নীতিন ভাল নেই(দ্বিতীয় পর্ব)
শ্রাবণ মাস কিন্তু বৃষ্টি নেই। শ্রাবণের বৃষ্টি নিয়ে অনেক কবিতা লেখা হয়েছে, এবার রোদ নিয়ে লেখা উচিত। বাচ্চাদের পড়া উচিত, “বাংলাদেশে ঋতু ছয়টি। গ্রীষ্মকাল, গরমকাল, গরম গরমকাল, অল্প গরম কাল, আরেকটু অল্প গরম কাল, আবার গরমকাল।”
রাস্তার পাশের একটা গাছের ছায়ায় রিকশাটা রেখে তার সিটের উপর বসে, হুডের উপর মাথা দিয়ে বেশ আরাম করে ঘুমাচ্ছে একজন রিকশাওয়ালা। তার পড়নে একটা রঙ জ্বলে যাওয়া লুঙ্গি আর শার্ট। শার্টের বোতামগুলো সব খোলা। বুকচেরা শার্টের ফাঁকে তাই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে পশমভরা বুক, শুকনো কালচে বাদামী পেট। পায়ে এক জোড়া লাল রঙের প্লাস্টিকের জুতা। লুঙ্গিটা পায়ের গোড়ালি থেকে বেশ খানিকটা উপরে উঠে আছে। কোনদিকেই তার কোন হুঁশ নেই। সে এখন শুধুই একজন ঘুমন্ত মানুষ। এই মানুষকে দেখে কে বলবে, এর ঘরে ভাত নেই? যাইহোক, ঘুমন্ত মানুষ দেখার মধ্যে একটা তৃপ্তি আছে। কারণ এ জগতে ঘুম বড় দামি জিনিস। সে নিজে না এলে, তাকে আনা বড় কঠিন। এ জগতে সেই তো সবচেয়ে বড় ভাগ্যবান যে যখন তখন ঘুমাতে পারে।
রিকশাওয়ালাটার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে একজন। নীতিন। তার এখন রিকশার খুব দরকার। কিন্তু সে লোকটির এত সুন্দর ঘুমটা ভাঙাতে চাইছে না। তাই সে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করল। না, কোন রিকশা পাওয়া গেল না। তাই এই রিকশাওয়ালাকেই ডাকতে গেল সে।
“ওই, ড্রাইভার, ড্রাইভার” বেশ জোরেশোরেই বলল নীতিন। রিকশাওয়ালাটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে উঠে দাঁড়াতে যেতেই তার লুঙ্গিটা তরতর করে নিচে নামতে লাগল। সে তড়িঘড়ি দুইহাতে টান দিয়ে কোনরকমে সামাল দিল। এই ভয়ংকর দুর্ঘটনার রেশটা সামলে নিয়ে সে বলল, “কি হইছে, ডাকলেন কা?”
“যাবে?”
“ওই মিয়া, দেহেন না ঘুমাইতাছি। যাওনের হইলে ঘুমাইতাম? আজিব পাবলিক।”
“আপনি পরে ঘুমিয়ে নেবেন। এখন চলুন।”
“কইলাম তো যামু না। অন্য রিকশা দেহেন।”
“অন্য রিকশা পেলে আপনাকে এমনিতেও ডাকতাম না। এখানে রিকশা পাওয়া যায় না। আমার খুব জরুরী দরকার। চলুন। যা ভাড়া, তার ডবল দেব।”
এবার বেশ খানিকটা নীরস মুখে রিকশাওয়ালা বলল,
“চলেন, যাই তাইলে। যাইবেন কই?”
“চল,বলছি।”
রিকশার লাল সিটটাতে উঠে বসল নীতিন। রিকশা চলতে শুরু করেছে শ্রাবণের ঝা ঝা রোদের রাজপথে। [চলবে]
রাস্তার পাশের একটা গাছের ছায়ায় রিকশাটা রেখে তার সিটের উপর বসে, হুডের উপর মাথা দিয়ে বেশ আরাম করে ঘুমাচ্ছে একজন রিকশাওয়ালা। তার পড়নে একটা রঙ জ্বলে যাওয়া লুঙ্গি আর শার্ট। শার্টের বোতামগুলো সব খোলা। বুকচেরা শার্টের ফাঁকে তাই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে পশমভরা বুক, শুকনো কালচে বাদামী পেট। পায়ে এক জোড়া লাল রঙের প্লাস্টিকের জুতা। লুঙ্গিটা পায়ের গোড়ালি থেকে বেশ খানিকটা উপরে উঠে আছে। কোনদিকেই তার কোন হুঁশ নেই। সে এখন শুধুই একজন ঘুমন্ত মানুষ। এই মানুষকে দেখে কে বলবে, এর ঘরে ভাত নেই? যাইহোক, ঘুমন্ত মানুষ দেখার মধ্যে একটা তৃপ্তি আছে। কারণ এ জগতে ঘুম বড় দামি জিনিস। সে নিজে না এলে, তাকে আনা বড় কঠিন। এ জগতে সেই তো সবচেয়ে বড় ভাগ্যবান যে যখন তখন ঘুমাতে পারে।
রিকশাওয়ালাটার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে একজন। নীতিন। তার এখন রিকশার খুব দরকার। কিন্তু সে লোকটির এত সুন্দর ঘুমটা ভাঙাতে চাইছে না। তাই সে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করল। না, কোন রিকশা পাওয়া গেল না। তাই এই রিকশাওয়ালাকেই ডাকতে গেল সে।
“ওই, ড্রাইভার, ড্রাইভার” বেশ জোরেশোরেই বলল নীতিন। রিকশাওয়ালাটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে উঠে দাঁড়াতে যেতেই তার লুঙ্গিটা তরতর করে নিচে নামতে লাগল। সে তড়িঘড়ি দুইহাতে টান দিয়ে কোনরকমে সামাল দিল। এই ভয়ংকর দুর্ঘটনার রেশটা সামলে নিয়ে সে বলল, “কি হইছে, ডাকলেন কা?”
“যাবে?”
“ওই মিয়া, দেহেন না ঘুমাইতাছি। যাওনের হইলে ঘুমাইতাম? আজিব পাবলিক।”
“আপনি পরে ঘুমিয়ে নেবেন। এখন চলুন।”
“কইলাম তো যামু না। অন্য রিকশা দেহেন।”
“অন্য রিকশা পেলে আপনাকে এমনিতেও ডাকতাম না। এখানে রিকশা পাওয়া যায় না। আমার খুব জরুরী দরকার। চলুন। যা ভাড়া, তার ডবল দেব।”
এবার বেশ খানিকটা নীরস মুখে রিকশাওয়ালা বলল,
“চলেন, যাই তাইলে। যাইবেন কই?”
“চল,বলছি।”
রিকশার লাল সিটটাতে উঠে বসল নীতিন। রিকশা চলতে শুরু করেছে শ্রাবণের ঝা ঝা রোদের রাজপথে। [চলবে]
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ন্যান্সি দেওয়ান ২৭/০৮/২০১৮Nice.
-
কাজী জহির উদ্দিন তিতাস ১৪/০৮/২০১৮অসাধারণ ভাল লাগল।
-
মধু মঙ্গল সিনহা ১১/০৮/২০১৮ভালো লাগল, ধন্যবাদ!
-
মোঃ নূর ইমাম শেখ বাবু ১০/০৮/২০১৮Very good.
-
মোশতাক সাব্বির২ ১০/০৮/২০১৮শুরুটা দারুন! কিন্তু শেষ যে হলো না?