www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

চণ্ডী মাহাত্ম্য

শ্রী শ্রী চণ্ডীর প্রথম অধ্যায়ে রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ্য চরিত্র দুটি আসলে মানব চরিত্রের দুটি দিক। একজন ভোগী যে রাজ্য হারিয়েছে। একজন ত্যাগী যে সব ছেড়ে দিয়েছে। দুজনের ক্ষেত্রেই অতীত স্মৃতি তাদেরকে তাড়না দিচ্ছে। যেটা সব মানুষের ক্ষেত্রে ঘটে। হেরে গেলেও হয়, ছেড়ে গেলেও হয়। এটাই মোহ। মার্কণ্ডেয় ঋষির কাছে তারা মোহসৃষ্টি বিষয়ে এবং মোহ সৃষ্টিকারী মহামায়ার কথা শুনলেন। এদের মধ্যে রাজা ‘হারানো রাজ্য প্রাপ্তি’ এবং বৈশ্য ‘বিষয় বাসনা থেকে মুক্তি’ পাওয়ার উপায় জানতে চেয়েছিলেন। মানুষের মধ্যেও একশ্রেণী চায় যশ খ্যাতি প্রতিপত্তি আর একশ্রেণী চায় শ্রী জ্ঞান বৈরাগ্য। মা চণ্ডী পার্থিব এবং অপার্থিব উভয়ই দিতে সক্ষম। ঋষি আসলে একজন পথদ্রষ্টা। তিনি প্রতীকের মাধ্যমে আসলে যোগ সাধনাই শিখিয়েছেন। এখানে ঘুমন্ত বিষ্ণু আসলে মানুষের অচেতন অবস্থা আর জাগ্রত ব্রহ্মা হচ্ছে সচেতন অবস্থা। কানের ময়লা হচ্ছে কুপরামর্শ যা থেকে মধু কৈটভ অর্থাৎ দুরকম শত্রু তৈরি হয়। এক বহিশত্রু যা রাজাকে আক্রমন করেছে আর দুই নিকটশত্রু যারা বৈশ্যকে কষ্ট দিয়েছে। এ উভয় শত্রু আমাদের সচেতন সত্তাকেই আঘাত করে। তাই এরা ব্রহ্মাকে হত্যা করতে গিয়েছিল। তখন আমাদের কাজ হচেছ যোগমায়া অর্থাৎ যোগ সাধনা দ্বারা মায়ামুক্ত হওয়া যেমন নিদ্রিত বিষ্ণু জেগে উঠেছে তেমনি অচেতন মনকে জাগিয়ে তোলা। তখন যুদ্ধ বাঁধে সেই শত্রুদের সাথে। যেহেতু শত্রু মায়াসৃষ্ট অজ্ঞানতা ও ভুলপ্রসূত তাই মায়ামুক্ত মনের কাছে তারা এক সময় মুগ্ধ হয়ে আত্মসমর্পন করে এবং মায়াতে অর্থাৎ জলে না ডুবে শুন্যে অর্থাৎ সত্যে লয় হতে চায়। যোগী যোগপথে প্রথমে মানবসৃষ্ট বিবিধ প্রশংসা অর্থাৎ মধূ ও নিন্দা অর্থাৎ কৈটভকে বধ করে অর্থাৎ অসত্য ভেবে নিত্য সত্য শ্বাশ্বত পথে যাত্রা করে।
বিষয়শ্রেণী: অন্যান্য
ব্লগটি ৭২৭ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৮/১১/২০১৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

 
Quantcast