www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

শীতের সেই পরশ

শহরের যান্ত্রিক জীবনে প্রবেশ না করলে হয়তো শীতের গ্রামীণ জীবনের সৌন্দর্য কোনদিনই মূল্যায়ন করতে পারতাম না।
চুলার পাশে বসে মায়ের হাতে তৈরী গরম ভাপা পিঠা খাওয়া হয়তো আর কোনদিনই হবে না। শীত আসবে শীত যাবে কিন্তু সকালের নরম রোদে বসে কাঁচা রস খাওয়া জানিনা কোনদিন হবে কিনা!
শহুরে জীবনের এই যান্ত্রিক আবহে শীতের সেই পরশ অচিন্তনীয়। গ্রামীন জীবনে ছেলেবেলার সেই শীত কতই অসাধারণ ছিল। সকালবেলা বাবা-মায়ের ডাকাডাকিতে বিছানা ছেড়ে উঠেই চলে যেতাম আমাদের ছোট্ট রোদেলা উঠানে। সবাই মিলে রোদ পোহানোর কি মজাটাই না ছিল! ততক্ষণে সকালের নাস্তা প্রস্তুত। কোনোমতে মুখ ধুয়ে খাবার খেয়ে সোজা স্কুলে।
ভয়ংকর সময়টা ছিলো দুপুর। গোসলের সময় মনে হত যেন জলদেবতা কামড় দিয়ে ধরছে। অতঃপর অতিকষ্টে গোসল শেষে দুপুরের খাবার খেয়ে একটুখানি বিশ্রাম। কখনো তাও হত না।
বিকেলে প্রায় প্রতিদিন দাড়িয়াবান্ধা কিংবা গোল্লাছুট। অবশ্য শেষের দিকে ব্যাডমিন্টনটাও যুক্ত হয়েছিলো। বিকেলটা খুব ছোট্ট ছিলো। মাঝে মাঝে শেষ বিকেলে বাড়ীর পেছনের বিলটায় হাঁটতে যেতাম। ততক্ষণে সূর্য পড়ে বেলা গড়িয়ে আসত। ঘাসের ডগায় জমতে শুরু করতো হীরের টুকরোর মতো শিশিরবিন্দু। কোথাও লাল টকটকে লালশাক কোথাও বিশাল মাচায় ঝুলত ছোট বড় অনেক লাউ। কোথাও তাকালে দেখতাম সিম গাছগুলোতে অপর্যাপ্ত সিম আবার কোথাও বিশাল মূলা ক্ষেত।
কত সুন্দর আর বৈচিত্র্যময় ছিলো সেই দিনগুলো। অল্পতেই সন্তুষ্ট হতে পারতাম। আজ আর তা হয় না; জানি সেই দিনগুলোও কোনদিন আর ফিরে আসবে না। চিরতরে হারিয়ে গেছে জীবন থেকে।
বিষয়শ্রেণী: অন্যান্য
ব্লগটি ১১৪৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৩/০২/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

 
Quantcast