www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

রাজকন্যে ইন্দু ও ইচ্ছেডানা


অবশেষে সাত সমুদ্র সাত পাহাড় ডিঙিয়ে মানস শৃঙ্গের পদ্ম সরোবর থেকে মহারাজা ইন্দ্র পদ্মকুসুম এনেছিলেন । বহুকাল ধরে তার রাজ্যে যে অনাবৃষ্টি , মহামারি হচ্ছিল তা এই পদ্মকুসুম মহলে স্থাপন করার পর সব দূর হয় । নিঃসন্তান ইন্দ্রের ঘর আলো করে ঠিক সেই সময় জন্ম নেয় রাজকুমারী ইন্দু ।
ছোট্ট ইন্দুকে পেয়ে রাজা-রানীর যেন সকল কষ্ট দূর হয় । ইন্দুর কোমল চোখের পল্লব যখন খোলে তখন পূব আকাশে সূর্য উদয় হয় , রাজ্যের পাখীরা গেয়ে ওঠে । আবার সারাদিনে খেলার পর সে শান্ত হলে ইন্দ্ররাজ্যও ঘুমিয়ে পরে শান্তিতে ।
কিন্তু এই লক্ষ্মীর মত পেয়েও রাজা-রানী খুশীর সাথে সাথে চিন্তিতও ছিলেন কারণ এক সাধু জন্মলগ্নের পর বলেছিলেন রাজকুমারী যত বড় হবে তত অশান্তির সুত্রপাত হবে । অসুররা যেমন অমৃতের জন্য লড়াই বাঁধিয়েছিল ঠিক তেমনি রাজকুমারীকে হরণ করতে চাইবে রাক্ষসরা । রাজকুমারীকে পেলে তাদের শক্তি ও তেজ দুই বেড়ে উঠবে পুনরায় ।
সেই থেকে মহারাজা ইন্দুকে পড়াশুনার সাথে সাথে আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্রবিদ্যাতেও শিক্ষা দিতে থাকেন । ছোট্ট ইন্দু ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে । তার নানা সখী । তবে রাজকুমারীর প্রিয় বন্ধু সেই পদ্মকুসুম । কারণ রাতের আঁধার নামলেই পদ্মকুসুম থেকে বেরোয় সাতরঙা আলো । আলোর মাঝেই বাতাসে ছড়িয়ে পরে মিষ্টি সুবাস । আসে লাল নীল হলুদ তিন পরী । তাদের আকার ছোট্ট হলেও বড়ই মিষ্টি তাদের কথা । অন্য পরীদের মত তারা মোটেও হিংসুটে নয় ।
ইন্দুর কোন কারনে মন খারাপ হলেই তারা নানা দেশের , নানা ঘটনার গল্প করে । এইভাবেই কেটে যেতে থাকে ইন্দ্ররাজার সাম্রাজ্য ।

এদিকে বহুবছর নিস্তেজ থাকার পর রাক্ষসরা আবার অনেক তপস্যা করে ফিরে পায় তাদের শক্তি । তারা পরিকল্পনা করতে থাকে তাদের চরম শত্রুদেশ ইন্দ্ররাজ্যকে ধ্বংস করার । কিন্তু রাক্ষস রাজ্যের ঠোঁট বেঁকানো লম্বা গলার শকুন জানায় –
“ ইন্দু-পদ্মকুসুম করলে হরণ –
ইন্দ্ররাজ তবেই নেবে শরণ ।”
একথা শুনে রাক্ষসরাজ গোলোক কুলোর মত কান নেড়ে মাথা ঝাঁকিয়ে জিজ্ঞাসা করে –
“ ওহে বৃদ্ধ জ্ঞানী শকুন , এ অন্যায় –
জানা আছে কী অন্য কোন উপায় ?”
শকুন লম্বা গলা নেড়ে আবার জবাব দেয় –
“ না রাক্ষসরাজ গোলোক –
হরিলে ওই দুই ,
আসবে মুঠোয় ভূলোক ।”
রাক্ষসরাজ এই একটি জায়গায় ভীত । এই ইন্দ্ররাজ্যে পদ্মকুসুমের জন্যে না চলে ছল , না করা যায় আক্রমণ । অথচ সে জানে রাজকুমারী আর পদ্মকুসুম হাতে আসলে গোলোক হয়ে উঠবে পৃথিবীর অধীশ্বর ।
রাক্ষসরাজের সাম্রাজ্যেও রাক্ষসকুল আস্তে আস্তে বেড়ে ওঠে । প্রতিরাতে তারা নানা জায়গা থেকে নিয়ে আসে মানুষ । হাড়গোড় কিছুটি বাদ দেয় না ! রাক্ষসদের বিশাল বিশাল মহল সব হাড় দিয়েই তৈরী করা । এখানকার বাতাসে রক্তের গন্ধ বয়ে যায় । লাল নদীতে ঝরঝর করে স্রোত তুলে লাল রক্তের ধারা তড়বড়িয়ে এগিয়ে যায় । সোনার গাছে হীরার ফুল , চুনির ফল । এদের গন্ধ নেই , নেই কোন স্বাদ ! কিন্তু এসব রাক্ষসদের অতিশয় প্রিয় ।
সময় থাকে না থেমে । পূরন হয় না রাক্ষসরাজের ইচ্ছা । ইতিমধ্যে একদিন এক বৃদ্ধ সাধু না জেনেই রাক্ষসরাজের প্রিয় জঙ্গল দিয়ে যাচ্ছিলেন । অবশ্য ওখানকার হাওয়ার গন্ধে বৃদ্ধ বুঝতে পারেন এটি রাক্ষসদের বন । কী আর করা ! মনে মনে ঠিক করলেন রাতটা এই বিষাক্ত জঙ্গলে ধ্যান করে কাটিয়ে পরের দিন ভোরেই রওনা দেবেন ।
প্রতিরাতের মত গোলোক রাজা বেড়িয়েছে তার দলবল নিয়ে । হঠাৎ সাধুকে দেখতে পেয়ে রাক্ষসরাজের সাপের মত জিভ লক্‌লক্‌ করে ওঠে । মুখের মধ্যে ছটে লালার ফোয়ারা । সে বিকট মূর্তি নিয়ে সাধুর সামনে দাঁড়ায় । অদ্ভুত ব্যাপার সাধু তাঁর ধ্যানেই ডুবে আছেন !
রাক্ষসরাজ বিশাল এক হাত বাড়িয়ে যেই না ধরতে গেছেন অমনি সাধু অতি ক্রুদ্ধ হয়ে বলে ওঠেন –
“ রাক্ষসরাজ দুঃসাহস তোমার বড় –
আমার ধ্যান তুমি অকালে ভঙ্গ কর !”
এ কথা শুনে রাক্ষস্রাজা পৃথিবী কাঁপিয়ে হাঁসতে হাঁসতে বলে –
“ ব্যাটা নধরকান্তি সাধু –
তোর মাংস বড়ই সুস্বাদু ।”
গোলোকের এই স্পর্ধা দেখে ওই সাধু দিলেন এক অভিশাপ –
“ এত বড় কথা, দিলাম তোরে অভিশাপ –
তোরই কুলের হাতে হবি নিপাত,ঘুঁচবে পাপ ।”
এই বলে সাধু অদৃশ্য হয়ে যান । রাক্ষসরাজ এ কথা শুনে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে সাধুকে কত খুঁজতে থাকে কিন্তু কোথাও আর পায় না ।

রাজকন্যা ইতিমধ্যে বিবাহযোগ্যা হয়ে উঠেছে । মেয়েকে অনেক বুঝিয়ে মহারাজা ইন্দ্র স্বয়ম্বর সভার আয়জন করেছেন । নানা দেশে রাজার দূত ছুটল খবর দিতে । রাজ্যে রাজে ঘোষকের দল রাজার এক অদ্ভুত ঘোষণা ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে বলতে থাকে –
“ শোন শোন সবে নগরবাসীগণ –
মহারাজ ইন্দ্রের আছে এক পণ ,
যে রাজার কুমার খাইবে লোহার দানা –
রাজকন্যে তারই হবে,পাবে অর্ধ রাজ্যখানা...”
এমন কথা শুনে সকলেই অবাক ! তবে কী রাজা তাঁর হবু জামাইয়ের শক্তির পরিচয় নিতে চান !
দেশ-বিদেশের মহা শক্তিশালী রাজপুত্ররা নিজ নিজ মনে ভাবল –
“ লোহার দানা, নয় এ বিশাল ব্যাপার –
রাজকন্যে সহ রাজত্ব হবেই আমার ।”
রাক্ষসরাজ গোলোকের কানেও কথাটা যায় । এ তো বড় সুযোগ , কিন্তু... মনের কথা বুঝতে পেরে সেই লম্বা গলার বৃদ্ধ শকুন কর্কশ গলায় বলে –
“ রাক্ষস রাজমাতা সামান্য মানুষ –
পুত্র তোমার দিনে নর , রাতে রাক্ষুস ।
পাঠাও তারে ইন্দ্র রাজার সভায় –
মানুষরূপী রাক্ষস কেবল দানা চিবাইতে পায় ।”
রাক্ষসরাজ বঝল , এ তো তাঁর মনেই ছিল না ! তাঁর স্ত্রী তো মানুষ ! বহুকাল আগেই তাঁর সুন্দর রূপের জন্য জোর করে তাকে বিবাহ করে এই রাক্ষস পুরীতে নিয়ে আসা হয়েছিল । কিন্তু তাদের রাক্ষসরাজপুত্র এত সব জানেই না ।
গোলোক পুত্রকে আদেশ দেয় –
“ শোন বাছা আনতে হবে ইন্দুমালা –
সয়ম্বর সেথা, কল্যই যাবে প্রভাতবেলা ।
সোনার দানা চিবাইতে নাহি হবে কষ্ট –
বিবাহ করে আনো দিবালোকেই পষ্ট ।”
পিতার আদেশ পেয়ে বাহুবল দিনের আলোয় মানুষের রুপে সয়ম্বর সভায় উপস্থিত হয় । তখন অন্যান্য রাহজা-রাজপুত্ররা লোহার দানা বীর বিক্রমে দানা চিবাচ্ছে আর নিজেদের দাঁত ভাঙছে ।
এ সব দেখে ইন্দ্র রাজা হতাশ ! শেষে রাজপুত্র বাহুবল মহারাজাকে প্রনাম করে বিনম্র স্বরে বলে –
“ মহারাজ আছে আমার প্রস্তাব –
নাহি আমি কোন পরাভব ।
লোহার দানা শেষ হবে বজ্রসম দাঁতে –
বিবাহ করে রাজকন্যা এখনি যাব নিয়ে সাথে ।”
কথা শুনে রাজা স্তম্ভিত হলেন । উপায় না দেখে প্রস্তাবও মেনে নিলেন । আর বাহুবল মুহূর্তের মধ্যে সবটা দানা দাঁতের চাপে ছাতুর মত গুঁড়ো করে দিল ।
রাজসভায় সকলেই হতবাক । ঘোষণা ও দাবী মত সেই দিনেই বিবাহ দিয়ে দিনের আলো থাকতে থাকতে তাদের বিদায় জানান ।
বিদায়কালে ইন্দুমালা কত কাঁদলে । রাজা-রানী অনেক করে বুকে পাথর চাপা দিয়ে তাকে বোঝালেন । শেষে ইন্দু তাঁর সেই পদ্মকুসুমের প্রিয় তিন পরী সখোদের সাথে দেখা করতে যায় ।
তিন পরী পদ্মকুসুম থেকে মিষ্টি সৌরভ বাতাসে ছড়িয়ে রাজকন্যার চোখের জল মুছিয়ে একসাথে বলে ওঠে –
“ প্রিয় সখী কেঁদো না তুমি আর –
ছোট্ট এই জাদুদন্ড, আমাদের উপহার ।”

সন্ধ্যে হওয়ার আগেই ইন্দু ও বাহুবল নিজের রাজ্যে উপস্থিত হয় । কিন্তু রাজকন্যার মনে কেমন কেমন ঠেকে ! অদ্ভুত তাঁর স্বামীর রাজ্য !
সূর্য অস্ত যেতেই বাহুবল মানুষের ঠেকে পুনরায় রাক্ষসে পরিণত হয় । বিকট রূপ দেখে রাজকন্যা মূর্ছা যায় । হুঁশ ফিরলে দেখে রাক্ষস রাজ গোলোক , বিশাল মূর্তির সব দাস-দাসী তাঁর পালঙ্কের চারিপাশে দাঁড়িয়ে আছে । একমাত্র মানুষের মত দেখতে রাজমাতা তাঁর শিয়রে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ।
রাক্ষসরাজ মাতা সকলকে বিদেয় করে ইন্দুকে মিষ্টি হতাশ স্বরে বলে –
“ আমি মানুষ, তোমার মাতা –
জানি তোমার মনে উঠছে নানা কথা ।
কু’কালে বিবাহ হয় রাক্ষস ঘরে –
যন্ত্রণায় দিনকাটে বহুকাল ধরে ।”
কথাটা শুনে রাজকন্যা আরও অবাক হয়ে বলে –
“ রাজমাতা তোমার কী কষ্ট-যন্ত্রণা –
কহ , কেন মনে এত তোমার বেদনা !”
রাজমাতা চোখের জল মুছে জবাব দেয় –
“ গর্ভের পত্র রাতে রাক্ষস , দিনে নর –
হিংসা-রক্তপাত ঘটে হেথা প্রতি প্রহর ।
নারীকে করে অবহেলা নাহি দেয় সম্মান –
লক্ষ্মী নেই, হেথা অলক্ষ্মীর দালান !”
রাজকন্যা সবই বুঝল । এদিকে রাত ঘন হলে রাক্ষস রাজপুত্র লকলকে জিভ নিয়ে রাজকন্যার ঘরে প্রবেশ করে । পিতার কু-মন্ত্রনায় বিকট রূপ নিয়ে লাল লাল চোখে রাজকন্যের দিকে তাকিয়ে গর্জন করে বলে ওঠে –
“ আনতে হবে তোকে পদ্মকুসুম কালই প্রভাতে –
নইলে হাড়মাস খেয়ে নিব , মরবি আমার হাতে ।”
রাজকন্যা কম যায় না । সে অত্যন্ত ক্রুধ হয়ে জবাব দেয় –
“ আমি তোমার স্ত্রী , নই দাসী –
পিত্রালয়ে সামগ্রী না আনিব,
যা ইচ্ছা কর এ তোমার খুশী ।”
এত বড় আস্পর্ধা ! রাগ সামলাতে না পেরে বাহুবল বড় বড় দাঁত করে ইন্দুমালা গিলতে আসে । অমনি সাহসী রাজকন্যা পরীদের দেওয়া সেই জাদুদন্ড বার করে হাতে উঁচিয়ে বলে –
“ জাদুদন্ড রক্ষা কর তোমা সখীকে –
রাক্ষস স্বামী খেতে আসে যে আমাকে ।”
যেই বলা তখনই জাদুদন্ড থেকে এত সুন্দর মিষ্টি গন্ধ বেড়িয়ে বিশাল দাঁত বাহুবলের নাকের মধ্যে সুড়সুড় করে ঢুকে পরতে থাকে । আশ্চর্যের ব্যাপার এতে বাহুবলের সব শক্তি হারিয়ে যেতে শুরু করে । দেখতে দেখতে তার চেহারা মানুষের মত হয়ে যায় রাতের অন্ধকারেই ।
এমন ঘটনায় রাক্ষসরাজ প্রাসাদে সেই ঘোর নিশিথে বৃদ্ধ শকুন ডানা ডানা ঝাপটাতে ঝাপটাতে বলে ওঠে তারস্বরে –
“ রাক্ষসরাজ , রাতে রাক্ষস হলে মানুষ –
অলক্ষ্মীর বিদায় আসন্ন ,
সকল রাক্ষস খোক্কসের ফিরবে যে হুঁশ !”
এদিকে রাতে বাহুবল পূর্ণ মানুষ হয়ে গিয়ে নতুন ভাবে চিন্তা করতে থাকে । মনে মনে ভাবে কী অন্যায় করেছে তাঁর স্ত্রী , মা সকল নারীদের প্রতি !
রাতের অন্ধকারে ছুটে যায় পিতার কাছে । রাক্ষসরাজ দেখে বাহুবলের দেহ থেকে অদ্ভুত এক প্রশান্তির আলো ঠিকরে বেরোচ্ছে । গোলোক সেই আলোর দিকে চোখ তুলেই তাকাতে পারছে না !
বাহুবল বলে ওঠে –
“ পিতা নারীশক্তি , নারীই লক্ষ্মী –
কর না অবহেলা ,
পদ্মকুসুমের দাবী ছাড়, হও তুমি সুখী ।”
এ কথা শুনে প্রায় অন্ধ হয়ে রাক্ষসরাজ টলতে টলতে নখ বার করে ধরতে গেল নিজেরই পুত্রকেই । আর ঠিক সেই সময় ফলে গেল সেই প্রাচীন বৃদ্ধ সাধুর অভিশাপ ।
রাত্রে মানুষরূপী পুত্রের দেহ ছুঁতেই এক বিদ্যুতের ঝলকে সে ছিটকে পরে শকুনটার পায়ের কাছে ।
কোলাহল শুনে রাজকন্যাও ছুটে আসে । ইন্দুকে দেখে রাগের মাথা খেয়ে পুত্রকে ছেড়ে তাকেই লম্বা হাত বাড়িয়ে ধরতে যায় । আর বলে –
“ শয়তানী তোর জন্য পুত্র হয়েছে বিরাগ –
তোকে শেষ করলেই যাবে আমার রাগ ।”
বাহুবল এখন সে মানুষ । স্ত্রীর অস্মমান কী করে সহ্য করে ! সে দৌড়ে গিয়ে রাক্ষস পিতাকে ধরে ফেলে ।
তারপরেই ঘটে গেল আরেক ঘটনা । মানুষের স্নিগ্ধ ছোঁয়া পেতেই রাক্ষসরাজের সমস্ত রাক্ষসগুণ চলে যেতে থাকে । সেও পরিণত হয়ে যায় মানুষে ।

এদিকে রাজকন্যার দিকে সেই শকুন আক্রমণ চালায় তাঁর বিশাল কদাকার ঠোঁট নিয়ে । কিন্তু রাজকন্যার জাদুদন্ডের গুণে মুহূর্তের মধ্যেই ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বৃদ্ধ লম্বা গলার শকুনের মোটা দেহ । ফিনকি দিয়ে বেরোতে থাকে কালো রক্তের স্রোত ।
এই বৃদ্ধ শকুনের মধ্যেই ছিল বাকী রাক্ষসদের প্রাণ । তারাও শকুনের মৃত্যুর পর ঝপঝপ করে মরতে থাকে ।
রাতের অন্ধকার কাটিয়ে ধীরে ধীরে সূর্যদেব ওঠেন । তাঁর আলোর ছটায় গোলোক রাজার রাজ্যে বহুযুগ পর পাখী ডেকে ওঠে । সোনার গাছ , হীরার ফল সব সজীব হয়ে যায় । মিষ্টি গন্ধের আকর্ষণে ফুলে ফুলে মৌমাছি গুণ গুণ করে উড়ে বেড়ায় । রক্ত নদীর জল আবার স্বচ্ছ হয়ে গিয়ে কুলকুল করে বয়ে যেতে থাকে ।
পাখীরা গাইতে গাইতে ইচ্ছেডানা মেলে নেচে নেচে বলে –
“ গোলোক রাজা ধন্যি তোমার পুত্রবধূ –
মানুষ রাক্ষস হলে ধ্বংস হয় শুধু ।
মনের মধ্যে থাকে হৃদ-সোনা –
মানুষ হলেই মেটে সকল ইচ্ছেডানা ।”
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৭৯০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১০/০৫/২০১৮

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast