রাত পোহাবার আগে ২৬
মুন্নির পরীক্ষা চলছে। তাই তার ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। পরীক্ষাটায় ওকে মুক্তি দিবে। কারণ, এই পরীক্ষাটার জন্যই সে অপেক্ষা করছে। এক মাস হলো, সে চট্রগ্রামে একটা কোম্পানীতে এপ্লাই করেছিলো সেই চাকরীটা হয়ে গেছে তার। এপার্টমেন্ট লেটার এসেছে। এবার মুক্তি নিবে মুন্নি তার জিম্মাদারি জীবন থেকে। অনেক সহ্য করেছে সে। অনেক অপমান করেছে সে তার প্রাণ প্রিয় ভাইটিকে। অনেক কষ্ট দিয়েছে তাকে। অনেক লাঞ্চিত করেছে সে নিজেকে। নিজের বলে কোনো স্বাধীনতা ছিলো না তার। অন্যের অধীনে বেঁচে থাকা যে কতো বড় যন্ত্রনার তা সে ছাড়া আর কেউ জানে না। জানতে চাইনি কেউ কোনো দিনো। আপন জনেরা তাকে পর করে দূরে ঠেলে দিয়েছে, তাই এবার অনেক দূরে চলে যাবে মুন্নি। তাদের দৃষ্টির সীমানা থেকে, মিথ্যের বন্ধন থেকে মুক্তি পেতে চায় মুন্নি। সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, চাকরীর অর্ধেক টাকা সে পাঠিয়ে দিবে মম আর মুক্তার নামে। মম আবার কলেজে ভর্তি হবে, মুক্তার চিকিৎসা হবে, সুস্থ্য হবে সে। বারিকের দেনা শোধ করে দিবে। জানিয়ে দিবে তাকে, জোর করে মানুষকে বেঁধে রাখা যায়, জয় করা যায় না‘ আপন করা যায় না অর্থ দিয়ে। মুন্নি বুঝতে পারে না, কেমন করে সে তার মহৎ ভাইটির রাগ ভাঙ্গাবে। তবু যা হোক, মাসুম মুন্নিকে অনেক ভালোবাসে। এ রাগ হয়তো সে দূরে গেলেই চলে যাবে। হ্যাঁ, যাবেই তো। আপন জন কখনো পর হতে পারে না। রক্তের টানে রক্তকে ডাকে। মুন্নি ভাবে, তার নতুন ঠিকানা কাউকে জানাবে না সে। কাউকেও না। বারিকের ঋণ শোধ করে তবেই সে জানাবে তার ঠিকানা। মুন্নি বুঝিয়ে দিবে মাসুমকে। মুন্নি তার সেই মুন্নি ছিলো, সে কোনো অন্যায় করেনি, পাপ করেনি। শুধু জীবনের প্রয়োজনেই সে কিছুটা রং মেখেছিলো। আর সে রং তাকে বদলাতে পারেনি। হ্যাঁ, তাই করবে মুন্নি।
ঃ মুন্নি, আপু।
হঠাৎ মুক্তার ডাকে সজাগ হলো মুন্নি। জিজ্ঞেস করলো,“মুক্তা, কী হয়েছে আপু?
ঃ আপু, আমি খাবো। আমার খুব খিদে পেয়েছে।
মাঝ রাতে খাবারের অভ্যাসটা মুন্নিই শিখিয়েছে মুক্তাকে। মুন্নি অনেকদিন রাতে তেমন ঘুমায় না। আর রাত জাগার কারণেই মুক্তা মাঝ রাতে জেগে যায়। মুক্তার কংকাল সার দেহে সুস্থ্যতার লক্ষণ না থাকলেও খাদ্যের প্রতি রুচি বেড়েছে। আর সেই সব ভালো ভালো খাবারের যোগান দিচ্ছে মুন্নি। মাসুম এ নিয়ে একদিন বলায় মুন্নি প্রায় রেগেই বলেছিলো, তুমি কেমন ভাইয়া! একটা মানুষ খাদ্যের অভাবে, চিকিৎসার অভাবে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আর তোমরা তাকে সম্মানের দোহায় দিয়ে বঞ্চিত করছো! কীসের সম্মান! যে সম্মান ক্ষুধার্তকে খাদ্য দিতে পারে না, অসুস্থ্যকে চিকিৎসা দিতে পারে না সে সম্মান চাইনা আমি। তোমরা থাকো তোমাদের সম্মান নিয়ে। আমি মুক্তাকে চাই। মুক্তা তোমাদের যেমন বোন আমারো তেমনি বোন। ওর এখন ভালো-মন্দ বোঝার সময় নয়। ওর জীবন বাঁচার আগে তারপর ভাববে। কোনটা ভালো, কোনটা মন্দ। প্লিজ ভাইয়া, তোমরা মুক্তাকে আর কষ্ট দিও না। ওকে ওর মতো চলতে দাও।
কথা বলেনি সে দিন মাসুম। মম’রও বলার ছিলো না কিছু। শুধু কষ্ট হয়েছিলো ভাইয়ার জন্য। যে কিনা অসহায় হয়ে গেছে এক অন্যায়ের কাছে।
মুন্নি অনেক যত্ন করে মুক্তাকে সে যা যা খায় তাই খাওয়ালো। মুক্তা খেয়ে শুয়ে পড়ার আগে বললো,“আপু, তুমি ঘুমাওনি কেন?”
ঃ আমার ঘুম আসছে না মুক্তা। তুমি এখন কথা বলো না ঘুমাও। আমি পরে ঘুমাবো।
মুক্তা কিছুক্ষণ চোঁখ বুঁজে থাকলো। একটু পরে আবার বললো,“আমারো ঘুম আসছেনা আপু। আমাকে একটা গল্প শুনাবে?”
মুন্নি অবাক হলো মুক্তার দিকে চেয়ে। ওকে যেন ঠিক মায়ের মতো দেখাচ্ছে।
ঃ মুক্তা।
ঃ হ্যাঁ আপু, মা থাকলে তো আমায় গল্প শুনাতো। এখন তুমি শুনাও না।
মুন্নি মুক্তার কাছে শুয়ে গল্প বলতে বলতে ঘুমিয়ে পড়লো।
চলবেই
ঃ মুন্নি, আপু।
হঠাৎ মুক্তার ডাকে সজাগ হলো মুন্নি। জিজ্ঞেস করলো,“মুক্তা, কী হয়েছে আপু?
ঃ আপু, আমি খাবো। আমার খুব খিদে পেয়েছে।
মাঝ রাতে খাবারের অভ্যাসটা মুন্নিই শিখিয়েছে মুক্তাকে। মুন্নি অনেকদিন রাতে তেমন ঘুমায় না। আর রাত জাগার কারণেই মুক্তা মাঝ রাতে জেগে যায়। মুক্তার কংকাল সার দেহে সুস্থ্যতার লক্ষণ না থাকলেও খাদ্যের প্রতি রুচি বেড়েছে। আর সেই সব ভালো ভালো খাবারের যোগান দিচ্ছে মুন্নি। মাসুম এ নিয়ে একদিন বলায় মুন্নি প্রায় রেগেই বলেছিলো, তুমি কেমন ভাইয়া! একটা মানুষ খাদ্যের অভাবে, চিকিৎসার অভাবে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আর তোমরা তাকে সম্মানের দোহায় দিয়ে বঞ্চিত করছো! কীসের সম্মান! যে সম্মান ক্ষুধার্তকে খাদ্য দিতে পারে না, অসুস্থ্যকে চিকিৎসা দিতে পারে না সে সম্মান চাইনা আমি। তোমরা থাকো তোমাদের সম্মান নিয়ে। আমি মুক্তাকে চাই। মুক্তা তোমাদের যেমন বোন আমারো তেমনি বোন। ওর এখন ভালো-মন্দ বোঝার সময় নয়। ওর জীবন বাঁচার আগে তারপর ভাববে। কোনটা ভালো, কোনটা মন্দ। প্লিজ ভাইয়া, তোমরা মুক্তাকে আর কষ্ট দিও না। ওকে ওর মতো চলতে দাও।
কথা বলেনি সে দিন মাসুম। মম’রও বলার ছিলো না কিছু। শুধু কষ্ট হয়েছিলো ভাইয়ার জন্য। যে কিনা অসহায় হয়ে গেছে এক অন্যায়ের কাছে।
মুন্নি অনেক যত্ন করে মুক্তাকে সে যা যা খায় তাই খাওয়ালো। মুক্তা খেয়ে শুয়ে পড়ার আগে বললো,“আপু, তুমি ঘুমাওনি কেন?”
ঃ আমার ঘুম আসছে না মুক্তা। তুমি এখন কথা বলো না ঘুমাও। আমি পরে ঘুমাবো।
মুক্তা কিছুক্ষণ চোঁখ বুঁজে থাকলো। একটু পরে আবার বললো,“আমারো ঘুম আসছেনা আপু। আমাকে একটা গল্প শুনাবে?”
মুন্নি অবাক হলো মুক্তার দিকে চেয়ে। ওকে যেন ঠিক মায়ের মতো দেখাচ্ছে।
ঃ মুক্তা।
ঃ হ্যাঁ আপু, মা থাকলে তো আমায় গল্প শুনাতো। এখন তুমি শুনাও না।
মুন্নি মুক্তার কাছে শুয়ে গল্প বলতে বলতে ঘুমিয়ে পড়লো।
চলবেই
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মুহাম্মাদ রাসেল উদ্দীন ০৪/০৫/২০১৭কম ভাল হয়নি কিন্তু!
-
আব্দুল হক ০৪/০৫/২০১৭সুন্দর লিখেছেন। আমিও চেষ্টা করছি কিন্তু এরকম পারিনা।
-
মোঃ ইমরান হোসেন (ইমু) ০৪/০৫/২০১৭চারুণ চমক নিয়ে লেখিকা আমাদের মাঝে।
ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইল