ঢাকায় বিমানবন্দরে নেমে ভোগান্তিতে হাজিরা
বিমানবন্দরে নেমে দুশ্চিন্তা ও দ্বিধায় পড়েন দিনাজপুরের বাসিন্দা মো. আবদুল মালেক। ঢাকা থেকে দিনাজপুর বেশ দূর। কীভাবে বাড়ি যাবেন, ভাবছিলেন তিনি। ‘এত দূরের যাত্রা নিরাপদ মনে করছি না। আবার না গিয়েও কোনো উপায় নেই। হরতালে ঢাকা থেকে দিনাজপুর বাস চলে না। ট্রেন চলছে কি না জানি না। সময়সূচিও জানা নেই।’ বললেন তিনি।
পবিত্র হজ পালন শেষে দেশে ফিরে বিড়ম্বনায় পড়েছেন হাজিরা। কারণ, ১৮-দলীয় জোটের তিন দিনের হরতাল। শহরে তেমনভাবে কোনো পরিবহন নেই। দূরের যাত্রায় দুশ্চিন্তা আরও বেশি। কারণ বাস বন্ধ। ট্রেন চললেও হামলা-নাশকতার ভয়।
আবদুল মালেকের মতো তিন শতাধিক হাজি গতকাল সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে জেদ্দা থেকে ঢাকায় অবতরণ করেন।
নিরাপত্তাজনিত ভীতিতে অ্যাম্বুলেন্সে করে বিমানবন্দর ছাড়েন হাজিদের অনেকে। এ সুযোগে অবশ্য অ্যাম্বুলেন্সের মালিকেরা বেশ ভাড়া হাঁকাচ্ছেন।
কুমিল্লার বুড়িচংয়ে যাবেন মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, এখান থেকে কুমিল্লা যেেত অ্যাম্বুলেন্সে ১৫ হাজার টাকা ভাড়া চাচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্স হরতালের আওতামুক্ত থাকে, তাই ভাড়া এত বেশি। যদিও গতকাল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অ্যাম্বুলেন্সও হামলার শিকার হয়েছে।
দূরের যেসব জেলায় ট্রেন বা লঞ্চে যাওয়া যায়, সেসব জেলার হাজিরা কষ্ট হলেও হয়তো যেতে পারবেন। কিন্তু সড়কপথ ছাড়া যাতায়াতের অন্য কোনো উপায় নেই, এমন সব দূরবর্তী জেলার হাজিরা পড়েছেন সবচেয়ে বিপাকে। ঝিনাইদহের আইয়ুব আলী বলেন, ‘হরতালের কারণে বাস চলছে না। অন্য কোনো উপায়ে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। শেষ পর্যন্ত কোনো হোটেলে উঠতে হবে। আশপাশে হোটেল কোথায় আছে, তাও জানি না।’
ঢাকা ও এর আশপাশের বিভিন্ন জেলার হাজিরা বেশির ভাগই যাচ্ছেন ভাড়া করা কার বা মাইক্রোবাসে করে। পাশাপাশি ট্যাক্সিক্যাবেও যাচ্ছেন অনেকে। এসব গাড়ির সামনে পেছনে ‘হজযাত্রী’ লেখা কাগজ বা ব্যানার দেখা যায়। কোনো গাড়িতে লেখার পাশাপাশি লাগানো হয়েছে লাল কাপড়। তবে এতেও ভোগান্তির শেষ নেই। আছে অতিরিক্ত ভাড়ার বিড়ম্বনা। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে যাবেন রহমতউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘এখান থেকে রূপগঞ্জে যেতে গাড়ির ভাড়া চাইছে আট হাজার টাকা। তাও যেতে চাইছে দু-একজন চালক। কী করব বুঝতে পারছি না।’
বিমানবন্দরের সামনে বেশ কিছু বাসে লেখা ‘হজযাত্রী’। বেশির ভাগই বিভিন্ন হজ এজেন্সির ভাড়া করা বাস।
তবে ব্যক্তিপর্যায়ে কেউ কেউ তাঁদের স্বজনদের মাধ্যমে এ ধরনের বাস ভাড়া করেছেন। নরসিংদীর মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আগে থেকে বাস ভাড়া করে রেখেছি। হরতালে বাস কেউ ভাড়া দিতে চায় না। অনেক কষ্টে ৫২ আসনের এ বাস দ্বিগুণ মূল্যে ভাড়া করেছি মাত্র ১০ জন হাজির জন্য।’
হাজিদের নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের আরেকটি ফ্লাইট বিকেল সোয়া পাঁচটায় ঢাকায় অবতরণ করার কথা।
সূত্র : প্রথম আলো
গতকাল ভোর রাতে ৩টা ৫এর দিকে আমার শ্বশুর ওশ্বাশুরী এসেছেন হজ্জ্ব থেকে। অনেক উৎকন্ঠার মাঝে একটি মাইক্র বাস ভাড়া করে গিয়ে ছিলাম নিয়ে আসতে। রাতের বেলা বাড্ডা থেকে এ্যায়ারপোর্ট যেতে সময় লাগে ১০/১২ মিনিট। এটুকু রাস্তা যেতে অনেক এ্যাম্বুলেন্স দেখলা যাওয়া আসা করছে। এ্যায়ারপোর্টে গিয়ে বুষ=ঝতে পারলাম ঢাকার সমস্ত এ্যাম্বুলেন্স মনে হয় এ্যায়ারপোর্টে এসে গেছে হাজিদের পারাপার করতে।
৩০ থেকে ৪৫ দিন ভিনদেশে ছিলেন এরা সম্পূর্ণ আল্লাহর কাজে। এতোদিন পরে দেশে ফিরে আপনজনদের কাছে যেতে এই উৎকন্ঠা কতটা মর্মপিরার করণ হচ্ছে এই হাজিদের মনে?
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
রাখাল ৩০/১০/২০১৩এটাই দুর্ভাগা দেশের দুভাগাদের জন্য নিয়ম ।
-
জহির রহমান ২৯/১০/২০১৩সত্যিই দুঃখজনক...
-
কবীর হুমায়ূন ২৯/১০/২০১৩আল্লাহর ঘর তওয়াফ করা; আরাফাত, মুজদালিফা ও মিনার কষ্টকর জীবনে থাকা, নবীজির রওজা মোবারক দর্শনকারী পবিত্র হাজী সাহেবদের ভাগ্যে যে বা যারা কষ্ট এনেছে, তাদের আল্লাহ ধ্বংস করুন।
আমিন!