বৈরী চিকিৎসা পদ্ধতি
মামা এলেন গ্রাম থেকে শহরে ডাক্তার দেখাবেন বলে। দীর্ঘদিন রোগে আক্রান্ত। বয়সের তুলনায় বেশি বুড়ো হয়ে গেছেন মনে হয়। দেশের বিখ্যাত ডাক্তারদের তালিকা জোগাড় করেছেন। আমাদের বাসায় থেকে ডাক্তার দেখাচ্ছেন। সেই সূত্রে আমার সাথে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ হয়। একজন রোগী হিসেবে যে সব সমস্যায় মামা পড়েছেন তার একটি হল বৈরী চিকিৎসা পদ্ধতি।
তিনি এলোপ্যাথ ডাক্তারদের দেখালেন। তারা প্রায় সকলেই প্রচুর পরীক্ষা করালো। কয়েকটা ল্যাবে প্রায় একই বিষয়ে একাধিকবার পরীক্ষা করিয়ে একেক রকম ফল পাওয়া গেল। তারচেয়ে বড় সমস্যা হল ডাক্তারের নির্বাচিত ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা না করালে তিনি ফল সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে আরেকবার করাতে বলেন। প্রেসক্রিপশনের ক্ষেত্রেও দেখা গেল একই গ্রুপের ঔষধ বিভিন্ন কোম্পানী বিভিন্ন নামে তৈরী করেছে। একেক ডাক্তার একেক কোম্পানীর ঔষধের নাম লিখছেন। মনে হচ্ছে তারা ডাক্তার নয় কোন কোম্পানীর ঔষধ বিক্রীর কাজ করছেন। বাইরে বেরুলে ঔষধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি দেখে তাদের ঔষধ দিয়েছে কি না। এরপর আছে ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। ব্যাথার ঔষধের সাথে গ্যাসের ঔষধ পর্যায়ক্রমে উচ্চ থেকে উচচতর শক্তিতে ব্যবহার করতে হয়। মাঝে মাঝে পত্রিকায় কোন কোন ঔষধের ভয়াবহতার সংবাদ থাকে। এছাড়া "কোন ঔষধ কেন খাবেন না" বইয়ে ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রয়া ও ঔষধ সাম্রাজ্যবাদের কথা পড়ে মামার আরো খারাপ অবস্থা।
এবার মামা গেলেন হোমিওপ্যাথি পদ্ধতিতে। এরা এলোপ্যাথ পদ্ধতির ঘোর বিরোধী। সূক্ষ্মমাত্রার ঔষধ ব্যবহার করে রোগীকে সুস্থ করতে হয়। তাই হ্যানিম্যান বিপরীত পদ্ধতির চিকিৎসা ছেড়ে সদৃশ বিধানে রোগীকে সুস্থ করেছেন। ধৈর্য ধরে মামা হোমিও চিকিৎসা করালেন। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শে থেকেও দিন দিন অবস্থার অবনতি হতে থাকলো। একসময় ধৈর্য হারালেন কারণ বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকাগুলো যেভাবে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতির বিরুদ্ধে লিখছে তাতে একে কোন চিকিৎসায় বলা যায় না।
মামা ভাবলেন আগের দিনে কবিরাজরা আমাদের দেশে অসাধ্য সাধন করেছে। তাই তিনি আয়ুর্বেদ চিকিৎসকের কাছে গেলেন। তারা বেশ আশার বাণী শোনালেন। বললেন ভেষজ ব্যবহার করেই মানুষ প্রকৃত সুস্থতা লাভ করতে পারে। এরপর অনেক ঔষধ দিলেন। সাথে বিভিন্ন পথ্য। মামা ঘরকে রীতিমতো হরিতকী, বহরা, আমলকীর ভাণ্ডার বানিয়ে ফেললেন। কিন্তু না কাজ হলো না। এরপর ইউনানী, টোটকা চিকিৎসা পদ্ধতিও অবলম্বন করলেন। সবাই নিজেরটা ছাড়া অন্য সব পদ্ধতির বদনাম করলো। কিন্তু মামার অসুখ সারাতে পারলো না।
তারপর হাজিরা দেখলেন, কেউ বলল মেয়াদী বাণ মেরেছে। বাণ কাটালে সুস্থ হয়ে যাবে। বিভিন্ন ধর্মীয় চিকিৎসার প্রায় সবই করলেন। সুস্থ হলেন না। সবাই বললো আয়ু শেষ হয়ে গেছে। আর আশা নেই। পার্শ্ববর্তী দেশে উন্নত চিকিৎসা হয় । সেখানে গেলে তারাও একই কথা বললেন। ক্যান্সার শেষ পর্যায়ে চলে গেছে। মাস দুই মাস ঘুরে ফিরে কাটানোর পরামর্শ দিয়ে পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু মামা হাল ছাড়লেন না। শুরু করলেন পড়াশোনা। শেষে অঙ্কুরিত গম খেয়ে মামা বেশ সুস্থ হয়ে উঠলেন। আর চিকিৎসা পদ্ধতির বৈরিতা কিংবা বিভিন্ন পদ্ধতির চিকিৎসকদের বৈরিতা দেখে মর্মাহত হলেন। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন কবে যে চিকিৎসকরা মানুষ হবে।
তিনি এলোপ্যাথ ডাক্তারদের দেখালেন। তারা প্রায় সকলেই প্রচুর পরীক্ষা করালো। কয়েকটা ল্যাবে প্রায় একই বিষয়ে একাধিকবার পরীক্ষা করিয়ে একেক রকম ফল পাওয়া গেল। তারচেয়ে বড় সমস্যা হল ডাক্তারের নির্বাচিত ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা না করালে তিনি ফল সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে আরেকবার করাতে বলেন। প্রেসক্রিপশনের ক্ষেত্রেও দেখা গেল একই গ্রুপের ঔষধ বিভিন্ন কোম্পানী বিভিন্ন নামে তৈরী করেছে। একেক ডাক্তার একেক কোম্পানীর ঔষধের নাম লিখছেন। মনে হচ্ছে তারা ডাক্তার নয় কোন কোম্পানীর ঔষধ বিক্রীর কাজ করছেন। বাইরে বেরুলে ঔষধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি দেখে তাদের ঔষধ দিয়েছে কি না। এরপর আছে ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। ব্যাথার ঔষধের সাথে গ্যাসের ঔষধ পর্যায়ক্রমে উচ্চ থেকে উচচতর শক্তিতে ব্যবহার করতে হয়। মাঝে মাঝে পত্রিকায় কোন কোন ঔষধের ভয়াবহতার সংবাদ থাকে। এছাড়া "কোন ঔষধ কেন খাবেন না" বইয়ে ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রয়া ও ঔষধ সাম্রাজ্যবাদের কথা পড়ে মামার আরো খারাপ অবস্থা।
এবার মামা গেলেন হোমিওপ্যাথি পদ্ধতিতে। এরা এলোপ্যাথ পদ্ধতির ঘোর বিরোধী। সূক্ষ্মমাত্রার ঔষধ ব্যবহার করে রোগীকে সুস্থ করতে হয়। তাই হ্যানিম্যান বিপরীত পদ্ধতির চিকিৎসা ছেড়ে সদৃশ বিধানে রোগীকে সুস্থ করেছেন। ধৈর্য ধরে মামা হোমিও চিকিৎসা করালেন। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শে থেকেও দিন দিন অবস্থার অবনতি হতে থাকলো। একসময় ধৈর্য হারালেন কারণ বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকাগুলো যেভাবে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতির বিরুদ্ধে লিখছে তাতে একে কোন চিকিৎসায় বলা যায় না।
মামা ভাবলেন আগের দিনে কবিরাজরা আমাদের দেশে অসাধ্য সাধন করেছে। তাই তিনি আয়ুর্বেদ চিকিৎসকের কাছে গেলেন। তারা বেশ আশার বাণী শোনালেন। বললেন ভেষজ ব্যবহার করেই মানুষ প্রকৃত সুস্থতা লাভ করতে পারে। এরপর অনেক ঔষধ দিলেন। সাথে বিভিন্ন পথ্য। মামা ঘরকে রীতিমতো হরিতকী, বহরা, আমলকীর ভাণ্ডার বানিয়ে ফেললেন। কিন্তু না কাজ হলো না। এরপর ইউনানী, টোটকা চিকিৎসা পদ্ধতিও অবলম্বন করলেন। সবাই নিজেরটা ছাড়া অন্য সব পদ্ধতির বদনাম করলো। কিন্তু মামার অসুখ সারাতে পারলো না।
তারপর হাজিরা দেখলেন, কেউ বলল মেয়াদী বাণ মেরেছে। বাণ কাটালে সুস্থ হয়ে যাবে। বিভিন্ন ধর্মীয় চিকিৎসার প্রায় সবই করলেন। সুস্থ হলেন না। সবাই বললো আয়ু শেষ হয়ে গেছে। আর আশা নেই। পার্শ্ববর্তী দেশে উন্নত চিকিৎসা হয় । সেখানে গেলে তারাও একই কথা বললেন। ক্যান্সার শেষ পর্যায়ে চলে গেছে। মাস দুই মাস ঘুরে ফিরে কাটানোর পরামর্শ দিয়ে পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু মামা হাল ছাড়লেন না। শুরু করলেন পড়াশোনা। শেষে অঙ্কুরিত গম খেয়ে মামা বেশ সুস্থ হয়ে উঠলেন। আর চিকিৎসা পদ্ধতির বৈরিতা কিংবা বিভিন্ন পদ্ধতির চিকিৎসকদের বৈরিতা দেখে মর্মাহত হলেন। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন কবে যে চিকিৎসকরা মানুষ হবে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
শিবশঙ্কর ০৯/০১/২০১৮ভাল লাগলো ।
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ০৭/০১/২০১৮প্রবন্ধ হলে ভালো হতো।