ম্যারী নিবাস
""🌿🌹" ম্যারী নিবাস ""🌹🌿"
প্রথম পর্ব
============
অনার্স ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা কোন ভাবে টিমিয়ে টিমিয়ে চললো। পরীক্ষা সমাপ্ত ঘোষণা করে বিশ্ব বিদ্যালয় কতৃপক্ষ অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করে ,ছাত্রদের হল ছাড়ার ঘোষনা করলো।
রাগিব রুহিদ অনেক কাছের বন্ধু। একজন আরেকজনকে ছাড়া কিছুই বুঝেনা। এক আত্মার আত্মীয় ওরা দুজন। পড়া লেখায় দুই জন সমান। রাগীবকে বন্ধু হিসেবে পেয়ে রুহিদ গর্বিত। তার ধারণা রাগিব ভবিষ্যতে নিজের কর্ম জীবনে প্রতিভার ছাপ রাখবে। রাগিব ও রুহিদকে অনেক ভালো বাসে। সেই ভালোবাসায় নেই কোনো স্বার্থ, নেই কোনো লোভ, আছে শুধু হৃদয়ের অনুভূতি, অনুরাগ।
রুহিদ রাগীবকে বললো, চল আমাদের গ্রাম থেকে কয়েকদিন বেড়িয়ে আসি। এখন গ্রীষ্ম কাল।গ্রামের বাড়িতে এই সময় উৎসব উৎসব ভাব থাকে। আম কাঁঠালের মৌ মৌ গন্ধে পুরো বাড়ী ভরে থাকে।
রাগীব ঢাকা শহরের জন সমুদ্রের মাঝে বড় হয়েছে। গ্রামের বাড়ি তেমন একটা যাওয়া হয় না। রুহিদের প্রস্তাবে রাগিব ভীষণ খুশি হয়ে রুহিদকে জড়িয়ে ধরে বললো, সত্যিই আমাকে নিয়ে যাবি ?চল মা বাবার অনুমতি নিয়ে আসি।
রুহিদের গ্রামের বাড়ী শিরাজগঞ্জ জেলার শৈলজানা গ্রামে।ছুটি পেলেই গ্রামে চলে যায়। অনির্দিষ্ট কালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার কারণে রাগীবকে প্রস্তাবটা দিল।
দুই বন্ধু রাগিবদের বাসায় ড্রইং রুমে বসে আলাপ করছে। কি ভাবে যাবে, কি করবে আনন্দে আত্মহারা। এটাও ভাবছে মা বাবা যেতে দিবে তো। যে ভাবেই হোক মা বাবাকে রাজি করাতে হবে।
আফজাল সাহেব মসজিদ থেকে আসরের নামাজ পরে বাসায় ঢুকে ছেলেকে দেখে খুশি হয়ে বললো, বাবা রাগিব তোর পরীক্ষা তো আজ থেকে শেষ তাই না? জী বাবা। ভালোই হলো কয়েকদিন আরাম করে ঘুমিয়ে নাও। যা ধকল গেল তোমাদের উপর। রাগীব কি ভাবে বলবে বাবাকে ভেবে পাচ্ছে না।
আলেয়া বেগম ওদের সাথে যোগ দিল। আলেয়া বেগম রুহিদের বাড়ীর সবার ভালো মন্দ খোঁজ খবর জানতে চাইলো কবে বাড়ি যাবে জানতে চাইলো। খালাম্মা সেটা নিয়েই ভাবছি। রাগীবকে সংগে নিয়েই আমাদের গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যেতে চাই। খালুজান আর আপনার অনুমতি পেলে আজই আমরা রওনি হয়ে যাব। আপনি একটু খালুজানকে বুঝিয়ে বলেন।
আলেয়া বেগম অবাক হয়ে রাগীবকে জিজ্ঞেস করলো কিরে তুই কি রুহিদের বাড়ী যেতে চাস? জি মা তুমি বাবাকে একটু বলনা! আফজাল সাহেব সবার কথা শুনে বললো, যাক ঘুরে আসুক। অনেক দিন রাগীবের তেমন কোথাও যাওয়া হয় না।
গ্রামের সেই নির্জন পরিবেশ যে কি অপুর্ব শোভা তা বলে বোঝানো যায় না। ভাষায় লেখাতো একেবারে অসম্ভব। এখনো ছেলে বেলার কথা মনে হলে অনেক কিছু ভেসে আসে চোখের সামনে। চৈত্রমাস খাঁ খাঁ রোদ্দুর। বাড়ীর চারপাশের গাছ পালায় নতুন পাতার সমাহার। তাতে যেন আদরের স্পর্শ বুলিয়ে দিয়ে যায় শেষ বিকেলের রোদ। মাটিতে গারো ছায়া পরে। কৃষ্ণচূড়া কচি পাতার সাথে সাথে তার ফুলের ঝুড়ি ফোটানোর আগে ছোট ছোট কলি দিয়ে সাজিয়ে ফেলে। এ দৃশ্য প্রকৃতির। যে দিকে তাকাই সবুজ গাছ ,তাতে বসে নানান রংয়ের পাখ-পাখালি গান করে সকাল বিকাল। বড় বড় ফুলের গাছ। গন্ধে ঘর বারান্দা ভরে দেয়। বাগানের ফুল গুলো হেসে হেসে দুলে দুলে কথা বলে। গ্রামের সেই আকাশ সেই বাতাস, যেন অন্য রঙে, অন্য সুরে গান গাইতে।
ও
তোমাকে কাছে পাবো
একান্ত সান্নিধ্যে তুমি
হয়তোবা কোনদিন হারিয়ে যাবে
তাই পূর্ণতার সাক্ষাত মেলেনি ।
প্রিয়তমা মানবী আমার
কি ভাবে কি নামে তোমার
অনন্ত ঘুম ভাঙ্গাই
বুঝাই তুমি শুধু নারী নও
অসম্ভব সুন্দরের এক মাত্র প্রতিনিধি।
কবিতা লিখতে লিখতে কোথায় হারিয়ে যেতাম। পথে ঘাটে বাহারি রংয়ের বনফুল। বনফুল গুলো আকুতি ভরা মন নিয়ে চেয়ে থাকতো। বনফুল বলে ওদের অবহেলা করতাম ভেবে, ওরা যেন ইশারায় ডাকতে। কাছে যেতেই সুগন্ধে মন ভরিয়ে দিতো। শাল গাছের কচি পাতা গুলো সবুজ রঙের পায়রা সাজিয়ে বসে থাকতো। এ গুলো চোখে দেখার ব্যপার।
প্রথম পর্ব
============
অনার্স ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা কোন ভাবে টিমিয়ে টিমিয়ে চললো। পরীক্ষা সমাপ্ত ঘোষণা করে বিশ্ব বিদ্যালয় কতৃপক্ষ অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করে ,ছাত্রদের হল ছাড়ার ঘোষনা করলো।
রাগিব রুহিদ অনেক কাছের বন্ধু। একজন আরেকজনকে ছাড়া কিছুই বুঝেনা। এক আত্মার আত্মীয় ওরা দুজন। পড়া লেখায় দুই জন সমান। রাগীবকে বন্ধু হিসেবে পেয়ে রুহিদ গর্বিত। তার ধারণা রাগিব ভবিষ্যতে নিজের কর্ম জীবনে প্রতিভার ছাপ রাখবে। রাগিব ও রুহিদকে অনেক ভালো বাসে। সেই ভালোবাসায় নেই কোনো স্বার্থ, নেই কোনো লোভ, আছে শুধু হৃদয়ের অনুভূতি, অনুরাগ।
রুহিদ রাগীবকে বললো, চল আমাদের গ্রাম থেকে কয়েকদিন বেড়িয়ে আসি। এখন গ্রীষ্ম কাল।গ্রামের বাড়িতে এই সময় উৎসব উৎসব ভাব থাকে। আম কাঁঠালের মৌ মৌ গন্ধে পুরো বাড়ী ভরে থাকে।
রাগীব ঢাকা শহরের জন সমুদ্রের মাঝে বড় হয়েছে। গ্রামের বাড়ি তেমন একটা যাওয়া হয় না। রুহিদের প্রস্তাবে রাগিব ভীষণ খুশি হয়ে রুহিদকে জড়িয়ে ধরে বললো, সত্যিই আমাকে নিয়ে যাবি ?চল মা বাবার অনুমতি নিয়ে আসি।
রুহিদের গ্রামের বাড়ী শিরাজগঞ্জ জেলার শৈলজানা গ্রামে।ছুটি পেলেই গ্রামে চলে যায়। অনির্দিষ্ট কালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার কারণে রাগীবকে প্রস্তাবটা দিল।
দুই বন্ধু রাগিবদের বাসায় ড্রইং রুমে বসে আলাপ করছে। কি ভাবে যাবে, কি করবে আনন্দে আত্মহারা। এটাও ভাবছে মা বাবা যেতে দিবে তো। যে ভাবেই হোক মা বাবাকে রাজি করাতে হবে।
আফজাল সাহেব মসজিদ থেকে আসরের নামাজ পরে বাসায় ঢুকে ছেলেকে দেখে খুশি হয়ে বললো, বাবা রাগিব তোর পরীক্ষা তো আজ থেকে শেষ তাই না? জী বাবা। ভালোই হলো কয়েকদিন আরাম করে ঘুমিয়ে নাও। যা ধকল গেল তোমাদের উপর। রাগীব কি ভাবে বলবে বাবাকে ভেবে পাচ্ছে না।
আলেয়া বেগম ওদের সাথে যোগ দিল। আলেয়া বেগম রুহিদের বাড়ীর সবার ভালো মন্দ খোঁজ খবর জানতে চাইলো কবে বাড়ি যাবে জানতে চাইলো। খালাম্মা সেটা নিয়েই ভাবছি। রাগীবকে সংগে নিয়েই আমাদের গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যেতে চাই। খালুজান আর আপনার অনুমতি পেলে আজই আমরা রওনি হয়ে যাব। আপনি একটু খালুজানকে বুঝিয়ে বলেন।
আলেয়া বেগম অবাক হয়ে রাগীবকে জিজ্ঞেস করলো কিরে তুই কি রুহিদের বাড়ী যেতে চাস? জি মা তুমি বাবাকে একটু বলনা! আফজাল সাহেব সবার কথা শুনে বললো, যাক ঘুরে আসুক। অনেক দিন রাগীবের তেমন কোথাও যাওয়া হয় না।
গ্রামের সেই নির্জন পরিবেশ যে কি অপুর্ব শোভা তা বলে বোঝানো যায় না। ভাষায় লেখাতো একেবারে অসম্ভব। এখনো ছেলে বেলার কথা মনে হলে অনেক কিছু ভেসে আসে চোখের সামনে। চৈত্রমাস খাঁ খাঁ রোদ্দুর। বাড়ীর চারপাশের গাছ পালায় নতুন পাতার সমাহার। তাতে যেন আদরের স্পর্শ বুলিয়ে দিয়ে যায় শেষ বিকেলের রোদ। মাটিতে গারো ছায়া পরে। কৃষ্ণচূড়া কচি পাতার সাথে সাথে তার ফুলের ঝুড়ি ফোটানোর আগে ছোট ছোট কলি দিয়ে সাজিয়ে ফেলে। এ দৃশ্য প্রকৃতির। যে দিকে তাকাই সবুজ গাছ ,তাতে বসে নানান রংয়ের পাখ-পাখালি গান করে সকাল বিকাল। বড় বড় ফুলের গাছ। গন্ধে ঘর বারান্দা ভরে দেয়। বাগানের ফুল গুলো হেসে হেসে দুলে দুলে কথা বলে। গ্রামের সেই আকাশ সেই বাতাস, যেন অন্য রঙে, অন্য সুরে গান গাইতে।
ও
তোমাকে কাছে পাবো
একান্ত সান্নিধ্যে তুমি
হয়তোবা কোনদিন হারিয়ে যাবে
তাই পূর্ণতার সাক্ষাত মেলেনি ।
প্রিয়তমা মানবী আমার
কি ভাবে কি নামে তোমার
অনন্ত ঘুম ভাঙ্গাই
বুঝাই তুমি শুধু নারী নও
অসম্ভব সুন্দরের এক মাত্র প্রতিনিধি।
কবিতা লিখতে লিখতে কোথায় হারিয়ে যেতাম। পথে ঘাটে বাহারি রংয়ের বনফুল। বনফুল গুলো আকুতি ভরা মন নিয়ে চেয়ে থাকতো। বনফুল বলে ওদের অবহেলা করতাম ভেবে, ওরা যেন ইশারায় ডাকতে। কাছে যেতেই সুগন্ধে মন ভরিয়ে দিতো। শাল গাছের কচি পাতা গুলো সবুজ রঙের পায়রা সাজিয়ে বসে থাকতো। এ গুলো চোখে দেখার ব্যপার।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।