জ্বিনের আঁচড়
মাকে নিয়ে বিল্লু ছেলেটার কোথাও শান্তি নাই। কখন কি হয় কে জানে। সারাক্ষণ মাকে নিয়ে ভাবতে হয় তাকে। না জানি কখন কি করে বসে। কতো কবিরাজ, কতো ডাক্তার কিছুতেই ভালো হয় না তার মা।
এইতো সেদিন দুপুর বেলা গরু-ছাগলগুলো মাঠ থেকে নিয়ে এসে গোয়াল ঘরে বেঁধে বাড়ি থেকে তার মা বেরিয়ে যা”েছ। এই দেখে বিল্লু তার মাকে বললো,“মা, কই যাও?”
কথা বলে না বিল্লুর মা- বেলি পাগলী। আপন ই”েছই হাঁটতে থাকে।
বিল্লু বুঝতে পারে তার মায়ের অব¯’া। সেও পিছু পিছু যায়। কিš‘ একি! কোথায় গেলো মা? মাকে এভাবে বেরিয়ে পড়তে দেখে সে শুধু ঘর থেকে শার্টটা নিতে গিয়েছিলো, আর সেটুকু সময়ের ব্যবধান তো সামান্য। এ সামান্য সময়ে তার মা কোথায় গেলো? নাকি, বাবুদের বাগানের ধার দিয়ে পুরুনো পুকুর পাড়ে যায়নি তো?
এমন সময় হঠাৎ বিল্লু শুনতে পেলো খিল খিল করে একটা হাসির শব্দ।
ঃ কে, কে? মা নাকি?
ঃ এই তো আমি এখানে।
বিল্লু অবাক হয়ে গেলো। একি তার মা যে বাগানের বড় জাম গাছটার মগডালে বসে পা দুলিয়ে হাসছে।
বিল্লু ভয় পেয়ে চোখ কপালে তুলে বলে,“মা, ওমা তুমি ওখানে কেন? কী করে গাছে উঠলে? এতো বড় গাছ।”
মা যেন কিছুই শুনছে না। কেবলি হেসেই চলছে।
বিল্লু ঠান্ডা গলায় আবার ডাকলো,“মাগো, তুমি নেমে এসো মা।”
হেসেই চলছে বেলি পাগলী। বিল্লুকে এভাবে গাছের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে দেখে কাছে এলো তাদেরি একজন প্রতিবেশী। গাছের চিকন ডালে ঝুলিয়ে এভাবে হাসতে দেখে চিৎকার দিলেন তিনি। “এই কে কোথায় আছিস দেখে যা। দেখে যা বেলি পাগলী গাছে উঠেছে।”
এতোক্ষণে অনেক লোক জমা হলো সেখানে। বিল্লু বলেই চলেছে।
ঃ নেমে এসো মা। পড়ে যাবে তো। মা, ও মা নেমে এসো না।
না, বেলি পাগলী কোনো কথাই শুনছে না। যেন একই ভাবে হেসে চলেছে। সবাই হায় হায় করছে। না জানি কখন পড়ে যায় ঐ চিকন ডাল ভেঙ্গে।
একটা লোক বিল্লুকে বললো,“বাবা, এভাবে ডেকে লাভ নাই। ওর তো হুস নাই। হুস ওয়ালা একটা মেয়ে মানুষ কী এতো বড় গাছে উঠতে পারে! ওকে জ্বিনে তুলেছে।”
ঃ হ্যাঁ, হ্যাঁ। ঠিক বলেছেন। একথা এক সাথে আরো অনেকে বললেন। ও তো জ্বিনে ধরায়।
ঃ তাহলে এখন উপায়।
ঃ উপায় হলো, কেউ গাছে উঠে ওকে ধরে নামাতে হবে।
ঃ কিš‘ যদি ধরতে গেলেই জ্বিনটা ফেলে দেয়?
ঃ হ্যাঁ, তা দিতেও পারে।
ঃ তাহলে?
হঠাৎ বেলি পাগলীর হাসি থেমে গেলো। গাছের ডাল চুপ করে ধরে আছে সে।
বিল্লু আবার ডাকলো,“মা, ওমা।”
বেলি পাগলী কিছু বলছে না শুধু চেয়ে আছে।
বিল্লু শঙ্কিত গলায় বললো,“মা, শক্ত করে ডালটা ধরে থেকো। ছেড়ে দিও না যেন।”
বিল্লু এতোক্ষণে বুঝতে পারলো, জ্বিনটা চলে গেছে। সে তো জানে, কেউ না জানুক। তার যে মা। এর আগেও কতোবার কতো রকমের ঘটনা ঘটেছিলো। এইতো কিছুদিন আগের ঘটনা। তখন পৌষ মাসের কণকণে শীত। সারা দিন সূর্য দেখা যায় না কুয়াশায়। কাজ-কর্ম ফেলে সকলে শীতের তীব্রতা কমানোর জন্য আগুনে শরীর গরম করিয়ে নি”েছ। হঠাৎ বেলি পাগলী হন হন করে এসে গ্রামের বড় পুকুরে নেমে পড়লো। সবাই হায় হায় করে উঠলো। একি করছে বেলি পাগলী! মরে যাবে তো!
বেলি পাগলী সোজা পুকুরের ঘোলা পানিতে ডুব দিতে লাগলো। একি করছে সে, ডুবছে আর ডুবছে। কঠিন শীতে বেলি পাগলীর এমন কান্ড দেখে মুহূর্তে লোকে লোকারণ্য হয়ে গেলো। পুকুরের চারপাশে অসংখ্য মানুষ। সবাই দেখছে আর বেলি পাগলী সমান তালে ডুবেই যা”েছ।
কে নামবে এই শীতে। শীতে যে রক্ত হীম হয়ে যাবার সম্ভবনা। সবাই বলছে, বেলি পাগলী আজ মরেই যাবে। এতো শীতে এরকম দুর্বল মানুষ কী করে বাঁচবে? সকলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে বেলি পাগলীর কান্ড। কেউ নামছে না। এমন সময় কোথা থেকে দৌঁড়ে এলো বিল্লু। মাকে এ অব¯’ায় দেখে ঝাঁপিয়ে পড়লো পুকুরে। কাছে গিয়ে হাত ধরতেই জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়লো বেলি পাগলী।
বিল্লু মাকে তুলে নিয়ে বাড়িতে গেলে সকলে গরম তেলে বেলি পাগলীকে মালিশ করে দিলেন। সে যাত্রায় বেঁচে গেলো বেলি পাগলী। এরপরো কতোবার যে পালিয়ে যায় আর যে কতোবার হারিয়ে যায় এর ঠিক নেই। আর এ সবি করে জ্বিনের আঁচড়ে। সু¯’্য মানুষ কী আর এমন করে?
বিল্লু মাকে গাছ থেকে নামিয়ে নিয়ে গেলো বাড়িতে। তিনদিন তিন রাত ঘুম দিয়ে সে দিনের মতো ভালো হলো বেলি পাগলী।
কিš‘ জ্বিনের আঁচড় ছাড়লো না তাকে। মাঝে মাঝেই হারিয়ে যায় বেলি পাগলী। কাউকে কিছু না বলেই হারিয়ে যায়। আবার কোত্থেকে আসে কে জানে। সে কি আর সাধে করে এমন কান্ড। সব ঐ জ্বিনের কান্ড।
এইতো সেদিন দুপুর বেলা গরু-ছাগলগুলো মাঠ থেকে নিয়ে এসে গোয়াল ঘরে বেঁধে বাড়ি থেকে তার মা বেরিয়ে যা”েছ। এই দেখে বিল্লু তার মাকে বললো,“মা, কই যাও?”
কথা বলে না বিল্লুর মা- বেলি পাগলী। আপন ই”েছই হাঁটতে থাকে।
বিল্লু বুঝতে পারে তার মায়ের অব¯’া। সেও পিছু পিছু যায়। কিš‘ একি! কোথায় গেলো মা? মাকে এভাবে বেরিয়ে পড়তে দেখে সে শুধু ঘর থেকে শার্টটা নিতে গিয়েছিলো, আর সেটুকু সময়ের ব্যবধান তো সামান্য। এ সামান্য সময়ে তার মা কোথায় গেলো? নাকি, বাবুদের বাগানের ধার দিয়ে পুরুনো পুকুর পাড়ে যায়নি তো?
এমন সময় হঠাৎ বিল্লু শুনতে পেলো খিল খিল করে একটা হাসির শব্দ।
ঃ কে, কে? মা নাকি?
ঃ এই তো আমি এখানে।
বিল্লু অবাক হয়ে গেলো। একি তার মা যে বাগানের বড় জাম গাছটার মগডালে বসে পা দুলিয়ে হাসছে।
বিল্লু ভয় পেয়ে চোখ কপালে তুলে বলে,“মা, ওমা তুমি ওখানে কেন? কী করে গাছে উঠলে? এতো বড় গাছ।”
মা যেন কিছুই শুনছে না। কেবলি হেসেই চলছে।
বিল্লু ঠান্ডা গলায় আবার ডাকলো,“মাগো, তুমি নেমে এসো মা।”
হেসেই চলছে বেলি পাগলী। বিল্লুকে এভাবে গাছের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে দেখে কাছে এলো তাদেরি একজন প্রতিবেশী। গাছের চিকন ডালে ঝুলিয়ে এভাবে হাসতে দেখে চিৎকার দিলেন তিনি। “এই কে কোথায় আছিস দেখে যা। দেখে যা বেলি পাগলী গাছে উঠেছে।”
এতোক্ষণে অনেক লোক জমা হলো সেখানে। বিল্লু বলেই চলেছে।
ঃ নেমে এসো মা। পড়ে যাবে তো। মা, ও মা নেমে এসো না।
না, বেলি পাগলী কোনো কথাই শুনছে না। যেন একই ভাবে হেসে চলেছে। সবাই হায় হায় করছে। না জানি কখন পড়ে যায় ঐ চিকন ডাল ভেঙ্গে।
একটা লোক বিল্লুকে বললো,“বাবা, এভাবে ডেকে লাভ নাই। ওর তো হুস নাই। হুস ওয়ালা একটা মেয়ে মানুষ কী এতো বড় গাছে উঠতে পারে! ওকে জ্বিনে তুলেছে।”
ঃ হ্যাঁ, হ্যাঁ। ঠিক বলেছেন। একথা এক সাথে আরো অনেকে বললেন। ও তো জ্বিনে ধরায়।
ঃ তাহলে এখন উপায়।
ঃ উপায় হলো, কেউ গাছে উঠে ওকে ধরে নামাতে হবে।
ঃ কিš‘ যদি ধরতে গেলেই জ্বিনটা ফেলে দেয়?
ঃ হ্যাঁ, তা দিতেও পারে।
ঃ তাহলে?
হঠাৎ বেলি পাগলীর হাসি থেমে গেলো। গাছের ডাল চুপ করে ধরে আছে সে।
বিল্লু আবার ডাকলো,“মা, ওমা।”
বেলি পাগলী কিছু বলছে না শুধু চেয়ে আছে।
বিল্লু শঙ্কিত গলায় বললো,“মা, শক্ত করে ডালটা ধরে থেকো। ছেড়ে দিও না যেন।”
বিল্লু এতোক্ষণে বুঝতে পারলো, জ্বিনটা চলে গেছে। সে তো জানে, কেউ না জানুক। তার যে মা। এর আগেও কতোবার কতো রকমের ঘটনা ঘটেছিলো। এইতো কিছুদিন আগের ঘটনা। তখন পৌষ মাসের কণকণে শীত। সারা দিন সূর্য দেখা যায় না কুয়াশায়। কাজ-কর্ম ফেলে সকলে শীতের তীব্রতা কমানোর জন্য আগুনে শরীর গরম করিয়ে নি”েছ। হঠাৎ বেলি পাগলী হন হন করে এসে গ্রামের বড় পুকুরে নেমে পড়লো। সবাই হায় হায় করে উঠলো। একি করছে বেলি পাগলী! মরে যাবে তো!
বেলি পাগলী সোজা পুকুরের ঘোলা পানিতে ডুব দিতে লাগলো। একি করছে সে, ডুবছে আর ডুবছে। কঠিন শীতে বেলি পাগলীর এমন কান্ড দেখে মুহূর্তে লোকে লোকারণ্য হয়ে গেলো। পুকুরের চারপাশে অসংখ্য মানুষ। সবাই দেখছে আর বেলি পাগলী সমান তালে ডুবেই যা”েছ।
কে নামবে এই শীতে। শীতে যে রক্ত হীম হয়ে যাবার সম্ভবনা। সবাই বলছে, বেলি পাগলী আজ মরেই যাবে। এতো শীতে এরকম দুর্বল মানুষ কী করে বাঁচবে? সকলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে বেলি পাগলীর কান্ড। কেউ নামছে না। এমন সময় কোথা থেকে দৌঁড়ে এলো বিল্লু। মাকে এ অব¯’ায় দেখে ঝাঁপিয়ে পড়লো পুকুরে। কাছে গিয়ে হাত ধরতেই জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়লো বেলি পাগলী।
বিল্লু মাকে তুলে নিয়ে বাড়িতে গেলে সকলে গরম তেলে বেলি পাগলীকে মালিশ করে দিলেন। সে যাত্রায় বেঁচে গেলো বেলি পাগলী। এরপরো কতোবার যে পালিয়ে যায় আর যে কতোবার হারিয়ে যায় এর ঠিক নেই। আর এ সবি করে জ্বিনের আঁচড়ে। সু¯’্য মানুষ কী আর এমন করে?
বিল্লু মাকে গাছ থেকে নামিয়ে নিয়ে গেলো বাড়িতে। তিনদিন তিন রাত ঘুম দিয়ে সে দিনের মতো ভালো হলো বেলি পাগলী।
কিš‘ জ্বিনের আঁচড় ছাড়লো না তাকে। মাঝে মাঝেই হারিয়ে যায় বেলি পাগলী। কাউকে কিছু না বলেই হারিয়ে যায়। আবার কোত্থেকে আসে কে জানে। সে কি আর সাধে করে এমন কান্ড। সব ঐ জ্বিনের কান্ড।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আব্দুর রহমান আনসারী ১০/০৭/২০২৩ভালো। বেশ ভালো।
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ০৩/০৫/২০২৩অনন্য প্রকাশ
-
ফয়জুল মহী ০৩/০৫/২০২৩অনন্য প্রকাশ, শুভ কামনা ।