দুঃস্বপ্ন
ঘোর কৃষ্ণ রাত। পরিবেশ একেবারে নিথর, নিশ্চুপ। গ্রাম্য মাটির এক অপ্রশস্ত রাস্তায় দাড়িয়ে আছি আমি, একা। চারদিক অন্ধকারে আচ্ছন্ন। রাস্তা থেকে এক শাখা রাস্তা চলে গেছে বাম দিকে। সেই রাস্তা ধরে থেমে থেমে এগিয়ে চলেছি আমি। মনে সন্দেহ, এবং অদ্ভুত এক অস্বস্তি। রাস্তাটা কিছুদূর গিয়েই সামনে শেষ হয়েছে। শেষ প্রান্তে অন্ধকারের পটভূমিতে আরও কাল রঙের ঝোপঝাড়ের আভাস টের পাওয়া যাচ্ছে। তার ওপাশে অনেক বড় একটা বিল আছে টের পেলাম। রাস্তার দু'পাশেও ছাড়া ছাড়া ঢোলকলমীর ঝোপ রাস্তার উপরে হেলে আছে। অনেকদিনের অব্যাবহৃত পথ। কিছুদূর এগিয়েই থেমে দাড়ালাম আমি। তিক্ষ্ণ দৃষ্টি পথের শেষ প্রান্তে। বুঝার চেষ্টা করছি সেখানে কি আছে যা আমাকে আকর্ষন করছে। মন চাচ্ছে না আরও এগিয়ে যাই, কিন্তু তারপরও অদ্ভূত ভীতিকর সেই আকর্ষনে আরও কয়েক পা সামনে গিয়ে থেমে দাড়ালাম। এবার রাস্তার শেষ মাথা অনেকটা পরিস্কার দেখা যাচ্ছে। ঝোপ ঝাড়ের ফাঁক দিয়ে রাস্তা বরাবর সেখানে এবার বাঁশের তৈরী অতি পুরানো এক টয়লেট আবিস্কার করলাম, যা বাঁশের খুঁটির সাহায্যে বিলের উপর অবস্থিত। রাস্তাটা এই টয়লেটে যাবার জন্যেই ব্যবহৃত হতো। কিন্তু টয়লেট না, টয়লেটের বেড়ার দরজার বামদিকে ঝোপের অন্ধকারের মধ্যে আমার দৃষ্টি স্থির। আমি ছাড়াও আশেপাশে আমি অন্য কনো প্রাণের অস্তিত্ব টের পাচ্ছি যা ধীরে ধীরে আমার চেতনার উপর প্রভাব বিস্তার করছে। সামনে কাল অন্ধকারে তার চেয়েও কাল অতি লম্বা এক মানুষের আকৃতি পরিস্কারভাবে ফুটে উঠছে এবার আমার দৃষ্টিতে। একেবারে স্থির হয়ে আছে তা, মূর্তির মতো। পা থেকে মাথা পর্যন্ত কাল কাপড়ে ঢাকা। মুখের জায়গাও কাল অন্ধকার। বুঝতে পারলাম এই অস্তিত্বই আমাকে এখানে টেনে এনেছে। টের পাচ্ছি আমার মনের উপর অন্ধকার ও ভীতিকর এক জোরালো দখল। দৃষ্টি আরও তিক্ষ্ণ হলো। কালো ঘোমটার আরও ভিতরে দেখার চেষ্টায় ব্যস্ত। এবং ধীরে ধীরে সেখানে ফুটে উঠলো হলদেটে স্থির একজোড়া জ্বলন্ত চোখ। স্থির জীবন্ত দৃষ্টিতে তা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। বিশাল ক্ষমতাধর ভীতিকর সেই অস্তিত্বের অনুভূতিতে প্রচন্ড আতঙ্ক গ্রাস করে নিলো আমাকে। সেই ক্ষমতার বিরুদ্ধে কিছু করার তুলনায় অতি ক্ষুদ্র আমি, কালো অন্ধকারের জগতে আমার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেতে লাগলো তার আকর্ষনে।
প্রচন্ড আতঙ্ক নিয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠলাম আমি শেষ রাতে। স্বভাবতঃই বাকী রাতটুকু আর ঠিকমতো ঘুমাতে পারিনি আমি একা সেই রুমে। এমনই জীবন্ত বাস্তব সেই আতঙ্ক যে তারপরও আরও বেশ কয়েকদিন আমি তা স্পষ্ট অনুভব করেছি। চোখ বন্ধ করলেই চখের সামনে ভেসে উঠেছে সেই অবয়ব, মৃত্যুর স্থিরতায় হলদেটে একজোড়া জীবন্ত চোখ। অনুভব করেছি অন্ধকার ভিন্ন এক জগতের আগ্রাসী আকর্ষন।
এখনও প্রায়ই অন্ধকার সেই জগতের অস্তিত্ব ও আকর্ষন টের পাই আমি। সেই সাথে স্বপ্নীল সুন্দর ভিন্ন কোন জগতের হাতছানিও যেন অনুভব করি কখনো কখনো, কিন্তু কল্পনায় স্পষ্ট ফুটিয়ে তুলতে পারি না তা কখনো। আমাদের বাস্তব জগত যেন এই দুই জগতের মিলনস্থল। আমাদের প্রতিটি কাজই যেন নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে এদের কোন না কোন একটার আকর্ষনে। হয় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি বন্দিত্বের সেই অন্ধকার জগতের দিকে, নয়তো স্বপ্নের এক মুক্ত জগতের দিকে। কিন্তু আমরা কি তা অনুভব করতে পেরেছি ঠিকমতো? নিজেকে মুক্ত করতে পেরেছি আমাদের মনের এক এক বন্দীত্ব থেকে?
প্রচন্ড আতঙ্ক নিয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠলাম আমি শেষ রাতে। স্বভাবতঃই বাকী রাতটুকু আর ঠিকমতো ঘুমাতে পারিনি আমি একা সেই রুমে। এমনই জীবন্ত বাস্তব সেই আতঙ্ক যে তারপরও আরও বেশ কয়েকদিন আমি তা স্পষ্ট অনুভব করেছি। চোখ বন্ধ করলেই চখের সামনে ভেসে উঠেছে সেই অবয়ব, মৃত্যুর স্থিরতায় হলদেটে একজোড়া জীবন্ত চোখ। অনুভব করেছি অন্ধকার ভিন্ন এক জগতের আগ্রাসী আকর্ষন।
এখনও প্রায়ই অন্ধকার সেই জগতের অস্তিত্ব ও আকর্ষন টের পাই আমি। সেই সাথে স্বপ্নীল সুন্দর ভিন্ন কোন জগতের হাতছানিও যেন অনুভব করি কখনো কখনো, কিন্তু কল্পনায় স্পষ্ট ফুটিয়ে তুলতে পারি না তা কখনো। আমাদের বাস্তব জগত যেন এই দুই জগতের মিলনস্থল। আমাদের প্রতিটি কাজই যেন নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে এদের কোন না কোন একটার আকর্ষনে। হয় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি বন্দিত্বের সেই অন্ধকার জগতের দিকে, নয়তো স্বপ্নের এক মুক্ত জগতের দিকে। কিন্তু আমরা কি তা অনুভব করতে পেরেছি ঠিকমতো? নিজেকে মুক্ত করতে পেরেছি আমাদের মনের এক এক বন্দীত্ব থেকে?
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোঃ ইমরান হোসেন (ইমু) ১২/০৬/২০১৬wow!!!!!!!!!:::
-
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. ১২/১০/২০১৩চমৎকার আপনার লেখনী ক্ষমতা।খুব টানটান উত্তেজনা আপনার লেখায়।পাঠককে অপেক্ষায় রাখতে পারেন দারুণ ভাবে।আপনার অভিজ্ঞতা টা খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা।এই ধরনের স্বপ্ন এবং বাস্তব প্রায় ই ঘটে আমাদের জীবনে।ভালো লাগলো।
-
Înšigniã Āvî ১১/১০/২০১৩অসাধারণ