বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যে
শিরোনাম দেখেই বুঝতে পারছেন কি বিষয়ে লিখছি।তবে আমি কোন গবেষক নই।একজন উৎসাহি পাঠক বলতে পারেন।বেশ কিছুদিন আগেই আমি একটা বই পড়েছিলাম-'ইতিহাসের রক্ত পলাশ পনেরই আগস্ট পচাত্তর'।
লিখেছেন আবদুল গাফফার চৌধুরী।চিনতে পেরেছেন এনাকে?
'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী'-গানের গীতিকার যিনি ২১ ফেব্রুয়ারী ১৪৪ ধারা ভংগের সেই মিছিলে গুলি বিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছিলেন।পরবর্তীতে তিনি সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন।মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি 'স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে'-কর্মরত ছিলেন।তিনি বঙ্গবন্ধুর একজন প্রকৃত শুভাকাংখি ছিলেন যিনি সরকারের কোন কাজ পছন্দ না হলে সরাসরি সমালোচনা করতে কিংবা তা নিয়ে পত্রিকায় লিখতে দ্বিধা করতেন না।তাই তার লেখা বইটি যে প্রভাব মুক্ত এবং সত্য সেটা স্পষ্ট।
আমি অনেক খুজেও বইটি ইন্টারনেটে পাইনি।কিন্তু আমার মনে হয়েছে বই টি সবার পড়া দরকার।কারণ এতে করে অনেক অমীমাংসিত ব্যাপার,অনেক প্রশ্নের উত্তর পরিষ্কার হবে।সেই সময়ের ঘটনা এবং বঙ্গবন্ধু কে কেন নিহত হতে হল সেই প্রেক্ষাপট বিস্তারিত বোঝা সম্ভব হবে।আমি যেহেতু বইটির কোন লিঙ্ক দিতে পারছিনা তাই আমার ইচ্ছা বইটি থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু অংশ নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে সবাই কে জানাবো।যাদের এটা নিয়ে কোন আগ্রহ নেই তারা নির্দ্বিধায় আমাকে জানাবেন,আমি পরবর্তী লেখা গুলো আর তাদের ট্যাগ করবনা।যারা এই বিষয়ে জানতে চান তারাও জানাবেন লেখা কেমন লাগছে।
আজ বইয়ের মাঝামাঝি জায়গা থেকে শুরু করব।মুজিব চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন মস্কো তে।সেখান থেকে এসে গেলেন ইন্দিরা গান্ধির সাথে দেখা করতে।অপর দিকে ঠিক একই সময় ভুট্টো গেলেন পিকিং এ।অর্থাৎ একদিকে ভারত-বাংলাদেশ-রাশিয়া অন্য দিকে পাকিস্তান-চিন-আমেরিকা।
দেশে ফিরে গাফফার চৌধুরীর সাথে এ বিষয়ে তার কথোপকথন হয়।তার কিছু উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে দিচ্ছি।
"বঙ্গবন্ধু বললেনঃবাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম নেয়ায় ভারত উপমহাদেশের রাজনৈতিক ভারসাম্য সম্পূর্ণ বদলে গেছে।এই বাস্তবতা নিক্সন আডমিনিস্ট্রেশন মেনে নিতে পারছেনা।তারা চেয়েছিল পাকিস্তান ও বাংলাদেশ কে মিলিত ভাবে তারা ভারত মহাসাগরে নৌঘাটি স্থাপন ও ভারতে সোভিয়েত প্রভাব হ্রাসে ব্যবহার করবে।ভারত ও সোভিয়েত ইয়ুনিয়ন মিলিত ভাবে বাংলাদেশকে স্বাধীনতা লাভে সাহায্য করায় তাদের এই পরিকল্পনা ভন্ডুল হয়ে গেছে।পাকিস্তানের সাথে জয় লাভ করায় ভারত এশিয়ার সাব-সুপার পাওয়ার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে।এটা আমেরিকা চিন কারোরি মনঃপূত ন্য।পরাজিত ও দুর্বল পাকিস্তান কে দিয়ে ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করা সম্ভব নয়।এজন্য চীন কে সঙ্গে টানা হয়েছে।অন্যদিকে ভারতের অভ্যন্তরে ডানপন্থী ও সাম্প্রদায়িক দল গুলোকে সাহায্য জুগিয়ে ইন্দিরা সরকার কে অপসারণের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।"
এরপর বঙ্গবন্ধু বর্ননা করেন কিভাবে মার্কিন সরকার একটা দেশের সরকারের পতন ঘটানোর কাজ করে।আমি নিজের ভাষায় সেটা সহজ করে বলছি।মার্কিনীদের সিআইএ এই কাজ টি করে থাকে।প্রথমে তারা বুদ্ধিজীবী,সাংবাদিক ও প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম গুলোকে হাত করে,তাদের এজেন্ট বসিয়ে তার মাধ্যমে সরকারের বিরূদ্ধে মিথ্যা,অর্ধ-সত্য কথা প্রচার করে।এরপর দেশের শ্রমিক শ্রেণী কে উসকে দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল অবস্থার তৈরি করে।এই কাজে সাহায্য করে দেশের মধ্যে থাকা ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদ ও সাম্প্রদায়িক মহল।এভাবে তারা ক্রমান্বয়ে সরকারের জনপ্রিয়তা কমাতে থাকে।যখন সরকার জনপ্রিয়তা হারায় তখন গণতন্ত্র রক্ষার নাম করে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সরকারের পতন ঘটায়।বিষয় ট আরো জটিল ও প্যাচালো।আমি সাধারণ ভাবে মূল বিষয় টি বললাম।
আমরা যদি অতি সাম্প্রতিক ঘটনা গুলো দেখি(মিশরের ঘটনা,আরব-বসন্ত,লিবিয়া ইত্যাদি) এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ড ও দেখি তাহলে বুঝব ঠিক এই ঘটনা গুলোই ঘটেছে।স্বয়ং বঙ্গবন্ধু এটা বুঝেছিলেন এবং তার প্রতিকার ও করতে চেয়েছিলেন।আবার বই এ ফিরে যাই।
"বঙ্গবন্ধু বলছেনঃভারতে যদি গণতান্ত্রিক সরকারের পতন ঘটে তাহলে সারা এশিয়ায় মিলিটারী-ফ্যাসিজম প্রতিষ্ঠা হবে।চলবে যুদ্ধ,অস্ত্র প্রতিযোগীতা।সামরিক খাতে বিনা প্রয়োজনে কোটি কোটি টাকা খরচ হবে।জনসাধারণের ভাগ্য উন্নয়ন,দারিদ্র্য বিমোচনের পরিকল্পনা হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে।যদি দরকার হয় কিছুদিনের জন্য রাজনৈতিক এক নায়কত্ব প্রতিষ্ঠার দ্বারা এই মিলিটারি-ফ্যাসিজম এর অভিশাপ রুখতে হবে।"
শেষ কথাটি খেয়াল করুন।আজীবন ক্ষমতায় থাকার বাসনায় নয়,তৎকালীন বিরূপ পরিস্থিতি সামাল দিতেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলান।
পরবর্তী কথা গুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ।খেয়াল করুন-
আমি অবশ্য সব রকম একনায়কত্বের বিরোধী।কিন্তু রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজি বলেও একটা কথা আছে।শহীদ সোহরাওয়ার্দী বেঁচে থাকতেই আমি সমাজতন্ত্র বিশ্বাসি হয়েছি।কিন্তু আওয়ামি লীগের লক্ষ সমাজতন্ত্র এই কথাটি বলার জন্য আমাকে ১০ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে।গণতন্ত্র আমার লক্ষ।কিন্তু তা দ্বি-দলীয় সেক্যুলার গণতন্ত্র বা যার যা খুশি করার গণতন্ত্র নয়।সাম্প্রদায়িক শ্লোগান বিনা বাধায় তোলার অধিকার দেয়াকে আমি গণতান্ত্রিক অধিকার বলে মনে করিনা।উন্নত দেশে গণতান্ত্রিক সরকারের কাজ আরো একটি,জনসাধারণকে গণতান্ত্রিক চেতনা ও শিক্ষায় আরো শিক্ষিত করে তোলা।এজন্য দরকার হলে একটি অনুন্নত দেশে গণতান্ত্রিক সরকারকে সময় সময় অত্যন্ত কঠোর হতে হবে।মিলিটারি ফ্যাসিবাদের চাইতে রাজনৈতিক একনায়কত্ব সাময়িক ভাবে ভাল এজন্য যে,রাজনৈতিক একনায়কত্বের ভিত্তি জনগণ ও জনগনের রাজনীতি।সুতরাং জনগণের সমর্থন ও ভাল-মন্দের দিকে তাঁকে লক্ষ রাখতে হবে।অন্যদিকে মিলিটারি এর শক্তি হল অস্ত্র ও সমাজের প্রগতি-বিরোধী শক্তি।এই দুয়ের মিলনে কোন দেশের ই মঙ্গল হতে পারেনা।
আজ আর বেশি দীর্ঘ করছিনা।এর পরে লিখব খন্দকার মুশ্তাকের সাথে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্ক ও তাজ-উদ্দীন আহমেদ কে নিয়ে।
আজকে আমি এই অংশ টুকু সামনে নিয়ে এলাম এটা দেখানোর জন্য,যারা বলেন মুজিব ক্ষমতার লোভে একনায়কত্ব তথা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে তারা কিছু না জেনেই নিছক শোনা কথা বলেন।সত্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা বা এগুলো নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে চান না।সে সময় কেন বাকশাল হল,কেন অনেক পত্রিকা বাতিল করা হল-সব প্রশ্নের উত্তর ই আমি দেয়ার চেষ্টা করব।কেউ যেন মনে না করেন আমি মন গড়া কথা লিখছি কিংবা একটি মাত্র বইয়ের উপর নির্ভর করছি।লেখা শেষ হবার পর আমি সব গুলো সূত্র উল্লেখ করব।
সবাই হয়তো কষ্ট করে বইটা পড়বেন না,তাই আমি ঠিক করলাম বিশেষ বিষয় গুলো সামনে নিয়ে আসব।কারণ অপপ্রচারের জবাব সত্য তথ্য দিয়েই দিতে হয়।
জয় বাংলা...জয় বঙ্গবন্ধু
https://www.facebook.com/notes/rafee-shams/%E0%A6%AC%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A7%81-%E0%A6%B9%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%AA%E0%A6%A5%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%87/508440595892952
লিখেছেন আবদুল গাফফার চৌধুরী।চিনতে পেরেছেন এনাকে?
'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী'-গানের গীতিকার যিনি ২১ ফেব্রুয়ারী ১৪৪ ধারা ভংগের সেই মিছিলে গুলি বিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছিলেন।পরবর্তীতে তিনি সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন।মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি 'স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে'-কর্মরত ছিলেন।তিনি বঙ্গবন্ধুর একজন প্রকৃত শুভাকাংখি ছিলেন যিনি সরকারের কোন কাজ পছন্দ না হলে সরাসরি সমালোচনা করতে কিংবা তা নিয়ে পত্রিকায় লিখতে দ্বিধা করতেন না।তাই তার লেখা বইটি যে প্রভাব মুক্ত এবং সত্য সেটা স্পষ্ট।
আমি অনেক খুজেও বইটি ইন্টারনেটে পাইনি।কিন্তু আমার মনে হয়েছে বই টি সবার পড়া দরকার।কারণ এতে করে অনেক অমীমাংসিত ব্যাপার,অনেক প্রশ্নের উত্তর পরিষ্কার হবে।সেই সময়ের ঘটনা এবং বঙ্গবন্ধু কে কেন নিহত হতে হল সেই প্রেক্ষাপট বিস্তারিত বোঝা সম্ভব হবে।আমি যেহেতু বইটির কোন লিঙ্ক দিতে পারছিনা তাই আমার ইচ্ছা বইটি থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু অংশ নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে সবাই কে জানাবো।যাদের এটা নিয়ে কোন আগ্রহ নেই তারা নির্দ্বিধায় আমাকে জানাবেন,আমি পরবর্তী লেখা গুলো আর তাদের ট্যাগ করবনা।যারা এই বিষয়ে জানতে চান তারাও জানাবেন লেখা কেমন লাগছে।
আজ বইয়ের মাঝামাঝি জায়গা থেকে শুরু করব।মুজিব চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন মস্কো তে।সেখান থেকে এসে গেলেন ইন্দিরা গান্ধির সাথে দেখা করতে।অপর দিকে ঠিক একই সময় ভুট্টো গেলেন পিকিং এ।অর্থাৎ একদিকে ভারত-বাংলাদেশ-রাশিয়া অন্য দিকে পাকিস্তান-চিন-আমেরিকা।
দেশে ফিরে গাফফার চৌধুরীর সাথে এ বিষয়ে তার কথোপকথন হয়।তার কিছু উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে দিচ্ছি।
"বঙ্গবন্ধু বললেনঃবাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম নেয়ায় ভারত উপমহাদেশের রাজনৈতিক ভারসাম্য সম্পূর্ণ বদলে গেছে।এই বাস্তবতা নিক্সন আডমিনিস্ট্রেশন মেনে নিতে পারছেনা।তারা চেয়েছিল পাকিস্তান ও বাংলাদেশ কে মিলিত ভাবে তারা ভারত মহাসাগরে নৌঘাটি স্থাপন ও ভারতে সোভিয়েত প্রভাব হ্রাসে ব্যবহার করবে।ভারত ও সোভিয়েত ইয়ুনিয়ন মিলিত ভাবে বাংলাদেশকে স্বাধীনতা লাভে সাহায্য করায় তাদের এই পরিকল্পনা ভন্ডুল হয়ে গেছে।পাকিস্তানের সাথে জয় লাভ করায় ভারত এশিয়ার সাব-সুপার পাওয়ার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে।এটা আমেরিকা চিন কারোরি মনঃপূত ন্য।পরাজিত ও দুর্বল পাকিস্তান কে দিয়ে ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করা সম্ভব নয়।এজন্য চীন কে সঙ্গে টানা হয়েছে।অন্যদিকে ভারতের অভ্যন্তরে ডানপন্থী ও সাম্প্রদায়িক দল গুলোকে সাহায্য জুগিয়ে ইন্দিরা সরকার কে অপসারণের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।"
এরপর বঙ্গবন্ধু বর্ননা করেন কিভাবে মার্কিন সরকার একটা দেশের সরকারের পতন ঘটানোর কাজ করে।আমি নিজের ভাষায় সেটা সহজ করে বলছি।মার্কিনীদের সিআইএ এই কাজ টি করে থাকে।প্রথমে তারা বুদ্ধিজীবী,সাংবাদিক ও প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম গুলোকে হাত করে,তাদের এজেন্ট বসিয়ে তার মাধ্যমে সরকারের বিরূদ্ধে মিথ্যা,অর্ধ-সত্য কথা প্রচার করে।এরপর দেশের শ্রমিক শ্রেণী কে উসকে দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল অবস্থার তৈরি করে।এই কাজে সাহায্য করে দেশের মধ্যে থাকা ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদ ও সাম্প্রদায়িক মহল।এভাবে তারা ক্রমান্বয়ে সরকারের জনপ্রিয়তা কমাতে থাকে।যখন সরকার জনপ্রিয়তা হারায় তখন গণতন্ত্র রক্ষার নাম করে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সরকারের পতন ঘটায়।বিষয় ট আরো জটিল ও প্যাচালো।আমি সাধারণ ভাবে মূল বিষয় টি বললাম।
আমরা যদি অতি সাম্প্রতিক ঘটনা গুলো দেখি(মিশরের ঘটনা,আরব-বসন্ত,লিবিয়া ইত্যাদি) এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ড ও দেখি তাহলে বুঝব ঠিক এই ঘটনা গুলোই ঘটেছে।স্বয়ং বঙ্গবন্ধু এটা বুঝেছিলেন এবং তার প্রতিকার ও করতে চেয়েছিলেন।আবার বই এ ফিরে যাই।
"বঙ্গবন্ধু বলছেনঃভারতে যদি গণতান্ত্রিক সরকারের পতন ঘটে তাহলে সারা এশিয়ায় মিলিটারী-ফ্যাসিজম প্রতিষ্ঠা হবে।চলবে যুদ্ধ,অস্ত্র প্রতিযোগীতা।সামরিক খাতে বিনা প্রয়োজনে কোটি কোটি টাকা খরচ হবে।জনসাধারণের ভাগ্য উন্নয়ন,দারিদ্র্য বিমোচনের পরিকল্পনা হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে।যদি দরকার হয় কিছুদিনের জন্য রাজনৈতিক এক নায়কত্ব প্রতিষ্ঠার দ্বারা এই মিলিটারি-ফ্যাসিজম এর অভিশাপ রুখতে হবে।"
শেষ কথাটি খেয়াল করুন।আজীবন ক্ষমতায় থাকার বাসনায় নয়,তৎকালীন বিরূপ পরিস্থিতি সামাল দিতেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলান।
পরবর্তী কথা গুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ।খেয়াল করুন-
আমি অবশ্য সব রকম একনায়কত্বের বিরোধী।কিন্তু রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজি বলেও একটা কথা আছে।শহীদ সোহরাওয়ার্দী বেঁচে থাকতেই আমি সমাজতন্ত্র বিশ্বাসি হয়েছি।কিন্তু আওয়ামি লীগের লক্ষ সমাজতন্ত্র এই কথাটি বলার জন্য আমাকে ১০ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে।গণতন্ত্র আমার লক্ষ।কিন্তু তা দ্বি-দলীয় সেক্যুলার গণতন্ত্র বা যার যা খুশি করার গণতন্ত্র নয়।সাম্প্রদায়িক শ্লোগান বিনা বাধায় তোলার অধিকার দেয়াকে আমি গণতান্ত্রিক অধিকার বলে মনে করিনা।উন্নত দেশে গণতান্ত্রিক সরকারের কাজ আরো একটি,জনসাধারণকে গণতান্ত্রিক চেতনা ও শিক্ষায় আরো শিক্ষিত করে তোলা।এজন্য দরকার হলে একটি অনুন্নত দেশে গণতান্ত্রিক সরকারকে সময় সময় অত্যন্ত কঠোর হতে হবে।মিলিটারি ফ্যাসিবাদের চাইতে রাজনৈতিক একনায়কত্ব সাময়িক ভাবে ভাল এজন্য যে,রাজনৈতিক একনায়কত্বের ভিত্তি জনগণ ও জনগনের রাজনীতি।সুতরাং জনগণের সমর্থন ও ভাল-মন্দের দিকে তাঁকে লক্ষ রাখতে হবে।অন্যদিকে মিলিটারি এর শক্তি হল অস্ত্র ও সমাজের প্রগতি-বিরোধী শক্তি।এই দুয়ের মিলনে কোন দেশের ই মঙ্গল হতে পারেনা।
আজ আর বেশি দীর্ঘ করছিনা।এর পরে লিখব খন্দকার মুশ্তাকের সাথে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্ক ও তাজ-উদ্দীন আহমেদ কে নিয়ে।
আজকে আমি এই অংশ টুকু সামনে নিয়ে এলাম এটা দেখানোর জন্য,যারা বলেন মুজিব ক্ষমতার লোভে একনায়কত্ব তথা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে তারা কিছু না জেনেই নিছক শোনা কথা বলেন।সত্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা বা এগুলো নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে চান না।সে সময় কেন বাকশাল হল,কেন অনেক পত্রিকা বাতিল করা হল-সব প্রশ্নের উত্তর ই আমি দেয়ার চেষ্টা করব।কেউ যেন মনে না করেন আমি মন গড়া কথা লিখছি কিংবা একটি মাত্র বইয়ের উপর নির্ভর করছি।লেখা শেষ হবার পর আমি সব গুলো সূত্র উল্লেখ করব।
সবাই হয়তো কষ্ট করে বইটা পড়বেন না,তাই আমি ঠিক করলাম বিশেষ বিষয় গুলো সামনে নিয়ে আসব।কারণ অপপ্রচারের জবাব সত্য তথ্য দিয়েই দিতে হয়।
জয় বাংলা...জয় বঙ্গবন্ধু
https://www.facebook.com/notes/rafee-shams/%E0%A6%AC%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A7%81-%E0%A6%B9%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%AA%E0%A6%A5%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%87/508440595892952
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।