www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

জিপিএ ৫

"শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড।"" পুঁথিগত বিদ্যা না থাকলে নাকি মানুষের মুল্য নেই।"" লেখাপড়া করে যে গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে।" "জিপিএ ফাইভ না পেলে লোকে কী বলবে".... _এই কথাগুলো অন্য সবার মত শুনেই বড় হয়েছে পুতুল।

পুতুল ছোটবেলা থেকেই একটু চাপা স্বভাবের। একাকি থাকতে সে ভালোবাসে। তার কারুশিল্পী হওয়ার ইচ্ছা। গবেষণা করার ইচ্ছা। গল্প লেখা তার ইচ্ছা। কিন্তু লেখাপড়ার প্রতি সে বরাবরই উদাসীন। পরীক্ষায় পাশ করতেই তার কষ্ট হতো। এজন্য অনেক উত্তম মধ্যম ও খেতে হয়েছে পুতুলকে। এভাবে শিক্ষা জীবনের সাত বছর কেটে যায়।

অষ্টম শ্রেণীতে সে বোর্ড পরিক্ষা তে জিপিএ ফাইভ পেল। বিজ্ঞান বিভাগে পড়া শুরু করল পুতুল। মা বাবা তাকে কোচিং এ ভর্তি করে দিল। গৃহশিক্ষক ও রাখল। কিন্তু তার নবম শ্রেণীতে তেমন ভালো হলো না।
শেষে কোচিং বন্ধ করে গৃহ শিক্ষকের সহায়তায়, উৎসাহে সে বুঝে বুঝে পড়া শুরু করে।দিন রাত পরিশ্রম করে। টেস্ট পরীক্ষায় ভালো ফল পায়। পুতুল মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়। তাদের আশা ছিল মেয়ে জিপিএ ফাইভ পাবে।
রেজাল্টের আগে পুতুলের মা পুতুলকে নিয়ে চিন্তিত থাকে মেয়ে পাশ করবে নাকি। রেজাল্ট দেয়। পুতুল ৪.৭২ পায়। পুতুলের মন‌ ভেঙ্গে যায়। সে খুব কাঁদে। মা প্রতিবেশীদের বলে ও যা পেয়েছে তাতেই আমরা খুশি।

কিন্তু বাড়িতে বাজে অন্য সুর। মা বলে কোচিং করলে ফাইভ পাইতি। তোর জন্য কাউকে মুখ দেখাতে পারি না। অপমানিত হতে হয়।কি করলি দুই বছর। তুই তো ভালো করার চেষ্টাই করিস না। এতটুকু ও পাড়লি না। বাবা বলে তোদের পিছে কত খাটি। আরও ভালো আশা করেছিলাম। এসব কথায় পুতুলের কতটা কষ্ট লাগে তা শুধু সৃষ্টিকর্তা আর রাতের আঁধারে বালিশই জানে। সে নিজেকে অযোগ্য মনে করে। এভাবেই তার আত্মার মৃত্যু ঘটে।

কলেজে ভর্তি হতে না হতেই কোচিং এ ভর্তি হবার জন্য জোড় দেয়। সে বাড়িতে বসেই পড়তে চায়। কিন্তু তার মা-বাবা মানতে নারাজ।

এভাবেই আমাদের চারপাশে এমন অনেকের আত্মার , স্বপ্নের অকাল মৃত্যু ঘটেছে। অনেকে বেছে নিচ্ছে আত্মহত্যার পথ।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৪৫০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৬/০৭/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast