পুতুল খেলার ছলে
এক
অনার পরীক্ষা। কিছু ভালোলাগছেনা তার। প্রচন্ড উত্তেজনায় অস্থির লাগছে। কালকেই পরীক্ষা অথচ কোন রকম প্রস্তুতি নাই তার। মামা কত বার বলেছিল,অনা তুই এভাবে লেখা পড়ায় ফাঁকি দিলে দেখবি পরীক্ষায় নির্ঘাত একটা রসগোল্লা পাবি।আর সেটা ভেবেই আমার খারাপ লাগছে। তুই আমার ভাগনি হয়ে..।
কিন্তু কে শুনে কার কথা । অনা মামার কথায় কান না দিয়ে নিয়মিত ফাঁকি দিয়েছে। আজ আর কিছু ভাবতে পারছেনা সে। কেন জানি মামার কথা বার বার মনে পড়ছে। মামা ভালো ছাত্র অল্প সময়ে অনেক বেশি পড়েন।আর আমি সারা রাত পড়েও ক্লাসের পড়ায় কভার করতে পারিনা। কিন্তু কেন ?
নিজের প্রশ্নের উত্তর খুজতে গিয়ে উদাস হয় অনা। কিন্তু না সেখানে ষ্থির হতে পারেনা সে। মামার কথায় সজাগ হল,
কি খবর অনামনি পড়তে বসেছো নাকি?
হা মামা,ভিতরে এসো ?
কাল কি পরিক্ষা ?প্রশ্নটা করেই বসে পড়লো রাহাত।
ইংরেজী প্রথম পত্র মামা।মামা তোমার কথা না শুনে যে কি ভুল করেছি ?
কেন কি হয়েছে ?
দেখনা,সব পড়া গুলো কেমন তাল গোল পাকিয়ে যাচ্ছে,কিছুই মনে থাকছেনা ।
হাঁ এমন টিই তো হবে? ফাকি দিয়ে কেউ জিততে পারেনা।জিতেও না কোন দিন। তুই তো লেখাপড়া করিসনি ,সারাক্ষন খেলা ধুলা.গান আর আড্ডা নিয়ে থেকেছিস ,তোর এমন টি হওয়ায় কি ঠিক না ?
মামা?অভিমানি গলায় ডাকলো অনা।রাহাত দেখলো অনা কেমন অসহায়ের মত চেয়ে আছে।মায়া লাগলো তার ।দে দেখি বইটা ,কি হয়েছে মনে থাকবেনা কেন?
অনা বই এগিয়ে দিল ।
ঘাবড়াসনে ?তাছাড়া এটাতো ফাইনাল পরীক্ষা নয়। এখন থেকে ভালো করে পড়বি। আমি তোকে হেল্প করবো।
সত্যি বলছো মামা ?
অনা জানে মামা অনেক ভালোছাত্র।মামা চাইলেই অনা ভালোহতে পারে।অনার দিকে আড়চোখে চেয়ে অবাক হল রাহাত।কেমন যেন অসহায় লাগছে মেয়েটাকে।
অনা ?
হা মামা।
কি ভাবছিস।
না কিছুনা।মামা তুমি অনেক ভালো,আমার ভাগ্যে ভালো বলেই তোমাকে মামা করে পেয়েছি।
হয়েছে মামাকে আর ঘুস দিতে হবেনা।
দেখ মামা ,আমি কিন্তু খুশি আন্টিনা,যে ঘুষ দিতে যাবো।খুশির নাম শুনেই মুখটা মলিন হল রাহাতের।মহূর্তে সে ভাব গোপন করে বলল,কেন শুধু খুশিই ঘুস দেয়,আর কেউ দেয়না বুঝি?
তা জানিনা ,তবে খুশি আন্টি বেশি দেয়।
অনা বেশ হয়েছে আর পাকামো করতে হবেনা।
অনা অবাক হল যেন। এ কি মামাকে এমন লাগছে কেন,কি হয়েছে মামার ?এমন দেখাচ্ছে কেন মামাকে
চোখে মুখে বিষাদের ছায়া। শুখনো অধর ,চোখের নিচে কালি।
মামা,রাহাতের ঘাড়ে হাত রাখলো অনা ?
কি হয়েছে অনা,কিছু বলবি ?
মামা তোমার কি হয়েছে ?
আমার আবার কি হয়েছে?
তুমি কিছু একটা লুকাচ্ছো ?বলনা কি হয়েছে?
কই কিছু না?
আবার মিথ্যে কথা,আমার কিন্তু কান্না পাচ্ছে..রাহাত জানে অনার কথার অবাধ্য হলে সে কেদে দেয়।তাই কথা পাল্ঠায়ে বলে,অনা তোর জন্য একটা স্যারপ্রাইজ আছে।
না কিছু দরকার নেই আমার।আমার ভিষন কষ্ট হচ্ছে মামা? বলনা তোমার কি হয়েছে?
অনা..? না কোন কথা শুনবোনা। তুমি বলো এই একমাস তুমি কোথায় ছিলে ,কেন গিয়ে ছিলে কাউকে কিছু না বলে?
বলছি তো বন্ধুর বাসায় ?
আবার মিথ্যে বলছো মামা?আমার চোখের দিকে চেয়ে বল?
হঠাৎ ফিক করে হেসে দিল রাহাত। পরক্ষনেই মলিন কন্ঠে বলল। অনা তুই আমার খেলার সাথী,আমার পরম বন্ধু ,আর আমার প্রিয় ভাগনি।
মামা,এবার বলনা মামা?কি হয়েছে তোমার ,খুশি আনন্টি কিছু বলেছে?
অনা এ সময় ও কথা বাদ দেতো,তোর না কাল পরীক্ষা?
পরীক্ষা তো কি হয়েছে।পরীক্ষা তো জীবন নয় মামা,জীবনকে সাজানোর জন্য পরীক্ষা।
তাই নাকি ? এই জন্যই তোর এ দশা।
মামা ? আর তোমার অবস্থাও তো খুব খারাপ ,কত দিন আয়না দেখনি ?রাতে ঘুমাও না নিশ্চয়।
অনা থামবি ?
থামলো অনা,কিন্তু থামতে পারলোনা রাহাত,মধুময় ম্সৃতিগুলো সামনে এসে দাড়ালো তার।
ছোট বেলা থেকেই হাসি খেলার ছলে এক সঙ্গে বড় হয়েছে ওরা। কখনো বন্ধু কখনো খেলার সাথী আর কখনো বা মামা ভাগনে।ওদের সঙ্গে আরো দুজন খেরার সাথী ছিল। খুশি এবং তার ভাগনে পরশ। খুশি থাকতো তার বনের বাড়ি। ছোটবেলা থেকেই সেখানে বড় হয়েছে সে। পরস অলস গোছের থাকায় খুশি তাকে অলস বলে ডাকতো। অলস আর অনা একই ক্লাসে পড়ে কিন্তু রাহাত আর খুশি ওদের দুব্যাচের সিনিয়র।
প্রতিদিন স্কুল থেকে ফিরেই বাড়ির পাশে আম বাগানে চলতো ওদের পুতুল বিয়ে খেলা। রাহাত সাজতো ছেলের বাবা এবং ছেলে আর খুশি সাজতো মেয়ের মা এবং মেয়ে। অনা আর পরশ ওদের সহযোগি। দুজন দুজনের পক্ষে।
সে কত মজার কান্ড।পুতুল গুলো লুকিয়ে প্রেম করতো। এক দিন ছেলের বাবা রাহাত কবির জানতে পেরে ,চলে গেলেন মেয়ের মা খুশি রহমানের কাছে।
আরে কবির সাহেব যে ,হঠাৎ আমার বাসায় আপনার শুভাগমন?
এই তো আসলাম। শুনলাম আপনার মেয়ে নাকি বড় হয়েছে? আবার দেখতে ও মাষআল্লা..।
সবি আপনাদের দোয়া।
তো মেয়ে কে বিয়ে দিবেননা?
হাঁ মেয়ে বড় হলে বিয়ে তো দিতেই হবে।
হা সে জন্যই এলাম ,আমার ছেলে ও বড় হয়েছে। এবার ভালো একটা চাকুরিতে জয়েন্ট করেছে,যদি রাজি থাকেন তো?
সে কি বলছেন?আপনার ছেলে ?
হা মেয়ে আমার পছন্দ।
আপনি আমার মেয়েকে দেখেছেন ?
হাঁ।
কিন্তু আপনি যে বড্ড দেরি করে ফেলেছেন?
মানে?
গত কালি আমার মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে,আগামি সপ্তায় বিয়ে।
কি বলছেন আপনি ?
আমি জানি আপনার ঘরে মেয়ে আমার সুখেই থাকতো। কিন্তু আমি নিরূপায় ,কথা দিয়ে ফেলে ছি। আমাকে ক্ষমা করবেন।
বিয়েতে আপনার মেয়ের মত আছে?
হাঁ আমার মেয়ে আমার কথার অবাধ্য হয়না। তাছাড়া ওর সন্মতি নিয়েই..।
হতাশ হলেন রাহাত কবির। ফিরে গেলেন তিনি। পুতুল বিয়ের ছলেই বন্ধ হয়ে গেল তাদের পুতুল খেলা কিন্তু বন্ধ হলনা দুটি কিশোর মনের পাগলামী। নিজেদের অজান্তেই ওরা একে অপরে এতটা ঘনিষ্ট হয়ে গেছে যে কেই কাউ কে ছাড়া ভাবতে পারেনা কিছু। প্রতি দিন দেখা হয় কথা হয়। বেড়ে যায় একের প্রতি অন্যের প্রেম। অনা আর পরশ তাদের প্রেমের বার্তা বাহক। হঠাৎ একদিন খুশির বাবা এসে জোর করে নিয়ে গেলে খুশি কে।অসহায় হল রাহাত,অনেক কষ্টে যোগা- যোগ করলো রাহাত ,খুব কম দেখা হত তাদের । মাসে একবার বড় জোর দুবার।
দুই
অনা কি ব্যপার তুমি একা রাহাত আসেনি?
না মামা অসুস্থ।
বল কি ? এত দিন অসুস্থ কই বলনিতো?
না না ।মামা রাত থেকে অসুস্থ।আর মামা তো রোজ কলেজে আসে।
আরে না আমি তো নিয়মিত।তাছাড়া সামনে আমাদের পরিক্ষা।অথচ রাহাত..?ভয় পেয়ে গেল অনা,তবু সে ভাব গোপন করে বলল।মিলন মামা তোমায় একটা কথা জিজ্ঞেস করবো , সত্যি উত্তর দিবে?
হা জানলে বলবো না কেন,বল?
মামা তোমার সঙে গত একমাস কোথায় ছিল ?
কেন রাহাত তোমায় কিছু বলে নি ?
না তো।
আমরা আমাদের গ্রামে বিয়ে খেতে গিয়ে ছিলাম। আমার ক্যামের ভাড়া করেছে শুনেই রাহাত যেতে চাইলো,বলল ওর একটা বিয়ে ভিডিও করা খুব শখ,তাছাড়া বিয়েতে সে ও আমন্তিত।দুজনে সেখান থেকে চিটাগাং আমার এক আত্মীয়র বাসায়। অনা তোমাকে বলি বলি করে বলা হয়নি,রাহাতের আচারন স্বাভাবিক না?
সত্যি বলতে, খুশির বিয়ে ওকে বিপন্ন করেছে। আসলে আমি জানতামনা ওদের সম্পর্কের কথা। তাই না বুঝে নিয়ে গিয়েছিলাম।আই এম সরি অনা।তোমরা ওর প্রতি নজর দাও। ওকে স্বাভাবিক করে তোল। ওর অবস্থা মোটেও..।
অনার পৃথিবী কেমন যেন ঝাপশা হয়ে গেল।খুশি কি সত্যি এমন টি করতে পারলো। মামার কথা একটু ও ভাবলোনা...।
মামা এখন কোথায় ? অনা ছুঠে গেল সেখান থেকে পরীক্ষার কথা ভুলেই গেল সে।
পৃথিবীটা ঝাপসা ঝাপসা লাগছে,তবু ও..।
অনার পরীক্ষা। কিছু ভালোলাগছেনা তার। প্রচন্ড উত্তেজনায় অস্থির লাগছে। কালকেই পরীক্ষা অথচ কোন রকম প্রস্তুতি নাই তার। মামা কত বার বলেছিল,অনা তুই এভাবে লেখা পড়ায় ফাঁকি দিলে দেখবি পরীক্ষায় নির্ঘাত একটা রসগোল্লা পাবি।আর সেটা ভেবেই আমার খারাপ লাগছে। তুই আমার ভাগনি হয়ে..।
কিন্তু কে শুনে কার কথা । অনা মামার কথায় কান না দিয়ে নিয়মিত ফাঁকি দিয়েছে। আজ আর কিছু ভাবতে পারছেনা সে। কেন জানি মামার কথা বার বার মনে পড়ছে। মামা ভালো ছাত্র অল্প সময়ে অনেক বেশি পড়েন।আর আমি সারা রাত পড়েও ক্লাসের পড়ায় কভার করতে পারিনা। কিন্তু কেন ?
নিজের প্রশ্নের উত্তর খুজতে গিয়ে উদাস হয় অনা। কিন্তু না সেখানে ষ্থির হতে পারেনা সে। মামার কথায় সজাগ হল,
কি খবর অনামনি পড়তে বসেছো নাকি?
হা মামা,ভিতরে এসো ?
কাল কি পরিক্ষা ?প্রশ্নটা করেই বসে পড়লো রাহাত।
ইংরেজী প্রথম পত্র মামা।মামা তোমার কথা না শুনে যে কি ভুল করেছি ?
কেন কি হয়েছে ?
দেখনা,সব পড়া গুলো কেমন তাল গোল পাকিয়ে যাচ্ছে,কিছুই মনে থাকছেনা ।
হাঁ এমন টিই তো হবে? ফাকি দিয়ে কেউ জিততে পারেনা।জিতেও না কোন দিন। তুই তো লেখাপড়া করিসনি ,সারাক্ষন খেলা ধুলা.গান আর আড্ডা নিয়ে থেকেছিস ,তোর এমন টি হওয়ায় কি ঠিক না ?
মামা?অভিমানি গলায় ডাকলো অনা।রাহাত দেখলো অনা কেমন অসহায়ের মত চেয়ে আছে।মায়া লাগলো তার ।দে দেখি বইটা ,কি হয়েছে মনে থাকবেনা কেন?
অনা বই এগিয়ে দিল ।
ঘাবড়াসনে ?তাছাড়া এটাতো ফাইনাল পরীক্ষা নয়। এখন থেকে ভালো করে পড়বি। আমি তোকে হেল্প করবো।
সত্যি বলছো মামা ?
অনা জানে মামা অনেক ভালোছাত্র।মামা চাইলেই অনা ভালোহতে পারে।অনার দিকে আড়চোখে চেয়ে অবাক হল রাহাত।কেমন যেন অসহায় লাগছে মেয়েটাকে।
অনা ?
হা মামা।
কি ভাবছিস।
না কিছুনা।মামা তুমি অনেক ভালো,আমার ভাগ্যে ভালো বলেই তোমাকে মামা করে পেয়েছি।
হয়েছে মামাকে আর ঘুস দিতে হবেনা।
দেখ মামা ,আমি কিন্তু খুশি আন্টিনা,যে ঘুষ দিতে যাবো।খুশির নাম শুনেই মুখটা মলিন হল রাহাতের।মহূর্তে সে ভাব গোপন করে বলল,কেন শুধু খুশিই ঘুস দেয়,আর কেউ দেয়না বুঝি?
তা জানিনা ,তবে খুশি আন্টি বেশি দেয়।
অনা বেশ হয়েছে আর পাকামো করতে হবেনা।
অনা অবাক হল যেন। এ কি মামাকে এমন লাগছে কেন,কি হয়েছে মামার ?এমন দেখাচ্ছে কেন মামাকে
চোখে মুখে বিষাদের ছায়া। শুখনো অধর ,চোখের নিচে কালি।
মামা,রাহাতের ঘাড়ে হাত রাখলো অনা ?
কি হয়েছে অনা,কিছু বলবি ?
মামা তোমার কি হয়েছে ?
আমার আবার কি হয়েছে?
তুমি কিছু একটা লুকাচ্ছো ?বলনা কি হয়েছে?
কই কিছু না?
আবার মিথ্যে কথা,আমার কিন্তু কান্না পাচ্ছে..রাহাত জানে অনার কথার অবাধ্য হলে সে কেদে দেয়।তাই কথা পাল্ঠায়ে বলে,অনা তোর জন্য একটা স্যারপ্রাইজ আছে।
না কিছু দরকার নেই আমার।আমার ভিষন কষ্ট হচ্ছে মামা? বলনা তোমার কি হয়েছে?
অনা..? না কোন কথা শুনবোনা। তুমি বলো এই একমাস তুমি কোথায় ছিলে ,কেন গিয়ে ছিলে কাউকে কিছু না বলে?
বলছি তো বন্ধুর বাসায় ?
আবার মিথ্যে বলছো মামা?আমার চোখের দিকে চেয়ে বল?
হঠাৎ ফিক করে হেসে দিল রাহাত। পরক্ষনেই মলিন কন্ঠে বলল। অনা তুই আমার খেলার সাথী,আমার পরম বন্ধু ,আর আমার প্রিয় ভাগনি।
মামা,এবার বলনা মামা?কি হয়েছে তোমার ,খুশি আনন্টি কিছু বলেছে?
অনা এ সময় ও কথা বাদ দেতো,তোর না কাল পরীক্ষা?
পরীক্ষা তো কি হয়েছে।পরীক্ষা তো জীবন নয় মামা,জীবনকে সাজানোর জন্য পরীক্ষা।
তাই নাকি ? এই জন্যই তোর এ দশা।
মামা ? আর তোমার অবস্থাও তো খুব খারাপ ,কত দিন আয়না দেখনি ?রাতে ঘুমাও না নিশ্চয়।
অনা থামবি ?
থামলো অনা,কিন্তু থামতে পারলোনা রাহাত,মধুময় ম্সৃতিগুলো সামনে এসে দাড়ালো তার।
ছোট বেলা থেকেই হাসি খেলার ছলে এক সঙ্গে বড় হয়েছে ওরা। কখনো বন্ধু কখনো খেলার সাথী আর কখনো বা মামা ভাগনে।ওদের সঙ্গে আরো দুজন খেরার সাথী ছিল। খুশি এবং তার ভাগনে পরশ। খুশি থাকতো তার বনের বাড়ি। ছোটবেলা থেকেই সেখানে বড় হয়েছে সে। পরস অলস গোছের থাকায় খুশি তাকে অলস বলে ডাকতো। অলস আর অনা একই ক্লাসে পড়ে কিন্তু রাহাত আর খুশি ওদের দুব্যাচের সিনিয়র।
প্রতিদিন স্কুল থেকে ফিরেই বাড়ির পাশে আম বাগানে চলতো ওদের পুতুল বিয়ে খেলা। রাহাত সাজতো ছেলের বাবা এবং ছেলে আর খুশি সাজতো মেয়ের মা এবং মেয়ে। অনা আর পরশ ওদের সহযোগি। দুজন দুজনের পক্ষে।
সে কত মজার কান্ড।পুতুল গুলো লুকিয়ে প্রেম করতো। এক দিন ছেলের বাবা রাহাত কবির জানতে পেরে ,চলে গেলেন মেয়ের মা খুশি রহমানের কাছে।
আরে কবির সাহেব যে ,হঠাৎ আমার বাসায় আপনার শুভাগমন?
এই তো আসলাম। শুনলাম আপনার মেয়ে নাকি বড় হয়েছে? আবার দেখতে ও মাষআল্লা..।
সবি আপনাদের দোয়া।
তো মেয়ে কে বিয়ে দিবেননা?
হাঁ মেয়ে বড় হলে বিয়ে তো দিতেই হবে।
হা সে জন্যই এলাম ,আমার ছেলে ও বড় হয়েছে। এবার ভালো একটা চাকুরিতে জয়েন্ট করেছে,যদি রাজি থাকেন তো?
সে কি বলছেন?আপনার ছেলে ?
হা মেয়ে আমার পছন্দ।
আপনি আমার মেয়েকে দেখেছেন ?
হাঁ।
কিন্তু আপনি যে বড্ড দেরি করে ফেলেছেন?
মানে?
গত কালি আমার মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে,আগামি সপ্তায় বিয়ে।
কি বলছেন আপনি ?
আমি জানি আপনার ঘরে মেয়ে আমার সুখেই থাকতো। কিন্তু আমি নিরূপায় ,কথা দিয়ে ফেলে ছি। আমাকে ক্ষমা করবেন।
বিয়েতে আপনার মেয়ের মত আছে?
হাঁ আমার মেয়ে আমার কথার অবাধ্য হয়না। তাছাড়া ওর সন্মতি নিয়েই..।
হতাশ হলেন রাহাত কবির। ফিরে গেলেন তিনি। পুতুল বিয়ের ছলেই বন্ধ হয়ে গেল তাদের পুতুল খেলা কিন্তু বন্ধ হলনা দুটি কিশোর মনের পাগলামী। নিজেদের অজান্তেই ওরা একে অপরে এতটা ঘনিষ্ট হয়ে গেছে যে কেই কাউ কে ছাড়া ভাবতে পারেনা কিছু। প্রতি দিন দেখা হয় কথা হয়। বেড়ে যায় একের প্রতি অন্যের প্রেম। অনা আর পরশ তাদের প্রেমের বার্তা বাহক। হঠাৎ একদিন খুশির বাবা এসে জোর করে নিয়ে গেলে খুশি কে।অসহায় হল রাহাত,অনেক কষ্টে যোগা- যোগ করলো রাহাত ,খুব কম দেখা হত তাদের । মাসে একবার বড় জোর দুবার।
দুই
অনা কি ব্যপার তুমি একা রাহাত আসেনি?
না মামা অসুস্থ।
বল কি ? এত দিন অসুস্থ কই বলনিতো?
না না ।মামা রাত থেকে অসুস্থ।আর মামা তো রোজ কলেজে আসে।
আরে না আমি তো নিয়মিত।তাছাড়া সামনে আমাদের পরিক্ষা।অথচ রাহাত..?ভয় পেয়ে গেল অনা,তবু সে ভাব গোপন করে বলল।মিলন মামা তোমায় একটা কথা জিজ্ঞেস করবো , সত্যি উত্তর দিবে?
হা জানলে বলবো না কেন,বল?
মামা তোমার সঙে গত একমাস কোথায় ছিল ?
কেন রাহাত তোমায় কিছু বলে নি ?
না তো।
আমরা আমাদের গ্রামে বিয়ে খেতে গিয়ে ছিলাম। আমার ক্যামের ভাড়া করেছে শুনেই রাহাত যেতে চাইলো,বলল ওর একটা বিয়ে ভিডিও করা খুব শখ,তাছাড়া বিয়েতে সে ও আমন্তিত।দুজনে সেখান থেকে চিটাগাং আমার এক আত্মীয়র বাসায়। অনা তোমাকে বলি বলি করে বলা হয়নি,রাহাতের আচারন স্বাভাবিক না?
সত্যি বলতে, খুশির বিয়ে ওকে বিপন্ন করেছে। আসলে আমি জানতামনা ওদের সম্পর্কের কথা। তাই না বুঝে নিয়ে গিয়েছিলাম।আই এম সরি অনা।তোমরা ওর প্রতি নজর দাও। ওকে স্বাভাবিক করে তোল। ওর অবস্থা মোটেও..।
অনার পৃথিবী কেমন যেন ঝাপশা হয়ে গেল।খুশি কি সত্যি এমন টি করতে পারলো। মামার কথা একটু ও ভাবলোনা...।
মামা এখন কোথায় ? অনা ছুঠে গেল সেখান থেকে পরীক্ষার কথা ভুলেই গেল সে।
পৃথিবীটা ঝাপসা ঝাপসা লাগছে,তবু ও..।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মো: রিদওয়ানুল ইসলাম রিফাত ০৯/১২/২০১৬সুন্দর লিখেছেন
-
কামরুজ্জামান টিটু ২৪/১১/২০১৬খুব ভালো লাগলো!
-
মশিউর ইসলাম (বিব্রত কবি) ২০/১১/২০১৬চমৎকার!
-
মোনায়েম খান নিজাম ১৯/১১/২০১৬ভাল লাগল।
-
সন্দীপ মন্ডল ১৯/১১/২০১৬সুন্দর
-
পরশ ১৯/১১/২০১৬হুম্ম......
-
সোলাইমান ১৯/১১/২০১৬Nice. খুব কষ্টকর এমনটা যেন কারও না হয়।