www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

পাগলা

[দিনাজপুর এবং বগুড়া জেলার আঞ্চলিক ভাষায় লেখা একটি গল্প]

শব্দ-অর্থ

]এনা-একটু, এংকা-এরকম ,উদিংকা-গতপরশু,নগি পলো-বাঁশের লাঠি পড়ে গেল,কদ্দিন-কতদিন,হিয়াল-ঠান্ডা,হারা-আমরা,ডেকচি- পাতিল,হাতা-চামুচ,ছোল-ছোট বাচ্চা,


এক

শীতের সকাল। চার দিকে ঝাপসা ধোয়ার মত ধুসর কুয়াশার চাদরে ঢাকা প্রতিটি গ্রাম। এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামের অর্স্তিত দেখা যায়না। থেকে থেকে শুশীতল হাওয়া শীতের তীব্রতাকে দিগুন বাড়িয়ে দিচ্ছে। আর সেই শীতকে নিবারন করতেই যত আয়োজন বৃদ্ধ থেকে জোয়ান,সব বয়সি লোকদের। মৌসুমি আমন ধানের অগোছালো খঁড়ে পূর্ণ গ্রামের প্রতিটি খলা-খুলি। তেমনি একটি খুলির পাশে ছোট্ট একটি গ্রাম্যে দোকান। দোকানের সামনে কিছু লোক জটলা বেঁধে যে জার মত কথা বলে চলেছে ।অদুরে কিছু লোক খেজরের রস খাচ্চে। আর তার ভালো মন্দ নিয়ে আলোচনা করছে। এক পাশে আগুন পোহাচ্ছে কজোন বৃদ্ধ এবং দুটি কিশোর। থেকে থেকে কিশোর বৃদ্ধ যে যা পারছে খর এনে দিচ্ছে আগুনে। শুকনো খড়ে দ্বিগুন বেগে জলছে আগুন। আর তা থেকে সকলে হাত পা নেড়ে নেড়ে গ্রহন করছে তাপের উতপ্ত তৃপ্ত আমেজ। উল্লাস প্রকাশ করছে বিভিন্ন ভাবে। কেউ বলছে আহ, কি শান্তি রে! কেউ বলছে আহা জীবন ঘুরে আইলো রে। কেই বলছে এখনি হাত পা বরফ হচিল। সে কথা আর কসনা রে ভাই শরিরে রক্ত জমাট বাঁধছিল। আর এনা পরেই বোধহয় পাথর হল হয়। ভাগ্যিস তোরা আগুন জালাস লুরে ..বলতে বলতে আগুনের পাশে বসলো অল্পবয়সি একটি লোক। এ্যই তোরা তো ছোল- পোল, তোমা-ঘরে দশা যিদি এংকা হয়, তো ,হারা তো বুড়া মানুষ,হামার কি দশা হচে। খেদু বুড়ার কথা শেষ না হতে শীতে কাঁপতে কাঁপতে আগুনের কাছে এলো হুরু বুড়ো। ছোট ছেলে মজমুলকে দেখে সে বলল এ্যাই, এ্যাই ছোল তোরা ক্যান এ্যাটে। যা রোদ পোহানে রোদ উঠিছে। মজমুলকে ঠেলে দিয়ে বসতে চাইলো হুরু বুড়ো। বুড়োর এমন আচারনে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলো দশ বারো বছরের কিশোর ছেলে মজমুল। ঝট করে দারিয়ে বলল
দেখ দাদা,ভালো হচে না কিন্তু? আগুনটা মুই জ্বালাছো বুঝলু?
জ্বালাচিস তো কি হচে? যা যা..
এই বুড়া তোরা কি কবা চাস। হিয়াল কি খালি তুমাকি নাগে, হামাক নাগেনা বোধায়?
অকারনে খেদু বুড়া চোখ দুটো কপালে তুলে বলল-আরে তোক আবার হিয়াল নাগে কিরে? ছোট ছোলের হিয়াল কম,গাও গরম থাকে।কি কোস হুরু।
হ ঠিক কছিস। যা তোরা, গাও গোন্দাবে,রোদ উঠিছে রোদ পোহানে। বলেই বিড়ি বের করে আগুনে ধরলো।
অ শালা বুড়া, হামাক থাকপা দেবলায় তারি ফন্দি,থাক শালা বাঁচপু আর কদিন। ভালো করে আগুন পোয়া। আগুন ধরে মরিসনা ঝান। তাহলে সকালোত গাও ধুয়ে দিবি,কথা টি বলেই আপন মনে হাসতে লাগলো মজমুল। চল হাবলু পাতারোত রোদ অ্যাচে। এতক্ষনে হাবলু বলল শালা বুড়ারা এত খারাপ রে। হাবলুর কথা শেষ হতেই র্ককট এক শিশুর চিৎকারে সজাগ হল সবাই। আচানক ভিতি মহূর্তে ছড়িয়ে পড়লো সকলের অন্তরে।

চলবেই
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১৩৭৩ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৪/০৩/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast