হারানোর ব্যথা
মেয়েটা কোমায় জন্ম-মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে। আমি হাসপাতালে গেলাম। বাইরে দাঁড়িয়ে দেখছি তাকে। ভেতরে অনেকে বসে আছে। তাই ঢুকছি না। সবাই মনে হয় শেষ আশা ছেড়ে দিছে। তাই কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে এলো। আমি তখন ভেতরে ঢুকলাম। মেয়েটার চোখগুলো মিটমিট করছে। আর সারা শরীর পাথর হয়ে আছে। মেয়েটার পাশে গিয়ে বসলাম। হাত ধরলাম। কিন্তু হাতে কি যেন বাজল। ভালভাবে খেয়াল করে দেখলাম সেটা কি। হাত থেকে খুলে ফেলে দেওয়ার সাহস ছিল না আমার। তাই তখন পাত্তা দিলাম না। কিন্তু তার এই অবস্থা দেখে নিজেকে থামাতে পারলাম না। কাঁদতে শুরু করলাম। চোখের জলের প্রতি ফোঁটা গিয়ে পড়তে লাগলো তার হাতের উপর। সাথে সাথে হাত কাঁপতে লাগলো তার। ঠিক তখন ডাক্তার রুমে ঢুকল। তার পিছনে সবাই আসলো। রোগী স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। আপনারা সবাই বাইরে যান। উনার রেস্ট দরকার। সবাইকে যেতে বলল কিন্তু আমাকে না। সবাই চোখের পানি মুছে চলে গেল। আবার রুমে আমি আর ও। হাত ধরে বসে আছি। সে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আর আমি ওর। কিছু বলতে চাচ্ছে কিন্তু পারছে না। কিছুক্ষণ পর বলল- তুমি কে? প্রশ্নটা তখন আমাকে অনেক কাঁদাল। আমি বুঝতে পারলাম আমাকে পুরোপুরি ভুলে গিয়েছে ও। হাত ছেড়ে দিয়ে উঠে দাঁড়ালাম। তারপর তার দিকে তাকিয়ে থেকে পিছনে হাঁটা শুরু করলাম। এমন সময় ঠিক আমার ভেতর দিয়ে দৌড়ে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরল এক কোটপ্যান্ট পড়া সাহেব। আমি তো কোনোদিন জড়িয়ে ধরার সাহস পাইনি। সে কি করে পেল? বুঝতে সময় লাগলো না সে কে। সরি সোনা, আমি সময় মতো আসতে পারি নি। মিটিং ছিল। আমি তখন পিছুপা হচ্ছি। খেয়াল করে দেখলাম মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়েই আছে অবাক দৃষ্টিতে। সাহেবের কথা শুনছে না। হঠাৎ করে চিৎকার করে বলল- দাঁড়াও, কোথায় যাচ্ছ? কোথায় সোনা আমি তো এখানে তোমাকে জড়িয়ে ধরে আছি। তুমি না, তোমার পিছনের ছেলেটা। পিছনে তাকায় সেই সাহেব। কিন্তু আমাকে কি দেখতে পাবে! হঠাৎ করে হাঁরিয়ে যাওয়া সেই ছেলেটি আবার অদৃশ্য হয়ে গেলাম। কোথায় পিছে কোন ছেলে নেই। কি বলছ এসব? পিছে সত্যিই কেও নেই। তুমি কাকে দেখছ? মেয়েটা কোনো কথা বলে না। শুধু কাঁদতে থাকে আর মনে মনে ভাবে আরো একটিবার হারালাম তাকে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
স্বপ্নীল মিহান ২৮/০১/২০১৫গোছানো, ভালো লাগলো। চালিয়ে যাও
-
অ ১৯/০১/২০১৫হুম ভালো লেখা ।
আরো লিখুন । -
সবুজ আহমেদ কক্স ১৯/০১/২০১৫valo so fine golpo
-
সুব্রত দাশ আপন ১৯/০১/২০১৫গল্পটা আসলে ভালো। বেশ সুন্দরও। শুভেচ্ছা রইল।
-
ইঞ্জিনিয়ার সজীব ইমাম ১৯/০১/২০১৫হমমম । কাহীনি টা বেশ ভালো। আরো একটু কাব্যিকতার ছোয়া থাকলে বেশী ভালো লাগতো। ভালো লাগলো তাই প্রকাশ করে দিলাম।