শাস্তি
সাজ্জাদ দুই দিন হল তাড়া খাওয়া পশুর মত পালিয়ে বেড়াচ্ছে। যে কোন সময় পুলিশ তাকে ধরে ফেলতে পারে- এই ভয় তাকে গ্রাস করে ফেলেছে। কিন্তু শুধুই কি পুলিশের ভয়? সে তো এখন ইঁদুরের চলার শব্দেও ভীষণভাবে চমকে ওঠে!
প্রথম রাতটা কেটেছিল বগুড়া স্টেশনের ওয়েটিং রুমে। তার জেলা কুড়িগ্রাম থেকে বগুড়া অনেক দূরে, মাঝখানে কমপক্ষে তিনটা জেলা। নিজের জেলা ছেড়ে আসলেও আতঙ্ক তার পিছু ছাড়ে না। তার এলাকা থেকে পুলিশ যদি বগুড়া স্টেশনের পুলিশ ফাঁড়িতে ফোন করে জানিয়ে দেয়, তারপর যদি তারা ওয়েটিং রুমে খুঁজতে আসে সাজ্জাদকে, তখন কি হবে! অনেক সম্ভাবনা মাথায় ঘুরঘুর করে, অনেক আতঙ্ক জাগানিয়া সব সম্ভাবনা। মরতে তো তাকে হবেই, ফাঁসিও নিশ্চিত। এজন্য সে ভয়ও করে না। শুধু তার মায়ের জলভরা চোখদুটো মনের পর্দায় ভাসে, আর তার বাবার নিরুপায় লজ্জিত দৃষ্টি। ছোট বোনটা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দু হাত মুঠি করে চোখ কচলায়, আর শব্দ করে কাঁদে। নীলার মুখও কি ভাসে তার মনের পর্দায়? হ্যাঁ, তার তীব্র অবিশ্বাস আর যন্ত্রণাভরা মুখের বিকৃত অভিব্যক্তিটাও ভেসে ওঠে মনের পর্দায়। আর তার তীব্র আকুতি ভরা কথাগুলো। হঠাত্ অনেক জোরে খসখস শব্দ হয়।
কিছুক্ষণের জন্য তন্দ্রায় চলে গিয়েছিল সাজ্জাদ। খসখস শব্দে ধড়মড়িয়ে জেগে ওঠে। পুলিশের পায়ের আওয়াজ নিশ্চয়। কান খাড়া করে শোনে সে- শব্দটা ক্রমশ কাছে আসছে। দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয় তার। তারপর দম বেরিয়ে যাওয়ার বদলে ওয়েটিং রুমের মেঝের ডানকোনায় জমে থাকা পলিথিন ব্যাগের নিচ থেকে একটা নেংটি ইঁদুর হুস করে বেরিয়ে যায়। সাজ্জাদ হাফ ছেড়ে বাঁচে, যাক, পুলিশ নয় তাহলে।
তারপরের সারাটা দিন উদভ্রান্তের মত শহরে হেঁটে বেড়ালো। প্রচন্ড ক্ষুধা নিয়ে একটা সস্তা হোটেলে ঢুকে গলা পর্যন্ত পানি খেয়ে পেট ভরালো। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই একবার গোটা শরীর ঝিকিয়ে উঠে পেটের সমস্ত পানি বমি হয়ে বেরিয়ে গেল। সন্ধ্যার দিকে আরেকটা হোটেলে ঢুকে পেট পুরে ভাত খেয়ে বিল না দেওয়ায় হোটেলওয়ালার সাথে বাক-বিতন্ডা হয়ে গেল। শুধুমাত্র গায়ের কাপড়চোপড় আর চেহারাটা একটু ভাল বলেই হয়তো শেষ পর্যন্ত হোটেলওয়ালা সাজ্জাদের কথা বিশ্বাস করে তাকে বাসা থেকে টাকা আনতে পাঠিয়ে দিল। সাজ্জাদ টাকা আনতে ভিড়ের মধ্যে মিশে গেল। সে পালিয়ে গেল।
গত দুই দিন হল সে পালাচ্ছে। ক্রমাগত পালিয়েই যাচ্ছে। সে যেখানেই যাচ্ছে আশেপাশের মানুষগুলোর চলাফেরা, তাদের কথাবার্তা, চালচলন সব সন্দেহ জনক লাগছে, সব আতঙ্ক সৃষ্টি করছে তার মধ্যে। তাই সে কেবল হেঁটেই যাচ্ছে। সারাদিন পথ চলে সূর্য নিভে যায়, কুচকুচে কাল রং কাক বাসায় ফেরে, রাতের প্রশান্ত আঁধার নেমে আসে। কিন্তু সাজ্জাদ তবু হাঁটতে থাকে।
শেষ পর্যন্ত শহর থেকে একটু দূরে একটা নির্জন জায়গায় এসে সে থামে। কাছেই একটা ভাঙা কালভার্ট দেখা যায়। কালভার্টের দুপাশে কচি ধানক্ষেত। ধানক্ষেতের উপর নরম জোছনা। সাজ্জাদ কালভার্টের উপর বসে।
সে এখন একা, জনমানব থেকে দূরে। পুলিশ অন্তত আজ রাতে তাকে ধরতে পারবে না। কিন্তু তবু সেই গ্রাসকারী আতঙ্ক তাকে মুক্তি দেয় না। আতঙ্কের গভীরে সে গুমরে ওঠা ব্যাথা অনুভব করে। বুকের বদ্ধ দেয়ালে ক্রমাগত ক্ষতের সৃষ্টি করে চলেছে যা। হয়তো কোন ফুটো পেলেই ওয়েটিং রুমের নেংটি ইঁদুরটার মত ফস করে বেরিয়ে গেলে সে চিরতরে মুক্তি পেত।
নীলার কাতর কন্ঠস্বর জোছনামাখা বাতাসে ভাসে। ধর্ষিত হওয়ার পর মৃত মানুষের মত তার শীতল আকুতি- সাজ্জাদ, তুমি না আমার বাবুন সোনা! আমার একটু মন খারাপ থাকলে তুমি না সারা রাত ঘুমাতে পারতা না! একবার রাস্তায় হোচট খেয়ে আমার পা ফেটে রক্ত ঝরছিলো, আর তা দেখে তুমি না কেঁদে দিছিলা! সেই তুমিই আমাকে খুন করবে সাজ্জাদ! আমি নাহয় ভুল করছি, বাবার পছন্দে অন্য মানুষকে বিয়ে করছি, তাই বলে আমাকে মেরে ফেলবা জান! আমাকে মেরো না জান, প্লিজ মেরো না!
খুন চেপেছিল সাজ্জাদের মাথায়। নীলার প্রতিটি কথা তার রক্তের ক্রোধকে টগবগ করে ফুটাচ্ছিলো।
নগ্ন ক্ষতবিক্ষত প্রেমিকার নরম গ্রীবা তার তীব্র আক্রোশের আঙ্গুলে নীল হয়ে গেল। জবাই হওয়া পশুর মত কিছুক্ষণ দাপানোর পর নিথর হয়ে গেল নীলা। সাজ্জাদ দাঁতে দাঁত চেপে রাগে কাঁপতে কাঁপতে চিত্কার করে কেঁদে ফেলল।
নীলাকে সাজ্জাদ ভালবেসেছিল নিজেকে উজার করেই, যার থেকে আর ভালবাসা সম্ভব না। সেই ভালবাসায় মিশে ছিলো বুনো গন্ধ, অনর্থক পাগলামী আর আকাশের মত নির্মলতা।
আমি কি ভুল কিছু করেছি? নীলাতো মৃত্যুর ওপারে আমার তুলনায় অনেক সুখে আছে। এতোটা সুখ ওর প্রাপ্য ছিল না, ও তো একটা বেশ্যা। বেশ্যার মত ভালবেসেছিল আমাকে, তারপর বিয়ে করেছে আরেকটাকে। যা করেছি ঠিকই ই করেছি। অনেক বেশিই করেছি ওর জন্য। ফাঁসি তো হবেই, তো হোক না! কে ভয় করে!
ভাঙা কালভার্টের নিচে একটা খুপরির মত বদ্ধ জায়গায় বসে সাজ্জাদ এইসব কথা ভাবে। ভেবে ভেবে নিষ্কৃতি পেতে চায় যন্ত্রণার পাহাড় ভার থেকে। এদিকে অসংখ্য মশা তার শরীরে একের পর এক দংশন করতে থাকে তা সে টেরই পায় না। সমস্ত স্মৃতি তার ভিতর অনরবরত যে দংশন চালিয়ে যায় তার কাছে মশার দংশন কিছুই না। সাজ্জাদের ভিতর একসহস্র নরক পুড়তে থাকে।
বাইরে নরম জোছনা অপার্থিব রূপালী ছড়িয়ে যায়। ধানক্ষেত থেকে ঝিঁঝিঁ পোকার অস্পষ্ট গুঞ্জন শোনা যায়। মাঝে মাঝে দু একটা জোনাক জ্বলে। কালভার্টের নিচেই একটা ভাঙা কাঁচের বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায়। সাজ্জাদের চোখ ক্ষণিক আশায় চকচক করে ওঠে।
কাঁচের ভাঙা বোতলটা সে হাতে নেয়। সম্ভবত ফেনসিডিলের বোতল। শার্টের বোতাম খুলে শক্ত করে ভাঙা বোতলটা দুহাতে ধরে। বোতলের চোখা দিকটা থাকে তার লোমশ বুকের দিকে। গত দুই দিন যাবত্ তার বুকের ভিতর আটকে থাকা যন্ত্রণার দানবটা একটা ফুটো খুঁজছিল। আজ সে তাকে বের করে দিয়ে চিরতরে মুক্তি পেতে চায়। শেষ পর্যন্ত ফেনসিডিলের ভাঙা বোতলটা সে তার বুকে গেঁথে দেয়।
কিন্তু বোতলের চোখা অংশ তার বুকের ভিতর ঢোকে না। শুধু উপরকার চামড়ায় একটু ক্ষতের সৃষ্টি করে। ক্ষতটা জ্বলতে শুরু করে কিছুক্ষণ পর। এরপর নারকীয় যন্ত্রণা কেবল বাড়তেই থাকে।
প্রথম রাতটা কেটেছিল বগুড়া স্টেশনের ওয়েটিং রুমে। তার জেলা কুড়িগ্রাম থেকে বগুড়া অনেক দূরে, মাঝখানে কমপক্ষে তিনটা জেলা। নিজের জেলা ছেড়ে আসলেও আতঙ্ক তার পিছু ছাড়ে না। তার এলাকা থেকে পুলিশ যদি বগুড়া স্টেশনের পুলিশ ফাঁড়িতে ফোন করে জানিয়ে দেয়, তারপর যদি তারা ওয়েটিং রুমে খুঁজতে আসে সাজ্জাদকে, তখন কি হবে! অনেক সম্ভাবনা মাথায় ঘুরঘুর করে, অনেক আতঙ্ক জাগানিয়া সব সম্ভাবনা। মরতে তো তাকে হবেই, ফাঁসিও নিশ্চিত। এজন্য সে ভয়ও করে না। শুধু তার মায়ের জলভরা চোখদুটো মনের পর্দায় ভাসে, আর তার বাবার নিরুপায় লজ্জিত দৃষ্টি। ছোট বোনটা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দু হাত মুঠি করে চোখ কচলায়, আর শব্দ করে কাঁদে। নীলার মুখও কি ভাসে তার মনের পর্দায়? হ্যাঁ, তার তীব্র অবিশ্বাস আর যন্ত্রণাভরা মুখের বিকৃত অভিব্যক্তিটাও ভেসে ওঠে মনের পর্দায়। আর তার তীব্র আকুতি ভরা কথাগুলো। হঠাত্ অনেক জোরে খসখস শব্দ হয়।
কিছুক্ষণের জন্য তন্দ্রায় চলে গিয়েছিল সাজ্জাদ। খসখস শব্দে ধড়মড়িয়ে জেগে ওঠে। পুলিশের পায়ের আওয়াজ নিশ্চয়। কান খাড়া করে শোনে সে- শব্দটা ক্রমশ কাছে আসছে। দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয় তার। তারপর দম বেরিয়ে যাওয়ার বদলে ওয়েটিং রুমের মেঝের ডানকোনায় জমে থাকা পলিথিন ব্যাগের নিচ থেকে একটা নেংটি ইঁদুর হুস করে বেরিয়ে যায়। সাজ্জাদ হাফ ছেড়ে বাঁচে, যাক, পুলিশ নয় তাহলে।
তারপরের সারাটা দিন উদভ্রান্তের মত শহরে হেঁটে বেড়ালো। প্রচন্ড ক্ষুধা নিয়ে একটা সস্তা হোটেলে ঢুকে গলা পর্যন্ত পানি খেয়ে পেট ভরালো। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই একবার গোটা শরীর ঝিকিয়ে উঠে পেটের সমস্ত পানি বমি হয়ে বেরিয়ে গেল। সন্ধ্যার দিকে আরেকটা হোটেলে ঢুকে পেট পুরে ভাত খেয়ে বিল না দেওয়ায় হোটেলওয়ালার সাথে বাক-বিতন্ডা হয়ে গেল। শুধুমাত্র গায়ের কাপড়চোপড় আর চেহারাটা একটু ভাল বলেই হয়তো শেষ পর্যন্ত হোটেলওয়ালা সাজ্জাদের কথা বিশ্বাস করে তাকে বাসা থেকে টাকা আনতে পাঠিয়ে দিল। সাজ্জাদ টাকা আনতে ভিড়ের মধ্যে মিশে গেল। সে পালিয়ে গেল।
গত দুই দিন হল সে পালাচ্ছে। ক্রমাগত পালিয়েই যাচ্ছে। সে যেখানেই যাচ্ছে আশেপাশের মানুষগুলোর চলাফেরা, তাদের কথাবার্তা, চালচলন সব সন্দেহ জনক লাগছে, সব আতঙ্ক সৃষ্টি করছে তার মধ্যে। তাই সে কেবল হেঁটেই যাচ্ছে। সারাদিন পথ চলে সূর্য নিভে যায়, কুচকুচে কাল রং কাক বাসায় ফেরে, রাতের প্রশান্ত আঁধার নেমে আসে। কিন্তু সাজ্জাদ তবু হাঁটতে থাকে।
শেষ পর্যন্ত শহর থেকে একটু দূরে একটা নির্জন জায়গায় এসে সে থামে। কাছেই একটা ভাঙা কালভার্ট দেখা যায়। কালভার্টের দুপাশে কচি ধানক্ষেত। ধানক্ষেতের উপর নরম জোছনা। সাজ্জাদ কালভার্টের উপর বসে।
সে এখন একা, জনমানব থেকে দূরে। পুলিশ অন্তত আজ রাতে তাকে ধরতে পারবে না। কিন্তু তবু সেই গ্রাসকারী আতঙ্ক তাকে মুক্তি দেয় না। আতঙ্কের গভীরে সে গুমরে ওঠা ব্যাথা অনুভব করে। বুকের বদ্ধ দেয়ালে ক্রমাগত ক্ষতের সৃষ্টি করে চলেছে যা। হয়তো কোন ফুটো পেলেই ওয়েটিং রুমের নেংটি ইঁদুরটার মত ফস করে বেরিয়ে গেলে সে চিরতরে মুক্তি পেত।
নীলার কাতর কন্ঠস্বর জোছনামাখা বাতাসে ভাসে। ধর্ষিত হওয়ার পর মৃত মানুষের মত তার শীতল আকুতি- সাজ্জাদ, তুমি না আমার বাবুন সোনা! আমার একটু মন খারাপ থাকলে তুমি না সারা রাত ঘুমাতে পারতা না! একবার রাস্তায় হোচট খেয়ে আমার পা ফেটে রক্ত ঝরছিলো, আর তা দেখে তুমি না কেঁদে দিছিলা! সেই তুমিই আমাকে খুন করবে সাজ্জাদ! আমি নাহয় ভুল করছি, বাবার পছন্দে অন্য মানুষকে বিয়ে করছি, তাই বলে আমাকে মেরে ফেলবা জান! আমাকে মেরো না জান, প্লিজ মেরো না!
খুন চেপেছিল সাজ্জাদের মাথায়। নীলার প্রতিটি কথা তার রক্তের ক্রোধকে টগবগ করে ফুটাচ্ছিলো।
নগ্ন ক্ষতবিক্ষত প্রেমিকার নরম গ্রীবা তার তীব্র আক্রোশের আঙ্গুলে নীল হয়ে গেল। জবাই হওয়া পশুর মত কিছুক্ষণ দাপানোর পর নিথর হয়ে গেল নীলা। সাজ্জাদ দাঁতে দাঁত চেপে রাগে কাঁপতে কাঁপতে চিত্কার করে কেঁদে ফেলল।
নীলাকে সাজ্জাদ ভালবেসেছিল নিজেকে উজার করেই, যার থেকে আর ভালবাসা সম্ভব না। সেই ভালবাসায় মিশে ছিলো বুনো গন্ধ, অনর্থক পাগলামী আর আকাশের মত নির্মলতা।
আমি কি ভুল কিছু করেছি? নীলাতো মৃত্যুর ওপারে আমার তুলনায় অনেক সুখে আছে। এতোটা সুখ ওর প্রাপ্য ছিল না, ও তো একটা বেশ্যা। বেশ্যার মত ভালবেসেছিল আমাকে, তারপর বিয়ে করেছে আরেকটাকে। যা করেছি ঠিকই ই করেছি। অনেক বেশিই করেছি ওর জন্য। ফাঁসি তো হবেই, তো হোক না! কে ভয় করে!
ভাঙা কালভার্টের নিচে একটা খুপরির মত বদ্ধ জায়গায় বসে সাজ্জাদ এইসব কথা ভাবে। ভেবে ভেবে নিষ্কৃতি পেতে চায় যন্ত্রণার পাহাড় ভার থেকে। এদিকে অসংখ্য মশা তার শরীরে একের পর এক দংশন করতে থাকে তা সে টেরই পায় না। সমস্ত স্মৃতি তার ভিতর অনরবরত যে দংশন চালিয়ে যায় তার কাছে মশার দংশন কিছুই না। সাজ্জাদের ভিতর একসহস্র নরক পুড়তে থাকে।
বাইরে নরম জোছনা অপার্থিব রূপালী ছড়িয়ে যায়। ধানক্ষেত থেকে ঝিঁঝিঁ পোকার অস্পষ্ট গুঞ্জন শোনা যায়। মাঝে মাঝে দু একটা জোনাক জ্বলে। কালভার্টের নিচেই একটা ভাঙা কাঁচের বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায়। সাজ্জাদের চোখ ক্ষণিক আশায় চকচক করে ওঠে।
কাঁচের ভাঙা বোতলটা সে হাতে নেয়। সম্ভবত ফেনসিডিলের বোতল। শার্টের বোতাম খুলে শক্ত করে ভাঙা বোতলটা দুহাতে ধরে। বোতলের চোখা দিকটা থাকে তার লোমশ বুকের দিকে। গত দুই দিন যাবত্ তার বুকের ভিতর আটকে থাকা যন্ত্রণার দানবটা একটা ফুটো খুঁজছিল। আজ সে তাকে বের করে দিয়ে চিরতরে মুক্তি পেতে চায়। শেষ পর্যন্ত ফেনসিডিলের ভাঙা বোতলটা সে তার বুকে গেঁথে দেয়।
কিন্তু বোতলের চোখা অংশ তার বুকের ভিতর ঢোকে না। শুধু উপরকার চামড়ায় একটু ক্ষতের সৃষ্টি করে। ক্ষতটা জ্বলতে শুরু করে কিছুক্ষণ পর। এরপর নারকীয় যন্ত্রণা কেবল বাড়তেই থাকে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
রাসেল আল মাসুদ ১৭/০৯/২০১৩গল্পটা যথাসাধ্য সরল রাখার চেষ্টা করেছি। তারপরও যদি প্যাচালো মনে হয়, তাহলে অবশ্যই আমার ব্যর্থতা। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানাই।
-
ওয়াহিদ ১৭/০৯/২০১৩Golpota Besh Pechalo Typer Thik CID ,Buji Ni Valobhave ....