www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

অতৃপ্ত পরিণতি

প্রায় এক দশক ধরে নিজেদের মায়া ও ভালোবাসার সুঁতোয় বেঁধে রেখেছে রাগীব ও লুনা। স্কুল জীবন থেকে তাদের প্রেমের সম্পর্ক। নানান আশা ও স্বপ্ন নিয়ে তারা বিয়ে করেছে  বছর ছয়েক হলো। কিন্তু বিয়ের প্রথম দিকে রাগীবের পরিবার তাদের বিয়ে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। অন্যদিকে লুলার পরিবার ঠিকই মেনে নিয়েছিল।  নিরুপায় হয়ে রাগীর তার কর্মস্থলের পাশে একটি ভাড়া বাসিতে লুনাকে নিয়ে সংসার জীবন শুধু করে। উল্লেখ্য  রাগীব একটি এনজিও অফিসে ছোটো-খাটো চাকুরী করে প্রায় সাত বছর ধরে। বছর খানেক পর রাগীবের বাবা মা বিয়ে মেনে নেয় তাদেরকে বাড়িতে নিয়ে যায়। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিলো। রাগীব ও লুনা সুখে দিনাতিপাত করতে লাগলো। কিন্তু একটা দুঃখের বিষয় যেতে যেতে সাত বছর হয়ে গেল তবুও  লুনার কেনো সন্তান হচ্ছিলো না। শাশুড়ী ও এসে তাকে বকাঝকা করে। আর কতকাল অপেক্ষা করবো?,বাড়ীতে কোনো বাচ্চা নেই,আমরা কি দাদু হবো না,আমাদের বংশ আর বড় হবে না ইত্যাদি ইত্যাদি।

চারিদিকের মানুষের নানা কথার মাঝে রাগীবের শান্তনা,ভরসায় সংসার টি টিকিয়ে রইলো। এভাবে দিন যেতে যেতে বিয়ের আট বছরের মাথায় রাগীর দম্পতির ঘর আলো করে ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হলো। তখন পরিবারের সবার কি আনন্দ । সকলে মিলে মেয়েটির নাম রাখলো রুবাইদা। শুরু থেকে রুবাইদার আকৃতিগত কিছু সমস্যার কারনে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলো সবাই। কিন্তু যতই দিন এগুতে লাগলো ততই তাদের কপালে চিন্তার ভাজ কারণ প্রায় দশ বছর হয়ে গেলো রুবাইদার তবুও তার একটুও গ্রোথ হচ্ছিল না। একটু অাধটু কথা বলতে পারে, খাবার চিবিয়ে খেতে পারে কিন্তু হাঁটতে পারেনা, শরীরের গঠন ও সেই এক বছরেই রয়ে গেলো।

একপর্যায়ে তারা একজন ভালো ডাক্তারের শরণাপন্ন হলো। ডাক্তার জানালেন রুবাইদা এক অদ্ভুত জীণগত রোগে আক্রান্ত। যে রোগটি পৃথিবীতে বিরল। হাতেগোনা কিছু মানুষ এ রোগে আক্রান্ত এবং এ রোগের কোনো সমাধান এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি তাই চিকিৎসাবিজ্ঞানে রোগটির নাম এক্স সিনড্রোম। বিজ্ঞানীরা এই রোগ থেকে মুক্তির জন্য গবেষণা করে যাচ্ছে ন। রাগীব দম্পতি বর্ণনা শুনে আরও দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলো। কয়দিন পর কয়েকজন ডাক্তার রুবাইদাকে গ্রোথ হরমোন দিয়েছিলো তাতেও কাজ হয়নি। রাগীব ভাবতো নিশ্চয়ই এই রোগের একদিন চিকিৎসা সম্ভব হবে।  এরই মাঝে এক এক করে সাত বছর কেটে গেলো। এরপর হঠাৎ রুবাইদা ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়লো কোনো ওষুধে কাজ হচ্ছিল না। এর কয়দিন  রুবাইদা মারা গেলো। রাগীব ও লুনা শোকাহত হলো কারণ তারা নিঃস হয়ে গেলো। মৃত্যুকালে রুবাইদার বয়স হয়েছিলো সতেরো বছর। যা নিতান্তই ক্যালেন্ডারের হিসেবে বয়স।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৫৭৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৬/০৯/২০২১

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • ভালো লেখা। শুভেচ্ছা অবিরাম।
  • বেশ।
  • মাহতাব বাঙ্গালী ২৩/০৯/২০২১
    pathetic
  • ন্যান্সি দেওয়ান ১৮/০৯/২০২১
    Nice
    • ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা 🥀
  • ফয়জুল মহী ১৭/০৯/২০২১
    চমৎকার কথামালায় সাজিয়েছেন আপনার লিখনশৈলী।
    • সুব্রত ভৌমিক ২৩/০৯/২০২১
      খুব দুঃখের গল্প
      সত্য না হলেই ভালো।
      ********
      সুন্দর লিখেছেন।
 
Quantcast