কয়েকটি গুপ্তহত্যা ও জনগণের প্রত্যাশা
একটি স্বাধীন দেশে নির্বাচিত একটি সরকারের নিকট জনগণের প্রত্যাশার যেমন শেষ নেই ঠিক তেমনি জনগণেরও রাষ্ট্রের প্রতি কিছু দায়িত্ববোধ তো অবশ্যই থাকার কথা। যার উদ্দেশ্য শুধু সরকারকে সহযোগিতা নয়; বরং নিজেদের পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে সার্বিকভাবে নিজেদের মধ্যে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখারও অন্যতম একটি মাধ্যম হিসেবে পরিগণিত। সরকার এবং জনগণের এরুপ পারস্পরিক সহযোগিতার মনোভাব তখনই সৃষ্টি হয়; যখন সরকারটি জনগণের প্রত্য সমর্থনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে গঠিত হয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে। অন্যথা এরুপ কল্পনা করা বোকামি বৈকি কিছু নয়। আর কোন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যদি এরকম হয় যে, সরকার গঠনে জনগণের কোন প্রত্য বা পরো সমর্থন নেই। তাহলে সেই রাষ্ট্রের জনগণ সরকার উৎখাতের আন্দোলন না করলেও সরকারকে কোন বিষয়ে সহযোগিতার মনোভাব দেখাবে বলে কারও জানা নেই। আর যদি সরকারটি জনগণের উপর জোর জবরদস্তির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে জনগণের ইচ্ছা অনিচ্ছার কথা চিন্তা না করে সর্বদা মতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত থাকে। সেখানে জনগণের ভুমিকা অবশ্যই সরকারের নিকট বিরুপ প্রকৃতির হওয়ার কথা। আর সেটিকে যদি সরকার বা সরকারদলীয় কোন ব্যক্তি তাদের উপর ষড়যন্ত্র বলে ধরে নেয়; তাহলে তাদের জন্য প্রথম পরামর্শ হবে সরকারের উপর জনগণের মতামত যাচাই করা। অন্যথায় জনগণ সুযোগ পেলেই কিছু একটা করার চেষ্টায় লিপ্ত থাকবে থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
সম্প্রতি আমাদের দেশে কয়েকজন ব্লগার হত্যা, দুইজন বিদেশী হত্যা, পুলিশ সদস্য হত্যা, চার ঘন্টার ব্যবধানে দুইজন প্রকাশককে জবাই করে হত্যা এবং মন্দিরের পুরোহিকে হত্যা করার ঘটনা সরকারের উপর ষড়যন্ত্র হোক বা যে কারণেই হোক এেেত্র জনগণের প্রত্যাশা অবশ্যই সুষ্ঠু বিচার। কিন্তু সরকার কি অদৌ পেরেছে কোন হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে? পারেনি। অবশ্য এসব হত্যাকান্ডের পেছনের মূল হোতাকে খুঁজে বের করার জন্য প্রশাসনের চেষ্টার কোন ত্র“টি না থাকলেও সরকার দলীয় কিছু নেতাকর্মী এবং স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুসারে খুনিরা আমাদের পরিচিত এবং সরকারের প্রতি ষড়যন্ত্রের নীল নকশার অংশ হিসেবেই এরা এসব হত্যাকান্ড ঘটাচ্ছে। যদি তাই হয় তাহলে শুধু বক্তৃতা বিবৃতিতে এদের দোষী না দেখিয়ে এদেরকে গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় কেন আনা হচ্ছে না। এ প্রশ্নের উত্তর হিসেবে অনেকে হয়তো সময় এবং স্বাী প্রমানের অজুহাত দেখাতে পারবেন কিন্তু প্রকৃত অর্থে আদৌ কি এরাই হত্যাকান্ডের মূল্য হোতা? নাকি তৃতীয় কোন শক্তি এখানে থাকতে পারে? এেেত্র প্রশাসনকে প্রকৃত সত্য উদ্ধারে সহযোগিতা করা কি আমাদের উচিৎ নয়। নাকি আমরা শুধু একে অপরকে দোষারোপের মাধ্যমে হত্যাকারীদের ক্রমাগত আড়াল করেই যাব।
জনগণের প্রত্যাশা এসব হত্যাকান্ডের ব্যপারে কাউকে দোষারোপ নয়। কারও প্রতি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বা শুধু একতরফা চিন্তাভাবনাও নয়। সব হত্যাকান্ডের পেছনের সমস্ত রহস্য উদঘাটনের মাধ্যমে তাদেরকে বিচারের আওতায় এনে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করাই বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় জনগণের একমাত্র প্রত্যাশা।
সম্প্রতি আমাদের দেশে কয়েকজন ব্লগার হত্যা, দুইজন বিদেশী হত্যা, পুলিশ সদস্য হত্যা, চার ঘন্টার ব্যবধানে দুইজন প্রকাশককে জবাই করে হত্যা এবং মন্দিরের পুরোহিকে হত্যা করার ঘটনা সরকারের উপর ষড়যন্ত্র হোক বা যে কারণেই হোক এেেত্র জনগণের প্রত্যাশা অবশ্যই সুষ্ঠু বিচার। কিন্তু সরকার কি অদৌ পেরেছে কোন হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে? পারেনি। অবশ্য এসব হত্যাকান্ডের পেছনের মূল হোতাকে খুঁজে বের করার জন্য প্রশাসনের চেষ্টার কোন ত্র“টি না থাকলেও সরকার দলীয় কিছু নেতাকর্মী এবং স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুসারে খুনিরা আমাদের পরিচিত এবং সরকারের প্রতি ষড়যন্ত্রের নীল নকশার অংশ হিসেবেই এরা এসব হত্যাকান্ড ঘটাচ্ছে। যদি তাই হয় তাহলে শুধু বক্তৃতা বিবৃতিতে এদের দোষী না দেখিয়ে এদেরকে গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় কেন আনা হচ্ছে না। এ প্রশ্নের উত্তর হিসেবে অনেকে হয়তো সময় এবং স্বাী প্রমানের অজুহাত দেখাতে পারবেন কিন্তু প্রকৃত অর্থে আদৌ কি এরাই হত্যাকান্ডের মূল্য হোতা? নাকি তৃতীয় কোন শক্তি এখানে থাকতে পারে? এেেত্র প্রশাসনকে প্রকৃত সত্য উদ্ধারে সহযোগিতা করা কি আমাদের উচিৎ নয়। নাকি আমরা শুধু একে অপরকে দোষারোপের মাধ্যমে হত্যাকারীদের ক্রমাগত আড়াল করেই যাব।
জনগণের প্রত্যাশা এসব হত্যাকান্ডের ব্যপারে কাউকে দোষারোপ নয়। কারও প্রতি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বা শুধু একতরফা চিন্তাভাবনাও নয়। সব হত্যাকান্ডের পেছনের সমস্ত রহস্য উদঘাটনের মাধ্যমে তাদেরকে বিচারের আওতায় এনে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করাই বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় জনগণের একমাত্র প্রত্যাশা।
এই লেখার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র বিবেককে জাগ্রত করা বৈকি অন্য কিছু নয়।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সাইফুল ইসলাম (bdlooks24.com) ২৮/০২/২০১৬যারা পড়বেন সকলের মন্তব্য আশার করছি।