www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

মেঘলাকে মনে পড়ে

মেঘলা নামের মেয়েটির সাথে যেদিন আমার প্রথম দেখা হয় সেদিন আকাশেও খুব মেঘ করেছিলো। চতুর্দিকে ক্ষণে ক্ষণে বেজে উঠছিলো উদ্ধত ঝড়ের বজ্রধ্বনি। আমি তবুও নির্বিকার দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমার একপাশের কিছু দুরত্বে একটি নদী বয়ে যাচ্ছে। অন্যপাশে একরাশ হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো মেঘলা নামের মেয়েটি। সে কী গগনবিদারী হাসি! যেনো একটা প্রলয়!

দেখে বুঝার কোনো উপায়ই ছিলোনা যে, কিছু সময় আগেই চারটে যুবক মিলে ছিবড়ে খেয়ে নিয়েছে তার ভিতরের সজ্জিত বাগানটিকে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, 'তুমি হাসছো কেনো? এমন সময় কেউ হাসে?' সে কিছুই বললো না। শুধু হেসেই গেলো।

আমি শুধু দেখছি আর মোহিত হচ্ছি। এই হাসিকে উপেক্ষা করার সাধ্য ছিলোনা তখন। পাছে আমি ফিরে আসি, তখন মেয়েটি নদীর দিকে আঙুল তুলে বললো, 'ঐ যে দেখো বহমান নদী, তার সাথে আমার কতো অমিল! একপাশে পাড় ভাঙছে আর অন্যপাড়ে চরের দামে গা ভাসাতে পারছে। কিন্তু, আমার কিছুই হলো না।'

তখন আমি তাকে একটি তালগাছ দেখিয়ে বলেছিলাম, 'তাকে দেখো, সেও একটা নারী। প্রতিবছর সন্তানের জননী হয়। তারপর একদল মানুষ তার সন্তানদের চুরি করে নেয়। আরেকদল মানুষ তার বুক ছিড়ে সুধাটুকুও বের করে আনে। তবুও সে কি ভেঙে পড়েছে?' মেয়েটি কিছুই বললো না। আবার একগাল হেসে হাঁটতে হাঁটতে চলে গেলো।

আমি শুধু তার পা ফেলে চলে যাওয়ার রাস্তায় তাকিয়ে ছিলাম। আমি জানতাম, এই সমাজ জানে হয়তো সেও জানতো, আজ থেকে তাকে নষ্টামেয়ে ছাড়া আর কিছুই বলবেনা কেউ।

তারপর কী হয়েছিলো তা জানতে পারিনি। মেয়েটি কি আজো হাসছে? হতেও তো পারে। কারণ এই সমাজে বেঁচে থাকা অজস্র মেঘলারা আজো হাসছে। নাকি পৃথিবী আর স্বর্গের মাঝামাঝি থাকা একটি বৈদ্যুতিক পাখা আর একটি উড়নার নিচে আরেকটি ঘর বেঁধে নিয়েছিলো সেদিন?

আমি আর কিছুই জানতে পারিনি; সেদিন কোথায় গিয়েছিলো, কতোদূর গিয়েছিলো মেঘলা নামের মেয়েটি।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৯৭১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২০/০৫/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • দারুন...
  • শরীফ আহমাদ ২০/০৫/২০১৭
    চমৎকার লেখণি মেঘলাকে নিয়ে.....
  • Mon bhore gelo
 
Quantcast