www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

নববর্ষ

নববর্ষ বললে মনে হয় পহেলা বৈশাখের কথা বলা হচ্ছে। অর্থাৎ বাংলা নববর্ষ। এছাড়া ইংরেজী নববর্ষ, হিজরী নববর্ষ এরকম আরো অনেক নববর্ষ অঞ্চলভেদে, শাসনব্যবস্থা অনুসারে, প্রাকৃতিক পরিবর্তনের ভিত্তিতে, নিজস্ব সংস্কৃতির অংশ হিসেবে উৎসবমূখর পরিবেশে পালন করা হয়। পহেলা জানুয়ারী ইংরেজী নববর্ষের প্রথম দিন। যদিও প্রথমেই তা ছিল না। আসলে কোন দিনপঞ্জী প্রথম থেকেই একইরকম ছিল না। বিভিন্ন সময় এতে করতে হয়েছে সংশোধন, পরিমার্জন, পরিবর্তন। এই পরিবর্তনের কারণ হল সময় সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান।

ইংরেজী নববর্ষের গল্পই বলি। প্রথম দিকে এটা পালন করা হত মার্চের ২৫ তারিখে। তখন মাস ছিল ১০ টি। প্রথম চার মাস ছিল চার দেবদেবী মার্স, এপ্রিলিস, মায়া ও জুনোর নামে মার্চ, এপ্রিল, মে, জুন।। পঞ্চম মাস জুলাই রাজা জুলিয়স সিজরের নামে ,ষষ্ঠ মাস আগস্ট রাজা আগষ্টাস সিজারের নামে , সেপ্টেম্বর (সপ্তমমাস), অক্টোবর (অষ্টমমাস), নভেম্বর (নবমমাস), ডিসেম্বর (দশমমাস) ছিল। ৩০৪ দিনে এক বছর হিসেব করা হত। এর কারণ হল চন্দ্রের আবর্তন। পরে আরো ৬০ দিন বা দুই মাস যোগ করে করা হল ৩৬৪ দিন। এর কারণ সূর্যকে আবর্তন। অর্থাৎ দেবদেবী জানুসের নামে জানুয়ারী ও ফেব্রুসের নামে ফেব্রুয়ারী মাস সংযোজিত হলে তা বারো মাসে পৌঁছায়। তবে পহেলা জানুয়ারীকে বছরের প্রথম দিন মেনে নিলে সেপ্টেম্বর মাস সপ্তম মাস না হয়ে নবম মাস হয়ে যায়। সাতটি বারের নামও স্যাটারডে স্যাটার্ন দেব, সানডে সানাল দেব, মানডে মেনান দেব, টিউসডে টিউস দেব, ওয়েডনেসডে ওয়েডনস দেব, থার্স ডে থার্স দেব এবং ফ্রাইডে ফ্রাইগ দেব এর নাম অনুসারে রাখা হয়েছে। চাঁদ উঠার সময়কে বলা হয় ক্যালেণ্ডাস যা থেকে ক্যালেণ্ডার শব্দের উৎপত্তি। পরে দেখা গেল সূর্যকে একবার ঘুরে আসতে পৃথিবীর সময় লাগে ৩৬৫ দিন ৬ ঘন্টা। তখন ৪ বছর পর ২৪ ঘন্টা বাড়িয়ে তৈরি হল অধিবর্ষ (লিফ ইয়ার)। শর্ত হল বছরটি ৪০০ দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য হতে হবে। আমার মনে হয় যুগোপযোগী করার প্রয়োজনে এমাসগুলির নাম দেবদেবী, রাজা মহারাজাদের নাম বাদ দিয়ে সবার গ্রহণযোগ্য কোন সংখ্যায় রাখা যায়। চন্দ্রবর্ষ ও সৌরবর্ষের ভিত্তিতে দুধরণের হিসাব এখনো চলছে। ফলে অনেক সমস্যাও দেখা যায়। কোন এক বর্ষপঞ্জীর হিসেবে উল্লেখ করা সময় অন্য বর্ষপঞ্জীর সময়ের সাথে মেলানো কষ্টসাধ্য। ঐতিহাসিক ঘটনার দিন বা ইতিহাস বিখ্যাত কোন ব্যক্তির জন্ম তারিখ নিয়ে বিভিন্ন মত উপস্থাপিত হয়। একই উৎসব ভৌগলিক দূরত্বের কারণে ভিন্ন সময়ে পালন করতে হয়। যদিও আন্তর্জাতিক সময় রেখায় একটি নির্দিষ্ট সময়ে তা করা যায়। আমরা যখন থার্টি ফার্স্ট নাইট পালন করি তখন পৃথিবীর একেক দেশে একেক স্থানীয় সময় চলছে। সে যাই হোক স্যাটেলাইটের এই যুগে অন্তত সময় নিয়ে আমাদের সাম্প্রদায়িকতার অবসান হোক।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ২১৪০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ৩০/০৩/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast