www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

সাহিত্যের একাল সেকাল

“যায় দিন ভালো যায়”।
আগের দিনই ভালো ছিলো। স্কুলের বই পড়তাম শুধু। তার উপরই ছিলো মূল ধ্যান জ্ঞান। পাশাপাশি সাহিত্যিক বই গুলোকে সাজেস্ট করতো পরিবারের এবং বাইরের পরিচিত কিছু গুনীজনরা।

এক নাগাড়ে টেক্টবুক পড়তে পড়তে অনীহা চলে আসতো। সেই অনীহা কাটাতো আউট বই... পরিবারে মা এবং বাবার একটা প্রখর ধারণা আছে সাহিত্যিক বই যারা পড়ে কিংবা সাহিত্যের সাথে যারা জড়ায় তাদের জীবন সুখী হয়। জীবন সুখী হওয়ার এক মহা তাড়নার মাঝে বড় হতে হয়েছে আমাকে,হচ্ছি!
তবে আমার ছোট মামাকে বলা যায়,সাহিত্যের এক নিবেদিত প্রাণ। এই আউট বই পড়া নিয়ে পরিবারের সাপোর্ট বলতে এই মামাই মাঝেমাঝে মাকে সুপারিশ করতো।

যাক আজ যে কথা বলতে চাচ্ছি তাই বলি প্যাঁচিয়ে লাভ নেই। এরপর দেখা যাবে দীর্ঘ লেখা দেখে না পড়েই মানুষ নাক ছিটকাবে। সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে মানুষ আর পড়তে চায় না,সবাই বলতে চায় লিখতে চায়। আমিও তাদের কাতারেই। তবে আমার লেখাটা আপনাকে পড়তে হবে আমি সেই বন্দবস্তই করতে চলেছি।

বয়স বিবেচনায় ছোট বেলায় মামার এক ক্লাবের কল্যাণে বিভিন্ন বই আমার হাতে আসতো। নানু বাড়ি গেলে মামার নিজস্ব সংগ্রহ এবং ক্লাবের সংগ্রহশালার বই পড়েই সাহিত্যিক বইয়ের প্রতি আমার ভালো লাগা শুরু হয়েছে।এরপর রহস্য/অভিযান দিয়ে কিশোর জীবন পাড় করে গেলাম। এরপর আমি নিজেই বই সংগ্রহ শুরু করে দেই। সর্বপ্রথম ক্লাস এইটে পড়ার সময় নিজের টাকায় কিনেছি কাজী নজরুল ইসলামের “অগ্নিবীণা”। এরপর শুরু হয় না জানিয়ে বই কিনার পর্ব। তখন নিয়মিত একটা ডায়েরিতে কবিতা লিখতাম। স্কুলে/কোচিং এ বন্ধুদের দেখাতাম। বন্ধুরা বাহবাহ দিতো... বুঝে দিত নাকি না বুঝে দিতো তা জানার প্রয়োজনও বোধ করেনি। আহা, কি দিন ছিলো সেগুলো।

তখন থেকেই টুকটাক সাহিত্য ভালোবাসে এমন মানুষদের সাথে পরিচয় ও বলতে গেলে অনেকটা তাদের দিকনির্দেশনায় আমার কবিতার কাঠামোগত পরিবর্তন আসে। তখন মনে হতো সাহিত্য সংশ্লিষ্ট সকল মানুষই উদার,সবাই মুক্তমনা। এরপর ফেসবুকে টুকটাক লেখা দিতাম। ফোনের জ্বলজ্বলে আলোতে নিজের কবিতাগুলো দেখতে কি যে ভালো লাগতো তা বলে বুঝানো যাবে না। এরপর অনলাইন পত্রিকা/ ওয়েবপোর্টাল সহ নানা ভাবে লেখা ছড়াতে শুরু করলে সাহিত্যের প্রতি ধ্যানজ্ঞান বাড়তে শুরু করে।

ধীরে ধীরে সাহিত্য নিয়ে কাজ করার ইচ্ছাও জাগতে শুরু করে। আহা সবসময় ভাবতাম এই রাস্তাটা আলোর রাস্তা। এখানে সবাই আলোকিত মানুষ। কিন্তু না, যখন দূর থেকে এই রাস্তা দেখেছি তখন খুব ভালো লেগেছে কিন্তু এই রাস্তায় হাটতে গিয়ে নিত্যদিন নতুন সব মূখের সাথে পরিচয় হচ্ছে। যেসকল মুখ আমার দেখার কথা ছিলো না। এমনকি আমি ভাবিনি। এই পথে সবাই ভালো না। আমার ধারণা ভুল প্রমাণ হয়েছে।কারণ, আমি যাদের পড়ে সাহিত্যে এসেছি তারা নেই এই বিংশশতাব্দীর সাহিত্যে।চাটুকার,হিংসা বিদ্বেষে লেপে গেছে বর্তমান সাহিত্য। এই শতাব্দীর সাহিত্যে গভীরতা নেই। এই শতাব্দীর সাহিত্যে ভালোবাসা নেই। এই শতাব্দীর সাহিত্যে আছে বই বেচা। আছে কোটি কোটি মানহীন লেখক আর যত্রতত্র মানহীন প্রকাশক। হাতেগোনা কিছু শক্তিশালী লেখনীর নবীন লেখক বাদ দিলে এই শতাব্দীতে পাঠকের চেয়ে লেখকের সংখ্যা বেশি।

আগামী প্রজন্ম এই শতাব্দীর লেখকদের কাছ থেকে কিচ্ছু পাবে না। পাবে শুধু কয়েক মিলিয়ন মানহীন বই।
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ৪৮৮ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৮/০২/২০২১

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast