অ্যা জার্নি ফ্রম হার্ট টু দ্যা বার্ন ইউনিট
রোকেয়া হলের মোহনা বাংলাদেশকে ভালবাসত; ভালবাসত রায়েরবাগ কলোনির ইনান মাহমুদকেও।
সোমবার, দশটা ত্রিশ;
নীলক্ষেতের একটা বইয়ের দোকানে তাদের দেখা করার কথা ছিল। তারপর সস্তার কোন খিচুড়ি হোটেল থেকে সোজা টিএসসির সামনে। ফেসবুকের প্রোফাইলে তাদের সম্পর্কের ঘরটা এখন ‘ইন আ রিলেশনশিপ’। দেশে মুক্তিযুদ্ধ চলছে না; তবু ঢাকা জ্বলছে, অবরোধে, হরতালে, বিক্ষোভে। বাসা থেকে বেরোনোটা খুব একটা নিরাপদ নয়। পেট্রোল বোমা খুব সস্তা এখন। প্রতিদিন মানুষ মরছে।
মোহনা একবার অবাক হয়ে ইনানকে এক ফেসবুক বার্তায় বলেছিল, “আমারা একই কাম্পাসে আছি অথচ কখনও দেখা হইনি দেড় বছরেও, কি আশ্চর্য তাইনা?” ইনান জবাবে হেসেছিল, কারণ সে যে মোহনায় ভেসেছে বহুবার আড়াল থেকে। ইনানের নতুন প্রোফাইল পিকচারটা মোটেও ভাল লাগেনি মোহনার, দেখা হলেই বলবে ওকে। সোমবারটা আসতে এই প্রথম এতো দেরী হচ্ছে, অবরোধকে মনে হচ্ছে উৎসব, রোমাঞ্চ।
অবশেষে সোমবার এসেছিল; বেজেছিল সকালের ঘড়িতে দশটা তিরিশ, রায়েরবাগ থেকে নীলক্ষেত তখন বহুদূর... । দেশটা প্রেমেরও অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে, ভেঙে ভেঙে রাস্তা পাড় করা, কি ঝামেলারে বাবা! মতিঝিলের রাস্তায় আজ কোন ফুল কেও বিক্রি করছে না, হয়তো শাহবাগেও তাই, কিন্তু ফুল...। এরই মাঝে বিকট শব্দে কিছু পেট্রোল বোমা ফাটল, জ্বলল আগুন। ইনান তখন একটা অটোতে। তারপরই একটা হট্টগোল, অটোর গতি বাড়ছে, ইনান ঘামছে খুব, দূরে একটা মিছিলের মতো কিছু...। এরপর বেজেছে দুপুর একটা পনের, বিকেল চারটা পঁয়তাল্লিশ; মাগরিবের আজানে এসেছে গোধূলি ও সন্ধ্যা, মোহনা ফিরেছে হলে। কিন্তু ইনান মাহমুদ আর কখনও ফিরে আসেনি। না মোহনার কাছে, না মায়ের কাছে, না ক্যাম্পাসে। তার অনেকদিন পর ইনানের ডিপার্টমেন্টের এক ছেলের কাছে মোহনা জেনেছিল ইনানের কথা, বার্ন ইউনিটে এক ঘণ্টার মাঝেই ওর মৃত্যু হয়। অথচ কোথাও থামেনি কোন কোলাহল... । মোহনা কাঁদে...।
রোকেয়া হলের মোহনা বাংলাদেশকে ভালবাসত, ভালবাসত রায়েরবাগ কলোনির ইনান মাহমুদকেও।
মোহনা হয়তো এখনও ইনান মাহমুদকেই ভালবাসে, হয়তো সে ভালবাসে বাংলাদেশকেও,গণতন্ত্রকেও, অবরোধকেও, মন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠানকেও এবং পেট্রোল বোমাকেও...!!! যদিও আমি এ ব্যাপারে তেমন কিছুই আর জানিনা। আচ্ছা শেষমেশ বাংলাদেশটাই কি একটা বার্ন ইউনিট হয়ে যাবে নাতো? জানিনা। না; তা হতে পারেনা।
ভাল কথা, মোহনা এখন আর ফেসবুকে নেই; কোথায় আছে, তাও কেও জানেনা! কিছুদিন আগ পর্যন্ত দেখেছিলাম ইনানের ফেসবুক প্রোফাইলটা এখনও আছে,সম্পর্কের ঘরটায় এখনও লেখা ‘ইন আ রিলেশনশিপ’। প্রোফাইল পিকচারটা আর বদলানও হবেনা কোনদিন। খুব কষ্ট পেয়েছি। কাওকে খুব ভালবাসতে ইচ্ছে করছে আমৃত্যু। খুব বেশি।
ইনান ও মোহনারা ভাল থাকুক। ভাল থাকুক বাংলাদেশ। চিরকাল খালি পড়ে থাকুক হসপিটালের - বার্ন ইউনিট।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য :বিশেষ একটি অর্থ ও আঙ্গিক ফুটিয়ে তোলার স্বার্থে, বাংলায় 'ইংরেজি শিরোনাম' ব্যবহার করা হয়েছে)
সোমবার, দশটা ত্রিশ;
নীলক্ষেতের একটা বইয়ের দোকানে তাদের দেখা করার কথা ছিল। তারপর সস্তার কোন খিচুড়ি হোটেল থেকে সোজা টিএসসির সামনে। ফেসবুকের প্রোফাইলে তাদের সম্পর্কের ঘরটা এখন ‘ইন আ রিলেশনশিপ’। দেশে মুক্তিযুদ্ধ চলছে না; তবু ঢাকা জ্বলছে, অবরোধে, হরতালে, বিক্ষোভে। বাসা থেকে বেরোনোটা খুব একটা নিরাপদ নয়। পেট্রোল বোমা খুব সস্তা এখন। প্রতিদিন মানুষ মরছে।
মোহনা একবার অবাক হয়ে ইনানকে এক ফেসবুক বার্তায় বলেছিল, “আমারা একই কাম্পাসে আছি অথচ কখনও দেখা হইনি দেড় বছরেও, কি আশ্চর্য তাইনা?” ইনান জবাবে হেসেছিল, কারণ সে যে মোহনায় ভেসেছে বহুবার আড়াল থেকে। ইনানের নতুন প্রোফাইল পিকচারটা মোটেও ভাল লাগেনি মোহনার, দেখা হলেই বলবে ওকে। সোমবারটা আসতে এই প্রথম এতো দেরী হচ্ছে, অবরোধকে মনে হচ্ছে উৎসব, রোমাঞ্চ।
অবশেষে সোমবার এসেছিল; বেজেছিল সকালের ঘড়িতে দশটা তিরিশ, রায়েরবাগ থেকে নীলক্ষেত তখন বহুদূর... । দেশটা প্রেমেরও অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে, ভেঙে ভেঙে রাস্তা পাড় করা, কি ঝামেলারে বাবা! মতিঝিলের রাস্তায় আজ কোন ফুল কেও বিক্রি করছে না, হয়তো শাহবাগেও তাই, কিন্তু ফুল...। এরই মাঝে বিকট শব্দে কিছু পেট্রোল বোমা ফাটল, জ্বলল আগুন। ইনান তখন একটা অটোতে। তারপরই একটা হট্টগোল, অটোর গতি বাড়ছে, ইনান ঘামছে খুব, দূরে একটা মিছিলের মতো কিছু...। এরপর বেজেছে দুপুর একটা পনের, বিকেল চারটা পঁয়তাল্লিশ; মাগরিবের আজানে এসেছে গোধূলি ও সন্ধ্যা, মোহনা ফিরেছে হলে। কিন্তু ইনান মাহমুদ আর কখনও ফিরে আসেনি। না মোহনার কাছে, না মায়ের কাছে, না ক্যাম্পাসে। তার অনেকদিন পর ইনানের ডিপার্টমেন্টের এক ছেলের কাছে মোহনা জেনেছিল ইনানের কথা, বার্ন ইউনিটে এক ঘণ্টার মাঝেই ওর মৃত্যু হয়। অথচ কোথাও থামেনি কোন কোলাহল... । মোহনা কাঁদে...।
রোকেয়া হলের মোহনা বাংলাদেশকে ভালবাসত, ভালবাসত রায়েরবাগ কলোনির ইনান মাহমুদকেও।
মোহনা হয়তো এখনও ইনান মাহমুদকেই ভালবাসে, হয়তো সে ভালবাসে বাংলাদেশকেও,গণতন্ত্রকেও, অবরোধকেও, মন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠানকেও এবং পেট্রোল বোমাকেও...!!! যদিও আমি এ ব্যাপারে তেমন কিছুই আর জানিনা। আচ্ছা শেষমেশ বাংলাদেশটাই কি একটা বার্ন ইউনিট হয়ে যাবে নাতো? জানিনা। না; তা হতে পারেনা।
ভাল কথা, মোহনা এখন আর ফেসবুকে নেই; কোথায় আছে, তাও কেও জানেনা! কিছুদিন আগ পর্যন্ত দেখেছিলাম ইনানের ফেসবুক প্রোফাইলটা এখনও আছে,সম্পর্কের ঘরটায় এখনও লেখা ‘ইন আ রিলেশনশিপ’। প্রোফাইল পিকচারটা আর বদলানও হবেনা কোনদিন। খুব কষ্ট পেয়েছি। কাওকে খুব ভালবাসতে ইচ্ছে করছে আমৃত্যু। খুব বেশি।
ইনান ও মোহনারা ভাল থাকুক। ভাল থাকুক বাংলাদেশ। চিরকাল খালি পড়ে থাকুক হসপিটালের - বার্ন ইউনিট।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য :বিশেষ একটি অর্থ ও আঙ্গিক ফুটিয়ে তোলার স্বার্থে, বাংলায় 'ইংরেজি শিরোনাম' ব্যবহার করা হয়েছে)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
টি আই রাজন ১৩/০৬/২০১৪আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এখন এটাকে দেশ বলেই ধরা যায় না। এটা এখন ড্যাশ হয়ে গেছে. যে ড্যাশ ( - ) দ্বারা ইচ্ছে হলে যা ইচ্ছে করা যায়, বোঝা যায়।
-
কবি মোঃ ইকবাল ১০/০৬/২০১৪ভালো লাগলো।