“কষ্টের ফেরিওয়ালা”
“কষ্ট নেবে ভাই? কষ্ট? লাল কষ্ট, নীল কষ্ট, হরেকরকম কষ্ট!” ছোটবেলায় মায়ের মুখে শোনা সেই কষ্টের ফেরিওয়ালার কথা আমি আজও ভুলতে পারিনা। আমি ভুলতে পারিনা তার কষ্ট বিলানোর করুন আকুতি। আমি ভুলতে পারিনা তার কষ্ট বন্টনের কষ্টকর অনুভূতি। আমার কানে বাজে তার কষ্টগুলোর দাম্ভিকতাপূর্ণ সুরঝংকার। আমার হৃদয়স্পটে ভেসে উঠে তার কষ্টগুলোর কষ্টদায়ক রঙের বাহার। সেই সুরঝংকারে আমার হৃদয় আন্দোলিত হয়না, বরং হৃদযন্ত্রের সুর চিরতরে থেমে যেতে চায়। সেই রঙের বাহারে হৃদয় রঙিন হয়না, বরং বেদনায় নীল হয়ে যায়। আমি আনমনা হয়ে চেয়ে থাকি দুরে, বহুদুরে। একদম দৃষ্টিসীমার বাহিরে।
হঠাৎ আমার মন-মগজ একসাথে জেগে উঠে। আর…..! আর তখন আমি নিজেকে আবিষ্কার করি কষ্টের ফেরিওয়ালা রুপে। চেয়ে দেখি আমার মাথা থেকে পা পর্যন্ত শুধু কষ্ট আর কষ্ট। এ যেন অসংখ্য কষ্টের কষ্ট-খেলা। এ যেন অগণিত কষ্টের কষ্ট-মেলা। কষ্টের ভীড়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে নিজের অজান্তেই মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে; কষ্ট নেবে ভাই? কষ্ট? কিন্তু একি! কেউ তো কষ্ট নিচ্ছেইনা, বরং যাওয়ার সময় একটা দু’টা কষ্ট আমার গলায় ঝুলিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। কষ্টের ভারে আমি যে নুয়ে পড়ছি, এদিকে কারো খেয়ালই নেই। সবাই কেমন যেন আমার ঘাড়ে কষ্ট চাপানোর ভয়ংকর খেলায় মেতে উঠেছে।
হঠাৎ দেখি কেউ একজন দুরে দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বিজয়ীর হাসি হাসছে। আরে, এতো মায়ের গল্পের সেই কষ্টের ফেরিওয়ালা। আমি তো অবাক! এবং একদম হতবাক! তাকে তো কখনো হাসতে দেখিনি। যতবার তাকে কল্পনায় দেখেছি, তাকে কষ্টের যাতনায় কাঁদতেই দেখেছি। কিন্তু আজ সে আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে কেন? তাও আবার পবিত্র হাসি নয়, বরং ক্রুর হাসি। দৃষ্টি ফিরিয়ে নিজের দিকে তাকাতেই আমি আঁতকে উঠি। হচ্ছেটা কী? আমার শরীরের বেশির ভাগ কষ্টই তো ঐ ফেরিওয়ালার। এবার আমি তার ঐ ক্রুর হাসির কারন বুঝতে পারি। নিজের সব কষ্ট আমার ঘাড়ে চাপিয়ে সে বিজয়ীর হাসি হাসছে। একটিবারের জন্যেও সে ভাবেনি যে, সেই ছোটবেলা থেকে কতটুকু সহানুভূতি আমি তার জন্যে লালন করছি। এতটাই স্বার্থপর সে? আমার সহানুভূতির এই প্রতিদান পেয়ে তার প্রতি ঘৃণায় গা’টা রি রি করে উঠে। তার থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে যখন চারদিকে তাকাই, তখন তো আমি নির্বাক। সবাই তো দেখছি নিজের কষ্ট অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার জঘন্য খেলায় মেতে উঠেছে।
রাগে ক্ষোভে দাঁতে দাঁত কামড়ে যখন চোখ বন্ধ করি তখন কেমন জানি একটা শিরশিরে অনুভূতি হয়। আমি তাদের সকলের মাঝে দুষ্কৃতির একটা ‘কালো’ অনুভব করি এবং আমার মাঝে সুকৃতির একটা ‘আলো’ উপলব্ধি করি। বুঝতে পারি; তাদের কালোটা হলো নিজের কষ্ট অন্যের গলে ঝুলিয়ে দেয়ার ‘কালো’ আর আমার আলোটা হলো অন্যের কষ্ট নিজে বহন করার ‘আলো’। খুশিতে বাগবাগ হয়ে আর আনন্দে আত্মহারা হয়ে আমি আবার কষ্টের ফেরিওয়ালা হয়ে যাই। তবে মায়ের গল্পের সেই ফেরিওয়ালার মত নয়। কষ্ট বিলানোর ফেরিওয়ালা নয় বরং কষ্ট সংগ্রহের ফেরিওয়ালা। নিজের কষ্ট অন্যকে দেয়ার ফেরি নয়, বরং অন্যের কষ্ট নিজে বহন করার ফেরি। নিজের অজান্তেই এবার মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে; “কষ্ট দেবে ভাই? কষ্ট?”
হঠাৎ আমার মন-মগজ একসাথে জেগে উঠে। আর…..! আর তখন আমি নিজেকে আবিষ্কার করি কষ্টের ফেরিওয়ালা রুপে। চেয়ে দেখি আমার মাথা থেকে পা পর্যন্ত শুধু কষ্ট আর কষ্ট। এ যেন অসংখ্য কষ্টের কষ্ট-খেলা। এ যেন অগণিত কষ্টের কষ্ট-মেলা। কষ্টের ভীড়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে নিজের অজান্তেই মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে; কষ্ট নেবে ভাই? কষ্ট? কিন্তু একি! কেউ তো কষ্ট নিচ্ছেইনা, বরং যাওয়ার সময় একটা দু’টা কষ্ট আমার গলায় ঝুলিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। কষ্টের ভারে আমি যে নুয়ে পড়ছি, এদিকে কারো খেয়ালই নেই। সবাই কেমন যেন আমার ঘাড়ে কষ্ট চাপানোর ভয়ংকর খেলায় মেতে উঠেছে।
হঠাৎ দেখি কেউ একজন দুরে দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বিজয়ীর হাসি হাসছে। আরে, এতো মায়ের গল্পের সেই কষ্টের ফেরিওয়ালা। আমি তো অবাক! এবং একদম হতবাক! তাকে তো কখনো হাসতে দেখিনি। যতবার তাকে কল্পনায় দেখেছি, তাকে কষ্টের যাতনায় কাঁদতেই দেখেছি। কিন্তু আজ সে আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে কেন? তাও আবার পবিত্র হাসি নয়, বরং ক্রুর হাসি। দৃষ্টি ফিরিয়ে নিজের দিকে তাকাতেই আমি আঁতকে উঠি। হচ্ছেটা কী? আমার শরীরের বেশির ভাগ কষ্টই তো ঐ ফেরিওয়ালার। এবার আমি তার ঐ ক্রুর হাসির কারন বুঝতে পারি। নিজের সব কষ্ট আমার ঘাড়ে চাপিয়ে সে বিজয়ীর হাসি হাসছে। একটিবারের জন্যেও সে ভাবেনি যে, সেই ছোটবেলা থেকে কতটুকু সহানুভূতি আমি তার জন্যে লালন করছি। এতটাই স্বার্থপর সে? আমার সহানুভূতির এই প্রতিদান পেয়ে তার প্রতি ঘৃণায় গা’টা রি রি করে উঠে। তার থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে যখন চারদিকে তাকাই, তখন তো আমি নির্বাক। সবাই তো দেখছি নিজের কষ্ট অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার জঘন্য খেলায় মেতে উঠেছে।
রাগে ক্ষোভে দাঁতে দাঁত কামড়ে যখন চোখ বন্ধ করি তখন কেমন জানি একটা শিরশিরে অনুভূতি হয়। আমি তাদের সকলের মাঝে দুষ্কৃতির একটা ‘কালো’ অনুভব করি এবং আমার মাঝে সুকৃতির একটা ‘আলো’ উপলব্ধি করি। বুঝতে পারি; তাদের কালোটা হলো নিজের কষ্ট অন্যের গলে ঝুলিয়ে দেয়ার ‘কালো’ আর আমার আলোটা হলো অন্যের কষ্ট নিজে বহন করার ‘আলো’। খুশিতে বাগবাগ হয়ে আর আনন্দে আত্মহারা হয়ে আমি আবার কষ্টের ফেরিওয়ালা হয়ে যাই। তবে মায়ের গল্পের সেই ফেরিওয়ালার মত নয়। কষ্ট বিলানোর ফেরিওয়ালা নয় বরং কষ্ট সংগ্রহের ফেরিওয়ালা। নিজের কষ্ট অন্যকে দেয়ার ফেরি নয়, বরং অন্যের কষ্ট নিজে বহন করার ফেরি। নিজের অজান্তেই এবার মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে; “কষ্ট দেবে ভাই? কষ্ট?”
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোঃ নূর ইমাম শেখ বাবু ২৪/০৪/২০১৮ভাল
-
তনুর ভাই ১৬/১১/২০১৭কষ্টের হকার ও ফেরিওয়ালা
-
শাহজাদা আল হাবীব ০৫/১১/২০১৭দারুণ হয়েছে।
-
সোলাইমান ০৫/১১/২০১৭।দারুণ লিখেছেন কবি বন্ধু ।শুভেচ্ছা জানবেন ।ভালো থাকবেন ।