।
তাই রাজন, পারলে ক্ষমা করিস বাপ আমার, আমি বা আমরা তোর জন্য কবিতা লেখা ছাড়া আর কিছুই হয়ত করতে পারব না, ভগবান বা আল্লাহ এর কাছে মিনতি ছাড়া কিছু করতে পারব না, তবে হ্যাঁ, আর একটা জিনিশ আমি করতে পারব, আশা করি হয়ত আপনারা অনেকেই ইতিমধ্যেই করেছেন বা করবেন হয়ত, তা হল কয়েকটা মুহূর্ত শুধু চোখের জলে নীরবতা পালন। আমি করছি রাজন, তোর জন্য কাল থেকে,
আজ আর কোনও কবিতা আমি লিখব না,
কোনও কলমের আঁচড় আজ টানব না,
আজ শুধু একলা আমি, আর আমার রাজন
আজ শুধু কবির যন্ত্রণা অনুধাবন
আর আজ শুধুই নীরবতা পালন।
হয়ত আপনাদের বিব্রত করলাম, তাই সর্বশেষে আর একবার সবার কাছে ক্ষমা চাইছি কিন্তু বিশ্বাস করুন সবার কাছে আমার বক্তব্য পৌঁছানোর আর অন্য কোনও উপায় ছিল না।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোবারক হোসেন ২৩/০৮/২০১৫অসহায়ের র্অাত চিৎকার করা ছাড়া আর কিছু্ই করার থাকে না।
-
আবিদ আল আহসান ০৯/০৮/২০১৫Ki
-
সমরেশ সুবোধ পড়্যা ২৮/০৭/২০১৫আমি আপনার সঙ্গে সহমত পোষণ করছি। আপনার কাছে এটা জানতে পেরে আমি ও দুখিত / ব্যথিত। আপনার মনের কথা ব্যক্ত করেছেন, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
-
কিশোর কারুণিক ২১/০৭/২০১৫আবার , বেশ
-
বিমূর্ত পথিক ১৯/০৭/২০১৫শুধুই নিরবতা!!!!!!!!
-
T s J ১৭/০৭/২০১৫বিচার চাই?
-
সাইদুর রহমান ১৭/০৭/২০১৫রাজন হত্যার বিচার
দ্রুত সম্পন্ন হোক,
এই আশায় থাকলাম। -
জহরলাল মজুমদার ১৭/০৭/২০১৫ধন্যবাদ
-
জে এস সাব্বির ১৭/০৭/২০১৫রাজন হত্যাকারীদের ফাসি চাই ।
প্রশাসনের সর্বোচ্চ শাস্তি হয়ত পেতেও পারে ঐ নরপিচাশেরা । কিন্তু ভাবি ,আমাদের মানবতা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে !! -
কিশোর কারুণিক ১৭/০৭/২০১৫ভাল