প্রিয়মুখ
শাহবাগ মোড় থেকে দোয়েলচত্বরের দিকে হাটছে বাড়ি থেকে পালানো রিমি আর সাইফুল।
এই রিমি ভয় পাচ্ছো নাকি?কথা বলো না কেন?তোমার কি ভালো লাগছে না?
তো আমি এখন তোমার কোন প্রশ্নটার জবাব দিবো,ভয় পাচ্ছি কিনা? না কথা কেন বলি না নাকি ভালো লাগছে কিনা?
চিরকাল তো তুমি এক কথায় উত্তর দিয়ে এসেছো,এবার না হয় তিনটা প্রশ্ন মিলিয়ে একটা উওর দাও!
তিনটা প্রশ্নের কখনোই একটা উত্তর হতে পারে না।আমি বুঝতে পারছি না এই সিচুয়েশনে তুমি এতো কথা বলছো কি করে?আচ্ছা আমাকে এটা বলো আমরা এখন কোথায় যাবো?
কেন তোমার কি হাটতে খারাপ লাগছে? এই পথ ধরে হাটতে হাটতে দোয়েল চত্ত্বর পর্যন্ত যাবো,তারপর না হয় যেকোন একটা গাড়িতে উঠে কোথাও যাওয়া যাবে।
কোথাও মানে?তুমি না বলেছিলে সব ঠিক করা আছে?
মুচকি হাসছে,সাইফুল।
হাসছো কেন?আমার কথা এতটা বিশ্বাস করো জেনে হাসলাম।আরে এই সন্ধ্যা বেলা বাড়ি থেকে পালিয়েছি, মানিব্যাগটাও ভুলে আনিনি কি আর ঠিক করবো বলো।তোমার কাছে কিছু টাকা আছে না,ওতেই চলে যাবে।আজ রাতটা কোন ভাবে কভার দিতে পারলে কাল সারাদিন সময় পাওয়া যাবে পরবর্তী কি পদক্ষেপ চিন্তা করার।
ওহ,আচ্ছা তাহলে তুমি কাল সারাদিন ভাববে কি করবে,কোথায় যাবে তাই না?গ্রেট!আমার জীবনের অন্যতম একটি ভুল তোমার সাথে পালানো,গাধা কোথাকার।
যাক ভালোই হলো,গাধা বলেছো।
আচ্ছা গাধা কি তোমার খুব প্রিয় প্রাণী?এতো প্রাণী থাকতে তুমি আমাকে গাধা বললে,তারমানে নিশ্চয়ই এটা তোমার প্রিয় প্রাণী হবে।
রিমি কিছু বলছে না,জানে এই উজবুকের সাথে কথা বলার কোন মানে হয় না।এর দ্বারা কখনোই সম্ভব না একটা মেয়েকে নিয়ে পালালে কি করতে হবে তার প্লান করা।সুতরাং যা করার তাকেই করতে হবে।
এই রিমি দেখো,ঢাবির কোন একটা গাছে কেমন বউ কথা কও পাখি ডাকছে।আচ্ছা ওরা কি মানুষের কথা বুঝতে পারে?এই যে,তুমি কথা বলছো না তাই কোন একটা পাখি ডেকে উঠছে বউ কথা কও!রহস্যজনক না?আচ্ছা তোমাকে এখনও বিয়ে করিনি তাহলে বউ কথা কও কেন বলবে?ওদের তো বলা উচিত রিমি কথা কও,তাই না?
রিমির মনে মনে বিড়বিড় করছে,গরু যেমন অবসর সময় জাবড় কাটে এই সাইফুল ঠিক কথার মাধ্যমে জাবড় কাটছে।পূর্বজন্ম থাকলে নিশ্চয়ই এ আগে গরু ছিলো,নাহ একে গাধা বলা ভুল হয়েছে।
আহ্,রিমি কথা না বললে সময় কাটবে না।এই রকম একটা থমথমে মনোরম পরিবেশ সবসময় পাবে না!
ক্ষীণ স্বরে রিমি বললো-তোমার সাথে কোন কথা থাকতে পারে বলে মনে হচ্ছে না।বকবক করো না,আমার ভালো লাগছে না।
রিমির কথাকে তোয়াক্কা না করে সাইফুল বললো আচ্ছা রিমি এই বকবক শব্দটা কোথা থেকে এসেছে বলতে পারো?আচ্ছা এর মানে কি দুটো বক?আচ্ছা বক কি বকবক শব্দে ডাকে?
এই তুমি থামবে?
তোমার সাথে পালানোর চেয়ে আমার বিয়ে হয়ে যাওয়াটা ভালো ছিলো!
আমার মনে হয় সেটা কখনোই ভালো হতো না,আরে আমি তোমার ওই হবু বরকে দেখেছি।ভুঁড়িওয়ালা তারউপর অভদ্র।আমি যখন তাকে গিয়ে বললাম,রিমি আমার খুব ভালো বন্ধু আর আমি শুনলাম আপনি নাকি তাকেই বিয়ে করছেন?সে আমাকে সরাসরি বললো তোকে যেন আর ওর সাথে না দেখি হারামজাদা।আমি বুঝতেই পারলাম না কেন সে এমনটা করলো।
রিমি ইতিমধ্যে হ্যান্ডব্যাগ থেকে কটোনবার্টের মাথা থেকে তুলো খুলে নিজে কানে গুঁজে নিয়েছে,কিছুক্ষন যাবত শব্দহীনভাবে তার বেশ ভালো লাগছে।
জাতীয় চার নেতার সমাধির কাছাকাছি এলে হটাৎ এক ছিছকে চোর রিমির হ্যান্ডব্যাগ ছোঁ মেরে দৌড় দিলো।রিমি চিৎকার দিয়ে বললো,সাইফুল ধরো ওকে,ওই ব্যাগেই সব টাকা...
সাইফুল দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুধু একটা কথা বললো,দুপুরের পর এখনো কিছু খাইনি,তাই খালি পেটে দৌড়াতে পারবো না। আর ও এখন জীবন বাঁচাতে পাল্লাচ্ছে ধরা যাবে না।
এমন বেক্কেলের মতো কর্মকান্ড দেখে রিমি সত্যিই খুব রেগে গেল।সাইফুল কে কয়েকটা ধমক দিয়ে উলটো দিকে হাটা শুরু করলো রিমি।
সাইফুল রিমির পিছন পিছন হাটা শুরু করলো আর বললো,আরে কই যাও?আর এতো রেগে গেলা কেন?তুমি জানো না প্রবাদ আছে - রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন।
রিমি রীতিমত রাগে ফুঁসছে,আর একটা কথা বললে এই মাঝ রাস্তায় চিৎকার করে লোকজন ডেকে বলবো তুই ইভটিজার,যা এখান থেকে!তোর সাথে আর আমি যাচ্ছি না।
এবার সত্যিই ভড়কে গেলো সাইফুল।ব্যাপার কী?রিমি ওকে তুই তুগারি করলো।না না তাহলে নিশ্চয়ই রিমি খুব রেগে গেছে।তারপর রিমির পিছন পিছন আসতে আসতে তারা ইতিমধ্যে জাদুঘরের সামনে এসে পড়েছে।তাহলে এখন কি করতে হবে তাকে?
এই রিমি,খুব রাগ করেছে?আচ্ছা রাগ ভাঙানোর জন্য এখন কি করতে পারি বলো?
এক নিঃশ্বাসে রিমি বললো-তুই এখান থেকে যেতে পারিস!
এটা কেমন কথা,আমরা তো পালাচ্ছি।তাহলে তোমাকে ছেড়ে আমি কোথায় যাবো?
সাইফুলের কথার কোন পাত্তা না দিয়ে,একটা রিকশা ডাকলো রিমি।
এই রিকশা নিয়ে কই যাবা?আরে কিছুতো বলো।আরে আমার দোষটা কি?চোরটাকে ধরি নাই,সেটা?ইতিমধ্যে এক রিকশায় উঠে বসলো রিমি,আর বললো চাচা কমলাপুর রেলস্টেশন চলো।
চোখ বড় বড় করে,আরে কমলাপুর কেন?বলতে বলতে রিকশায় উঠতে নিচ্ছিলো সাইফুল।
কিন্তু রিমি একটা ধাক্কা দিয়ে বললো,না তুই রিকশায় উঠবি না,এই চাচা আপনি চলেন।
শাহবাগ মোড় থেকে রিকশা চলা শুরু করলো,কমলাপুরের উদ্দেশ্যে।
পিছন থেকে এখনো সাইফুল ভাবছে আসলে কোথায় যাবে রিমি?কাল ওর বিয়ে হওয়ার কথা!আমার সাথে পালাবে তাই বাড়িতে থেকে বেড়িয়েছিলো,এখন আবার সে আমাকে ছাড়াই কমলাপুর যাচ্ছে।ভাবছে আর বিড়বিড় করছে সাইফুল।ঠিক তখনই তার পাশ দিয়ে হেটে যাওয়া একটা ছেলের মুঠোফোনে আর্টসেলের গান শুনতে পেলো,
আমি কার আশাতে চলি পথে পথে,যেনো কার মায়াতে বাঁধা পড়েছে জীবন যে...
এই রিমি ভয় পাচ্ছো নাকি?কথা বলো না কেন?তোমার কি ভালো লাগছে না?
তো আমি এখন তোমার কোন প্রশ্নটার জবাব দিবো,ভয় পাচ্ছি কিনা? না কথা কেন বলি না নাকি ভালো লাগছে কিনা?
চিরকাল তো তুমি এক কথায় উত্তর দিয়ে এসেছো,এবার না হয় তিনটা প্রশ্ন মিলিয়ে একটা উওর দাও!
তিনটা প্রশ্নের কখনোই একটা উত্তর হতে পারে না।আমি বুঝতে পারছি না এই সিচুয়েশনে তুমি এতো কথা বলছো কি করে?আচ্ছা আমাকে এটা বলো আমরা এখন কোথায় যাবো?
কেন তোমার কি হাটতে খারাপ লাগছে? এই পথ ধরে হাটতে হাটতে দোয়েল চত্ত্বর পর্যন্ত যাবো,তারপর না হয় যেকোন একটা গাড়িতে উঠে কোথাও যাওয়া যাবে।
কোথাও মানে?তুমি না বলেছিলে সব ঠিক করা আছে?
মুচকি হাসছে,সাইফুল।
হাসছো কেন?আমার কথা এতটা বিশ্বাস করো জেনে হাসলাম।আরে এই সন্ধ্যা বেলা বাড়ি থেকে পালিয়েছি, মানিব্যাগটাও ভুলে আনিনি কি আর ঠিক করবো বলো।তোমার কাছে কিছু টাকা আছে না,ওতেই চলে যাবে।আজ রাতটা কোন ভাবে কভার দিতে পারলে কাল সারাদিন সময় পাওয়া যাবে পরবর্তী কি পদক্ষেপ চিন্তা করার।
ওহ,আচ্ছা তাহলে তুমি কাল সারাদিন ভাববে কি করবে,কোথায় যাবে তাই না?গ্রেট!আমার জীবনের অন্যতম একটি ভুল তোমার সাথে পালানো,গাধা কোথাকার।
যাক ভালোই হলো,গাধা বলেছো।
আচ্ছা গাধা কি তোমার খুব প্রিয় প্রাণী?এতো প্রাণী থাকতে তুমি আমাকে গাধা বললে,তারমানে নিশ্চয়ই এটা তোমার প্রিয় প্রাণী হবে।
রিমি কিছু বলছে না,জানে এই উজবুকের সাথে কথা বলার কোন মানে হয় না।এর দ্বারা কখনোই সম্ভব না একটা মেয়েকে নিয়ে পালালে কি করতে হবে তার প্লান করা।সুতরাং যা করার তাকেই করতে হবে।
এই রিমি দেখো,ঢাবির কোন একটা গাছে কেমন বউ কথা কও পাখি ডাকছে।আচ্ছা ওরা কি মানুষের কথা বুঝতে পারে?এই যে,তুমি কথা বলছো না তাই কোন একটা পাখি ডেকে উঠছে বউ কথা কও!রহস্যজনক না?আচ্ছা তোমাকে এখনও বিয়ে করিনি তাহলে বউ কথা কও কেন বলবে?ওদের তো বলা উচিত রিমি কথা কও,তাই না?
রিমির মনে মনে বিড়বিড় করছে,গরু যেমন অবসর সময় জাবড় কাটে এই সাইফুল ঠিক কথার মাধ্যমে জাবড় কাটছে।পূর্বজন্ম থাকলে নিশ্চয়ই এ আগে গরু ছিলো,নাহ একে গাধা বলা ভুল হয়েছে।
আহ্,রিমি কথা না বললে সময় কাটবে না।এই রকম একটা থমথমে মনোরম পরিবেশ সবসময় পাবে না!
ক্ষীণ স্বরে রিমি বললো-তোমার সাথে কোন কথা থাকতে পারে বলে মনে হচ্ছে না।বকবক করো না,আমার ভালো লাগছে না।
রিমির কথাকে তোয়াক্কা না করে সাইফুল বললো আচ্ছা রিমি এই বকবক শব্দটা কোথা থেকে এসেছে বলতে পারো?আচ্ছা এর মানে কি দুটো বক?আচ্ছা বক কি বকবক শব্দে ডাকে?
এই তুমি থামবে?
তোমার সাথে পালানোর চেয়ে আমার বিয়ে হয়ে যাওয়াটা ভালো ছিলো!
আমার মনে হয় সেটা কখনোই ভালো হতো না,আরে আমি তোমার ওই হবু বরকে দেখেছি।ভুঁড়িওয়ালা তারউপর অভদ্র।আমি যখন তাকে গিয়ে বললাম,রিমি আমার খুব ভালো বন্ধু আর আমি শুনলাম আপনি নাকি তাকেই বিয়ে করছেন?সে আমাকে সরাসরি বললো তোকে যেন আর ওর সাথে না দেখি হারামজাদা।আমি বুঝতেই পারলাম না কেন সে এমনটা করলো।
রিমি ইতিমধ্যে হ্যান্ডব্যাগ থেকে কটোনবার্টের মাথা থেকে তুলো খুলে নিজে কানে গুঁজে নিয়েছে,কিছুক্ষন যাবত শব্দহীনভাবে তার বেশ ভালো লাগছে।
জাতীয় চার নেতার সমাধির কাছাকাছি এলে হটাৎ এক ছিছকে চোর রিমির হ্যান্ডব্যাগ ছোঁ মেরে দৌড় দিলো।রিমি চিৎকার দিয়ে বললো,সাইফুল ধরো ওকে,ওই ব্যাগেই সব টাকা...
সাইফুল দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুধু একটা কথা বললো,দুপুরের পর এখনো কিছু খাইনি,তাই খালি পেটে দৌড়াতে পারবো না। আর ও এখন জীবন বাঁচাতে পাল্লাচ্ছে ধরা যাবে না।
এমন বেক্কেলের মতো কর্মকান্ড দেখে রিমি সত্যিই খুব রেগে গেল।সাইফুল কে কয়েকটা ধমক দিয়ে উলটো দিকে হাটা শুরু করলো রিমি।
সাইফুল রিমির পিছন পিছন হাটা শুরু করলো আর বললো,আরে কই যাও?আর এতো রেগে গেলা কেন?তুমি জানো না প্রবাদ আছে - রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন।
রিমি রীতিমত রাগে ফুঁসছে,আর একটা কথা বললে এই মাঝ রাস্তায় চিৎকার করে লোকজন ডেকে বলবো তুই ইভটিজার,যা এখান থেকে!তোর সাথে আর আমি যাচ্ছি না।
এবার সত্যিই ভড়কে গেলো সাইফুল।ব্যাপার কী?রিমি ওকে তুই তুগারি করলো।না না তাহলে নিশ্চয়ই রিমি খুব রেগে গেছে।তারপর রিমির পিছন পিছন আসতে আসতে তারা ইতিমধ্যে জাদুঘরের সামনে এসে পড়েছে।তাহলে এখন কি করতে হবে তাকে?
এই রিমি,খুব রাগ করেছে?আচ্ছা রাগ ভাঙানোর জন্য এখন কি করতে পারি বলো?
এক নিঃশ্বাসে রিমি বললো-তুই এখান থেকে যেতে পারিস!
এটা কেমন কথা,আমরা তো পালাচ্ছি।তাহলে তোমাকে ছেড়ে আমি কোথায় যাবো?
সাইফুলের কথার কোন পাত্তা না দিয়ে,একটা রিকশা ডাকলো রিমি।
এই রিকশা নিয়ে কই যাবা?আরে কিছুতো বলো।আরে আমার দোষটা কি?চোরটাকে ধরি নাই,সেটা?ইতিমধ্যে এক রিকশায় উঠে বসলো রিমি,আর বললো চাচা কমলাপুর রেলস্টেশন চলো।
চোখ বড় বড় করে,আরে কমলাপুর কেন?বলতে বলতে রিকশায় উঠতে নিচ্ছিলো সাইফুল।
কিন্তু রিমি একটা ধাক্কা দিয়ে বললো,না তুই রিকশায় উঠবি না,এই চাচা আপনি চলেন।
শাহবাগ মোড় থেকে রিকশা চলা শুরু করলো,কমলাপুরের উদ্দেশ্যে।
পিছন থেকে এখনো সাইফুল ভাবছে আসলে কোথায় যাবে রিমি?কাল ওর বিয়ে হওয়ার কথা!আমার সাথে পালাবে তাই বাড়িতে থেকে বেড়িয়েছিলো,এখন আবার সে আমাকে ছাড়াই কমলাপুর যাচ্ছে।ভাবছে আর বিড়বিড় করছে সাইফুল।ঠিক তখনই তার পাশ দিয়ে হেটে যাওয়া একটা ছেলের মুঠোফোনে আর্টসেলের গান শুনতে পেলো,
আমি কার আশাতে চলি পথে পথে,যেনো কার মায়াতে বাঁধা পড়েছে জীবন যে...
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
জানবক্স খান ১৩/০৭/২০২০
রিমি কিভাবে তার প্রেমে পরল তাই ভাবছি।