অজানা আলোর রহস্য
পর্ব-১(ধারাবাহিক রহস্য উপন্যাস)
...
অজানা আলোর রহস্য
--- রেজাউল রেজা---
____________________
বগা মিয়া।
পেশায় একজন গামছা বিক্রেতা।গামছা বিক্রি করে যা রোজগার হয় তা দিয়েই চলে তাঁর সংসার।
বগা মিয়া দিনের বেলা গ্রামে গ্রামে ঘুরে আর গামছা ফেরি করে।
একদিন সে গামছা বিক্রি করার জন্য অনেক দূরের একটা গ্রামে গেল।
সেখানে তাঁর বিক্রি ভালই হলো।
ঐ গ্রাম ঘুরে সব গামছা শেষ হলো।বেলা ডুবু ডুবু অবস্থা।
বাড়ি ফেরার জন্য পথ ধরল বগা।
হাটছে বগা।
দুর্গম পথ,এটেল মাটি,ধুলাটে রাস্তা।রাস্তায় লোকজন তেমন একটা নেই বললেই চলে।
মাঝে মাঝে দুই-একজন লোক দেখা যাচ্ছে সওদা হাতে বাজার থেকে বাড়ি ফিরছে।
তাদের দেখেই বুঝা যাচ্ছে বাজার অনেক দূরে।
ধূলায় ধূসরিত তাদের জামা কাপড়।
বগা মিয়া আপন মনেই চলছে স্ত্রী-সন্তানের কাছে নিজ কুটিরে ফেরার জন্য।
যেতে যেতে খানিকটা দূরে রাস্তার বাম পাশে তাঁর চোখে পড়ল একটা মিটি মিটি আলো।
কৌতূহল সৃষ্টি হলো বগার মনে।সিদ্ধান্ত নিল কাছে গিয়ে দেখবে।
অনেকদিন আগের কথা,
মিশরের কায়রো শহরের অদূরে একটা গ্রামে বিশাল বড়লোক এক ব্যক্তি ছিল।
খুব নামডাক ছিল তাঁর।
সবাই তার কথায় ওঠাবসা করত।একসময় তাঁর সব সম্পদ লুট হয়ে যায়।
পরে বেচারা পথে বসে।
কিন্তু তার একমাত্র সম্বল ছিল তার বাড়িটা।
তাঁর কোন সন্তান সন্ততি ছিলনা,শুধু একটা ভাইপো ছিল।
তাঁর ভাই-ভাবীও বেঁচে ছিলনা।
একটা সময় বেচারা মারা গেল।কিছুদিন পর তার স্ত্রী অন্যত্র বিয়ে করল।
বাড়িটাতে থাকল শুধু তাঁর ভাইপো।
কিছুদিন পর দেখা গেল গ্রামের কুচক্রী মহল তার ভাইপোকেও গ্রামছাড়া করে বাড়িটা দখলে নিল।
কিন্তু বেশিদিন ভোগ করতে পারলনা।
এক ভয়াল ভূমিকম্পে দেবে গেল পুরো বাড়িটা।
বগা মিয়া ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে আলোটার দিকে।
কিন্তু পেছন থেকে একজন ডাক দিল-এইযে,কে আপনি?ওদিকে যাচ্ছেন কেন?
আমরা এই গ্রামের মানুষ হয়েও ভয়ে ওদিকে যাইনা আর আপনি মিয়া ওদিকে যাচ্ছেন!
ঐ আলো কিসের আপনি জানেন?ওখানে জ্বীন দেবতাদের বাড়ি,ওরাই আলো জালাচ্ছে।
বগা কিছুটা ভয় পেয়ে গেল,ফিরে আসল।
বাড়ির পথে পা বাড়াল।
বাড়িতে এসে খেয়ে শুয়ে পড়ল কিন্তু ঘুম আসছেনা।
বার বার মনে পড়ছে ঐ আলোটার কথা।
একসময় বগা ঘুমিয়ে পড়ল।
ঘুমের মধ্যে একটা স্বপ্ন দেখল।
কে যেন তাকে বলছে,বগারে!ও বগা! তোর বাপ দাদার ভিটাকে তুই উদ্ধার কর।
বগার ঘুম ভেঙে গেল।
বগার মনে পড়ে গেল তাঁর দাদার বলা একটা গল্প।
তাঁর দাদার বাবাদের বাড়ি নাকি ছিল কায়রোর কাছেই।
তারা নাকি খুব প্রভাবশালী ছিলেন।তাদের শত্রুরা তাদেরকে তাড়িয়ে দিয়েছিল গ্রাম থেকে।
গ্রাম ছাড়া করেছিল।
বগার মনে একটা ভাবনা ঢুকে গেল।স্বপ্নটার কথাও মনে পড়ছে তাঁর।তাহলে কি ওই আলোর নিচে কোন বাড়ি আছে?বগা কিছু ভাবতে পারছেনা।
অবশেষে,সিদ্ধান্ত নিল সে ঐ আলোটা দেখতে যাবে।
গেলে হয়ত কিছু একটা জানা যাবে।পরের দিন ঠিক সন্ধ্যায় বগা ঐ আলোটার কাছে গেল,দেখল আগের মতই আলো জ্বলছে।
মনে পড়ে গেল কালকের লোকটার কথাগুলো কিন্তু ভয়কে প্রশ্রয় দিলনা বগা।
ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল আলেটার দিকে।
কাছে গিয়ে দেখল কোন মানুষ নেই।এমনকি পশুপাখিও নেই।
একটু ভয় পেয়ে গেল বগা।
তবুও একটু সাহস করে ঘুরে দেখতে লাগল চারিদিকে কিন্তু বাড়ি বলতে কিছুই নেই ওখানে।
জায়গাটা ভালভাবে ঘুরে দেখতে লাগলে বগা।
পাহাড়ের কাছে একটা সুরঙ্গ পথ দেখতে পেল কিন্তু অব্যবহৃত মনে হলো পথটা।
একটু এগিয়ে গেল তার হাতের টর্চ জ্বালিয়ে।
ওখানে একটা পায়ের চিহ্ন দেখতে পেল।
দেখে স্বস্থির নিশ্বাস ফেলল,তাহলে কেউ এই পথ দিয়ে চলেফেরা করে।বগা ঐ পথ ব্যবহার করে একটু এগিয়ে গেল।
কিছুটা এগিয়ে দেখতে পেল একটা বিশাল দরজা কিন্তু বিরাট একটা তালা ঝুলানো দরজায়।
আশাহত হলো বগা।
চারদিকটা একটু ভাল করে দেখে সেদিনের মত বাড়িতে ফিরে গেল।ঘুমিয়ে পড়ল কিন্তু সেই একই স্বপ্ন আবার দেখল-বগারে ও বগা!তোর বাপ দাদার ভিটাকে উদ্ধার কর।
বগা কিছু ভাবতে পারছেনা,কিভাবে এগুবে সে! তার বাপ-দাদার ভিটাই বা কোথায়?
বগার মাথায় একটা চিন্তা কাজ করল।
ঐখানে যে পায়ের চিহ্ন দেখেছে ওটাতো সদ্য কারো চলার চিহ্ন ছিল তাহলে মনেহয় কেউ আসে ওখানে, কেউ হয়ত আলোক বাতিটা জ্বালিয়ে দেয় প্রতিদিন সন্ধায়।
এটা ভেবে বগা একটা স্বস্থির নিশ্বাস ফেলল।
বগা চিন্তা করতে লাগল সন্ধার একটু আগে ওখানে গেলে হয়ত দেখা যাবে কে ওখানে যাতায়াত করে।
পরের দিন তাই করল সে।সন্ধার কিছুক্ষণ আগে সুরঙ্গটার অদূরে একটা জায়গায় লুকিয়ে থাকল।এমনভাবে লুকাল যেন কেউ আসলে দেখা যায়।পল পল করে সময় যাচ্ছে কিন্তু কেউ আসছেনা!
বিরক্তি ধরল বগার মনে তবুও আশা ছাড়লনা।
অবশেষে,মাগরিবের ঠিক কয়েক সেকেণ্ড আগে এক বৃদ্ধ আসল,আলোটা জ্বলতে শুরু করল।বগার চোখে চিক চিক করে আশার আলো জ্বলতে শুরু করল।
সিদ্ধান্ত নিল এই বৃদ্ধের সাথে সে দেখা করবেই কিন্তু মনে পরে গেল প্রথম দিনের কথা।
লোকটা বলেছিল,জ্বীন ভূতের কথা।বগা ভাবতে লাগল,সত্যিই যদি জ্বীন ভূত হয় তাহলে আমার কি কোন ক্ষতি করবে!
মনে হয়না যে ওর কোন ক্ষতি না করলে আমার ক্ষতি করবে।
সে ভয়ের চিন্তা বাদ দিয়ে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিল বৃদ্ধের সাথে।
বৃদ্ধ লোকটা তো ওই বাড়ি থেকে বেরই হচ্ছেনা!
বগা একটু এগুতে লাগল।
দেখল বৃদ্ধ লোকটি বের হচ্ছে।এগিয়ে গেল।
হঠাৎ কোন মানুষকে দেখে চমকিত হল বৃদ্ধ।
বগাকে শাসানোর সুরে বলল,কে তুমি?এখানে কেন?জানোনা এটা ভয়ঙ্কর জায়গা?
বগা একটু ভয় পেয়ে গেল।
তারপর বুকে একটু সাহস এনে বৃদ্ধকে বিনয়ের বলল,আমি আপনার সাথে কয়েকটা কথা বলার জন্য কিছুদিন থেকে চেষ্ঠা করছি।
কি কথা?আর এখানে মানুষ আসে সেটা তুমি জানো কি করে?
অতঃপর বগা সব ঘটনা খুলে বলল।
ঘটনা শুনে বৃদ্ধের চোখে একটা কেমন জানি আলো জ্বলে উঠল।
মনে হল,বৃদ্ধ বগাকে পেয়ে খুশিই হয়েছে।বৃদ্ধ আর কিছু না বলে বগাকে বলল-চল তোমাকে ভিতরটা দেখাই।
দুজনে বাড়িটার ভিতরে গেল।
বগা ভিতরে ঢুকে হতবম্ভ হয়ে গেল।এত সুন্দর আলিসান বাড়ি সে জীবনেও দেখেনি।
পুরো বাড়িটা ঘুরে দেখতে তাদের প্রায় ১৫ মিনিট লেগে গেল।
বগা খুব সুক্ষ্মদর্শী হয়ে সবকিছু দেখল।
একটা বিষয় খেয়াল করল,একটা রুমের ভেতর কিছু লেখা দেখতে পেল।
লেখাগুলো বগার কাছে পরিচিত মনে হল।
বৃদ্ধ বলল-এই বাড়ি নিয়ে আমি খুব যন্ত্রণায় আছি।
এর মালিকের হাতে তুলে না দেওয়া পর্যন্ত আমার শান্তি নেই কিন্তু কোথায় পাব এই বাড়ির মালিককে।এই বংশের একজনই জীবিত ছিল, তাকেও তাড়িয়ে দিয়েছিল শয়তানরা।
পরে সে যে কোথায় গেছে তার কোন সন্তান বা নাতী-নাতনী রেখে গেছে কিনা আমি কিছুই জানিনা..........(চলবে)
_____________________________
পর্বটি যেসব পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে-
১।দৈনিক আলো-২৯/০৭/১৮
২।অনাবিল সংবাদ-২৯/০৭/১৮
৩।আলোকিত দেশ-৩০/০৭/১৮
...
অজানা আলোর রহস্য
--- রেজাউল রেজা---
____________________
বগা মিয়া।
পেশায় একজন গামছা বিক্রেতা।গামছা বিক্রি করে যা রোজগার হয় তা দিয়েই চলে তাঁর সংসার।
বগা মিয়া দিনের বেলা গ্রামে গ্রামে ঘুরে আর গামছা ফেরি করে।
একদিন সে গামছা বিক্রি করার জন্য অনেক দূরের একটা গ্রামে গেল।
সেখানে তাঁর বিক্রি ভালই হলো।
ঐ গ্রাম ঘুরে সব গামছা শেষ হলো।বেলা ডুবু ডুবু অবস্থা।
বাড়ি ফেরার জন্য পথ ধরল বগা।
হাটছে বগা।
দুর্গম পথ,এটেল মাটি,ধুলাটে রাস্তা।রাস্তায় লোকজন তেমন একটা নেই বললেই চলে।
মাঝে মাঝে দুই-একজন লোক দেখা যাচ্ছে সওদা হাতে বাজার থেকে বাড়ি ফিরছে।
তাদের দেখেই বুঝা যাচ্ছে বাজার অনেক দূরে।
ধূলায় ধূসরিত তাদের জামা কাপড়।
বগা মিয়া আপন মনেই চলছে স্ত্রী-সন্তানের কাছে নিজ কুটিরে ফেরার জন্য।
যেতে যেতে খানিকটা দূরে রাস্তার বাম পাশে তাঁর চোখে পড়ল একটা মিটি মিটি আলো।
কৌতূহল সৃষ্টি হলো বগার মনে।সিদ্ধান্ত নিল কাছে গিয়ে দেখবে।
অনেকদিন আগের কথা,
মিশরের কায়রো শহরের অদূরে একটা গ্রামে বিশাল বড়লোক এক ব্যক্তি ছিল।
খুব নামডাক ছিল তাঁর।
সবাই তার কথায় ওঠাবসা করত।একসময় তাঁর সব সম্পদ লুট হয়ে যায়।
পরে বেচারা পথে বসে।
কিন্তু তার একমাত্র সম্বল ছিল তার বাড়িটা।
তাঁর কোন সন্তান সন্ততি ছিলনা,শুধু একটা ভাইপো ছিল।
তাঁর ভাই-ভাবীও বেঁচে ছিলনা।
একটা সময় বেচারা মারা গেল।কিছুদিন পর তার স্ত্রী অন্যত্র বিয়ে করল।
বাড়িটাতে থাকল শুধু তাঁর ভাইপো।
কিছুদিন পর দেখা গেল গ্রামের কুচক্রী মহল তার ভাইপোকেও গ্রামছাড়া করে বাড়িটা দখলে নিল।
কিন্তু বেশিদিন ভোগ করতে পারলনা।
এক ভয়াল ভূমিকম্পে দেবে গেল পুরো বাড়িটা।
বগা মিয়া ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে আলোটার দিকে।
কিন্তু পেছন থেকে একজন ডাক দিল-এইযে,কে আপনি?ওদিকে যাচ্ছেন কেন?
আমরা এই গ্রামের মানুষ হয়েও ভয়ে ওদিকে যাইনা আর আপনি মিয়া ওদিকে যাচ্ছেন!
ঐ আলো কিসের আপনি জানেন?ওখানে জ্বীন দেবতাদের বাড়ি,ওরাই আলো জালাচ্ছে।
বগা কিছুটা ভয় পেয়ে গেল,ফিরে আসল।
বাড়ির পথে পা বাড়াল।
বাড়িতে এসে খেয়ে শুয়ে পড়ল কিন্তু ঘুম আসছেনা।
বার বার মনে পড়ছে ঐ আলোটার কথা।
একসময় বগা ঘুমিয়ে পড়ল।
ঘুমের মধ্যে একটা স্বপ্ন দেখল।
কে যেন তাকে বলছে,বগারে!ও বগা! তোর বাপ দাদার ভিটাকে তুই উদ্ধার কর।
বগার ঘুম ভেঙে গেল।
বগার মনে পড়ে গেল তাঁর দাদার বলা একটা গল্প।
তাঁর দাদার বাবাদের বাড়ি নাকি ছিল কায়রোর কাছেই।
তারা নাকি খুব প্রভাবশালী ছিলেন।তাদের শত্রুরা তাদেরকে তাড়িয়ে দিয়েছিল গ্রাম থেকে।
গ্রাম ছাড়া করেছিল।
বগার মনে একটা ভাবনা ঢুকে গেল।স্বপ্নটার কথাও মনে পড়ছে তাঁর।তাহলে কি ওই আলোর নিচে কোন বাড়ি আছে?বগা কিছু ভাবতে পারছেনা।
অবশেষে,সিদ্ধান্ত নিল সে ঐ আলোটা দেখতে যাবে।
গেলে হয়ত কিছু একটা জানা যাবে।পরের দিন ঠিক সন্ধ্যায় বগা ঐ আলোটার কাছে গেল,দেখল আগের মতই আলো জ্বলছে।
মনে পড়ে গেল কালকের লোকটার কথাগুলো কিন্তু ভয়কে প্রশ্রয় দিলনা বগা।
ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল আলেটার দিকে।
কাছে গিয়ে দেখল কোন মানুষ নেই।এমনকি পশুপাখিও নেই।
একটু ভয় পেয়ে গেল বগা।
তবুও একটু সাহস করে ঘুরে দেখতে লাগল চারিদিকে কিন্তু বাড়ি বলতে কিছুই নেই ওখানে।
জায়গাটা ভালভাবে ঘুরে দেখতে লাগলে বগা।
পাহাড়ের কাছে একটা সুরঙ্গ পথ দেখতে পেল কিন্তু অব্যবহৃত মনে হলো পথটা।
একটু এগিয়ে গেল তার হাতের টর্চ জ্বালিয়ে।
ওখানে একটা পায়ের চিহ্ন দেখতে পেল।
দেখে স্বস্থির নিশ্বাস ফেলল,তাহলে কেউ এই পথ দিয়ে চলেফেরা করে।বগা ঐ পথ ব্যবহার করে একটু এগিয়ে গেল।
কিছুটা এগিয়ে দেখতে পেল একটা বিশাল দরজা কিন্তু বিরাট একটা তালা ঝুলানো দরজায়।
আশাহত হলো বগা।
চারদিকটা একটু ভাল করে দেখে সেদিনের মত বাড়িতে ফিরে গেল।ঘুমিয়ে পড়ল কিন্তু সেই একই স্বপ্ন আবার দেখল-বগারে ও বগা!তোর বাপ দাদার ভিটাকে উদ্ধার কর।
বগা কিছু ভাবতে পারছেনা,কিভাবে এগুবে সে! তার বাপ-দাদার ভিটাই বা কোথায়?
বগার মাথায় একটা চিন্তা কাজ করল।
ঐখানে যে পায়ের চিহ্ন দেখেছে ওটাতো সদ্য কারো চলার চিহ্ন ছিল তাহলে মনেহয় কেউ আসে ওখানে, কেউ হয়ত আলোক বাতিটা জ্বালিয়ে দেয় প্রতিদিন সন্ধায়।
এটা ভেবে বগা একটা স্বস্থির নিশ্বাস ফেলল।
বগা চিন্তা করতে লাগল সন্ধার একটু আগে ওখানে গেলে হয়ত দেখা যাবে কে ওখানে যাতায়াত করে।
পরের দিন তাই করল সে।সন্ধার কিছুক্ষণ আগে সুরঙ্গটার অদূরে একটা জায়গায় লুকিয়ে থাকল।এমনভাবে লুকাল যেন কেউ আসলে দেখা যায়।পল পল করে সময় যাচ্ছে কিন্তু কেউ আসছেনা!
বিরক্তি ধরল বগার মনে তবুও আশা ছাড়লনা।
অবশেষে,মাগরিবের ঠিক কয়েক সেকেণ্ড আগে এক বৃদ্ধ আসল,আলোটা জ্বলতে শুরু করল।বগার চোখে চিক চিক করে আশার আলো জ্বলতে শুরু করল।
সিদ্ধান্ত নিল এই বৃদ্ধের সাথে সে দেখা করবেই কিন্তু মনে পরে গেল প্রথম দিনের কথা।
লোকটা বলেছিল,জ্বীন ভূতের কথা।বগা ভাবতে লাগল,সত্যিই যদি জ্বীন ভূত হয় তাহলে আমার কি কোন ক্ষতি করবে!
মনে হয়না যে ওর কোন ক্ষতি না করলে আমার ক্ষতি করবে।
সে ভয়ের চিন্তা বাদ দিয়ে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিল বৃদ্ধের সাথে।
বৃদ্ধ লোকটা তো ওই বাড়ি থেকে বেরই হচ্ছেনা!
বগা একটু এগুতে লাগল।
দেখল বৃদ্ধ লোকটি বের হচ্ছে।এগিয়ে গেল।
হঠাৎ কোন মানুষকে দেখে চমকিত হল বৃদ্ধ।
বগাকে শাসানোর সুরে বলল,কে তুমি?এখানে কেন?জানোনা এটা ভয়ঙ্কর জায়গা?
বগা একটু ভয় পেয়ে গেল।
তারপর বুকে একটু সাহস এনে বৃদ্ধকে বিনয়ের বলল,আমি আপনার সাথে কয়েকটা কথা বলার জন্য কিছুদিন থেকে চেষ্ঠা করছি।
কি কথা?আর এখানে মানুষ আসে সেটা তুমি জানো কি করে?
অতঃপর বগা সব ঘটনা খুলে বলল।
ঘটনা শুনে বৃদ্ধের চোখে একটা কেমন জানি আলো জ্বলে উঠল।
মনে হল,বৃদ্ধ বগাকে পেয়ে খুশিই হয়েছে।বৃদ্ধ আর কিছু না বলে বগাকে বলল-চল তোমাকে ভিতরটা দেখাই।
দুজনে বাড়িটার ভিতরে গেল।
বগা ভিতরে ঢুকে হতবম্ভ হয়ে গেল।এত সুন্দর আলিসান বাড়ি সে জীবনেও দেখেনি।
পুরো বাড়িটা ঘুরে দেখতে তাদের প্রায় ১৫ মিনিট লেগে গেল।
বগা খুব সুক্ষ্মদর্শী হয়ে সবকিছু দেখল।
একটা বিষয় খেয়াল করল,একটা রুমের ভেতর কিছু লেখা দেখতে পেল।
লেখাগুলো বগার কাছে পরিচিত মনে হল।
বৃদ্ধ বলল-এই বাড়ি নিয়ে আমি খুব যন্ত্রণায় আছি।
এর মালিকের হাতে তুলে না দেওয়া পর্যন্ত আমার শান্তি নেই কিন্তু কোথায় পাব এই বাড়ির মালিককে।এই বংশের একজনই জীবিত ছিল, তাকেও তাড়িয়ে দিয়েছিল শয়তানরা।
পরে সে যে কোথায় গেছে তার কোন সন্তান বা নাতী-নাতনী রেখে গেছে কিনা আমি কিছুই জানিনা..........(চলবে)
_____________________________
পর্বটি যেসব পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে-
১।দৈনিক আলো-২৯/০৭/১৮
২।অনাবিল সংবাদ-২৯/০৭/১৮
৩।আলোকিত দেশ-৩০/০৭/১৮
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোশতাক সাব্বির২ ১১/০৮/২০১৮দারুন
-
মধু মঙ্গল সিনহা ০৯/০৮/২০১৮খুবই সুন্দর একটি গল্প,অনেক অনেক ধন্যবাদ ভালো থাকবেন!
-
মোঃ নূর ইমাম শেখ বাবু ০৭/০৮/২০১৮গ্রেট
-
কামরুজ্জামান সাদ ০৭/০৮/২০১৮ভাল লেগেছে।চলুক তবে...