www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

এক বৃন্তে দুটি কুসুম ৪র্থ ও শেষ অংশ

৩য় অংশের পরঃ-
     সেদিনই প্রথম স্বপ্না আমাকে ফোঁটা দিল, ভাইফোঁটা। আমি স্বপ্নাকে একটা সোনার হার দিলাম। আমার এক দিদি ছোটোবেলায় টাইফয়েড জ্বরে মারা গিয়েছিল। হারটা তারই। হারের লকেটটায় আমার দিদির নামের(সাবেরা) আদ্যক্ষর   'এস' লেখা ছিল। শত দুঃখেও মা দিদির এই স্মৃতি চিহ্নটুকু বিক্রি করেননি। কিন্তু আমি স্বপ্নাকে দিতে চাই শুনে মা তৎক্ষণাৎ হারটা আমার হাতে তুলে দিয়েছিলেন।
         স্বপ্না সেদিন আমাকে একটা পার্কার ব্র্যান্ডের দামী পেন দিয়ে বলেছিল, "এবার থেকে সব পরীক্ষায় এই পেন দিয়ে লিখবে।"
         স্বপ্নাও এরপর আমার দেওয়া হারটা সবসময় গলায় পরে থাকতো,যদিও ওর আরও অনেক দামী হার ছিল। যাই হোক, এভাবেই আমরা দুজনে প্রকৃতির নিয়মেই বড় হতে লাগলাম।পাড়া-প্রতিবেশীরা আমাদের নিয়ে নানা রকম ক্যৎসা রটাতে লাওগলো। কিন্তু চরিত্রের ব্সততা বুঝি হাঁসের পালকের মতো।লোক-নিন্দার জল তাতে কোন রেখাপাত করতে পারে না। তাই আমরা সেই লোক-নিন্দাকে গ্রাহ্য করতাম না।
         
          যাই হোক, এক দিন স্বপ্নার বিয়ে হয়ে গেল।স্বপ্নার বাবা ছিলেন বড় ব্যবসায়ী। মেয়ের বিয়েও দিলেন ধনী ব্যবসায়ীর ছেলের সঙ্গে। শুনে খুব খুশি ্হলাম। উচ্চবিত্ত ঘরের বঊ হচ্ছে স্বপ্না, রাজরাণীর মতো সুখে থাকবে। বিয়ের পর দিন গাড়িতে ওঠার আগে আমার গলা জড়িয়ে অনেকক্ষণ ধরে কেঁদেছিল স্বপ্না। কাঁদতে কাঁদতে বলেছিল, দুজনে এক সঙ্গে বড় হয়েছি, তোমাকে ছেড়ে কেমন করে থাকবো সরিফুলদা?
          আমি সান্ত্বনা দিয়ে বললাম, "দূর পাগলি, মেয়েরা কি চিরদিন বাপের বাড়ি থাকার জন্যে জন্মায়?স্বামীর ঘরে একদিন তো তাকে যেতেই হয়।" কিন্তু মনে মনে আমিও বড় কষ্ট পেয়েছিলাম। একই বৃন্তে দুটি ফুলের মতো বড় হয়েছি দুজনে,আজ যেন একটা ফুল বৃন্তচ্যুত হল।
          যাই হোক,স্বপ্নার স্বামীর হাত দুটো ধরে বললাম,আমার বোনটি বড় আদরে মানুষ হয়েছে,ওর যেন কোন কষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখো ভাই।
           
          কিন্তু যা আশা করেছিলাম স্বপ্নার ভাগ্যে তা হল না।স্বপ্নার শ্বশুর ছিল অত্যন্ত অর্থলোভী। মাঝে মধ্যেই স্বপ্নার বাবার কাছে অর্থ দাবি করতে লাগলেন। মেয়ের মুখ চেয়ে স্বপ্নার বাবা বেশ কয়েক বার তাঁর দাবি মিটিয়েও ছিলেন। কিন্তু বার বার স্বপ্নার শ্বশুরের এই অন্যায় দাবিতে বিরক্ত হয়ে উঠলেন স্বপ্নার বাবা। শেষে টাকা পয়সা দেওয়া বন্ধ করে দিলেন। দিন কয়েক আগে স্বপ্না আমাকে ফোন করে বললো," দাদা, তুমি বাবাকে রাজি করাও, নইলে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।"হাসপাতালের ডিঊটি ফেলে ছুটলাম স্বপ্নার বাবার কাছে। তাঁর হাতদূটটো ধরে বললাম,মেসোমশাই স্বপ্নাকে বাঁচান, আপনি রাজি হয়ে যান। উনি বললেন, আমাকে একটু ভাবতে দাও।

          কিন্তু নিয়তি ভাবার আর সময় দিল না........
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৫৭৭ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৮/০৯/২০১৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • אולי כולנו טועים ২৯/০৯/২০১৩
    monta kharap hoye gelo.....
    koster kichu ar porte chaina...

    khubi sundor likhoni !!
    • সহিদুল হক ২৯/০৯/২০১৩
      আসলে আমরা না চাইলেও কষ্ট বুঝি আমাসের ছাড়তে চায় না। অশেষ ধন্যবাদ। ভাল থাকুন, পাশে থাকুন।
  • ইব্রাহীম রাসেল ২৮/০৯/২০১৩
    চমৎকার একটি গল্প উপহার দিলেন
  • এটাই হচ্ছে অনেক স্বপ্নার জীবনে, আমরা হৈমন্তী গল্পের অপুর মত চুপ করে দেখে থাকি নয়তো সমাজ স্ত্রৈন বলে অপবাদ দিবে, অপবাদ দিবে পরকীয়ার, কিসের স্বার্থ সেটা খুঁজবে তবু লিখে যেতে হবে সুদিন আসবে ভেবে। খুব ভালো।
    • সহিদুল হক ২৯/০৯/২০১৩
      ঠিকই বলেছেন।
      আন্তরিক ধন্যবাদ।ভাল থাকবেন।
    • Înšigniã Āvî ২৮/০৯/২০১৩
      আমিও একমত
 
Quantcast