উপলব্ধি
আব্বুর কবরের পাশে দাঁড়িয়ে আছি বেশ কিছুক্ষণ, মাথায় অনেকগুলো চিন্তাভাবনা এসে জুটলো। আমার আর আব্বুর বাহ্যিক দূরত্ব কয়েকহাত মাত্র,কিন্তু সেই মানুষটার সাথে চাইলেও কথা বলা যাচ্ছেনা, এই পৃথিবীতে নাকি তার কোনো অস্তিত্বই নেই! অথচ আজ থেকে ছয় বছর আগেও আব্বুর ডাক শুনতাম,ধরা যেত,ছোঁয়া যেত,শুনতাম বিরক্তিকর বকাঝকা আর অতুলনীয় 'বাবা' ডাক!
আব্বু মারা যাবার পর দুই এক মাস তার গন্ধটা কাপড়গুলোতে ছিলো,আমি সেগুলো অনুভব করতাম,কখনো বা যত্ন করে রেখে দিতাম,কিন্তু গন্ধটাও ধীরে ধীরে চলে গেল, আমি খুব চেষ্টা করে আব্বুর কণ্ঠ টা মনে রাখার চেষ্টা করি, দূর্ভাগ্যবশত তার কোনো অডিও-ভিডিও আমার কাছে নেই,এভাবে তার কণ্ঠস্বর দিন দিন অনেক অনুমাননির্ভর হয়ে যায় আমার কাছে।
মৃত্যু বিষয়টাকে তখন থেকে আমার খুব ভাঙতে ইচ্ছে করে,আমি বিভিন্নভাবে চেষ্টা করি এর রহস্য ভাঙতে, আমি বারবারই ব্যাহত হই, এরপর অনেকেই আমার সামনে মারা গেছেন,আমি খুব কাছে থেকে বিষয়টা দেখেছি। খুব বেশি কিছুই না,আমরা অবিরত শ্বাস-প্রশ্বাস চালাচ্ছি কিন্তু সেই মানুষটার এই ক্ষমতাটা নেই,আমাদের শরীরকে ব্যবহার করা সেই শক্তি যেটাকে আত্মা বলি সেটার কোনো একভাবে মুক্তি হয়ে গেছে এই শরীর থেকে,চাইলেও আর চোখ খুলে এই স্ট্যাটাস পড়া যাচ্ছেনা,হাতের আঙুলগুলো দিয়ে প্রিয় ফোনটা ধরা যাচ্ছেনা। এই অনুভূতির কোনো বর্ণনা নেই।
আমি আব্বুর কবরের দিকে তাকিয়ে ভাবি,আজ থেকে ছয় বছর আগেও এই মানুষটার তিন বেলা খেতে হতো! বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বর হবার ভয় ছিলো,অথচ আজ এতবছর থেকেও সে কিভাবে না খেয়ে সাড়ে তিনহাত মাটির নিচে রোদ-বৃষ্টির জড়তা উপেক্ষা করে শুয়ে আছে! সবাই করোনার ভয়ে ঘরে লুকাচ্ছে! আসলেই কি করোনার ভয়ে? কিসের ভয়ে! কার থেকে লুকাচ্ছে? আসলেই কি লুকিয়ে বাঁচা যায়?
এতগুলো মানুষ চলে যাচ্ছে,তাদের আর কেউ মনে রাখছেনা,তাদের এখন শুধু একটা সংখ্যা মনে হয়! দিন দিন আমরা সবাই সংখ্যা হয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের চোখে তো কাঠের চশমা! বুকে যখন শেষ নিঃশ্বাসটা নিতে গিয়ে খুব টান পড়ে যাবে,ওই মুহূর্তের জন্য কি প্রস্তুত আমরা?
আব্বুর কবরের দিকে তাকিয়ে মনে হলো,এটাই তাহলে আমার পরিণতি! হয়তোবা কয়েকটা দিন পরে আমারও ঝড়-বৃষ্টির ভয় আর থাকবেনা।
[পর্যবেক্ষণ ও উপলব্ধি ]
০৬'এপ্রিল,২০২০।
আব্বু মারা যাবার পর দুই এক মাস তার গন্ধটা কাপড়গুলোতে ছিলো,আমি সেগুলো অনুভব করতাম,কখনো বা যত্ন করে রেখে দিতাম,কিন্তু গন্ধটাও ধীরে ধীরে চলে গেল, আমি খুব চেষ্টা করে আব্বুর কণ্ঠ টা মনে রাখার চেষ্টা করি, দূর্ভাগ্যবশত তার কোনো অডিও-ভিডিও আমার কাছে নেই,এভাবে তার কণ্ঠস্বর দিন দিন অনেক অনুমাননির্ভর হয়ে যায় আমার কাছে।
মৃত্যু বিষয়টাকে তখন থেকে আমার খুব ভাঙতে ইচ্ছে করে,আমি বিভিন্নভাবে চেষ্টা করি এর রহস্য ভাঙতে, আমি বারবারই ব্যাহত হই, এরপর অনেকেই আমার সামনে মারা গেছেন,আমি খুব কাছে থেকে বিষয়টা দেখেছি। খুব বেশি কিছুই না,আমরা অবিরত শ্বাস-প্রশ্বাস চালাচ্ছি কিন্তু সেই মানুষটার এই ক্ষমতাটা নেই,আমাদের শরীরকে ব্যবহার করা সেই শক্তি যেটাকে আত্মা বলি সেটার কোনো একভাবে মুক্তি হয়ে গেছে এই শরীর থেকে,চাইলেও আর চোখ খুলে এই স্ট্যাটাস পড়া যাচ্ছেনা,হাতের আঙুলগুলো দিয়ে প্রিয় ফোনটা ধরা যাচ্ছেনা। এই অনুভূতির কোনো বর্ণনা নেই।
আমি আব্বুর কবরের দিকে তাকিয়ে ভাবি,আজ থেকে ছয় বছর আগেও এই মানুষটার তিন বেলা খেতে হতো! বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বর হবার ভয় ছিলো,অথচ আজ এতবছর থেকেও সে কিভাবে না খেয়ে সাড়ে তিনহাত মাটির নিচে রোদ-বৃষ্টির জড়তা উপেক্ষা করে শুয়ে আছে! সবাই করোনার ভয়ে ঘরে লুকাচ্ছে! আসলেই কি করোনার ভয়ে? কিসের ভয়ে! কার থেকে লুকাচ্ছে? আসলেই কি লুকিয়ে বাঁচা যায়?
এতগুলো মানুষ চলে যাচ্ছে,তাদের আর কেউ মনে রাখছেনা,তাদের এখন শুধু একটা সংখ্যা মনে হয়! দিন দিন আমরা সবাই সংখ্যা হয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের চোখে তো কাঠের চশমা! বুকে যখন শেষ নিঃশ্বাসটা নিতে গিয়ে খুব টান পড়ে যাবে,ওই মুহূর্তের জন্য কি প্রস্তুত আমরা?
আব্বুর কবরের দিকে তাকিয়ে মনে হলো,এটাই তাহলে আমার পরিণতি! হয়তোবা কয়েকটা দিন পরে আমারও ঝড়-বৃষ্টির ভয় আর থাকবেনা।
[পর্যবেক্ষণ ও উপলব্ধি ]
০৬'এপ্রিল,২০২০।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ০৯/০৬/২০২০অতুলনীয়।
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ০৯/০৬/২০২০সুন্দর-উপলব্ধি।
-
ফয়জুল মহী ০৯/০৬/২০২০ভালো লাগলো লেখা । সাহিত্যে বিচরণ ।