www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

অটিজমে পুতুলের পুরষ্কারে গর্বিত বাঙালি

অটিজম(Autism) হলো একধরণের আত্মমগ্নতা রোগ যা শিশুর ব্যাপক মানুসিক বিকাশগত সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত অর্থাৎ এ রোগে শিশুদের বুদ্ধিবৃত্তিক, কথা বলার স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। যাঁদেরকে আমরা মানুসিক প্রতিবন্ধী বলে থাকি আবার অনেকে পাগল কিংবা অন্যকিছু বলেও সম্বধোন করে থাকে। এক থেকে তিন বছরের মধ্যে শিশুদের এমন বিকাশগত সমস্যাগগুলো ধরা পড়ে। যা সারাজীবন এর রেশ চলতে পারে অনেকক্ষেত্রে চলেও। এককথায় এঁদের সবকিছুর বিকাশ অনেক দেরিতে হয়।

আমাদের সমাজে এই অটিজমে আক্রান্ত শিশু ও বয়ঃপ্রাপ্তরাই সবচে' বেশি অবহেলিত ও নিগৃহীত হচ্ছে এবং হয়ে আসছে। সমাজে এঁদের হীন চোখে দেখা হয়। পদে পদে নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। "পিতামাতার পাপের ফল " উল্লেখ করে অনেকে কটু কথা বলতেও দ্বিধা করেন না। কিন্তু এসব আমাদের ভ্রান্ত ধারণা কারণ একের পাপের ফল অন্যের ওপর দিয়ে প্রবাহিত, একজন সুবিচক্ষণ করতে পারেন না। অনেকে বলেন "মৃত্যুর পূর্বে অসুস্থ হয়ে থাকাও ভালো নয়, পাপ বেশি হলে তা শাস্তি দিয়ে কমিয়ে নেওয়া হয়।" এটাও মিথ্যা কারণ আমাদের প্রিয় নবী(স.) শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার পূর্বেও অসুস্থ ছিলেন। শেষ উদাহরণ প্রথম কুসংস্কারের জন্য..। অটজমের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয় কারণ আমাদের চারপাশে কেউ না কেউ অটজমে ভুগছে। এমনকি আপনার বা আমার মধ্যেও এর লক্ষণগুলো বিদ্যমান থাকতে পারে বা আছে, যা নিজের কাছে ধরা না পড়লেও অন্যকেউ সহজে তা বুঝতে পারে।

অটজমে আক্রান্তরা কখনই পরিবার সমাজ কিংবা দেশের জন্য বোঝা নয়। যদি এঁদের যথাপোযুক্ত শিক্ষা ও সুস্থ ব্যক্তির মতো পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয় তবে এঁরাও সামাজিক কিংবা দেশের উন্নয়নমূলক কাজে অংশীভূত হতে পারবেন। বর্তমান সময়ের শ্রেষ্ঠ পদার্থবিদ হিসেবে পরিচিত স্টিফেন্স হকিং যিনি নিজেই এধরণের(নিউরন) সমস্যায় আক্রান্ত। আমাদের দেশে সাম্প্রতিক বিভিন্ন অংশগ্রহণমূলক পরীক্ষায় (শিক্ষা) ফলাফলের দিক দিয়ে এঁরা একজন সুস্থ সবল ছাত্র/ছাত্রীর চেয়ে কোনঅংশে পিছিয়ে নেই। সমান তালে লড়াই করে চলেছে। অটজমে আক্রান্ত শিশু ও ব্যক্তিদের সেবায় এগিয়ে এসেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুল। বর্তমানে নয়, তিনি অনেকদিন ধরে তাঁর কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর কার্যক্ষেত্র শুধু বাংলাদেশ নয়, এখন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। যার স্বীকৃতি স্বরূপ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) তাদের অটিজম শাখার বিশেষ দূত নিযুক্ত করেছেন এবং শিশুদের জটিল মানুসিক পীড়া(অটজম) মোকাবিলা ও জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য "অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স ইন পাবলিক হেলথ" পুরষ্কারে ভূষিত করেছেন। পুতুলের এই সম্মান শুধু তাঁর একার নয়। তাঁর সাথে যাঁরা কাজ করছে কিংবা যাঁরা এমন মহৎ কাজ করছে গ্রামে গঞ্জে কিন্তু স্বীকৃতি মেলেনি তাঁদেরও সর্বোপরি এ সম্মান দেশের, গোটা বাঙালি জাতির। জাতি আজ গর্বিত পুতুলের এ সম্মানে। আশা করি আগামীতে পুতুলের মতো আরো অনেককেই পাওয়া যাবে পরিবার সমাজ ও দেশের অবহেলিত ও নিগৃহীত মানসিক বিকারগ্রস্ত শিশু ও ব্যক্তিদের পাশে। একইসাথে সরকার এসব আক্রান্ত ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা প্রদান করবেন এবং তাঁদের স্বাভাবিক চলার পথ নিশ্চিত করবেন এই প্রত্যাশাই করি।
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ১০৩৯ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১২/০৯/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • কল্পনা বিলাসী ২৬/১০/২০১৪
    এটা শুধু পুতুলের নয়, আমাদের সবাই গর্ব।
    সুন্দরভাবে উপস্থাপনের জন্য ধন্যবাদ জানাই কবিকে।
 
Quantcast