শিশু অধিকার ও আমাদের ভাবনা
শিশু অধিকার সনদ একটি সামগ্রিক দলিল যা বিশ্বের সকল শিশুর জন্য প্রযোজ্য। এই দলিল প্রণয়নের সময় ‘কেন তা প্রয়োজন’- এই প্রশ্নটি বিবেচিত হয়। এই প্রশ্নের উত্তরের ভিত্তিতেই কিছু বিশেষত্ব চিহ্নিত হয় যা নীতিমালা বলে পরিচিত।
শিশু অধিকার সনদের মূলনীতি মূলত ৪টি কিন্তু শিশু অধিকার বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জবাবদিহিতা অনিবার্য হয়ে পড়েছে। তাছাড়া জবাবদিহিতা মানবাধিকারের মূলনীতি এবং শিশু অধিকার মানবাধিকারের একটি অংশ। এর ওপর ভিত্তি করে বর্তমানে শিশু অধিকার সনদের ৫টি মূলনীতি। এই নীতিগুলো হলো-
শিশুর সর্বোত্তম স্বার্থ: সরকারি এবং বেসরকারি সমাজকল্যাণ প্রতিষ্ঠান, আদালত, প্রশাসন বা আইন প্রণয়নকারী ব্যক্তিবর্গ যে-ই হোক না কেন শিশু বিষয়ে যেকোনো ধরনের কার্যক্রমে শিশুর স্বার্থই হবে প্রথম ও প্রধান বিবেচনার বিষয়।
বৈষম্যহীনতা: গোত্র, বর্ণ, লিঙ্গ, ভাষা, ধর্ম রাজনৈতিক ভিন্নমত, জাতীয়তা কিংবা সামাজিক পরিচয়, শ্রেণী, জন্মসূত্র কিংবা অন্য কোনো মর্যাদা নির্বিশেষে প্রতিটি শিশু কোনো প্রকার বৈষম্য ছাড়াই এই ঘোষণার বর্ণিত সব ধরনের অধিকার ও স্বাধীনতা ভোগ করবে।
শিশুর বেঁচে থাকা ও বিকাশ: প্রতিটি শিশুর বেঁচে থাকার জন্মগত অধিকারকে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ স্বীকৃতি দেবে। অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র শিশুর বেঁচে থাকার এবং উন্নয়নের জন্য যথাসম্ভব সর্বাধিক নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করবে।
শিশুর অংশগ্রহণ: প্রতিটি শিশু তাদের বক্তব্য/মতামত দিয়ে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে বা সম্ভব হলে বাস্তব কাজে অংশ নিয়ে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করতে পারে। তবে সকল ক্ষেত্রে শিশুদের অংশগ্রহণ অবশ্যই তাদের স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হতে হবে।
জবাবদিহিতা: অধিকার সনদের একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে, এখানে স্বাক্ষরদানকারী রাষ্ট্রকে প্রথমত জবাবাদিহিতার জন্য বলা হয়েছে। আবার রাষ্ট্রের সরকারকেই তার জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য এবং শিশু অধিকারের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। জনগণ আবার ব্যক্তি হিসাবে শিশু অধিকার সনদের জবাবদিহিতার জন্য দায়িত্বপালন করেন। তাই, শিশু অধিকার সনদের জবাবদিহিতার জন্য প্রত্যেকে প্রত্যেকের কাছে দায়বদ্ধ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. ২৩/১০/২০১৩ভালো একটি বিষয় আপনি উপস্থাপন করেছেন বরাবরের মতোই।অনেক কিছুই জানলাম কিন্তু আমরা কজনই এইসব মেনে চলি।আমাদের আরোও সচেতনতা বাড়াতে হবে এইসব ব্যপারে।তবেই আমরা এর একটি সুফল পাবো।প্রথমত আমাদের নিজেদের পরিবার দিয়ে ই শুরু করা দরকার।ধন্যবাদ আপনার লেখার জন্য।
-
আরজু নাসরিন পনি ২৩/১০/২০১৩আমাদের দেশে চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে শিশু অধিকার ।
অথচ আমরা ঠিকই বড় বড় বুলি আউড়ে যাচ্ছি ।
শারীরিক তো বটেই...মানসিক বিকাশেও আমরা যথেষ্ট আন্তরিক নই ।
ভালো একটি বিষয়ে অবতারণা করেছেন ।
অনেক ধন্যবাদ জানাই ।।