উন্নয়ন এবং বাংলাদেশ
উন্নয়ন কি? উন্নয়ন হলো কোনো কিছুর কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন বা উত্তরণ। উন্নয়ন’ হলো এমন একটি তাৎপর্যপূর্ণ শব্দ, যার কোনো সুনির্দিষ্ট অর্থ নেই। ‘উন্নয়ন’ শব্দটির সমার্থক শব্দসমূহের মধ্যে আছে বিস্তৃতি, প্রসারণ, বিবর্তন, বৃদ্ধি, অগ্রগতি, উত্তরণ, বিকাশ ইত্যাদি। আবার ‘উন্নয়ন’ শব্দের বিপরিতার্থক শব্দগুলোর মধ্যে যা আছে তা হলো- প্রত্যাবৃত্তি, পশ্চাদগমন করা,।
উন্নয়ন একটি অব্যাহত পরিবর্তন প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে কোনো দেশের জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি ঘটবে, সঞ্চয় বৃদ্ধি পাবে, সম্পদের সুষম বণ্টন সম্পন্ন হবে এবং বৃহত্তর জনগোষ্ঠির মৌলিক চাহিদা অপেক্ষাকৃত স্থায়ীভাবে পূরণ করা সম্ভব হয়।অভিধানে উন্নয়নকে সংক্ষেপে বলা হয়েছে, “A process of unfolding, maturing and evolving.”
একটি দেশের উন্নয়ন বলতে সে দেশের নাগরিকদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, সংস্কৃতিক, স্বাস্থ্যগত, অবকাঠামোগত, পরিবেশগত উন্নয়নকে বুঝায়।
জাতিসঙ্ঘ উন্নয়ন কর্মসুচির (UNDP) মতে, উন্নয়ন বলতে এমন একটি প্রক্রিয়াকে বোঝায় যা মানুষকে তার পছন্দমতো জীবনযাত্রার সুবিধা ও মান বেছে নেয়ার সুযোগ দেয়।
অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছেন্ম “উন্নয়ন হলো মানুষের স্বাধীনতাকে সম্প্রসারিত করার প্রক্রিয়া”। তিনি মনে করেন, উন্নয়ন মানে স্বাধীনতা। নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন প্রমাণ করেছেন যে, শুধু নিম্ন আয়ই নয়; স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য ইত্যাদি মৌলিক চাহিদার পশ্চাদমুখীতাই দারিদ্রের অন্যতম কারণ।
উন্নয়ন ধারণার বিবর্তনকে এভাবে চিহ্নিত করা যায়। উন্নয়ন = প্রবৃদ্ধি + সমতা + জনগণের অংশগ্রহণ।।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বাংলাদেশ বর্তমানে নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। কিছুদিন আগেও বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় ছিল।
বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২০০৫ সালের ৫৪৩ ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৬১০ ডলারে উন্নীত হয়েছে। দারিদ্র্যের হার ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২২ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে।
একটি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার দৃশ্যমান দিক হচ্ছে অবকাঠামােগত উন্নয়ন। এর মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও জীবনমানের গতিপ্রকৃতি অনুধাবন করা যায়। গত এক দশকে বাংলাদেশের এই অবকাঠামােগত উন্নয়ন চোখে পড়ার মতাে।
২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের গড় উৎপাদন প্রবৃদ্ধির (জিডিপি) হার ছিল ৫.৪ শতাংশ এবং মাথাপিছু আয় ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার (প্রায় ৪৫,০০০ টাকা)। অথচ ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এই হার ৮.১৩ শতাংশ এবং মাথাপিছু আয় ১৯০৯ মার্কিন ডলার (প্রায় ১,৬১,০০০ হাজার টাকা)। শুধু মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে তা-ই নয়, বেড়েছে মানুষের গড় আয়ু। বাজেটের আকার রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে
প্রযুক্তিগত উন্নয়ন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে আরাে গতিশীল করে তুলছে। বর্তমানে দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের আয় ১০০ কোটি ডলার।বাংলাদেশ প্রযুক্তি বিশ্বে অর্জন করে নিয়েছে নিজেদের একটি সম্মানজনক স্থান। বিশেষজ্ঞরা তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক এই উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে আখ্যায়িত করছেন ডিজিটাল নবজাগরণ হিসেবে। দেশে ডিজিটাল বাংলাদেশ ধারণার সঙ্গে মানুষের জীবনে এর বড় প্রভাবও দেখা গেছে। বড় পরিবর্তন এসেছে সবকিছুতেই।এতে কর্মসংস্থান যেমন বেড়েছে, তেমনি অনেকের যাতায়াতেও সুবিধা হয়েছে। স্মার্টফোন ব্যবহারকারী বাড়ায় নতুন উদ্যোক্তাও সৃষ্টি হয়েছে।
দেশে প্রযুক্তির ব্যবহার ও নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের বর্তমান ধারা বজায় থাকলে আগামী এক দশকের মধ্যে বাংলাদেশ নিঃসন্দেহে উন্নত বিশ্বের কাতারে পৌঁছে যাবে।
বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা এখন পুরাে বিশ্বের জন্য দৃষ্টান্ত। এর নাম দেওয়া যেতে পারে অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ। অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে যে উন্নয়ন হয়েছে, সেটাকে ‘মিরাকল’ (অলৌকিক ঘটনা) বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে একটি গবেষণা গ্রন্থে।বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে উন্নয়নের রোল মডেল। পরিশেষে বলা যেতে পারে দেশের এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ অচিরেই বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলোর কাতারে পৌঁছাতে পারবে।
উন্নয়ন একটি অব্যাহত পরিবর্তন প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে কোনো দেশের জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি ঘটবে, সঞ্চয় বৃদ্ধি পাবে, সম্পদের সুষম বণ্টন সম্পন্ন হবে এবং বৃহত্তর জনগোষ্ঠির মৌলিক চাহিদা অপেক্ষাকৃত স্থায়ীভাবে পূরণ করা সম্ভব হয়।অভিধানে উন্নয়নকে সংক্ষেপে বলা হয়েছে, “A process of unfolding, maturing and evolving.”
একটি দেশের উন্নয়ন বলতে সে দেশের নাগরিকদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, সংস্কৃতিক, স্বাস্থ্যগত, অবকাঠামোগত, পরিবেশগত উন্নয়নকে বুঝায়।
জাতিসঙ্ঘ উন্নয়ন কর্মসুচির (UNDP) মতে, উন্নয়ন বলতে এমন একটি প্রক্রিয়াকে বোঝায় যা মানুষকে তার পছন্দমতো জীবনযাত্রার সুবিধা ও মান বেছে নেয়ার সুযোগ দেয়।
অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছেন্ম “উন্নয়ন হলো মানুষের স্বাধীনতাকে সম্প্রসারিত করার প্রক্রিয়া”। তিনি মনে করেন, উন্নয়ন মানে স্বাধীনতা। নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন প্রমাণ করেছেন যে, শুধু নিম্ন আয়ই নয়; স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য ইত্যাদি মৌলিক চাহিদার পশ্চাদমুখীতাই দারিদ্রের অন্যতম কারণ।
উন্নয়ন ধারণার বিবর্তনকে এভাবে চিহ্নিত করা যায়। উন্নয়ন = প্রবৃদ্ধি + সমতা + জনগণের অংশগ্রহণ।।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বাংলাদেশ বর্তমানে নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। কিছুদিন আগেও বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় ছিল।
বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২০০৫ সালের ৫৪৩ ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৬১০ ডলারে উন্নীত হয়েছে। দারিদ্র্যের হার ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২২ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে।
একটি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার দৃশ্যমান দিক হচ্ছে অবকাঠামােগত উন্নয়ন। এর মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও জীবনমানের গতিপ্রকৃতি অনুধাবন করা যায়। গত এক দশকে বাংলাদেশের এই অবকাঠামােগত উন্নয়ন চোখে পড়ার মতাে।
২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের গড় উৎপাদন প্রবৃদ্ধির (জিডিপি) হার ছিল ৫.৪ শতাংশ এবং মাথাপিছু আয় ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার (প্রায় ৪৫,০০০ টাকা)। অথচ ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এই হার ৮.১৩ শতাংশ এবং মাথাপিছু আয় ১৯০৯ মার্কিন ডলার (প্রায় ১,৬১,০০০ হাজার টাকা)। শুধু মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে তা-ই নয়, বেড়েছে মানুষের গড় আয়ু। বাজেটের আকার রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে
প্রযুক্তিগত উন্নয়ন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে আরাে গতিশীল করে তুলছে। বর্তমানে দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের আয় ১০০ কোটি ডলার।বাংলাদেশ প্রযুক্তি বিশ্বে অর্জন করে নিয়েছে নিজেদের একটি সম্মানজনক স্থান। বিশেষজ্ঞরা তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক এই উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে আখ্যায়িত করছেন ডিজিটাল নবজাগরণ হিসেবে। দেশে ডিজিটাল বাংলাদেশ ধারণার সঙ্গে মানুষের জীবনে এর বড় প্রভাবও দেখা গেছে। বড় পরিবর্তন এসেছে সবকিছুতেই।এতে কর্মসংস্থান যেমন বেড়েছে, তেমনি অনেকের যাতায়াতেও সুবিধা হয়েছে। স্মার্টফোন ব্যবহারকারী বাড়ায় নতুন উদ্যোক্তাও সৃষ্টি হয়েছে।
দেশে প্রযুক্তির ব্যবহার ও নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের বর্তমান ধারা বজায় থাকলে আগামী এক দশকের মধ্যে বাংলাদেশ নিঃসন্দেহে উন্নত বিশ্বের কাতারে পৌঁছে যাবে।
বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা এখন পুরাে বিশ্বের জন্য দৃষ্টান্ত। এর নাম দেওয়া যেতে পারে অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ। অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে যে উন্নয়ন হয়েছে, সেটাকে ‘মিরাকল’ (অলৌকিক ঘটনা) বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে একটি গবেষণা গ্রন্থে।বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে উন্নয়নের রোল মডেল। পরিশেষে বলা যেতে পারে দেশের এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ অচিরেই বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলোর কাতারে পৌঁছাতে পারবে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
খায়রুল আহসান ২৩/১০/২০২১সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটগুলোতে গেলে বোঝা যায়, "ডিজিটাল নবজাগরণ" কাকে বলে!