বেটি পর্ব ১
১
আমোদের আজকাল দিন ভালোই কাটছে । সব্জি চাষটাও বেশ তাগড়াই হয়েছে । কুমড়ো , লাউ , বেগুণ সরেস –পুষ্ট । গ্রামটার পাশেই নানা গাছ গাছালি । শহুরে হাওয়া এখন পুরোপুরি আসতে বাকী । আমোদের সংসার নেহাতই ছোট । ঘড়ে স্ত্রী আর দুই বলদ - চাষের জন্য । এদের আর মাঠের কাজ কর্ম নিয়ে দিব্যি কেটে যায় হাতে গোনা ক’টা ঋতু । ছয় ঋতু অনেককাল আগেই মিলিঝুলি সরকার !
না ! আমোদের সন্তান হয় নি । এর এর জন্য সে অবশ্য কপালকে দোষ দেয় না । ভাগ্যবতী স্ত্রী লতা । প্রথম দিকে গ্রীষ্মের খরার সাথে নিজেকে তুলনা করলেও , স্বামীর আহ্লাদে প্রায় ভুলেই গেছে সে ‘বাঁজা’ । কিছু বছর আগেও গ্রামের বৌ-ঝিরা ফিসফিস করে ওই শব্দটিকে আরাম করে পুকুরঘাটে , রাস্তায় , মাটির রোয়াকে পান চিবুতে চিবুতে আলোচ্য বিষয় করে তুলত । দিনের শেষে রাতের আঁধারে এক সময়ে কম কাঁদেনি লতা ! বিশ্বাসের গোড়ায় যখন টান পরে তখন কুসংস্কারও দিব্যি পরগাছার মত ইতি উতি উঁকি মারে । ঝাঁর ফুঁক , তাবিজ কবজ সবই করিয়েছে উভয়ে ।
লতার মনটাকে ভালোবাসে আমোদ । যে জমিতে ফসল জন্মায় না , সেখানে আরও চাষ কর – এটা যেমন আমোদ চাষি জানে । ঠিক তেমনি সাংসারিক জমিতে স্বামীর ভূমিকাও কম নয় ! তাই লতার মনের সাথে আপাত মূর্খ আমোদও তাবিজ বাঁধতে একরত্তিও কুণ্ঠা বোধ করে নি ।
‘ কাজ না থাকলে খই ভাজ ’ । আমোদের হাতে ওসব দেখে বন্ধু মহলও টিটকারি করতেও ছাড়েনি ।
- “ বৌ সোহাগ স্বামী ” হারাণ জ্যাঠা তো একবার মুখ ফুটেই বলেই ফেলে ।
আমোদ এইসব কথা শুনে চোটে না বরং হাসে । এটাই তার সব চেয়ে বড় গুণ । মাঝে মাঝে সেও মুখ চালায় , “ জ্যাঠা , তার মানে তুমি জ্যাঠিকে যে সোহাগ কর না , ঠিক আছে জানিয়ে দেব !” ব্যাস ওইটুকুই বলে হাঁটা দেয় ।
নিভন্ত উননে ছাই বেশির ভাগ থাকে । তাকে খোঁচালে যে আগুন বের হয় তা দিয়ে খুব একটা কিছু হয় না । মাঝে মাঝে হাওয়া যদি একটু বেশী হয় তাহলে আগুনের হল্কা পাওয়া যায় মাত্র । ক্রমশ গ্রামের লোকদের মুখে ব্যঙ্গও কমে আসে , অন্যদিকে লতা বা আমোদের জীবনের ধারাপাতে ‘বাঁজা’ উপাধি খুব একটা আর দাগ ফেলে না ।
( চলবে )
আমোদের আজকাল দিন ভালোই কাটছে । সব্জি চাষটাও বেশ তাগড়াই হয়েছে । কুমড়ো , লাউ , বেগুণ সরেস –পুষ্ট । গ্রামটার পাশেই নানা গাছ গাছালি । শহুরে হাওয়া এখন পুরোপুরি আসতে বাকী । আমোদের সংসার নেহাতই ছোট । ঘড়ে স্ত্রী আর দুই বলদ - চাষের জন্য । এদের আর মাঠের কাজ কর্ম নিয়ে দিব্যি কেটে যায় হাতে গোনা ক’টা ঋতু । ছয় ঋতু অনেককাল আগেই মিলিঝুলি সরকার !
না ! আমোদের সন্তান হয় নি । এর এর জন্য সে অবশ্য কপালকে দোষ দেয় না । ভাগ্যবতী স্ত্রী লতা । প্রথম দিকে গ্রীষ্মের খরার সাথে নিজেকে তুলনা করলেও , স্বামীর আহ্লাদে প্রায় ভুলেই গেছে সে ‘বাঁজা’ । কিছু বছর আগেও গ্রামের বৌ-ঝিরা ফিসফিস করে ওই শব্দটিকে আরাম করে পুকুরঘাটে , রাস্তায় , মাটির রোয়াকে পান চিবুতে চিবুতে আলোচ্য বিষয় করে তুলত । দিনের শেষে রাতের আঁধারে এক সময়ে কম কাঁদেনি লতা ! বিশ্বাসের গোড়ায় যখন টান পরে তখন কুসংস্কারও দিব্যি পরগাছার মত ইতি উতি উঁকি মারে । ঝাঁর ফুঁক , তাবিজ কবজ সবই করিয়েছে উভয়ে ।
লতার মনটাকে ভালোবাসে আমোদ । যে জমিতে ফসল জন্মায় না , সেখানে আরও চাষ কর – এটা যেমন আমোদ চাষি জানে । ঠিক তেমনি সাংসারিক জমিতে স্বামীর ভূমিকাও কম নয় ! তাই লতার মনের সাথে আপাত মূর্খ আমোদও তাবিজ বাঁধতে একরত্তিও কুণ্ঠা বোধ করে নি ।
‘ কাজ না থাকলে খই ভাজ ’ । আমোদের হাতে ওসব দেখে বন্ধু মহলও টিটকারি করতেও ছাড়েনি ।
- “ বৌ সোহাগ স্বামী ” হারাণ জ্যাঠা তো একবার মুখ ফুটেই বলেই ফেলে ।
আমোদ এইসব কথা শুনে চোটে না বরং হাসে । এটাই তার সব চেয়ে বড় গুণ । মাঝে মাঝে সেও মুখ চালায় , “ জ্যাঠা , তার মানে তুমি জ্যাঠিকে যে সোহাগ কর না , ঠিক আছে জানিয়ে দেব !” ব্যাস ওইটুকুই বলে হাঁটা দেয় ।
নিভন্ত উননে ছাই বেশির ভাগ থাকে । তাকে খোঁচালে যে আগুন বের হয় তা দিয়ে খুব একটা কিছু হয় না । মাঝে মাঝে হাওয়া যদি একটু বেশী হয় তাহলে আগুনের হল্কা পাওয়া যায় মাত্র । ক্রমশ গ্রামের লোকদের মুখে ব্যঙ্গও কমে আসে , অন্যদিকে লতা বা আমোদের জীবনের ধারাপাতে ‘বাঁজা’ উপাধি খুব একটা আর দাগ ফেলে না ।
( চলবে )
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মন্টু বিশ্বাস মানিক ৩১/০৮/২০১৮valo laglo