মোহ (১৪ ও ১৫)
১৪
আমার কাঁধে হাত রেখে বসেছে প্রিয়া,
তার পিছনে খুশি মনে বসেছে দিয়া;
প্রিয়া বলে,"আগে সায়েন্স সিটিতে চলো,
তারপরে নিক্কো পার্ক, মজা হবে ভালো।"
দিয়া বলে,"নিক্কো পার্কে আগে চলো তুমি,
ব্যান্ডের গান চালাও, ভাল লাগে 'ভূমি'।"
আমি বলি,"দোঁহে আগে হও এক মত,
আমার বাইক খুঁজে নেবে সেই পথ।"
দিয়া বলে,"চলো তবে অন্য কোনো খানে,
কোনো পাহাড়-নদী জঙ্গলে ঘেরা স্থানে।"
প্রিয়াও সহমত হলো দিয়ার সাথে,
গতি বাড়িয়ে সেথা পৌঁছে গেলাম রাতে,
প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়ায় দিয়া,
রান্না করতে থাকে রন্ধনে পটু প্রিয়া;
নিদারুণ মজা হলো তিনজনে মিলে,
শেষ হলো ভাল ফিল্ম, যেন দশ রিলে!
এবার ফিরতে হবে সুগভীর রাত,
দিয়ারই আব্দারে ধরি অচেনা পথ';
গর্ত এক ছিল বুঝি রাস্তারই মাঝে,
বাঁচানোর শত চেষ্টা লাগলো না কাজে;
অজানা রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত কুঁয়া,
তারই মধ্যে ছিটকে পড়ে গেল দিয়া;
ছুটে যাই প্রাণপণে ওই কূঁয়ো পারে,
তলিয়ে যাচ্ছে দিয়া গভীর অন্ধকারে।
আচমকা ভেঙে গেল দুঃস্বপ্নের ঘুম,
সুগভীর রাত এখন, সব নিঃঝুম।
১৫
জীবনটা মনে হয় ছোট্ট এক ঘর,
এক দ্বারে ঢোকা, অদূরে বাহির-দ্বার;
সাত- সাতটি বছর চোখের নিমেষে
হয়ে গেল পার বিষাদে হরিষে মিশে;
গঙ্গার বুকে বয়ে গেল কত যে জল!
প্রিয়া আজ বধু মোর, আছে হাসি-খুশি;
দিয়াকেও পারি না ভুলতে এক পল,
তার এ হালের জন্যে নিজেকেই দুষি।
কি জানি কি ভাবে গড়েছে আমায় প্রভু,
কারো অধীনতা মানতে পারি না কভু,
চাকরি নয় মোটে তৃপ্তিজনক কাজ,
চাকরি ছেড়ে তাই ব্যবসা করি আজ;
দিন যায়,সূর্য ডোবে, আসে কত রাত,
অন্তরে দিয়া আজও করে উৎপাত;
বাহু-ডোরে বাঁধা প্রিয়া করে অনুযোগ,
"আমার প্রতি তোমার নেই মনোযোগ।"
*
সেদিন এসেছি বলে দিয়ার বাবাকে
'মনোবিদের কাছে নিয়ে যাও দিয়াকে"
ভাল এক মনোবিদের দিয়ে ঠিকানা
পাঁচশোর নোটও দিয়েছি চারখানা,
"মনোবিদ পাগলের ডাক্তার আসলে
দিয়াকে দেখাবে কেন বলুন তাহলে?
মনোবিদ বানাতে পারে পাগল ওকে।"
বৌদিকে একথা বলেছে পাড়ার লোকে।
অফিসে-বাড়িতে ভীষণ কাজের চাপ,
চেয়েছি দিয়ার কাছে মনে মনে মাফ।
পারিনি কদিন যেতে ওদের বাড়িতে,
এসেছিল ওঝা নাকি ভূতটা তাড়াতে!
সর্ষের ধোঁয়া ও পিঠে ঝাড়ুর আঘাত,
সইতে না পেরে নাকি ভূত কুপোকাত!
আবার নতুন উপসর্গ দিল দেখা,
অন্ধকারে বসে বসে হাসে একা একা,
আচমকা কখনো বা কেঁদে ওঠে জোরে।
ছুটে গেলাম সেদিন খুব কাক-ভোরে;
রাজি হলো দিয়ার মা বোঝানোর ফলে,
ভর্তি করালাম মেন্টাল হাসপাতালে।
পুরো সুস্থ হয়ে ফিরলো ছ মাস পরে,
প্রিয়া যে বধু হয়ে এসেছে মোর ঘরে।
এক মিশনে দিয়া স্বেচ্ছায় ভর্তি হলো,
ডাক্তার হয়েছে আজ, জানি না কি পেল?
দীক্ষা নিয়ে সে যে আজ মস্ত সন্ন্যাসিনী,
সিস্টার অমলা, জনসেবায় ব্রতিনী।
( সমাপ্ত)
আমার কাঁধে হাত রেখে বসেছে প্রিয়া,
তার পিছনে খুশি মনে বসেছে দিয়া;
প্রিয়া বলে,"আগে সায়েন্স সিটিতে চলো,
তারপরে নিক্কো পার্ক, মজা হবে ভালো।"
দিয়া বলে,"নিক্কো পার্কে আগে চলো তুমি,
ব্যান্ডের গান চালাও, ভাল লাগে 'ভূমি'।"
আমি বলি,"দোঁহে আগে হও এক মত,
আমার বাইক খুঁজে নেবে সেই পথ।"
দিয়া বলে,"চলো তবে অন্য কোনো খানে,
কোনো পাহাড়-নদী জঙ্গলে ঘেরা স্থানে।"
প্রিয়াও সহমত হলো দিয়ার সাথে,
গতি বাড়িয়ে সেথা পৌঁছে গেলাম রাতে,
প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়ায় দিয়া,
রান্না করতে থাকে রন্ধনে পটু প্রিয়া;
নিদারুণ মজা হলো তিনজনে মিলে,
শেষ হলো ভাল ফিল্ম, যেন দশ রিলে!
এবার ফিরতে হবে সুগভীর রাত,
দিয়ারই আব্দারে ধরি অচেনা পথ';
গর্ত এক ছিল বুঝি রাস্তারই মাঝে,
বাঁচানোর শত চেষ্টা লাগলো না কাজে;
অজানা রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত কুঁয়া,
তারই মধ্যে ছিটকে পড়ে গেল দিয়া;
ছুটে যাই প্রাণপণে ওই কূঁয়ো পারে,
তলিয়ে যাচ্ছে দিয়া গভীর অন্ধকারে।
আচমকা ভেঙে গেল দুঃস্বপ্নের ঘুম,
সুগভীর রাত এখন, সব নিঃঝুম।
১৫
জীবনটা মনে হয় ছোট্ট এক ঘর,
এক দ্বারে ঢোকা, অদূরে বাহির-দ্বার;
সাত- সাতটি বছর চোখের নিমেষে
হয়ে গেল পার বিষাদে হরিষে মিশে;
গঙ্গার বুকে বয়ে গেল কত যে জল!
প্রিয়া আজ বধু মোর, আছে হাসি-খুশি;
দিয়াকেও পারি না ভুলতে এক পল,
তার এ হালের জন্যে নিজেকেই দুষি।
কি জানি কি ভাবে গড়েছে আমায় প্রভু,
কারো অধীনতা মানতে পারি না কভু,
চাকরি নয় মোটে তৃপ্তিজনক কাজ,
চাকরি ছেড়ে তাই ব্যবসা করি আজ;
দিন যায়,সূর্য ডোবে, আসে কত রাত,
অন্তরে দিয়া আজও করে উৎপাত;
বাহু-ডোরে বাঁধা প্রিয়া করে অনুযোগ,
"আমার প্রতি তোমার নেই মনোযোগ।"
*
সেদিন এসেছি বলে দিয়ার বাবাকে
'মনোবিদের কাছে নিয়ে যাও দিয়াকে"
ভাল এক মনোবিদের দিয়ে ঠিকানা
পাঁচশোর নোটও দিয়েছি চারখানা,
"মনোবিদ পাগলের ডাক্তার আসলে
দিয়াকে দেখাবে কেন বলুন তাহলে?
মনোবিদ বানাতে পারে পাগল ওকে।"
বৌদিকে একথা বলেছে পাড়ার লোকে।
অফিসে-বাড়িতে ভীষণ কাজের চাপ,
চেয়েছি দিয়ার কাছে মনে মনে মাফ।
পারিনি কদিন যেতে ওদের বাড়িতে,
এসেছিল ওঝা নাকি ভূতটা তাড়াতে!
সর্ষের ধোঁয়া ও পিঠে ঝাড়ুর আঘাত,
সইতে না পেরে নাকি ভূত কুপোকাত!
আবার নতুন উপসর্গ দিল দেখা,
অন্ধকারে বসে বসে হাসে একা একা,
আচমকা কখনো বা কেঁদে ওঠে জোরে।
ছুটে গেলাম সেদিন খুব কাক-ভোরে;
রাজি হলো দিয়ার মা বোঝানোর ফলে,
ভর্তি করালাম মেন্টাল হাসপাতালে।
পুরো সুস্থ হয়ে ফিরলো ছ মাস পরে,
প্রিয়া যে বধু হয়ে এসেছে মোর ঘরে।
এক মিশনে দিয়া স্বেচ্ছায় ভর্তি হলো,
ডাক্তার হয়েছে আজ, জানি না কি পেল?
দীক্ষা নিয়ে সে যে আজ মস্ত সন্ন্যাসিনী,
সিস্টার অমলা, জনসেবায় ব্রতিনী।
( সমাপ্ত)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
Înšigniã Āvî ১৫/১১/২০১৩মন ছুঁয়ে যাওয়া লেখা..... এই বইটার অপেক্ষায়