www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

কাতুলি ভ্রমন

সময়টা তখন বৈশাখের মাসের শেষের দিক, গরমটা বেশ ভালই পড়েছে, আমার বয়স তখন প্রায় বছর আটেক । সবে তখন তখন স্কুলে গরমের ছুটি টা পড়েছে । আমার বাকি বন্ধুরা সবাই যে যার মতো নিজেদের আত্মীয় বাড়ি ঘুরতে চলে গেছে,
আমার একটা পিসির বাড়ি উত্তর 24 পরগনার কুতুলি গ্রামে , আমার এবারের ছুটি কাটানোর প্ল্যানটা ওয় পিসির বাড়িতেই । কিন্তু হটাত বাবা বেকে বসলো , বাবা বলেন এখান থেকে কুতুলি গ্রাম অনেক দূর, আর ওটা নাকি খুব ভালো জাইগা না, অজ পাড়াগ্রাম একটা, এখনো নাকি বিদ্যুৎ এসে পউচাইনি এর থেকে বরং দিঘা ঘুরে আসবো সবাই ।
বাবার এই কথা শুনে আমার মণ এতটাই খারাপ হয়েছিলো যে কি আর বলবো, বাবার সাথে এমনিতেই কথা বলতে ভয় পাই, যায় হোক মনমরা হয়ে বসলাম নিজের রুমে, কিছুক্ষণ পর মায়ের কথা শুনে বাইরে বেরিয়ে এলাম, দেখলাম মা বাবাকে বকা বকি করছে আর বাবা পেপারে মুখ আড়াল করে মায়ের সব কথা শুনছে । আমি তখন বুঝতে পারলাম যে আমার থেকে আমার মায়ের ইচ্ছাও কিছু কম যায়না পিসির বাড়ির যাবার । মায়ের কথা শেষ কথা তাই বাবা আর কথা বেশী না বাড়িয়ে আনুমতি দিয়ে দিলো কাতুলি গ্রামে যাবার । অপেক্ষাই আর মাত্র তিন দিন, ঠিক তিনদিন পরেই রউনা দেবো আমি আর মা, অবশেষে পতিক্ষার অবসান আজ রাতেই ট্রেনে উঠলাম, একদম সকাল সকাল পৌঁচে গেলাম কাতুলি ষ্টেশনে ।
আমাদের আগেই পৌঁচে গেছে পিসে মশাই , আমাকে কোলে তুলে বল্ল “ আরে আমাদের গদাই বাবু কতো বড় হয়ে গেছে “ ছোটো বেলাই একটু গলু মলু ছিলাম বলে সবাই আমাকে গদাই বলে ডাকতো, যাই হোক পিসে মশাই একা আসেনি সাথে ছিল আর এক বয়স্ক ভদ্রলোক, বয়স প্রাই 70 ছুই ছুই । একটা ময়লা লুঙ্গি আর গলাই লাল গামছা পরে সামনে এসে ভারি গলাই বল্য “ আজ্ঞে বাড়িটা একটু দূরে বটে, আমার রিস্কাই চলুন” বলে আমাআদের ব্যাগ গুলো তুলে নিল, মা পিসেমসাইএর দিকে তাকাল, পিসেমসাই আমাকে কল থেকে নামিয়ে বল্য “ ইনি হলেন আমাদের কানাই দাদু, এনার রিস্কাতেই আমরা সব জাইগা যাওয়া আসা করি, আপনারা রিস্কাতে গিয়ে বসুন” মা বলেন সে ঠিক আছে কিন্তু এই ভারী ব্যাগ আর আমরাও দুজন , মায়ের কথা কেটে মৃদু হেসে পিসেমসাই দূরে আঙ্গুলের ইশারা করে দেখাল, দেখলাম একটা সাইকেল, পিসেমশাই বলেন ওই যে আমার সাইকেল, আপনারা রিস্কতে উঠুন আমি সাইকেল নিয়ে যাচ্ছি।
আমি আর মা কানাই দাদুর রিস্কতে উঠে বসলাম, একটু খনি যাবার পর কানাই দাদুর কাশি উঠলো, সে কাশি আর থামেনা, মা ব্যাগের থেকে এক বোতল জল বার করে দাদুকে দিলেন, জল খাবার পর কাশি একটু কমলো বটে তবে কেমন যেন ঝিমিয়ে পড়তে লাগলো, ওদিকে পিসে মশাই ও সাইকেল নিয়ে আগেই বেরিয়ে গেছে, যাবার সময় বলেছিল “ আমি আগে চললুম একটু বাজার করে নিয়ে যেতে হবে, কানাই দাদু ঠিক পৌঁচে দেবে “ । কিন্তু কানাই দাদুর অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে এমনি হাটার
2
ক্ষমতা নেই, আর আমাদের রিস্ক চাপিয়ে বাড়ি নিয়ে যাবে। যাইহোক কোন রকমে রিস্ক চালিয়ে যাচ্ছে আর মাঝে মধ্যে কাশছে , মা জিজ্ঞেস করলেন “ এই বয়সে কেউ এতো খাটনি করে, এটা বিশ্রাম নেবার বয়স, ছেলেরা দেখেনা বুঝি আপনাকে ? “ এই কথা শুনে কিহল বুঝলাম না দাদুর যেন কথা থেকে এনার্জি চলে এলো, এখন আর কোন আসুবিধা নেই, আর না আছে কোন কাশি, রিস্কার গতবেগ বেড়ে গেলো, ঠিক যেন কোন কম বয়স্ক যুবক রিস্ক চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে । ব্যাপারটা আমার আর মা , দুজনের মাথাই কিছু ঢুকল না, কিছুক্ষণ পর একটা বাড়ির সামনে এসে রিস্ক দাড় করিয়ে বল্য, “ আজ্ঞে পৌঁচে গেছি নামতে পারেন এবার ।“ সামনে দেখি এক ঘটি জল নিয়ে পিসি হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে ।
মায়ের হাত থেকে পিসি ব্যাগ নিয়ে জলের ঘটিটা ধরিয়ে দিয়ে বল্য “ এতদিনে বৌদি এলেন আমাদের বাড়িতে , পা গুলো ধুয়ে নাও,” আর আমার কাছে এসে আমার গাল গুলো টিপে বল্য “ কতো বড় হয়ে গেছে আমাদের ছোট্ট গদাই, পা গুলো ধুয়ে নিস বাবু “ আমি বললাম আমি তো জুতো পরে আছি, পা কি ধোয়া দরকার আছে পিসি ? পিসি বল্য “ অবশ্যয় , বাড়িতে সবসময় পা ধুয়ে ঢুকতে হয় বাবু। আমি তখনি বুঝলাম যে পিসির ক্ষুতে সভাব এখনো যায়নি । আজ প্রায় দু বছর পর পিসির সাথে দেখা হচ্ছে, সেই আগের মতই আছে , অবশ্য পিসির বাড়ি এই প্রথম আসছি । যায়হোক হাত পা ধুয়ে পিসির সাথে ঘরে ঢুকলাম ,পিসি ব্যাগ গুলো রেখে মাকে বল্য “আমি একটু পরেই আসছি”বলে বেরিয়ে গেলো । তখন বেশ বেলা হয়ে গেছে, আর পিসে মশাইও এখনো বাড়ি ফিরেনি । এদিকে খিদেতে আমার পেটে ইদুর দৌড়া দৌড়ী করছে । আমি মায়ের কানে কানে বললাম “ মা খিদে পেয়েছে” মা শুনে বললেন “ একটু অপেক্ষা কর পিসি নিশ্চয় কিছু খাবার নিয়ে আসবে” মায়ের কথা শুনে আমি আর একটু অপেক্ষা করলাম, আর না পেরে বাড়ির থেকে বেরলাম যে দেখি পিসি কি খাবার করছে আমাদের জন্য । মাটির বাড়ি সব কটাই কোনটা রান্না ঘর বুঝতে পারছিনা বলে সব ঘর গুলো ঘুরে দেখলাম, কিন্তু রান্না ঘর তো দূরের কথা একটা উনুন ও দেখতে পেলাম না, আবার মায়ের কাছে ফিরে গেলাম মা কে সব বললাম , মা একটা বিস্কুটের প্যাকেট ব্যাগ থেকে বারকরে দিলো আর বল্য কিছুক্ষণ চুপ করে বস্তে ।
বাইরে সাইকেল এর শব্দ শুনে বুঝলাম পিসে মশাই এলেন বুঝি, কিন্তু পাঁচ মিনিট হয়েগেল সাইকেলের শব্দ শোনা, না এলো পিসি আর না এলো পিসে মশাই । আমি আবার বাইরে বেরিয়ে গেলাম, কিন্তু একি , এখানে তো কোন সাইকেল নেই অথচ কিছুক্ষণ আগে সাইকেই রাখার শব্দ পেলাম বেশ পরিস্কার । আবার মাকে গিয়ে বললাম, মা বল্য “ আবার কথাও বেরল মনেহয়,” কিন্তু আমি সাইকেল রাখার শব্দ একবার এই পেয়েছি আর পাইনি ।
হটাত দেখি দুহাতে দুটো থালা নিয়ে পিসি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আর থালা দুটো ভর্তি লুচি আর তরকারিতে, লুচি দেখেই আমার সব অযথা ভাবনার অবসান, এখন লুচি ছাড়া বাকি সব ভুলেই গেছি। বেশ পেট ভরে লুচি আলুর দম খেয়ে হাত ধুয়ে মায়ের শাড়িতে মুছলাম, মা বল্য “ এবার চুপটি করে
3
শুয়ে পড়, রাতে ঠিক ভাবে ঘুম হয়নি তোর” । মায়ের কথায় শুয়ে পড়লাম , একছুখন পর সত্যি ঘুমিয়ে পড়লাম । আর একটা ভয়ানক স্বপ্ন দেখালাম , দেখি মা আর আমি ওয় কানাই দাদুর রিস্কতে চড়ে বেড়াতে বেরিয়েছি, হটাত দেখি দাদু তাঁর মুণ্ডু টা সামনে থেকে পুরো পিছনে ঘুরিয়ে একটা বিকট কণ্ঠে বলে উঠলো “ এবার কথায় ছাড়তে হবে জানতে পারি “ এই শূনেই আমার হটাত ঘুম ভেঙ্গে গেলো, আমি মা মা করে চীৎকার করে উঠলাম , উঠেই দেখি পাসে একটা চৌকীতে পিসি বসে আমার দিকে কেমন ভাবে যেন তাকিয়ে আছে । আমি উঠে জিজ্ঞেস করলাম “ মা, মা কথায় গো পিসি ? পিসি কেমন যেন হোক চকিয়ে গেলো, যেন কেউ তাঁর ধ্যান ভাঙ্গিয়ে দিয়েছে । উগ্র ভাবে তাকিয়ে আবার কোমল শুরে বল্য, এই তো এখানেই ছিল, কি জানি বাইরে হবে হয়তো , দাড়া আমি দেখছি । বলে বাইরে গেলো পিসিও আর ফিরল না, ব্যাপার টা কেমন যেন লাগছে, একা ঘরে আমার ও বসে থাকতে ইচ্ছে করলো না, আমিও বেরিয়ে পড়লাম বাইরে, বাইরে বেরিয়ে দেখি কেউ নেই, বাড়ির ঠিক বাইরে একটা বড় উঠোন আর কাঁচা ইট দিয়ে উঠোন টা ঘেরা, উঠনের ডান দিকে একটা পাঁথরের তুলুসি মন্দির, একটা তুলুসি গাছ আছে বটে তবে সেটা শুকিয়ে গেছে।
এদিক ওদিক দেখতে দেখতে হটাত চোখে পড়লো একটা পুকুর, পুকুরটা ঠিক উঠোন টার পিছনেই, অনেক গাছে ঘেরা তাই এতক্ষণ চোখে পড়েনি। কিন্তু মা ওখানে কি করছে একা একা? উঠোন থেকে পুকুরে যাবার জন্য আছে একটা কাটা ব্যাসের ঝাপি , ঝাপি তুলে মায়ের কাছে গেলাম, দেখি মা যেমন খুব ভয় পেয়ে গেছে, সামনে তাকিয়ে আছে, আমি পিছন থেকে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরলাম, মা ভয় পেয়ে আমার দিকে দেখল, আমাকে দেখে মা একটু সাহস পেলো, আমাকে আঙ্গুলের ইশারা করে দেখাল, সামনে একটা শ্মশান, যেখানে অনেক মৃত মানুষের হাড় মাথার খুলি এসব পড়ে আছে, দেখে আমিও খুব ভয় পেলাম, টার থেকেও বেশী ভয় পেলাম যেটা দেখে সেটা হল একটা সবের উপর আধ পড়া একটা গামছা দেখে, গামছা টা অবিকল সেই কানাই দাদুর গলার গামছার মতো । আমি মাকে জড়িয়ে ধরলাম, ঠিক তখনি পিছন থেকে পিসেমশাই ডেকে বললেন আমাদের , “ ওখানে কি করছেন দিদি, ঘরে আসুন “ আমরা ঘরে এলাম, দেখি পিসি ও পিসেমশাই বসে আছে, মা অবশেষে বলেই ফেললেন, “ বাড়ির পিছনে কি শ্মশান আছে? “ এই কথা শুনে পিসি ও পিসে দুজনের মুখ কেমন শুখনো হয়ে গেলো।
পিসে বলেন “ তা অবশ্য আছে, কিন্তু কোন ভয় নেই, পিসে মশাই পিসির দিকে তাকিয়ে বলেন, “ কি গো বেলা কতো হল কিছু খেয়াল আছে? খেতে দাও দিদি দের,” পিসি কিছুক্ষণের মদ্ধেই দু থালা খাবার নিয়ে এলো, ম্যাজিকের মতো, কি নেই সেই থালাতে, মাছ মিষ্টি দই চাটনি সবি আছে। আমি আবার খাবার দেখে পুরনো কথা সব ভুলে গেলাম, ভয় টই কথাই উড়ে গেলো, আমরা খাচ্ছি আর পিসি পিসেমশাই সামনে বসে আমাদের খাওয়া দেখছে । আমি পিসি কে জিজ্ঞেস করলাম, “ কিগো পিসি তোমরা খাবেনা ?“ পিসি হেসে জবাব দিলো, “ আগে তুই খা পরে আমরা খাবো , “ আমি আর কোন কথা না বলে পুরো থালা শেষ করে একটা লম্বা ঢেঁকুর তুলে খাটে উঠে পড়লাম, কখন চোখ
4
লেগে গেছে বুঝতে পারিনি। ঘুম ভেঙ্গে দেখি মা আমার পাসে শুয়ে আছে আর আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।

মা আমাকে বল্য, “ শোন বাবু কাল সকালেই আমরা এখান থেকে রউনা দেবো,” মাকে জড়িয়ে ধরে আমি বললাম, “ কেন মা? আমরা তো এখানে ঘুরতে এসেছি, নদী পাহাড় এখনো তো কিছুই দেখা হল না, কিছুদিন থাকো না, স্কুল খুলতে তো তো এখনো অনেক দেরি”। মা রেগে বল্য “ যেটা বললাম সেটাই হবে, রাত টা ভালই ভালই পার হয়ে যাক কোনোরকমে ঠাকুরের ইচ্ছাই, সকাল ভোরেই রউনা দেবো। মায়ের কথাতে কেমন যেন আতঙ্ক লুকিয়ে আছে। আমি আর কথা বেশী বাড়ালাম না, শুধু একটা কথা কথাই জিজ্ঞেস করলাম, “কিছু হয়েছে মা”? মা বল্য “ আমার সব কেমন যেন, গুলিয়ে যাচ্ছে রে, বাড়িতে উনুন নেই অথচ এতো ভালো ভালো খাবার, তোর পিসি পিসেমশাই হটাত একবার করে কথায় উধাও হয়ে যাচ্ছে সেটাও বুঝতে পারছিনা, বেশিরভাগ বাড়ি ভেঙ্গে আছে, বাইরে শ্মশান, আসে পাসেও তেমন বাড়ি দোকান বা লোকজনের দেখা সাক্ষাত নেই।“
মায়ের কথা শুনে আমার ভয় আরও বেড়ে গেলো, মাকে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করলাম, তখন প্রায় রাত্রি বারটা, পিসি পিসেমশসাই ও আসেনি রাতের খাবার দিতে, আর এসব কথা শুনে খিদে কথায় উড়ে গেছে, রাত বাড়ছে, কিন্তু ঘুম আর আসেনা, কিছু শেয়ালের ডাক কানে আসছে, বেড়াল কাঁদছে, ঠিক মনে হচ্ছে কোন বাচ্চা ছেলে কাঁদছে, আমি ভয়ে পুরো স্থির, জানিনা কখন সকাল হয়ে গেছে এভাবে ।
ব্যাগ গোছানয় ছিল, শুধু অপেক্ষাই ছিলাম সকাল কখন হবে, সকাল হতেই বেরিয়ে পড়লাম, বাইরে কোন সাইকেল রিস্কও নেই যে চেপে ষ্টেশনে যাবো । অপেক্কা না করে হাঁটতে শুরু করলাম, বেশ কিছুক্ষণ পর ষ্টেশনে এসে পৌঁচে গেলাম।
এরপর ষ্টেশনে গিয়ে যেটা দেখলাম সেটা স্বপনের মতো দৃশ্য, ষ্টেশনের গায়ে লেখা আছে, “ অনির্দিষ্ট কালের জন্য এই কুতুলি গ্রামের সমস্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়েছে , তারিক তে গত দুমাস আগের, মানে কি গত দুমাস থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ এখানে? তবে কাল আমরা এখানে কিকরে এলাম?
ষ্টেশনের ঘরে একটা ধুতি পরা বয়স্ক মানুষ দেখতে পেলাম, সাহস করে কাছে যাওয়াতেই ভদ্রলোক ভেতরে ঢুঁকে দরজা বন্ধ করে দিলো, আমরা অনেক চেষ্টা করলাম খুল্ল না, শেষ মেষ হতাস হয়ে এক জাইগাতে বসে পড়লাম, তারপর দেখি সেই ভদ্রলোক দরজা খুলে আমাদের সামনে এসে বললেন, “ কে আপনারা, এখানে কি করতে এসেছেন, দেখে তো মনে হচ্ছে মানুষ “দেখে তো মনে হচ্ছে মানুষ এই কথা শুনে মা বলে উঠলো, দেখে তো মনে হচ্ছে মানুষ মানে? কি বলছেন, মানুষ ছাড়া আর কি আছে এখানে ? মায়ের কথা শেষ হতে না হতেই বৃদ্ধ বলে উঠলো, “ কেন ভূত , এমন করছেন যেন কিছুই জানেন না, “ মা আবার ভয়ে ভয়ে ব্যাপারটা জিজ্ঞেস করলেন, মায়ের কথা শুনে বৃদ্ধ আবার
5
প্রশ্ন করলো “ আগে বলুন এখানে এলেন কিকরে ? দুই মাস থেকে তো এই লাইনে কোন যাত্রী ট্রেন চলেনা, শুধু মাত্র মালগাড়ী ছাড়া। “
আমরা কোন রকমে বোঝাতে পারলাম না যে আমরা এখানে ট্রেনেই এসেছি । শেষে বৃদ্ধ বল্য গত দেড় বৎসর পূর্বে এই গ্রামে ভয়ানক কলেরার প্রকপ দেখা যায়, কেউ বাচেনি, যে কজন বেঁচে ছিল তারা এখন এই গ্রাম ছেড়ে ভিন গ্রামের বাসি হয়েছে।
আমি এখানে চাকরি করি, রোজ অনেক কিছুর উতপাত সজ্জ করতে হয়, শুধু মালগাড়ী পারাপার হয় এই লাইনে , এরপরের যে মালগাড়ীটা আসবে সেটাতে, আমি বলে চাপিয়ে দেবো আপনাদের , আপনাদের ভাজ্ঞ ভালো বলে এখনো বেঁচে আছেন।
এইসব কথা শুনে মাথাই যেন বজ্রপাত পড়েছিল, কিছুক্ষণ পর একটা মালগাড়ীতে চেপে বাড়ির উদ্দ্যেসে রউনা দিলাম, আর পতিজ্ঞা করলাম যে এবার থেকে এইসব জাইগা না, আর বাবার সব কথা নিয়ম মেনে শুনব ।



-------------------------------সমাপ্ত--------------------------------
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১১৫৮ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৪/০৪/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • মোনালিসা ২৪/০৪/২০১৭
    :})
  • মোনালিসা ২৪/০৪/২০১৭
    :}
  • Rintu Adhikari ২৪/০৪/২০১৭
    Good Story
  • স্বার্থক এক গল্পকথা।

    ধন্যবাদ
    গল্পকারকে।
    • রাজা অধিকারী ২৪/০৪/২০১৭
      অসংখ ধন্যবাদ আপনাকে !
  • সাঁঝের তারা ২৪/০৪/২০১৭
    খুব সুন্দর!
 
Quantcast