www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বুমেরাং

ছেলের বিয়ে দিয়ে বৌমা নিয়ে এলুম খুব আনন্দ আর ধুমধাম করে। ওর বাপটা আজ থাকলে কি যে খুশি হত! যাকগে, সব সুখ তো কপালে সয় না। নিজের এক চিলতে জমির ওপর একটা ছোট্ট বাড়ি। খুব সুন্দর করে সাজানো। বউ হয়ে এসে থেকে ওর বাপের সঙ্গে ঝগড়া করে করে একটা একটা করে গুছিয়ে গুছিয়ে বাড়িটা তৈরি করেছি। নাম দিয়েছি-‘বাসা’। সে কৌতুক করে বলত-“কাকের না কোকিলের?”  আমি বলতাম,-“ভালো-বাসা।” তবে, তুমি এটাকে কাকের বাসা করেই রেখেছ। ভাইপো-ভাইঝি নিয়ে একপাল লোককে টানছো আর আমাকেও বাধ্য করছ। আমার বুঝি সাধ যায় না- খুব সুন্দর করে আমার সাধের বাসাটাকে গুছিয়ে আরও সুন্দর করে তুলি! তুমি ওদের চলে যেতে বলো। সে আবার  মুখচোরা। অগত্যা, আমাকেই আসরে নামতে হল। অনেক কষ্টে তাদের সবাইকে সরাতে পারলাম। এখন এটা আমার “ভালো-বাসা।”  
  দখিনের ঘরটা- যেটায় আমি এতদিন থাকতুম- সেটা ছেড়ে দিলুম ছেলে আর বৌমার জন্যে। উত্তরের ঘরটায় আমি থাকবো। একা মানুষ- ওটাতেই হয়ে যাবে। কদিন যেতে না যেতেই বৌমার আব্দার- ওই ঘরটা আমাকে ছাড়তে হবে। তার দূর সম্পর্কের ভাই এখানে থেকে পড়াশোনা করবে- তাই এখানেই থাকবে। আমি বললুম, “তাতে কি হয়েছে? সে থাকুক- আমিও ঘরটার এক কোণে থাকি।” কিন্তু, তা আর হল না।নিত্যিদিন অশান্তি-অশান্তি হতে হতে একদিন চরমে। আজ আমায় চলে যেতে হচ্ছে- সাধের বাড়িটা ছেড়ে- বাসাটা ছেড়ে-“ভালো-বাসা”টাকেও ছেড়ে-
 বোকা সেই কাকটার মতো মনে হচ্ছে নিজেকে-যে ভুল করে কোকিলের ডিমটাকে তা দিয়ে বড় করে দেখল সেটা নিজের নয়। তাই তাকে ঠুকরিয়ে তার বাসা থেকে উৎখাত করলো। আর আজ তার নিজেরই ডিমের ছানাটা তাকেই ঠুকরিয়ে- তারই নিজের হাতে গড়া আপন বাসা থেকেই উৎখাত করে তবেই ছাড়ল!
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১০০৩ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৪/০৯/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • মধু মঙ্গল সিনহা ২৩/০৮/২০১৮
    ভালো লাগল...
  • আবু সাইদ লিপু ২৬/০৯/২০১৭
    ভালোবাসা রইল
  • পূর্ণ ভাবের প্রতিফলন হয়েছে
  • সুন্দর
  • আজাদ আলী ২৪/০৯/২০১৭
    ভালো ভাবনা আপনার, ধন্যবাদ
  • মুক্তপুরুষ ২৪/০৯/২০১৭
    ভালো নতুন ধাচের লেখা😊
 
Quantcast