বৃদ্ধের সমাজ সেবা
মাহাতাব উদ্দিন.....!
শহরে বসবাসের জন্যে গ্রাম ছেড়ে সেতাবগঞ্জে মাহাতাব উদ্দিন।
তাঁর গ্রামে, তিনি সকলের ভালবাসার/শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন।
গ্রামে মাহাতাব উদ্দিনের অনেক আত্মত্যাগ রয়েছে। এটুকুই জানি ....
.
_
যাই হোক, মাহাতাব উদ্দিনের শহুরে বসবাস নিয়ে বলি.......
স্বাভাবিক ভাবেই মানুষ হিসেবে সমাজে বসবাস শুরু করলেন মাহাতাব উদ্দিন।
সমাজ মানেই প্রতিবেশী...!
ইসলামে প্রতিবেশীর প্রতি কর্তব্য সর্ম্পকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সকলেই হয়তো পালন করে না। কিন্তু, কিছু মাহাতাব উদ্দিন আছেন, যারা তাঁদের সবটুকু দিয়ে অন্যকে সাহায্য করেন, সমাজ সেবা করেন।
যাদের জীবন শুধু আত্মত্যাগে ভড়া..!
ঠিক সেরকম একজন মানুষ, "মাহাতাব উদ্দিন"।
.
মাহাতাব উদ্দিন যুবক কাল থেকে হাজার অসুস্থতা, ব্যস্ততা উপেক্ষা করে আজ তাঁর ৮৬বছর বয়স পর্যন্ত ওয়াক্ত অনুযায়ী ওয়াক্তের নামাজ আদায় করে চলছেন..। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের কোনো কা'যা তাঁর হয় নি।
.
হয়তো মাহাতাব উদ্দিন, প্রতিবেশীর প্রতি দায়িত্ব সম্পর্কে জানতেন.।
.
বসবাস শুরুর পর থেকেই স্বাভাবিক ভাবে প্রত্যেহ হাঁটে বাজার করতে যেতেন তিনি।
প্রতিবেশী অনেকেই তাঁকে "নানা" বলে ডাকতেন!
তো সমাজে মাহাতাব উদ্দিনের নাতি-নাতনিদের ব্যাপক আবদার আর আবদার।
সব আবদার মেটানোর চেষ্টায় দিন কাটাতেন মাহাতাব উদ্দিন।
আজ ওমুক নাতির বায়না, কাল আরেক নাতি...
কেউ নিজের নাহলেও সবাই তাঁর হৃদয়ে বসবাস করে।
তো নাতিদের বায়না শুরু হয় নানার বাজার যাওয়া নিয়ে...
ও নানা.....ও নান্না...???
কোথায় যাচ্ছেন..?
জবাবে, বাজারে রে....! কেন?
নাতির বায়না শুরু.. এটা আনবেন, সেটা আনবেন....! একগাদা আবদার..!!!
নাতি পর্ব গেল.....
ওদিকে, নাতনী প্রতিবেশীরা রাস্তায় সর্বদা প্রস্তুত...! কবে নানা রাস্তায় বের হবেন...।
.
অপেক্ষা..........
.
নানা রাস্তায় আসলে, ওমনি তাঁর নাতনী প্রতিবেশীরা নানা...নানা বলে, তাঁর কাছে ছুটে আসেন। আর নানাও বায়না শোনার জন্যে প্রস্তুত।
কি রে..? কি আনতে হবে, একে একে বল সব জলদি...
শুরু হলো বাজারের নাম...
কেউ বলে, আদা রসুন পেঁয়াজ সবজি.....
এই নাও ব্যাগ, এই নাও টাকা.....
নানা তাড়াতাড়ি আসবেন, বাচ্চারা স্কুল থেকে এসে খাবার চাইবে..!
এভাবে ব্যাগ, টাকা আর খরচের নাম মস্তিষ্কে ঢুকালেন মাহাতাব উদ্দিন। বুড়ো বেচারি..! কোন জিনিস আনতে ভুলে গেলে ফের ছুটতে হতো বাজারের পথে.....
প্রত্যেহ প্রতিবেশী নাতনীর সংখ্যা বারার সাথে সাথে,
বাজার করতে দেওয়া নাতনীদের অদল-বদল চলতো..... হয়তো, তাদের মাঝেও মানবিকতা কাজ করতো....!
অন্যদিকে নাতিরা তো সর্বদা আস্টে, পিস্টে..!
সেতাবগঞ্জ ব্যস্ত বাজার থেকে, প্রচন্ড ভীড় উপেক্ষা করে যার যার ব্যাগে বাজার নিয়ে বাসায় ফিরতেন মাহাতাব উদ্দিন..!
বাজারের সময় সবাই তাঁকে খুঁজে নিলেও, বাজার দিতে মাহাতাব উদ্দিনকেই যার যার বাসায় গিয়ে দিয়ে আসতে হয়...
বিনিময়ে মাহাতাব উদ্দিন পেতেন, "নানা আপনার ভালো হোক, সালামালাইকুম...."
মাহাতাব উদ্দিন তাতেই খুশি। কারন তিনি প্রাণপনে বিশ্বাস করেন, "স্বার্থের বিনিময়ে সাহায্য হয় না"।
আর সাহয্য করাকে, তিনি তাঁর সামান্য দায়িত্ববোধ মনে করেন।
প্রতিবেশীদের অসুখ-বিসুখের খবর পেলেই যথাসম্ভব ছুঁটা-ছুঁটি, নিজ টাকা দিয়ে যথাসম্ভব ঔষধ কিনে দিতেন....!
.
এভাবে চলতে চলতে....
একদিন এক দারিদ্র প্রতিবেশী হাসপাতালে ভর্তি...! জুরুরি ভিত্তিতে রোগীর O+ রক্তের প্রয়োজন...
কথাটি মাহাতাব উদ্দিনের কানে আসলে, সন্তানদের অগোচরে গোপনে এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে,
বিকেলে বাড়ি ফিরে কঠিন অসুস্থ হয়ে পরেন মাহাতাব উদ্দিন..!
ডাক্তার বাঁচার মতো আশা দেখছেন না..! তাঁর দুই ছেলে মেজবাহুল, সোহেল এবং ৫কন্যা থেমে নেই...
রংপুর মেডিক্যালে একমাস চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেন...
সুস্থতার পর পরই ফের শুরু হয় প্রতিবেশী নাতি /নাতনীর আবদার....
মাহাতাব উদ্দিন তা নিয়েই ফের নিজেকে উৎস্বর্গ করা শুরু করেন।
.
সারাজীবন অনেক অনেক মানুষের সেবা করেছেন মাহাতাব উদ্দিন..!
বিনিময়ে সকলের ভালবাসা/সম্মান।
.
হয়তো সেখানকার চেয়ারম্যান, এম.পির কানে মাহাতাব উদ্দিনের মতো মানুষের কথাটা কানে যায় নি..!
গেলে হয়তো বা তাঁকে "সমাজসেবা" পুরুষ্কার দেওয়া হতো.!
আসলে আমাদের দেশে, আসল সমাজ সেবকরা স্বীকৃতি পাই না..!
ক্ষমতার জোরে, সমাজ শত্রুরাই পেয়ে যায় বড় বড় "সমাজসেবার পদক"..!!!
আর মাহাতাব উদ্দিনের মতো প্রকৃত সমাজ সেবকরা সারাজীবন সমাজের ভীড়ে পঁচে থাকেন।
.
জয় হোক প্রকৃত জয়ীদের, এই কামনা।
শহরে বসবাসের জন্যে গ্রাম ছেড়ে সেতাবগঞ্জে মাহাতাব উদ্দিন।
তাঁর গ্রামে, তিনি সকলের ভালবাসার/শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন।
গ্রামে মাহাতাব উদ্দিনের অনেক আত্মত্যাগ রয়েছে। এটুকুই জানি ....
.
_
যাই হোক, মাহাতাব উদ্দিনের শহুরে বসবাস নিয়ে বলি.......
স্বাভাবিক ভাবেই মানুষ হিসেবে সমাজে বসবাস শুরু করলেন মাহাতাব উদ্দিন।
সমাজ মানেই প্রতিবেশী...!
ইসলামে প্রতিবেশীর প্রতি কর্তব্য সর্ম্পকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সকলেই হয়তো পালন করে না। কিন্তু, কিছু মাহাতাব উদ্দিন আছেন, যারা তাঁদের সবটুকু দিয়ে অন্যকে সাহায্য করেন, সমাজ সেবা করেন।
যাদের জীবন শুধু আত্মত্যাগে ভড়া..!
ঠিক সেরকম একজন মানুষ, "মাহাতাব উদ্দিন"।
.
মাহাতাব উদ্দিন যুবক কাল থেকে হাজার অসুস্থতা, ব্যস্ততা উপেক্ষা করে আজ তাঁর ৮৬বছর বয়স পর্যন্ত ওয়াক্ত অনুযায়ী ওয়াক্তের নামাজ আদায় করে চলছেন..। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের কোনো কা'যা তাঁর হয় নি।
.
হয়তো মাহাতাব উদ্দিন, প্রতিবেশীর প্রতি দায়িত্ব সম্পর্কে জানতেন.।
.
বসবাস শুরুর পর থেকেই স্বাভাবিক ভাবে প্রত্যেহ হাঁটে বাজার করতে যেতেন তিনি।
প্রতিবেশী অনেকেই তাঁকে "নানা" বলে ডাকতেন!
তো সমাজে মাহাতাব উদ্দিনের নাতি-নাতনিদের ব্যাপক আবদার আর আবদার।
সব আবদার মেটানোর চেষ্টায় দিন কাটাতেন মাহাতাব উদ্দিন।
আজ ওমুক নাতির বায়না, কাল আরেক নাতি...
কেউ নিজের নাহলেও সবাই তাঁর হৃদয়ে বসবাস করে।
তো নাতিদের বায়না শুরু হয় নানার বাজার যাওয়া নিয়ে...
ও নানা.....ও নান্না...???
কোথায় যাচ্ছেন..?
জবাবে, বাজারে রে....! কেন?
নাতির বায়না শুরু.. এটা আনবেন, সেটা আনবেন....! একগাদা আবদার..!!!
নাতি পর্ব গেল.....
ওদিকে, নাতনী প্রতিবেশীরা রাস্তায় সর্বদা প্রস্তুত...! কবে নানা রাস্তায় বের হবেন...।
.
অপেক্ষা..........
.
নানা রাস্তায় আসলে, ওমনি তাঁর নাতনী প্রতিবেশীরা নানা...নানা বলে, তাঁর কাছে ছুটে আসেন। আর নানাও বায়না শোনার জন্যে প্রস্তুত।
কি রে..? কি আনতে হবে, একে একে বল সব জলদি...
শুরু হলো বাজারের নাম...
কেউ বলে, আদা রসুন পেঁয়াজ সবজি.....
এই নাও ব্যাগ, এই নাও টাকা.....
নানা তাড়াতাড়ি আসবেন, বাচ্চারা স্কুল থেকে এসে খাবার চাইবে..!
এভাবে ব্যাগ, টাকা আর খরচের নাম মস্তিষ্কে ঢুকালেন মাহাতাব উদ্দিন। বুড়ো বেচারি..! কোন জিনিস আনতে ভুলে গেলে ফের ছুটতে হতো বাজারের পথে.....
প্রত্যেহ প্রতিবেশী নাতনীর সংখ্যা বারার সাথে সাথে,
বাজার করতে দেওয়া নাতনীদের অদল-বদল চলতো..... হয়তো, তাদের মাঝেও মানবিকতা কাজ করতো....!
অন্যদিকে নাতিরা তো সর্বদা আস্টে, পিস্টে..!
সেতাবগঞ্জ ব্যস্ত বাজার থেকে, প্রচন্ড ভীড় উপেক্ষা করে যার যার ব্যাগে বাজার নিয়ে বাসায় ফিরতেন মাহাতাব উদ্দিন..!
বাজারের সময় সবাই তাঁকে খুঁজে নিলেও, বাজার দিতে মাহাতাব উদ্দিনকেই যার যার বাসায় গিয়ে দিয়ে আসতে হয়...
বিনিময়ে মাহাতাব উদ্দিন পেতেন, "নানা আপনার ভালো হোক, সালামালাইকুম...."
মাহাতাব উদ্দিন তাতেই খুশি। কারন তিনি প্রাণপনে বিশ্বাস করেন, "স্বার্থের বিনিময়ে সাহায্য হয় না"।
আর সাহয্য করাকে, তিনি তাঁর সামান্য দায়িত্ববোধ মনে করেন।
প্রতিবেশীদের অসুখ-বিসুখের খবর পেলেই যথাসম্ভব ছুঁটা-ছুঁটি, নিজ টাকা দিয়ে যথাসম্ভব ঔষধ কিনে দিতেন....!
.
এভাবে চলতে চলতে....
একদিন এক দারিদ্র প্রতিবেশী হাসপাতালে ভর্তি...! জুরুরি ভিত্তিতে রোগীর O+ রক্তের প্রয়োজন...
কথাটি মাহাতাব উদ্দিনের কানে আসলে, সন্তানদের অগোচরে গোপনে এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে,
বিকেলে বাড়ি ফিরে কঠিন অসুস্থ হয়ে পরেন মাহাতাব উদ্দিন..!
ডাক্তার বাঁচার মতো আশা দেখছেন না..! তাঁর দুই ছেলে মেজবাহুল, সোহেল এবং ৫কন্যা থেমে নেই...
রংপুর মেডিক্যালে একমাস চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেন...
সুস্থতার পর পরই ফের শুরু হয় প্রতিবেশী নাতি /নাতনীর আবদার....
মাহাতাব উদ্দিন তা নিয়েই ফের নিজেকে উৎস্বর্গ করা শুরু করেন।
.
সারাজীবন অনেক অনেক মানুষের সেবা করেছেন মাহাতাব উদ্দিন..!
বিনিময়ে সকলের ভালবাসা/সম্মান।
.
হয়তো সেখানকার চেয়ারম্যান, এম.পির কানে মাহাতাব উদ্দিনের মতো মানুষের কথাটা কানে যায় নি..!
গেলে হয়তো বা তাঁকে "সমাজসেবা" পুরুষ্কার দেওয়া হতো.!
আসলে আমাদের দেশে, আসল সমাজ সেবকরা স্বীকৃতি পাই না..!
ক্ষমতার জোরে, সমাজ শত্রুরাই পেয়ে যায় বড় বড় "সমাজসেবার পদক"..!!!
আর মাহাতাব উদ্দিনের মতো প্রকৃত সমাজ সেবকরা সারাজীবন সমাজের ভীড়ে পঁচে থাকেন।
.
জয় হোক প্রকৃত জয়ীদের, এই কামনা।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
পরশ ২৯/১২/২০১৬সবারই এমন হওয়া উচিত
-
জহির মাহমুদ ২৯/১২/২০১৬সেবাই পরম ধর্ম। জীবনভর একাজই করা উচিত মানুষের । অনন্য প্রকাশ।
-
সোলাইমান ২৮/১২/২০১৬অব্যাহত অপ্রিয় সত্যের কচড়ায় ফুটে উঠলো সমাজের করুণ দুর্দশা ৷
দারুণ ক্রমাগত প্রয়াস, ভালবাসা ও নিরন্তর মঙ্গল কামনা প্রিয় ৷ -
রাসেল আহাম্মেদ ২৮/১২/২০১৬একদম ঠিক বলেছেন।ক্ষমতার জোরে সমাজের শত্রুরাই সমাজ সেবার পুরুষ্কার জিতছে।আর আসল সমাজ সেবিরা থেকে যাচ্ছে সমাজেরই অন্তরাই।
-
আব্দুল হক ২৭/১২/২০১৬সারা জীবনই মানুষের সেবা করা উচিত
-
ফয়জুল মহী ২৭/১২/২০১৬প্রজ্ঞাভাস্বর লিখনীতে দ্যুতি ছড়িয়ে পড়ুক