রান্না সহজ নয়
পৃথিবীতে সবাই সব কিছু পারে না যেমন আমি রান্না পারি না। জিনিসটাকে উপর থেকে সোজা মনে হলেও ভিতরে এর গভীরতা অনন্ত। জল কতটা দিতে হবে, সিদ্ধ কী রকম করতে হবে, এই সব সাধারণ জিনিসগুলো আপনার রান্নায় অসাধারণ সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। আর নুনকে তো রান্না শিখার সব থেকে বড় শত্রু বলা চলে, একটা জিনিসের মাত্রা কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে তা রান্নায় নুনের ব্যবহার থেকে শিখতে হয়।
দিনটা ছিল রবিবার। কলেজ ছুটি। আর তার সাথে ছুটি হয়ে গিয়ে ছিল ইন্টারনেটের, মানে ওয়াইফাইরের সমস্যা হছিল। তাই অনেক ক্ষণ ধরে ভেবে ভেবে ঠিক করলাম আজ তা হলে রান্নাই করা যাক। রান্না জিনিসটাকেও যে শিখতে হয় ওটা তখন আমার ধারণাতেই ছিল না।
মাকে গিয়ে বললাম--''মা কী করছো?'' মা বললেন---''আলুর তরকারি।'' আমি বললাম--'' তোমাকে আর করতে হবে না দাও আমি করে দিচ্ছি''। মা হেসে বললেন--''তুই পারবি?'' আমি অবাক হয়ে মায়ের দিকে তাকালাম, ভাবখানা ছিল কি জানি না আমি। মা আমার সাথে আর তর্ক না করে খুন্তিটা আমায় দিয়ে বললেন---''নে কর।''
অনেক দিন আগে কোথাও একটা পড়ে ছিলাম আলু দিয়ে খুব সুন্দর একটা তরকারি বানানো যায় --- পটেটো পাতুরি! ভাবলাম ওটা খাইয়েই সবাইকে তাক লাগিয়ে দেবো।
আলুগুলো আগেই সিদ্ধ করাই ছিল। আমি ওগুলোর সাথে হাল্কা নুন মিশিয়ে (আমার হাল্কাই মনে হয়ে ছিল) ভাজতে শুরু করলাম। অনেক ক্ষণ ভাজার পর সেকেন্ড স্টেপটা কি হবে ঠিক মনে আসছিল না। তাই একটু দেখতে গেলাম ওয়াইফাই ঠিক মত কাজ করছে কিনা। তখন ওয়াইফাই ঠিকেই কাজ করছিল।
আলুর রান্নার রেসেপি ও কিছু রেসিপি বই দেখার সাথে সাথে ইন্টারনেটে একটু এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করতে করতে কখন যে দেরি হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি। মা ডাকতে শুরু করেছেন---''কী হলো রে? তরকারি যে পুড়ে গেলো।'' আমি গিয়ে দেখলাম আলুগুলো হাল্কা লালের সাথে একটু বেশিয়েই কালো হয়ে গেছে। মায়ের দিকে তাকিয়ে বললাম--''ও কিছু না একটু বেশী ডিপ ফ্রাই করতে হয়, নইলে এই তরকারির টেস্ট আসে না!'' মা আলুগুলোর দিকে তাকাতে তাকাতে বললেন--''টেস্ট আসবে বলে তো মনে হচ্ছে না!'' আমি বললাম ---''দাঁড়াও না টক দইটা দেওয়ার পর দেখবে কি রকম হয়!''
মা চলে যাওয়ার পর একটা আলু টেস্ট করে দেখলাম তিতার থেকেও যেটা বেশি লাগছে সেটা হলো নুনা। সব কিছু তাও ঠিকেই হত যদি না আমি নিমপাতা নুন কমিয়ে দেয় এই তথ্যটা না জানতাম। নিমপাতা দেওয়ার পর আলুগুলো মনে হয় একটু বেশিয়েই রেগে গিয়েছিলো, নইলে এরকম ভয়ঙ্কর টেস্ট কোন দিন তৈরি হতে পারে না! টক দই আর দিলাম না, বুঝে গিয়ে ছিলাম এর এখন 'দাবাকা নেহি দোয়াকা জরুরত হে'। অনেক ক্ষণ পর একটু বেশি করে নেড়েচেড়ে নামিয়ে দিলাম। মা এসে দেখলেন কিন্তু কিছু বললেন না।
খাবার সময় সবাই খেতে বসলাম--- আমি, বাবা, মা আর বোন। প্রত্যেক দিন খাবার সময় একটা বিড়াল আসতো, মা তাকে প্রত্যেক দিন কিছু না কিছু খেতে দিতেন। সেটা পর্যন্ত আজ খাবারের গন্ধ পেয়ে ভয়ে আসেনি।
বোন অবাক হয়ে চামচে করে তরকারিটাকে খচা দিতে দিতে বললো--''কী এটা?'' আমি বললাম--''পটেটো পাতুরি! খেয়ে দেখ অন্তর পর্যন্ত তৃপ্ত হয়ে যাবে!'' বোন এক চামচ খেয়ে পরেই সোজা বাথরুমের দিকে দৌড়।
বাবা তরকারিটার দিকে অনেক ক্ষণ ধরে তাকাতে তাকাতে বললেন---'' মোটা হয়ে যাচ্ছি বুঝলি, আমার বেশী আলু না খাওয়াই ভালো! আজ থেকে এটাকে বন্ধ করলাম!''
আমি অনেক ক্ষণ ধরে তরকারিটার দিকে তাকাতে তাকাতে ভাবছিলাম খাবো কি খাবো না; একবার খেয়ে যা স্বাদ পেয়েছি আর খাওয়ার ইচ্ছে নেই। অনেকক্ষণ পরে মায়ের দিকে যখন তাকালাম, দেখলাম মায়ের সব তরকারি শেষ হয়ে গেছে। আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বললেন--'' ঠিকেই আছে তবে পরের বার আর একটু ভালো করে করার চেষ্টা করতে হবে!''
দিনটা ছিল রবিবার। কলেজ ছুটি। আর তার সাথে ছুটি হয়ে গিয়ে ছিল ইন্টারনেটের, মানে ওয়াইফাইরের সমস্যা হছিল। তাই অনেক ক্ষণ ধরে ভেবে ভেবে ঠিক করলাম আজ তা হলে রান্নাই করা যাক। রান্না জিনিসটাকেও যে শিখতে হয় ওটা তখন আমার ধারণাতেই ছিল না।
মাকে গিয়ে বললাম--''মা কী করছো?'' মা বললেন---''আলুর তরকারি।'' আমি বললাম--'' তোমাকে আর করতে হবে না দাও আমি করে দিচ্ছি''। মা হেসে বললেন--''তুই পারবি?'' আমি অবাক হয়ে মায়ের দিকে তাকালাম, ভাবখানা ছিল কি জানি না আমি। মা আমার সাথে আর তর্ক না করে খুন্তিটা আমায় দিয়ে বললেন---''নে কর।''
অনেক দিন আগে কোথাও একটা পড়ে ছিলাম আলু দিয়ে খুব সুন্দর একটা তরকারি বানানো যায় --- পটেটো পাতুরি! ভাবলাম ওটা খাইয়েই সবাইকে তাক লাগিয়ে দেবো।
আলুগুলো আগেই সিদ্ধ করাই ছিল। আমি ওগুলোর সাথে হাল্কা নুন মিশিয়ে (আমার হাল্কাই মনে হয়ে ছিল) ভাজতে শুরু করলাম। অনেক ক্ষণ ভাজার পর সেকেন্ড স্টেপটা কি হবে ঠিক মনে আসছিল না। তাই একটু দেখতে গেলাম ওয়াইফাই ঠিক মত কাজ করছে কিনা। তখন ওয়াইফাই ঠিকেই কাজ করছিল।
আলুর রান্নার রেসেপি ও কিছু রেসিপি বই দেখার সাথে সাথে ইন্টারনেটে একটু এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করতে করতে কখন যে দেরি হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি। মা ডাকতে শুরু করেছেন---''কী হলো রে? তরকারি যে পুড়ে গেলো।'' আমি গিয়ে দেখলাম আলুগুলো হাল্কা লালের সাথে একটু বেশিয়েই কালো হয়ে গেছে। মায়ের দিকে তাকিয়ে বললাম--''ও কিছু না একটু বেশী ডিপ ফ্রাই করতে হয়, নইলে এই তরকারির টেস্ট আসে না!'' মা আলুগুলোর দিকে তাকাতে তাকাতে বললেন--''টেস্ট আসবে বলে তো মনে হচ্ছে না!'' আমি বললাম ---''দাঁড়াও না টক দইটা দেওয়ার পর দেখবে কি রকম হয়!''
মা চলে যাওয়ার পর একটা আলু টেস্ট করে দেখলাম তিতার থেকেও যেটা বেশি লাগছে সেটা হলো নুনা। সব কিছু তাও ঠিকেই হত যদি না আমি নিমপাতা নুন কমিয়ে দেয় এই তথ্যটা না জানতাম। নিমপাতা দেওয়ার পর আলুগুলো মনে হয় একটু বেশিয়েই রেগে গিয়েছিলো, নইলে এরকম ভয়ঙ্কর টেস্ট কোন দিন তৈরি হতে পারে না! টক দই আর দিলাম না, বুঝে গিয়ে ছিলাম এর এখন 'দাবাকা নেহি দোয়াকা জরুরত হে'। অনেক ক্ষণ পর একটু বেশি করে নেড়েচেড়ে নামিয়ে দিলাম। মা এসে দেখলেন কিন্তু কিছু বললেন না।
খাবার সময় সবাই খেতে বসলাম--- আমি, বাবা, মা আর বোন। প্রত্যেক দিন খাবার সময় একটা বিড়াল আসতো, মা তাকে প্রত্যেক দিন কিছু না কিছু খেতে দিতেন। সেটা পর্যন্ত আজ খাবারের গন্ধ পেয়ে ভয়ে আসেনি।
বোন অবাক হয়ে চামচে করে তরকারিটাকে খচা দিতে দিতে বললো--''কী এটা?'' আমি বললাম--''পটেটো পাতুরি! খেয়ে দেখ অন্তর পর্যন্ত তৃপ্ত হয়ে যাবে!'' বোন এক চামচ খেয়ে পরেই সোজা বাথরুমের দিকে দৌড়।
বাবা তরকারিটার দিকে অনেক ক্ষণ ধরে তাকাতে তাকাতে বললেন---'' মোটা হয়ে যাচ্ছি বুঝলি, আমার বেশী আলু না খাওয়াই ভালো! আজ থেকে এটাকে বন্ধ করলাম!''
আমি অনেক ক্ষণ ধরে তরকারিটার দিকে তাকাতে তাকাতে ভাবছিলাম খাবো কি খাবো না; একবার খেয়ে যা স্বাদ পেয়েছি আর খাওয়ার ইচ্ছে নেই। অনেকক্ষণ পরে মায়ের দিকে যখন তাকালাম, দেখলাম মায়ের সব তরকারি শেষ হয়ে গেছে। আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বললেন--'' ঠিকেই আছে তবে পরের বার আর একটু ভালো করে করার চেষ্টা করতে হবে!''
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ২৫/০৮/২০২৩দারুণ
-
মৌমিতা পাল ১৮/০৫/২০২০বেশ হাসি পেল।ভালো লেগেছে বেশ।
-
ফয়জুল মহী ১৩/০৫/২০২০😀😥