বন্ধুত্ব (দ্বিতীয় পর্ব)
ফোনটা রেখেই আদি খাটের উপর বসে থাকলো কিছুক্ষন। যেন কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিল না যে, সায়ণ তাকে ফোন করেছে! বিষ্ময় মাখানো আনন্দে হতভম্ভ সে। প্রাণ প্রিয় বন্ধু সায়ণ, আর তার সাথে প্রায় সাত বছর কোন কথা ছিলনা। অনেকবার সামনা-সামনি দেখা হয়েছে, কিন্তু কেউ কথা বলতে পারেনি। বরং বলা উচিত কেউ কথা বলেনি। কারণ দু'জনের জেদ সাংঘাতিক। কেউ একটুও কম যায়না। আদি এইচ এস পাশ করার পর গনিত শাস্ত্রে সাম্মানিক নিয়ে একটি পাতি কলেজে পড়াশুনো শুরু করলো, আর সায়ণ সেই গো ধরে রইলো ডাক্তারী পড়বেই। জেদ কাজে দিল। তৃতীয় বারেই জয়েন্টে চান্স পেয়ে গেল। চলে গেল সোজা কলকাতায়। কিন্ত্ গোল বেধেছিল তার আগেই। আদি যখন ফার্স্ট ইয়ারের পরীক্ষা দেবে তখনই একটি মেয়েই তাদের দু'জনকে ছাড়াছাড়ি করে দিল। আদি এবং সায়নের বন্ধুত্বকে অনেকেই মানিক জোড় বলে আখ্যায়িত করতো। আর তারাই কিনা দুই মেরুতে চলে গেল একটা মেয়ের জন্যে। আদি যে কতবার সায়নের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলতে চেয়েছে, তা কি সায়ণ জানে! -না জানেনা। যদি জানতো...।
এই সব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে হঠাত ঘড়ি দেখে চমকে উঠলো আদি। সাড়ে সশটা বেজে গেছে। এগারোটার মধ্যে অফিসে পৌছতে হবেই। হাতে মাত্র আধ ঘণ্টা। এর মধ্যেই চান খাওয়া দাওয়া সেরেই তাকে ছুটতে হবে। মিস্ত্রীদের যথা সাধ্য নির্দেশ দিয়েই আদি অফিয়ে ছুট লাগালো। যেতে যেতে অনেক ভাবলো। পথে যেতেই সায়ণদের বাড়ি। একবার তাকালো , তারপর সোজা যশোর রোড় ধরে চোঁ-চোঁ ছুট। অফিসের বস এক সাঙ্ঘাতিত বদমায়েশ। যারা তাকে তেল দিয়ে চলে তাদের শত দোষ মাফ! আদি সেটা পারে না বলেই সে তার চক্ষুশূল। যদিও আদি এসব পরোয়া করেনা। সে নিজের কাজটা মন দিয়েই করে । কিন্তু আজ যে একটু দেরীই করে ফেলেছে সে। না জানি কী কথাই না শুনতে হবে তাকে । সাড়ে এগারোটা বেজে গেলো অফিসে পৌছতে। কিন্তু অবাক কাণ্ড , লর্ড সিনহা সাহেব তাকে তো কিছু বললোই না বরং আদিকে ডেকে বললো তোমার জন্য একটা সুখবর আছে। আদি তো ভেবেই পেলো না সুখবরটা কি! জানতে চাইলে উনি বললেন এখন না বিকালে বলবো। সুখবর তাড়াতাড়ি দিলে তার আমেজ থাকে না। আদি আর থাকতে পারে না, সকালের এক উত্তেজনায় সে এখনো ঠিক মতো স্বাভাবিক হতে পারেনি , তার উপর এখন আর এক উত্তেজনা- সুখবরের! না জানি কী খবর । সত্যিই তাই তো, নাকি কোন খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে তার জন্যে! কে জানে! আশীষ আদির অফিসের খুব ভালো বন্ধু-কলিগ। তার কাছে জানতে চাইলে সে বললো যে, সে কিছু জানেনা। আরো বললো
-আরে ছাড় তো , দেখবি সব ভাওতা বাজী। তুই ওনাকে চিনিস না। চিরকাল তো গুল মেরেই গেল আর পরের মাথায় কাঁঠাল ভেঙেই...।
আদি বললো
-নারে আশীষ আমার খুব টেনশন হচ্ছে আজ।
-তোর আজ কি হয়েছে রে আদি?
-কই, কিছু নাতো। কেন?
- না, তুই তো এতো টেন্সড থাকিস না কোন দিন?
-দেখিস যশোর রোডের মতো রাস্তা দিয়ে সাইকেল চালাস! এখটু সাবধানে চালাস।
- ধন্যবাদ বন্ধু, সাবধান করার জন্য। বললো আদি। মুখে বললো ঠিকই, তবে সেও বুঝতে পারছিল তার মধ্যে কি ঘটছে আজ।
বিকাল হলেই আদি লর্ড সাহেবকে জিঞ্জ্যেস করলো সুখবরটা কি?
বেশ গুরু গম্ভীর গলায় উনি বললেন
-তোমার আজ আধ ঘণ্টা দেরি হলো কেন?
-আসলে মাস্টার মশায় আমার বাডিতে মিস্ত্রী কাজ করছে তো , তাই-
- তাহলে তো মিস্ত্রীর কাজটাই মন দিয়ে শিখতে পারতে? কী দরকার এই দু'আনার চাকুরী গিরি করার?
- স্যার আমার তো কোন দিন এরকম দেরী হয়না কখনো? আজ একটু---
- আজই বা হবে কেন?
- না মানে - ইয়ে...
তোমার সুখবর এটাই যে, আজ তোমাকে ক্ষমা করা হলো। আর যেন কোন দিন এরকম দেরী না হয়।
এই সব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে হঠাত ঘড়ি দেখে চমকে উঠলো আদি। সাড়ে সশটা বেজে গেছে। এগারোটার মধ্যে অফিসে পৌছতে হবেই। হাতে মাত্র আধ ঘণ্টা। এর মধ্যেই চান খাওয়া দাওয়া সেরেই তাকে ছুটতে হবে। মিস্ত্রীদের যথা সাধ্য নির্দেশ দিয়েই আদি অফিয়ে ছুট লাগালো। যেতে যেতে অনেক ভাবলো। পথে যেতেই সায়ণদের বাড়ি। একবার তাকালো , তারপর সোজা যশোর রোড় ধরে চোঁ-চোঁ ছুট। অফিসের বস এক সাঙ্ঘাতিত বদমায়েশ। যারা তাকে তেল দিয়ে চলে তাদের শত দোষ মাফ! আদি সেটা পারে না বলেই সে তার চক্ষুশূল। যদিও আদি এসব পরোয়া করেনা। সে নিজের কাজটা মন দিয়েই করে । কিন্তু আজ যে একটু দেরীই করে ফেলেছে সে। না জানি কী কথাই না শুনতে হবে তাকে । সাড়ে এগারোটা বেজে গেলো অফিসে পৌছতে। কিন্তু অবাক কাণ্ড , লর্ড সিনহা সাহেব তাকে তো কিছু বললোই না বরং আদিকে ডেকে বললো তোমার জন্য একটা সুখবর আছে। আদি তো ভেবেই পেলো না সুখবরটা কি! জানতে চাইলে উনি বললেন এখন না বিকালে বলবো। সুখবর তাড়াতাড়ি দিলে তার আমেজ থাকে না। আদি আর থাকতে পারে না, সকালের এক উত্তেজনায় সে এখনো ঠিক মতো স্বাভাবিক হতে পারেনি , তার উপর এখন আর এক উত্তেজনা- সুখবরের! না জানি কী খবর । সত্যিই তাই তো, নাকি কোন খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে তার জন্যে! কে জানে! আশীষ আদির অফিসের খুব ভালো বন্ধু-কলিগ। তার কাছে জানতে চাইলে সে বললো যে, সে কিছু জানেনা। আরো বললো
-আরে ছাড় তো , দেখবি সব ভাওতা বাজী। তুই ওনাকে চিনিস না। চিরকাল তো গুল মেরেই গেল আর পরের মাথায় কাঁঠাল ভেঙেই...।
আদি বললো
-নারে আশীষ আমার খুব টেনশন হচ্ছে আজ।
-তোর আজ কি হয়েছে রে আদি?
-কই, কিছু নাতো। কেন?
- না, তুই তো এতো টেন্সড থাকিস না কোন দিন?
-দেখিস যশোর রোডের মতো রাস্তা দিয়ে সাইকেল চালাস! এখটু সাবধানে চালাস।
- ধন্যবাদ বন্ধু, সাবধান করার জন্য। বললো আদি। মুখে বললো ঠিকই, তবে সেও বুঝতে পারছিল তার মধ্যে কি ঘটছে আজ।
বিকাল হলেই আদি লর্ড সাহেবকে জিঞ্জ্যেস করলো সুখবরটা কি?
বেশ গুরু গম্ভীর গলায় উনি বললেন
-তোমার আজ আধ ঘণ্টা দেরি হলো কেন?
-আসলে মাস্টার মশায় আমার বাডিতে মিস্ত্রী কাজ করছে তো , তাই-
- তাহলে তো মিস্ত্রীর কাজটাই মন দিয়ে শিখতে পারতে? কী দরকার এই দু'আনার চাকুরী গিরি করার?
- স্যার আমার তো কোন দিন এরকম দেরী হয়না কখনো? আজ একটু---
- আজই বা হবে কেন?
- না মানে - ইয়ে...
তোমার সুখবর এটাই যে, আজ তোমাকে ক্ষমা করা হলো। আর যেন কোন দিন এরকম দেরী না হয়।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মৃণ্ময় আলম ২১/১০/২০১৫অসাধারণ
-
শান্তনু ব্যানার্জ্জী ০৭/১০/২০১৫বা বেশ লাগল ।
-
শুভাশিষ আচার্য ০৭/১০/২০১৫টাইপো হয়েছে কিছু। তাড়াহুড়ো তে লেখা কি। গল্প টা কিন্তু হেব্বি। অনেক শুভেচ্ছা।
-
সমরেশ সুবোধ পড়্যা ০৭/১০/২০১৫ভালো লাগলো ।
-
দেবব্রত সান্যাল ০৭/১০/২০১৫শেষে বেশ চমক আছে। প্রচুর ছাপার ভুল আছে , শুদ্ধ করুন।