শোধ (শেষ পর্ব)
হ্যান্ডক্যাপ পরা হাত দিয়েই নিজের দুচোখ মুছতে মুছতে বেড়িয়ে যায় সারা। পিছনে মেঘা শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। দুচোখ থেকে গড়িয়ে পরছে অশ্রুধারা।
থানায় নিয়ে সারাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়।
----আপনি নওশাদকে খুন করেছেন?
---হ্যা। শুধু নওশাদ না ওর বন্ধু আজিমকেও আমি খুন করেছি।
---What!!
---হ্যা, আমি ঠিকই বলছি।
---কেন খুন করলেন ওদের?
---আমি কোন মানুষকে খুন করিনি, আমি খুন করেছি দুটো জানোয়ারকে।
---মানে!
---শুনতে চান কেন খুন করেছি ওদের, শুনুন তাহলে-
"বাবা-মা আর আমরা দুই বোনের সুখের সংসার ছিলো। আমি বড়, মেঘা ছোট। মেঘা আর আবিরের মধ্যে সম্পর্ক ছিলো। ওরা দুজন দুজনকে প্রচন্ড ভালোবাসত। দুই পরিবার মেনেও নিয়েছিলো সম্পর্কের কথা। এদিকে আজিম মেঘাকে অনেক দিন আগে থেকেই উত্যক্ত করে আসছিলো। কিন্তু আজিম সব সময় নেশায় বুঁদ হয়ে থাকত বলে মেঘা কখনোই আজিমকে প্রশ্রয় দেয়নি।
আবিরের মায়ের অসুস্থতার কারনে ওর বিয়ে করা জরুরি হয়ে পরে। তাই দুই পরিবার মিলে আমার অনুমতি সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেয় যে, আমার আগে মেঘার বিয়ে হবে।
সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিলো। ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজন করা হয়।
দিনটি ছিলো ১১ই মে। সারা বাড়িতে উৎসবের আমেজ। বর পক্ষ এসে গেছে। কিছুক্ষন পরই কাজী সাহেব কাজ শুরু করবেন, এমন সময় আজিম ও নওশাদ উপস্থিত হয়। বাড়ি ভর্তি লোকজনের সামনে মেঘার কিছু ফটোশপ করা নুড ছবি ছুড়ে দেয়। মুহুর্তেই সবকিছু স্তব্দ হয়ে যায়। আমাদের আত্মীয়স্বজন, আবিরের আত্মীয়স্বজন, সবাই ছিঃ ছিঃ করতে থাকে। শেষ প্রর্যন্ত বাবা-মাকে প্রচন্ড অপমান করে আবিরের পরিবার বিয়ে ভেঙে দিয়ে চলে যায়। মেঘা সব শুনে সবার সামনে আজিমকে একটা চড় মারে।
খুশির আমেশ মুহুর্তেই যেন শোকে পরিনত হয়।
আমরা মেঘাকে বিশ্বাস করলেও লোকে তো আর মেঘাকে বিশ্বাস করবেনা। বাবা-মায়ের অনুরোধ ছিলো আমি যেন সব সময় মেঘাকে চোখে চোখে রাখি। আমি রাখতামও। একদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি বাবা-মা দুজনেই ঘুমিয়ে আছে। লজ্জা থেকে বাঁচার অন্তিম ঘুম, যে ঘুম আর ভাঙেনী।
বাবার লাশ কবরে তোলার আগে শেষবারের মত একবার প্রর্যন্ত দেখতে দেয়া হয়নী আমাদের দু বোনকে।
এর পরও আবির ওর পরিবারকে বুঝায় যে ওই ছবিগুলো ছিলো ফটোশপের কারসাজি। এবং বুজিয়ে-সুজিয়ে বিয়েতে রাজি করায়। সেদিন সন্ধ্যার পর কাজী অফিসে বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো। আবির এসেছিলো মেঘাকে নিতে। ওরা যখন একটা ট্যাক্সি করে যাচ্ছিল, পথে আজিম আর নওশাদ ট্যাক্সি থামিয়ে আবিরকে প্রচুর প্রহার করে আর মেঘাকে ঝলসে দেয় এসিডে। অবির এখন পাগলাগারতে, আর মেঘার অবস্থা তো আপনারা দেখেই এলেন।
আজিম আর নওশাদের বিরুদ্ধে পুলিশি ব্যাবস্থা নিলেও প্রমানের অজুহাতে আপনারা ওদের ছেড়ে দেন। তাই নিজেই শোধ নিয়েছি, নির্মম ভাবে।
সারাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আদালতে। হয়তো সারার ফাঁসির সাজা হবে। কিন্তু তাতে সারার কষ্ট নেই, কারন ওর মনে মোক্ষম শোধ নিতে পারার প্রশান্তি।
(সমাপ্ত)
থানায় নিয়ে সারাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়।
----আপনি নওশাদকে খুন করেছেন?
---হ্যা। শুধু নওশাদ না ওর বন্ধু আজিমকেও আমি খুন করেছি।
---What!!
---হ্যা, আমি ঠিকই বলছি।
---কেন খুন করলেন ওদের?
---আমি কোন মানুষকে খুন করিনি, আমি খুন করেছি দুটো জানোয়ারকে।
---মানে!
---শুনতে চান কেন খুন করেছি ওদের, শুনুন তাহলে-
"বাবা-মা আর আমরা দুই বোনের সুখের সংসার ছিলো। আমি বড়, মেঘা ছোট। মেঘা আর আবিরের মধ্যে সম্পর্ক ছিলো। ওরা দুজন দুজনকে প্রচন্ড ভালোবাসত। দুই পরিবার মেনেও নিয়েছিলো সম্পর্কের কথা। এদিকে আজিম মেঘাকে অনেক দিন আগে থেকেই উত্যক্ত করে আসছিলো। কিন্তু আজিম সব সময় নেশায় বুঁদ হয়ে থাকত বলে মেঘা কখনোই আজিমকে প্রশ্রয় দেয়নি।
আবিরের মায়ের অসুস্থতার কারনে ওর বিয়ে করা জরুরি হয়ে পরে। তাই দুই পরিবার মিলে আমার অনুমতি সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেয় যে, আমার আগে মেঘার বিয়ে হবে।
সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিলো। ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজন করা হয়।
দিনটি ছিলো ১১ই মে। সারা বাড়িতে উৎসবের আমেজ। বর পক্ষ এসে গেছে। কিছুক্ষন পরই কাজী সাহেব কাজ শুরু করবেন, এমন সময় আজিম ও নওশাদ উপস্থিত হয়। বাড়ি ভর্তি লোকজনের সামনে মেঘার কিছু ফটোশপ করা নুড ছবি ছুড়ে দেয়। মুহুর্তেই সবকিছু স্তব্দ হয়ে যায়। আমাদের আত্মীয়স্বজন, আবিরের আত্মীয়স্বজন, সবাই ছিঃ ছিঃ করতে থাকে। শেষ প্রর্যন্ত বাবা-মাকে প্রচন্ড অপমান করে আবিরের পরিবার বিয়ে ভেঙে দিয়ে চলে যায়। মেঘা সব শুনে সবার সামনে আজিমকে একটা চড় মারে।
খুশির আমেশ মুহুর্তেই যেন শোকে পরিনত হয়।
আমরা মেঘাকে বিশ্বাস করলেও লোকে তো আর মেঘাকে বিশ্বাস করবেনা। বাবা-মায়ের অনুরোধ ছিলো আমি যেন সব সময় মেঘাকে চোখে চোখে রাখি। আমি রাখতামও। একদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি বাবা-মা দুজনেই ঘুমিয়ে আছে। লজ্জা থেকে বাঁচার অন্তিম ঘুম, যে ঘুম আর ভাঙেনী।
বাবার লাশ কবরে তোলার আগে শেষবারের মত একবার প্রর্যন্ত দেখতে দেয়া হয়নী আমাদের দু বোনকে।
এর পরও আবির ওর পরিবারকে বুঝায় যে ওই ছবিগুলো ছিলো ফটোশপের কারসাজি। এবং বুজিয়ে-সুজিয়ে বিয়েতে রাজি করায়। সেদিন সন্ধ্যার পর কাজী অফিসে বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো। আবির এসেছিলো মেঘাকে নিতে। ওরা যখন একটা ট্যাক্সি করে যাচ্ছিল, পথে আজিম আর নওশাদ ট্যাক্সি থামিয়ে আবিরকে প্রচুর প্রহার করে আর মেঘাকে ঝলসে দেয় এসিডে। অবির এখন পাগলাগারতে, আর মেঘার অবস্থা তো আপনারা দেখেই এলেন।
আজিম আর নওশাদের বিরুদ্ধে পুলিশি ব্যাবস্থা নিলেও প্রমানের অজুহাতে আপনারা ওদের ছেড়ে দেন। তাই নিজেই শোধ নিয়েছি, নির্মম ভাবে।
সারাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আদালতে। হয়তো সারার ফাঁসির সাজা হবে। কিন্তু তাতে সারার কষ্ট নেই, কারন ওর মনে মোক্ষম শোধ নিতে পারার প্রশান্তি।
(সমাপ্ত)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আবু আফজাল মোহাঃ সালেহ ১১/০৮/২০১৪বাহ বেশ ভাল।
-
ইমন শরীফ ১০/০৮/২০১৪আপনার সমাপ্তের দিনে আমি শুরু করলাম দাদা।
-
সহিদুল হক ১০/০৮/২০১৪ভাল লাগলো গল্পটি।
-
মঞ্জুর হোসেন মৃদুল ০৯/০৮/২০১৪বাহ বেশ লাগল।