www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

রাত পোহাবার আগে ১৪

অফিসে ঢুকতেই দেখা হয়ে গেলো এমডি কন্যা, অদিতির সঙ্গে। অদিতি শান্ত চোঁখে তাকালো একবার। পরক্ষণেই কঠিন স্বরে বললো,“কী ব্যাপার, মিষ্টার মাসুম। এতো দেরি করে এলেন যে?”
কথা বলে না মাসুম। চলে যায় ভেতরে। রুমে বসে নিজেকে আপরাধী মনে হয় না তার। চেয়ারে বসতে না বসতেই ডাক পড়ে এমডির। কিছু না ভেবে এমডির সামনে গিয়ে দাঁড়ায় সে।
ঃ স্যার, আমাকে ডেকেছেন?
ঃ হ্যাঁ, বসো।
সামনের চেয়ারে বসলো মাসুম।
    ঃ,“মাসুম, তুমি তো জানো, আমার মেয়েটার সম্বন্ধে? অবশ্য, আমি নিজেই তোমাকে বলেছি।?
ঃ জ্বি, স্যার।
ঃ ওর আচারন অনেকটা বিপদগ্রস্থ দেখছি আমি। তবুও কটা দিন যদি...।
ঃ স্যার, আমার মনে হয় আপনার মেয়ে এখনো অবুঝ। তাই তার সব কথা ধরা যাবে না।
ঃ হ্যাঁ, ঠিক বলেছো। আমিও তাই ভেবেছি।
ঃ স্যার, ওকে আর নানা বাড়িতে না রেখে নিজের কাছে রেখে দিন।
ঃ হ্যাঁ। সে চেষ্টাতো কম করি নি। কিন্তু পেরে উঠি না যে।
ঃ স্যার, মেয়েটা আপনার। তাই আপনাকেই পারতে হবে। নয়তো শিক্ষার নামে অশিক্ষা গ্রাস করবে তাকে।
এমডি সাহেব চুপ করে ভাবছেন।
সন্তানের জন্য আদর-শাসন দুটোই দরকার। এমডি তখনো ভাবছে। মাসুম কি করবে বুঝতে পারছে না। মাসুম ভাবলো এতো কথা বলা হয়তো ঠিক হচ্ছেনা তার। তবুও যা হোক ঠিকই তো বলেছে। মাসুম ভয় পায় না শততার পথে, সে সৈনিক। অন্যায় যেমন সে নিজে করে না, অন্যায় কারিকে পছন্দও করে না।
ঃ স্যার, আমি কী আসতে পারি?
এমডি বললেন,“হ্যাঁ হ্যাঁ, এসো।”
চলে গেলো মাসুম। ক’দিনের অনেক জমানো কাজ পড়ে আছে তার। মাসুম জানে, তার এখন কাজ ফেলে রাখা চলবে না। যদিও সে কাজ ফেলে রাখে না। কিন্তু তারপরেও কিছুটা মুক্ত ছিলো। তার কাজে বাঁধা দেবার কিংবা কৈফিয়ত নেবার মতো দুঃসাহস কখোনই কারো হয় নি। কিন্তু এখন এমডি মেয়ে  প্রতিদ্বন্দি হয়ে দাঁড়িছে। মাসুম অবশ্য তার ধার ধারে না। তবু সাবধানের মার নেই। যার সম্মান নেই সে যেমন সম্মানের ভয় করে না, আবার যার আদব নেই, সে বেয়াদবি করতে ছাড়ে না। আর মাসুম চায় না কোনো বেয়াদব মেয়ের কাছে ছোট হতে। মাসুম স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে, মেয়েটা অকারণে তার বিরোধিতা করছে। আর তাকে ইন্দ্রিয় যোগাচ্ছে, এ অফিসের অসৎ কর্মচারীবৃন্দ। তাতে মাসুমের কিছু যায় আসে না। ওদের কথা ভাববার অবকাশ মাসুমের নেই। তার দায়িত্ব সততার সাথে কর্ম করা। এ কুম্পানির চেয়্যারম্যান অদিতার আপন মামা আর সে কারনেই তার এ অহংকার।

রাজু আহম্মেদ মাসুমের জানালার কাছ থেকে উঁকি দিয়ে চলে গেলো। মাসুম তার কাজে মনোনিবেশ করলো। রাজু আহম্মেদ সোজা চলে গেলো তার অফিস রুমে। অদিতার দিকে চাইলো একবার। অদিতাও চেয়েছিলো। চোঁখে চোখ পড়তেই মিষ্টি একটু হাসলো। রাজু আহম্মদের পৃথিবী যেন মুহূর্তেই উচ্ছ্বাসিত আলোই ঝলমল করে উঠলো। নেচে উঠলো মন ময়ুরি। এই ক’দিনে অনেকটা কাছে এসেছে দু’জন দু’জনার ।
রাজু আহম্মেদের উপস্থিতিটা টের পেয়ে বাইরে চলে গেলো অফিসের পিয়ন। বয়স্ক লোক। কেন জানি তার চোঁখে ভালো ঠেকছে না এমডি কন্যার আচরণ।
ঃ কী ব্যাপার মিষ্টার রাজু, একেবারে চুপ চাপ যে। অদিতি যেছে কথা বললো রাজু আহম্মেদের সংগে।
   ঃ এই তো । হাসির ছলে বললো,“রাজু, তারপর আপনার বাসার সবাই কেমন আছে? আর আপনার মন খারাপ কেন?”
ঃ সবাই ভালো আছে। আর মন, সে অচিন পাখি বুঝা বড় দায়।
হাসলো অদিতি। হ্যাঁ, আজ মনের সন্ধান পেলাম যে।
ঃ কেন, মন কি চায়?
ঃ চাইলে কী সব পাওয়া যায়?
ঃ চাইলে যেমন সব পাওয়া যায় না, পাইলেও তেমন সব চাওয়া যায় না।
ঃ বাহ! বাহ! আপনি তো দারুন কথা বলতে পারেন।
ঃ না ,না। এ হচ্ছে শেখা বুলি। ইচ্ছে হলো তাই বললাম।
ঃ তাই নাকি।
ঃ হ্যাঁ। আদিতার ভ্রু কুঁচকে গেলো। কি বুজলো কে জানে। আচ্ছা রাজু সাহেব, লাঞ্চের পর কী আপনার হাতে কিছুক্ষণ সময় হবে?
চমকে উঠলো রাজু। জিজ্ঞেস করলো,“কেন?”
ঃ না মানে, একটু বাইরে ঘুরতাম এই আর কি।
রাজু সহাস্যে বললো,“অফকোর্স।”
ঃ থ্যাংক ইউ।
রাজু আহম্মেদের মনে হলো, পৃথিবীটা যেন তার হাতের মুঠোয়। অদিতা অফিস রুম থেকে চলে গেলো। রাজু সে চলে যাওয়ার দিকে চেয়ে হাসছে। একটু পরেই ফিরে এলো অদিতা। জিজ্ঞেস করলো,“কী ব্যাপার রাজু সাহেব, মাসুমের রুমে এক সুন্দরী তরুণীকে ঢুকতে দেখলাম। মেয়েটা কে?”
ঃ উনার ছোট বোন। নাম মম।
ঃ বাহ! সুন্দর তো মেয়েটা।
হ্যাঁ,আরো একটা বোন আছে ওটাও সুন্দর।
তাই?
কার সাড়ায় কাজে মন নিবেশ করলো দু’জনে।



চলবেই
বিষয়শ্রেণী: অন্যান্য
ব্লগটি ৭১৯ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০২/০২/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast