অরন্য পরীর ইতিকথা
অরন্য : টিং টিং টিং ঘড়ির এলাম বেজেইযাচ্ছে ,,,এপাশ ওপাশ হয়ে মাথার বালিশটা মুখের উপরে ধরে আবার ঘুমাচ্ছে,,,,ঘড়ি বাচ্ছে আর বাচ্ছে..
পরী : প্রতি সকালে তার আদরের ,হাসনা হেনা,,গোলাপ ,বেলী ,ঘাসফুল,,,,লজ্জাবতি গাছগুলোকে পানি দিচ্ছে আর ফুল গুলোকে আনমনে দেখছে ,,গুন গুন করে রবীন্দ্র সংগীত গাইছে,,,,,অরন্যের রুম থেকে টিং টিং শব্দ শুনে এগিয়ে গেল দরজার ধারে,,,,মাথায় বালিশ দেখে মিট মিট করে হাসছে,,,,,কিছুক্ষন দেখে সামনে গিয়ে পায়ে চিমটি কেটে বলে ,,,,এই যে কানের কাছে বাঁশি বাজছে আর উনি ঘুমাচ্ছে!
অরন্য : হুম হুম ঘুমের ঘোরেই বলছে!!
পরী : ভাইজান আপনি উঠবেন কি ,আপনার ডান্স ক্লাস কিন্তু আকাশে উঠবে!!
অরন্য : ঐ কেরে বলে ,,লাফ মেরে উঠে,,আরে আমাকে এত আস্তে আস্তে ডাকছো কেন আর জোরে ডাকলেইতো উঠে যেতাম !!
পরী :হুম তোমারে ডাকার জন্য মসজীদের মাইক এনেও কাজ হবে না,,,,
অরন্য : ঠিকই বলেছ ,সকালে ঘুম থেকে উঠতেই মন চায় না,,
পরী :বউ নাই তাতেই এই অবস্তা বউ আসলে বোধয় বোমা মেরে উরাই ফেললেও উঠবা না,,,
অরন্য :কথা বলছে এর ভীতরে রেডী হতে শুরু করেছে,,,,,,,বলে যাই আজ নাস্তা খাওয়ার সময় নাই,,মামীকে
বলে দিও আমি চলে গেছি,,,,
পরী :ঠিক আছে বলব,যাও
অরন্য:সিড়ি দিয়ে নামছে
মামা :উঠছে ছাদে যাবার জন্য ,,,কিরে কোথায় যাস,,,এভাবে দৌড়াইয়???
অরন্য :মামা একটু কাজ আছে,,আপনি ভালো আছেন!
মামা : হুম,,,নাস্তা খেয়ে যাইছ ,
অরন্য : না ,,মামা দেরি করে ফেলছি,ok যাই মামা!
মামা : কিরে পরী তোর গাছগুলোর কি অবস্থা!
পরী : আর বল না বাবা ,,সবকয়টা গাছ বাদর বড় হচ্ছে কিন্ত ফুল ফুটে কিপটামি করে,,
মামা : পরীর বাবা মেয়ের কথা শুনে হাসতে লাগলো,চলে নীচে …
মামা : খাবার টেবিলে আসছে স্ত্রীকে বলছে খাবার দাও ,,,আর ওদের ডাক…..
মামী (পরীর মা):পরী খেতে আস ,,রিমুকে ডেকে আসাসি!
পরী: আপু ভাত খেতে আস মা ডাকছে বলে টেবিলে চলে গেল !
মামা (পরীর বাবা): আব্বু কাল পাবেল ভাইয়ে হলুদ ,আমার কিছু টাকা লাগবে কেনাকাটা আছে,,,,,,,বলে চেয়ারে বসে ভাতের পেলেট এগিয়ে নিল,,,
অরন্য : সবাই খাচ্ছ ভালো সময় আসছি ,,অনেক ক্ষুধা লাগছে মামী জলদী খাবার দাও !
মামা: সারাদিন কই থাকো কই ঘুরিস ,ঠিকমত খাবার দরকার নাই শধু টইটই , বলে খাচ্ছে উনি??
রিমু : পরী তুই এ চেয়ার থেকে উঠ ,,আমি এখানে বসব বলে উঠিয়ে দিল,,,,,মা তুমি এসব কি যাতা রান্না কর ,,,ছোট মাছ আমি খাইনা জানো না!!!
মামী : রাগ না দেখিয়ে তোর বাবাকে বল।
অরন্য : কাল পাবেল এর গায়ে হলুদ তোমরা সবাই কখন যাবে মামী?
রিমু :কখন যাবে যখন হলুদ দিবে গিয়ে দিয়ে এসে পরব সবাই ,,,
পরী :অরন্য ভাই তুমি হলুদে নাচবে কিন্ত ,,সবাই দেখবো ,,,তুমি ভালো নাচ পার সবাই জানে কিন্ত দেখা হয়নি !
মামা :পারবে না লেখাপড়া রেখে ছোটকাল থেকেই শিখছে এই ফালতু কাজ ,আমার বোনটিও সুন্দর ছোট বেলাই নাচের স্কুলে ভর্তি করেছে,,,কি বলব বলার কিছুই নাই,,,উঠে চলে গেল??
অরন্য : পরী যদি শহীদ না হই ইন্নাশাআল্লাহ দেখতে পারবি চিন্তা না করার কোন কারন নাই ,,বলে চলে গেল?
পরী : হুম দেখতে চিন্তা করব না ছাই ,,
*****পরের দিন*******
অরন্য :বীয়ে বাড়িতে ,সবাই সবার কাজ নিয়ে ব্যস্ত ,,,মিটমিট করে রুমে ডুকে এই ,,ভাই কালতো অন্যজনের হয়ে যাবেন শেষ ইচ্ছা থাকলে বলুন??পাভেল : শেষ ইচ্ছা পরে তুই কালকের ঘর সাজানো আর গাড়ী সাজানোর জন্য ফুল কিনতে যা ,,,আসতে যেতে তিন ঘন্টা লেগে যাবে,তোর দায়িত্বে এ কাজ শেষ করবি !!!
অরন্য : টাকা নিয়ে সাথে ছোট দুই তিন জন ছোট ভাইকে নিয়ে চলে গেল!!!সবাই একের পর এক হলুদ লাগিয়ে চলে গেল...
অরন্য :রাত ১২টাই ফুল নিয়ে বাড়ীতে আসলো,,,,,রাস্তায় ঝেম ছিল আবার কয়েক জায়গা ঘুরে ফুল ভালো পেয়েছি!!!
মামী :অরন্য তুমি কাজটা ঠিক করলে না কত আশা করছি সবাই নাচ দেখবো তুমি আসছো অনুষ্ঠান শেষ করে !!!!!
অরন্য :সবার বকাবকি শুনে বলে মামী গো আমার কোন দোষ ছিল না সব দোষ ঐ ফুলের ।
পরের দিন হৈহুল্লর করে বাড়ীতে বউ নিয়ে এসেছে সবাই নতুন বউ দেখতে ছুটছুটি করছে?
অরন্য :নতুন বউয়ে কাছে গিয়ে বসছে ,,,আর মাঝে মাঝে নতুন ভাবীর চীমটি খাচ্ছে,,,নতুন বউ বলছে দেবরমশাই আপনার নাচ দেখবো,,,আমি জানি আপনি সুন্দর নাচ জানেন!!!
মামী : হুম অরন্য আজ নাচতে হবে ,কাল বেঁচে গেছ,,,,,পাশাপাশি আরো কয়েকজন বলে উঠলো?
অরন্য : এর ভীতরে পরীকে অদ্ভুত ভাবে দেখছে ,,এ যেন সত্যিই পরী এত সুন্দর লাগছে,,,আগে কখন এমন করে সৌন্দর্য্য দেখেনি,,ভালোই লাগছে,,,,,,
পরী :জী ভাইয়া নাচো আমরা একটু দেখি ?
অরন্য : যে গানের নাচবো পাটনার লাগবে কারো আমার সাথে নাচতে হবে!!!!
সবাই পরীকে বলতে শুরু করল পরী নাচো সাথে তুমি তো ক্লাসিক গানের তালিম কর আর ভালো রবীন্দ্র সংগীত তুমি পারবে!!!!!
পরী : রাজী হচ্ছিল না ,,,সবার পিরাপিরিতে বলে মা যদি বলে তাহলে?
মামী : মামীকে সবাই ধরে আন্টি আজকের জন্য অনুমতি দিন,,,মামী রাজী হলো?
অরন্য আর পরীর খুব সুন্দর একটা গানের নাচ হলো সবাই খুব পছন্দ করলো?
অরন্য :বিয়ে বাড়ীর হৈ চৈ শেষ রাতে ঘুমাতে যাবে দেখে টেবিলে একটি লাল গোলাপ সাথে একটি চিরকুট" সুন্দর নাচের জন্য ছোট একটি উপহার ,পরী"৷৷ পরে ফুলটি নাকের কাছে নিয়ে একটু শ্বাসনিয়ে বলল ধন্যবাদ পরী এরপর ফুলটা নোটবুকে রেখে দিয়ে বিছানায় গেল ! ডান পাশ বাম পাশ করছে কিন্ত ঘুম আসছে না শুধু ভেসে উঠছে পরীর সেই হাসি মাখা মুখখানি !!
পরী : শুয়ে শুয়ে অরন্যের সেই নাচের সময় যে হাতদুটো স্পর্শ করেছে বার বার মনে করছে ,জীবনে প্রথম কোন পুরুষ আমার হাতদুটো ধরেছে,এ পাশ ও পাশ হচ্ছে আর নিজে নিজেই বলছে ,পরী তুই এসব কি ভাবছিস ঘুমা বলছি বলে গালে দুইটা নিজেই থাপ্পর দিয়ে ঘুমাতে চেষ্টা করল !**৩ দিন পর**
সকালের নাস্তা শেষ করে
রিমু::মা আজ বাবার শরীল ভালো না আমি পরীকে স্কুলে দিয়ে আসব অরন্যকে বলো নিয়ে আসতে!
পরী : আমার সাথে কে যাবে মা,,,,,
রিমু :কেন দেখিস না আমি রেডি হয়ে বসে আছি ,চল এ বলে উঠবে আর অরন্য নাস্তা করতে এসেছে ,,,,,,,
অরন্য : আজ যেন অন্যদিন থেকে অন্য রকম অনুভব করছে কিছুটা লজ্জিত যেন মনের অজান্তেই অপরাধী সে,,আবার পরীর দিকে দুইবার চোখাচোখি হয় ,,
পরী : ইশারা করে বলে কি ,,অরন্য ও মাথা নেরে বুঝায় কিছুনা,,,দুজনে চলে যায় ,,অরন্য খেতে বসে !!
মামী : অরন্য খেয়ে চলে যাবে তখন বলে ,বাবা আজ তোমার মামার শরীলটা ভালো না তুমি পরীকে স্কুল থেকে নিয় আসতে পারবে ??
অরন্য : জী মামী পারবো ,,,টেনশন করনা নিয়ে আসব ,,মামাকে ডাক্তারের কাছে নিয় যেও ??
মামী : আরে ডাক্তারের কাছে নিতে হবেনা সারা বছর আর্মি তে থেকে অনেক কিছুই শিখে আসছে আর শুধু শিখেনি যে বেশি জোরে জোরে কথা বললে পেশার বাড়ে ,আর্মি বলে কথা । রিটায়ার্ড করলে কি হবে ঝাজটা এখনো রয়ে গেছে,,,,,
অরন্য : হুম তাইতো রিমুকে বিয়ে দিয়েছে আর্মির সাথেই দুইজনে আকাশ পাতাল স্বভাবের ,ok মামী আমি যাই কলেজে কাজ আছে ।
পরী : স্কুল ছুটি হয়েছে সাথে তিন চার জন বান্ধবী হাসতে হাসতে বের হচ্ছে ,গেট থেকে একটু দূরেই দেখা যাচ্ছে অরন্য দাড়িয়ে আছে ,,,একজন বান্ধবী বলে আজ তোর ভাই এসেছে,,,আরেকটা বলে তোর ভাইটাকে বাবু বাবু লাগছে,,,,,আরেকটা বলে উঠে তোর ভাইকে বলিশ বিয়ে করার সময় বেবি বিয়ে করে ,যে সুন্দর করে হাসে হা হা হা হা
পরী : দূর তোরা কি বলিস ,,এতদিন নিজের বাড়ী থেকেই প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছে ,আসা যাওয়ায় অনেক সমস্যা ও সময়ের ব্যাপার তাই আমাদের বাসায় থেকেই এ বছর পরীক্ষা দিবে ,,,আর অরন্য ভাইকে সবাই আদর করে, দেখিস আবার তুইও.... হাহহাহা আচ্ছা যাইরে কাল দেখা হবে ।
অরন্য : কিরে আমাকে তোর গার্ড বানিয়ে ছাড়লো মামী ,চল বলে রিক্সা ডাকি,
পরী: আর একটু পরে যাই না ?
অরন্য ; কেন ?
পরী ; না , এমনিতে
দুপুরে খাওনি আজ তাই না,,,,
অরন্য : হুম তোর জন্যই দাড়িয়ে ছিলা১ঃ৩০থেকে ভাবছি তোকে নিয়ে বাসায় গিয়ে খাবার খাবো!
পরী : তুমি জানো না আমার ছুটি হয় ৩ টায় এতক্ষণ পায়ের ব্যায়াম করেছ কেন??
অরন্য : সমস্যা নাই ,,এই রিক্সাওয়ালাকে ডেকে রিক্সায় উঠে যেতে যেতে বলে রিক্সাওয়ালাকে বলছে, ভাই দেইখা চালান ,বিয়ে করিনি চাকার নিচে ফেলে বউকে বিধবা কইরেন না ,,,,
পরী : হাসি দিয়ে বলে ,,,তোমার বউ এখন বেবিই বুঝছ,,,,,
অরন্য : বেবি হলে ত ভালোই ,,এ বলে ওর দিকে চোখ পরে দেখে ও চোখ ছলছল করছে ,,কি যেন বলবে পারছে না
পরী : আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই ,রাগ করবে না বল??
অরন্য : বল কি বলবি ,,,রাগ করব কেন !!!
পরী : আমি তোমাকে ভালবাসি ,,,তোমার ভালোবাসা আমার চাই--
অরন্য : কি বলিস কিভাবে বললি? ,,মাথা ঠিক আছেতো নাকি স্বপ্নে বলছিস??
পরী : হাত দুইটা ধরে কান্নাশুরু করে
বিশ্বাস কর আমি তোমাকে ভালোবাসি
অরন্য : আরে কাঁদছ কেন পাগলী,,ঠিক আছে
বুজলাম কিন্তু এভাবে কি ভালবাসা হয়? তুমি তো কিছু না ভেবেই বলে দিলি কিন্তু আমাকে তো ভাবতে হবে।
পরী : রাতে ছাদে উঠে ,,ওর গাছগুলোকে স্পর্শ করছে আর ভাবছে অরন্য হ্যা বলবেতো ,,না বললে আমি কি করব আমি ওকে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারছিনা !!!!
(কিছুক্ষন একা একা ভেবে ছাদ থেকে নেমে)
মাঝে মাঝে অরন্যর রুমের দিকে উঁকি মারছে আর দেখতে চেষ্টা করছে অরন্য কি করে !!!!!
অরন্য : রুমে বই নিয়ে বসছিল কিছুতে মন বসছে না বলে ধুর বই খুললেই পরীর মুখ যেন পাতায় পাতায় ভেষে উঠছে ,,কি যে করি এ তো দেখি আমাকে সবখানে জালাচ্ছে,,,,এ বলে বই টা ছুড়ে ফেলে দেয় টেবিলে টেবিলে ,তখনই দেখে পরী দাড়িয়ে দরজার একপাশে চোখ গুলো যেন কিছু খুজছে কিন্ত পাচ্ছে না,,,,,,
,
পরী : আসবো কি?
অরন্য : হুম আস ,,,তুমি? কি খবর?
পরী : একবার হুম বলে আস্তে করে আবার বলে না !
অরন্য : তুমি জানো আমাকে একটা মেয়ে ঘুমাতে দিচ্ছে না ,,,চোখ বন্ধ করলে তাকেই দেখি,,,বই খুললে ,,,হাটতে গেলে যেখানেই যাচ্ছি বিচ্ছু হয়ে কামরাচ্ছে বলতো কি করি!!!
পরী :কেন কোন মেয়ে ,তাঁর মানে তুমি অন্য কাউকে ?? আমি তোমাকে ভালোবাসি তুমি অন্য কারো কথা ভাবছ বলে চোখগুলো কান্নামাখা করে ফেলছে আর বলছে আমি এসেছিলাম হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা দেওয়ার জন্য আর তুমি কি না ///
অরন্য : ঐ তুমি কি বোকা কাঁদছ কেন, দেখ নেকা মেয়েদের মতো কাঁদবেনা। যা বলি শোনো, সে যদি তুমি হও খুশি হবে?
পরী: জানি না
অরন্য : সে আর কেউ না। সে হলে তুমি ,,আমার সর্গরাজ্যের পরী ,,তোমাকে আমি হৃদয়ে থেকে সরাতে পারছিনা ।
পরী ; সরালে বুঝি শান্তি পাও ঠিক আছে এই মুখ আর কখনো দেখতে হবে না তোমার । (এই বলে যেই উঠতে যাবে অরন্য হাত ধরে একটা টান দিয়ে বুকের সাথে নিবে) কাঁদাবে না তো আমায়?
পরী : চোখটা মুছে একটু হাসি দিয়ে বলছে সত্যি বলছো? আমি আজ অনেক খুশি ,,,,,,বলে অরন্যকে জরিয়ে ধরে বলে ,I love you so much.....আর কানে কানে বলল এই জীবন কেন পরের জীবনেউ তোমায় ভুলবো না। বলেই একটা দৌড় ------
অরন্য : চুপ করে দাড়িয়ে রইল আর হতবাক হয়ে ভাবল ও কি করছে এ সব? পাগল হবার তো বাকি নাই ,বাকিটা আমাকে করবে ,,বলে শুয়ে পরল ।
পরী : গানের স্কুলে যাবে আজ শুক্রবার বলতেই সারাদিন একাডেমিতে ,সকালে গানের ক্লাস আবার দুপুরের পর থেকে তালিম পাঁচটা পর্যন্ত ,,,,বাড়ী থেকে ছয় সাত কিলোমিটার দূরে তাই একবারেই থেকে যায় ,,,,আজ তাই হবে ,,,,ক্লাশ করছে কোন এক ফাকে দেখে কে যেন বার বার জানালা বরাবর কিছু খুজছে,,,ভালো করে তাকিয়ে দেখে অরন্য বাইসাকেল নিয়ে দাড়িয়ে আছে ?
পরী : মেডাম কে বলে বাহিরে গেটের কাছে গিয়ে বলে তুমি এখানে কেন ,,,আমার তো বিকাল হবে ,,চার পাঁচ ঘন্টা কি দাড়িয়ে থাকবে নাকি ?
অরন্য : খুব খারাপ লাগছিল ,,দেখতে ইচ্ছে করছে তাই এসে পরেছি,,,সমস্যা নাই আমি আছি ক্লাস করো একসাথে নিয়ে যাব?
পরী : থাকো আর হাত পায়ের ব্যায়াম কর ,আমি যাই বলে ক্লাসে চলে গেল !(কিছু গানের ক্লাসের দৃশ্য )
অরন্য : সাইকেলটা পাশে নিয়ে মাথাটা নিচু করে বসেছিল ,
পরী : মাথায় একটু ধ্বাকা দিয়ে ঐ ঘুমাচ্ছ নাকি বলে হাসতেছে?
অরন্য : ওর হাসিমাখা মুখটার দিকে তাকিয়ে ভূলে গেল এতক্ষনের অপেক্ষা ,,,,আসছো চলো আজ তোমাকে সাইকেলে করে নিয়ে যাবো ।
পরী : পড়ে যাই ,,,,,যদি?
অরন্য : শক্ত করে আমাকে ধরে বস পড়বে না,,,এ বলে সাইকেলে উঠে গেল !
পরী : মনে মনে আনন্দ পাচ্ছিল প্রিয় মানুষটির সাথে সাইকেলে চড়ার মজাই আলাদা ।
অরন্য : চালাচ্ছে আর বলছে পরী আমি বোধয় বাঁচবো না ,কিযেন হয়েছে কিছু ভালো লাগেনা!!
পরী : তাহলে আমার কাছে ঔষধ আছে নিবে?
অরন্য : কি বলতেই দেখে পরী একটু পর পর কানের কাছে এসে বলছে চলো আমরা পালিয়ে যাই..(অরন্য এটা শুনেই ধপাশ)
আবার পুনরায় সাইকেলে উঠে বাসায় চলে গেল।
সন্ধ্যার পর জ্যোন্সা রাত্রে
অরন্য :ছাদে দাড়িয়ে পরীটা আসছেনা কেন একটু দেখব ও বুঝোনা!
পরী : অরন্যকে ঐ বলে কানের সামনে এসে ,কি কর ,,,ভালো আছো,,,,
অরন্য : ভালো আর থাকতে পারলাম কিভাবে মাথার পোকাটা যে জালাচ্ছে?
পরী : আমি কি পোকা নাকি হুম তাহলে তুমিতো আমাকে আরো বেশী জালাও তুমিকি ?
অরন্য : আমি তোমার অর্ধেক দেহ যা আলাদা করতে চাইলেও পারবে না !ঠিক ঐ চাঁদ আর জ্যোন্সার মত। এর মাঝে যেমন। পরী অরন্যের হাতে হাত রেখে -
পরী : তখন গুনগুন করে গাইতে লাগলো ,,,,,আমারো প্রারাণে যাহা চাই তুমি তাই গো..................
অরন্য : গান শেষ হতেই দেখে পরীর চোখগুলো ছলছল করছে ,,,,কি হয়েছে কাঁদছো কেন?
পরী : আমি তোমাকে হারাতে চাইনা ,,,বাবা যদি আমাদের সম্পর্ক্টা না মানে কী করব জানো? মরে যাবো।।।।
অরন্য : কি বল এসব? পরীক্ষাটা আর কিছুদিন আছে মাত্র এর পর একটা জব পেয়ে নিই,,আর তুমি আমি ঠিক থাকলে ঠিকই মানবে ?
পরী : বাবা যে কর্কশ রাগী আর কখন আমাদের চাওয়া পাওয়া বুঝেনি আজ বুঝবে কিনা জানি না ,তবে আমি তোমাকে ছারা কিছু বুঝিনা চাইওনা?
অরন্য : টেনশন কর না সব ঠিক হয়ে যাবে?
**দৃশ্য ৯
পরী : রুমাল সেলাই করছে সেখানে অরন্যের নাম লিখছে তার বোন রিমু দেখতে পেয়ে বলে কোন দিকে সুর্য উঠছে তুই রোমাল সেলাই করিস ,,,,,
পরী : না আপী এমনি দেখছি পারি কিনা,,,,,
রিমু : তোকে আজকাল একটু অন্য রকম লাগছে কিছু হয়েছে?দেখ প্রেম টেম এসব লাইফে সিরায়াস করে নিবি না,,,,দেখিসনা আমি রিলেশন করার পরও বাবার ইচ্ছাই নামের আর্মি আর কামের বোকাকে বীয়ে করছি ,,,,,তাই বলে দিলাম লেখাপড়ায় মন দে আর বেশি বাড়িস না ফল ভাল হবে না।
পরী : আরে না কিছু না আপী??
(এর মাঝে একদিন)
রিমু : ছাদে গিয়ে দেখে ফেলে ওরা কথা বলছে কিন্ত দুজনের মুখ দেখে বুঝেতে বাকি রইল না তাদের মাঝে কিছু যে আছে!!পরী তোকে মা ডাকছে নিচে যা।
পরী : চলে যায় !
রিমু : অরন্য তোমার সাথে রিমুর কোন রিলেশন আছে? সত্যি বলবে
অরন্য : হুম ,আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি?আর এটা অন্তত তোমার বোঝা উচিৎ।
রিমু : যদি তাই হয় তবে তোমায় প্রথম আর শেষ বার বলে দিচ্ছি এখানেই থেমে যাও ,আর এ সম্পর্ক কেউ মানবেনা ,,,আমিও না ,,,বলে চলে যায় ...তখন অরন্য বলে দাঁড়াও , রিমু, ভালোবাসা সবার ভেতরে জন্ম নেয় না । জন্ম নিলেও তাঁ অনেকে বাড়তে দেয় না। আর এই গুনটা আর কারো না থাক তোমার আছে ।আশা করি যা বোঝাতে চেয়েচগি সেটা বুঝেছো । এবার তোমার যা করার করো। আর হ্যাঁ এবার আসতে পারো ।
মামী ( পরীর মা ): রিমুর মুখে সব শুনে তেলে বেগুনে জলে মেয়েকে গিয়ে বলে এসব কি শুনছি পরী ,,তোর বাবা কে তো চিনিস কেটে দুই টুকরা করে ফেলবো তারপর ওর কাছে দিবেনা ?
পরী : মায়ের হাতদুটো ধরে বলে ,,মা কেন ,,আমি ওকে অনেক ভালোবাসা please বুঝ, আর আমরা তো এখনি বিয়ে করছি না বা পালিয়েউ যাচ্ছি না আগে ওর একটা জব হোক।, তার পর যা হবার হবে
রিমু : কাজ নাই তো ,বোনের ছেলে আছে ভালো মেয়ের জামাই হিসেবে বাবা মানবেনা ,এমনি বাবা নাচানাচি পছন্দ করেনা আর ও ভিবিন্ন অনুষ্ঠানে নাচে শখ হোক আর যাইহোক ,,,সবাই ভালো চোখে দেখে না,,,
মামী ( পরীর মা ) আজকের পর থেকে তুই ছাদে যাবি না আর ওর সাথে কথা বলবি না ?
পরী : স্কুল থেকে বের হচ্ছে দেখে অরন্য দাড়িয়ে ,,,,,,
অরন্য : কি ব্যাপার তুমি কাল ছাদে যাওনি কেন আমি খুব টেনশনে ছিলাম ফোনও ধরনি!
পরী : কাল মা আপী খুব বকেছে ফোনটা তাই ভয়ে অফ করে রাখছি
অরন্য : এ জন্যই আজ মামী আমার সাথে কথা বলেনি রাগ দেখাচ্ছিল!
পরী : তোমার সাথে বাসায় গেলে জামেলা হবে ,,,রাতে কল দিব কথা হবে যাও ?
মামা (পরীর বাবা): অরন্য বাসায় ঢুকে ওর রুমে যাচ্ছে এমন সময়( মামা) বলছে ,,,এখানে আসোতো শুনে যাও।
অরন্য : জী মামা,,,কিছু বলবেন,,,
মামা : পরীক্ষা শেষ হতে আর কতো দিন বাঁকি আছে?
অরন্য : বেশীদিন না দুই তিন মাস ,
মামা : ঠিক আছে যাও ?পরী তখন দূর থেকে তাদের কথা শুনছিল ?
দুপুরের খাবার টেবিলে সবাই যখন খেতে বসবে অরন্য আসছে খেতে মামা পরীকে বলল তোর রুমে যা পরে আসবি !
অরন্য বুঝেও খাবার টেবিলে বসল সবাই যেন অপরিচিতমত ব্যবহার করছে!
মামী : অরন্য তোমাকে আমি বলে দিলাম আমার মেয়ের সাথে কোন রকম মেলামেশা করবা না,,আর তোমার সাথে মেয়ে দিব ভাবলে কিভাবে?
অরন্য : চুপ করে শুনে উঠে পরল আর ভাত খেল না!!!
পরেরদিন
আবার স্কুলের সামনে দাড়িয়েছিল কিন্ত পরী আর আসল না ,বুঝতে পারল পরীকে স্কুলে আসতে দেইনি!!
অরন্য : কলেজ গেইটে দাড়ানো কয়েকজন ছেলে এসে উড়াধুরা মারতে শুরু করল !!!কিছুই বুঝল না কেন এমন হলো,,,পরে একটা ছেলের যখন আর একজনকে বলছে প্রেমের শখ মিটে যাবে দিছি!! তখন অরন্যর বুঝতে বাঁকি রইল না কার কথায় এটা হলো।
মামা : বসে আছে বারান্দায় অরন্য এসেই ওনার কাছে গিয়ে দাড়ায়?
অরন্য : আপনি আমাকে মানুষদিয়ে মার খাওয়ালেন আপন মামা হয়ে ,,
মামা : তুই যদি আমার বোনের ছেলে না হতিস গুলি করে মেরে নদীতে ফেলে দিতাম আর এ বাড়ীটা আমার মায়ের নামে দেখে তুই আসতে পারিস নইলে কুকুরের মতো বাহির করতাম?
অরন্য : আপনি যা করছেন ঠিক করেননি ,পৃথিবীর কারো সাধ্য নাই আমাদের আলাদা করে ,আমি পরীকে ভালোবাসি ভালোবাসবো....বলার সাথে সাথে মামা
অরন্যের গালে একটা থাপ্পর দিয়ে বসল ,,,,,
অরন্য : গালটা ধরে চুপ করে বের হয়ে।
পরী : খুবই বিষন্ন হয়ে পথের দিকে তাকিয়ে আছে এই বুঝি আসে ,,,,মনে মনে ভাবছে তিন দিন হয়ে গেল অরন্য বাসায় আসে না সেই যে বের হয়েছিল বাবার সাথে জীদ করে ,,,,,,খুব ইচ্ছে করছে অরন্য তোমাকে
,আল্লাহ প্লিজ অরন্য জেনো বাসায় ফিরে আসে মনকে আর মানাতে পারছিনা ।
মামী (পরীর মা):কই গো শুনছ পরীর বাবা বলে ডাকতে ডাকতে রুমে যাচ্ছে ,চোখটা পরল পরীর রুমে দিকে ,,,,,কিরে মন খারাপ করে জানালার ধারে কি করিস ,যা হইছে সব ভুলে যা এতে সবার মঙ্গল নইলে আরো খারাপ হবে বলে চলে গেলেন ।
অরন্য : বিকালে বাসায় আসল ,এসেই শুয়ে শুয়ে ভাবছে কাল ঢাকায় চলো যাবো ঐখান থেকে ইন্ডিয়া জন্য টিকেট কাটবো ১মাসের জন্য ঐখানে থাকতে হবে প্রোগামের জন্য যে করে হোক পরীকে বলতে হবে ,আজ রাতটা থাকি দেখি বলা যায় কিনা ,বলে শুয়ে শুয়ে বই পড়তে লাগলো!!!!
পরী :রাতে সবার ঘুমের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে ,,দেখে এক সময় মায়ের রুমের দরজাটা নক হয় লাইট অফ হয় !এখন বাকি আপীর সেতো সহজে ঘুমাবে মনে হচ্ছেনা যেভাবে কুটনামির হিন্দীসিরিয়াল দেখছে ,
রিমু :টিভি দেখছে আর কিছু একটা খাচ্ছে আর হাসছে ,,,,মনে মনে একবার ভাবছে বাদরটা আজ এসেছে পরীকে আজ চোখে চোখে রাখব,,
পরী :এক ঘন্টা পর দেখল রিমুর লাইট অফ হইছে ,,,,তখন আস্তে আস্তে দরজাটা খুলে যাওয়ার সময় আর লাগালো না চাপিয়ে রেখে গেল………ছাদে উঠেই দেখে অরন্য মাথাটা নিচের দিকে করে ছাদের রেলিং এ হাত দুটি রেখে দাড়িয়ে আছে!
পরী :পিছন দিয়ে অরন্যকে জরীয়ে ধরে কানের কিছে গিয়ে বলে ,আমায় ছেড় থাকতে বুঝি ভাল লাগলো?
অরন্য : মুখটি ঘুরিয়ে তাকায় ছলছল করছে চোখের জলগুলো ,পরীর দুই বাহুতে ধরে বলে উঠে কেমন আছ তুমি ,,,,খুব কষ্ট হচ্ছিল আমার জন্য তাইনা?
পরী : অরন্য আমরা মনে হয় আর একসাথে বাঁচতে পারবো না। ওরা কেন বোঝেনা আমাদের এই পবিত্র ভালবাসা?
অরন্য : please চিন্তা করনা আমি একটা জব নিলে ঠিক হয়ে যাবে আর কাল আমি ঢাকা চলে যাচ্ছি সেখান থেকে প্রোগাম করতে ইন্ডিয়া যাব ,,,,আমার জন্য অপেক্ষা কর প্লিজ,,,,,একটা গান বলনা!!! শেষবারের মতো শুনে যাই!
পরী : গানের সুর ধরল (খেলা ঘর বাধতেলেগেছি আমার মনের ভীতর .....কত রাত তাইতো জেগেছি ....বলব কি তোরে.......প্রভাবাতে পথিক ডেকে যায় .....অবশর পাইনে আমি হায় ....বাহিরে খেলায় ডাকে যাব কি করে.......)
রিমু: এর ভেতরে উঠে খুব চমৎকার মনোরঞ্জন হচ্ছে বলে পরীকে হাতটি ধরে টান মেরে অরন্যের সামনে থেকে একটু দুরে এনে বলতে শুরু করল কত বড় সাহস এত রাতে ওর সাথে দেখা করতে এসেছিস
পরী : আপু প্লিজ আমাকে একটু দয়া কর একটু বুঝ বলতেই ওর গালে চর বসিয়ে দিল যা ঘরে যা !!!
অরন্য : শুধু চেয়ে দেখল চলে যাওয়া চোখের পানি গুলো মুছে রুমে চলে গেল !
অরন্য পরের দিন সকালে ঢাকায় চলে গেলো।
অরন্য : বিমান বন্দর এসে নামল এয়ার পোর্টে আরো কয়েক জন সহকর্মী যাচ্ছিল ,,পাসপোর্টটা হাতে নেওয়ার সময় ফোন টা পকেটে রাখার সময হয়তো কারো নজর পড়েছিল,,কাউন্টারে টিকেট পাসপোর্ট দেখানোর সময় পকেটে হাত দিয়ে দেখে ডেবিট কার্ড টাকা আর ফোন নাই !!! ফোন হারালো এতে সমস্যা নেই ফোনে যতো পরীর স্মৃতি ছিল সেগুলোও হারিয়ে গেল চিরোতরে।
অরন্য : বিমানে উঠার আগ মূহর্তে অন্য একটি ফোন দিয়ে পরীকে কল দিল !!পরী : হ্যালো বলেতে পরী ফোনটি হাত থেকে তার বোন নিয়ে বলল বেয়াদব কোথাকার আবার কেন নির্লজ্জের মতো ফোন করেছিস !
অরন্য : হ্যালো টুকু শুনেছিল কিছু বলার সুযোগ পায়নি ,,এর পর যাত্রা করল অন্যদেশের উদ্দশ্যে ।
পরী : সারাদিন কিছু খাইনি ,,,বিছানায় মূর্মুষ রোগীরমতো শুয়ে আছে !
মামী (পরীর মা) :রিমুকে বলছে তুই যা ওরে কিছু খাওয়াইয়ে রেডী কর সন্ধায় রনির বাবা মা আসবে পছন্দ হলে দিয়ে দিব !!!
রিমু : পরীকে বলে উঠে খেয়েনে ,,শুধু এক জলক তাকিয়ে আবার শুয়ে রইল উঠলো না !!!
রিমু : চেষ্টা করে পারল না চলে গেল
মামা ( পরীর বাবা): পরীর রুমে এসে ডুকল বলে আমার কথা মতো যদি না চলিস খারাপ রূপগুলো দেখতে বাধ্য হবি !!!
পরী : চিৎকার করে পায়ের নীচে পরে বাবা তুমি এমন কিছু করনা please.....
মামা(পরীর বাবা): তুই জীবনেও অরন্যকে পাবিনা আর যদি চেষ্টা করিস আমার মরা মুখ দেখবি সাথে ওর জীবনও আমি ধ্বংস করে দিব । হেরোইন মামলা অস্ত্র মামলা দিয়ে জেলে পচাঁবো এসব করা আমার জন্য ব্যাপার না ,,,যদি ওর ভালো চাস আমাদের কথা মতো চলবি, বলে চলে গেল......
রিমু : এসে কিছু খাবার নিয়ে ওর কান্নাদেখে খাবার হাতে নিয়েই চলে যায় !
সন্ধার পর রনি আর তার মা বাবা আসে দেখার জন্য
পরীকে ! সবাই বসা রনির মা বলে ভাবি (পরীর মায়ের উদ্যেশ্যে) নিয়ে আসেন পরী মাকে যদিও দেখার কিছু নেই পরীতো আমাদেরই মেয়ে।
রিমু : পরীকে গিয়ে বলে চল রেডী হতে হবে না চুলগুলো আচরে একটু ঠিকঠাক করে নিয়ে গেল !! তার পরও সবাই দেখে নিল একনজর
মামা (পরীর বাবা): সবার মতামত যেনে ১ সপ্তাহ বাদেই বিয়ের দিন ঠিক করলো
পরী : রাতে ভাবছে কি করবে
অরন্যকে বিপদের মূখে ফেলতে পারিনা আর যাই করি ,,,,তবে আমার কথা কি রাখতে পারব না মরতে হয় তাকে নিয়ে বাঁচতে হয় তাকে নিয়েই বাঁচবো কিন্ত অরন্যকে বাঁচানোর জন্য আমার ভালোবাসার কবর রচনা করতে হবে এটাই ভালো
কেউ যখন বুঝল না আমাকে ,সবাই তাদের জোর প্রয়োগ করছে আমি হেরে গিয়ে সবাইকে জয়ী করে দেই ,,,বলছে আর অজশ্র চোখের জল ফেলেই চলছে ???????
শুক্রবার সব ঠিকঠাক অনুষ্ঠান হবেনা শধু ছেলের বাসা থেকে কয়েকজন আসবে বিয়ে পড়িয়ে নিয়ে যাবে কারন দুই পক্ষের দূর্বলতা ছিল
পরী : বিয়ের সাজে বসা ফেমিলির কিছু আত্মীয় ছাড়া কাউকে বলা হয়নি ,ওর পাশে বসা ছিল যারা পরীর চিৎকার দেখে সবাই চোখ না মুছেও পারেনি!!!!
সারাটাদিন খুব কান্না করেছে অবশেষে কবুল শব্দটি বলতে বাদ্য হয়েছে !
সবাই পরীকে নিয়ে চলে গেল রনিদের বাসায়
রনি হলো পরীর স্বামী ধনীর দুলাল কিছু করেনা বাবার টাকা ওড়ায় ????
পরী : বাসর ঘরে বসা ঘোমটা দিয়ে !
রনি : এসে বলে কেমন আছো নামকি তোমার !!
পরী : আপনার সাথে কিছু কথা আছে আমার দয়া করে যদি শুনতেন!!!
রনি : কি কথা বলো ?
পরী : আমি একজনকে ভালোবাসি তাকে ভূলার আগ পর্যন্ত আমার সাথে কোন জোরপূর্বক সম্পর্ক করবেন না please
রনি : তুমি যাকে ভালোবাসতে তাকে বীয়ে না করে আমাকে কেন করলে ,,,,বিয়ে কি ছেলে খেলা !!!
পরী : আমি পরিস্থির শিকার বাবা কোনদিন মেনে নিবেন না !
রনি : ঠিক আছে তবে আমি যা করব মেনে নতে হবে
পরী : জী মানবো বলেন, কি??
রনি : আমি নেশা করি ,সবাই জানে তুমি হয়তো দুইদিনপর জানতে ,,,,আমি রুমে বসে নেশা করব কিছু বলবে না!!
পরী : ঠিক আছে আপনি যা মন চায় করুন কিন্ত আমার সাথে কিছু জোর করবেন না !
রনি : পরেরদিন বাসায় আসেনা রাত্রে
পরী : ভাবতেছে বাবা তুমি মেয়ের ভালো বুঝলেনা অর্থ দেখে বিয়ে দিলে কিন্ত মেয়ের জামাই যে নেশা গ্রস্ত রাতভর ক্লাবে বারে থাকে তা জানার সুযোগ হয়নি!!!কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে গেল !!!
শ্বাশরী : পরী দুইমাস তো হয়ে গেল একটা বাচ্ছা নাও আমার ছেলেটা যদি ঘরমুখী হয় !!
পরী : জী আম্মা বলে সরে গেল!!
রনি : রাতে নেশা গ্রস্ত অবস্থায় ডুকে রুমে !!
পরী : রনির অবস্থা দেখে ভয় পেতে শুরু করে ,,হিংস্র জানোয়ারের মতো লাগছে ,,ভয়ে খাটের কোনে চুপকরে বসে রইল !!
রনি: ঐ জমিদারের মেয়ে 2nd ক্লাশ মাল আমার হাতে তোর বাবা ধরিয়ে দিইয়েছে শালার পুতকে পাইলে দেখাইতাম,কিছুক্ষন বক করে শুয়ে পরে ,,,,
পরী : হাত পা সোজা করে দিয়ে মাথায় বালিশটা দিয়ে ঠিকমতো শুয়ে দেয় !
পরী : নীচে একটা বালিশ নিয়ে শুয়ে ভাবতেছে জীবনের সাথে পারছিনা আর অরন্য যদি মেনে না নেয় বিশ্বাস না করে আমাদের স্বামী স্ত্রী কোন রিলেশন হয়নি যে,,,,আর আমার দ্বারা অন্য কারো সাথে দৈহিক সম্পর্ক করা সম্ভব না ,,,,আমার সবটুকু কল্পনা বাস্তবতা জুড়ে শুধু অরন্য ,,,,,,কাঁদতে কাঁদতে আর একটা রাত চলে গেল !!
শ্বাশরী : কিরে মা সেই যে এলি আর তো ভুলেই বাবার বাড়ী যাওয়ার নামও মুখে আনলিনা
পরী : না মা আমি ঐ বাড়ীতে আর যাবনা যদি পারেন আমার লাশটা পাঠাবেন!
শ্বাশরী: এ কেমন কথা বললে ,আর তোমার হাবভাব আমি কিছুই বুঝিনা সারাদিন চুপচাপ থাকো কারো সাথে কিছু বলনা !তবে শোন আমি নাতিনাতনি চাই বলে দিলাম৷৷৷
পরী : রাতে বসে বসে ভাবছে ,,ভাবছিলাম অরন্যের সাথে শেষ কথাটা বলে সিদ্ধান্তে যাব কিন্ত দেখছি না আমাকে সবাই বাদ্য করবে পৃথিবীর আলো বাতাসগুলো ছেরে চলে যেতে ।
অরন্য : দুই মাস পরে দেশে ফোন ফোন কিনে পুরনো.... সীমটা উঠায় !! পরীর নাম্বারে কল ডুকেনা অফ নাম্বার !!
দুই দিনপর অরন্যের কাজীন (রাফি)ফোন দেয় ,,,ভাইয়া আপনার নাম্বার বন্ধকেন আমরা অনেক চেষ্টা করেছি কন্টাক করার জন্য!!
অরন্য : ভাইরে দুঃখের কথা আর বলিসনা আমার সব কিছু airport a© চুরি হয়ে গেছে কারো নাম্বার মুখস্থ ছিলনা যে কল দিব !!নতুন ফোন নিলাম দেশে এসে সীম পুরনো কিন্ত নতুন তুলছি তাই কারো নাম্বারও নাই ,তাছাড়া পরীর নাম্বার অফ।
রাফি: পরীর বীয়ে হয়ে গেছে দুই মাস ধরে তুমিতো জানোনা তাহলে ,,,ও অনেক কান্নাকরছে বীয়ের দিন মামা জোর করে বীয়ে দিয়েছে।
অরন্য : শুনার পর কি বলবে বুঝতে পারছেনা ফোনটা কেটে দিয়ে ভেঙ্গে ফেলল যার জন্য ফোন কিনা সেই নাই ,,,সেই কান্না সারারাত ,,,ঘুম হলো না
পরী : কিছুদিন ধরে বুঝতে শুরু করেছে যার জন্য অপেক্ষা করছি সে আসবে না আর দেশে এসেও হয়তো হতো ভাবছে আমি ওকে ভুলে গেছি। তাই আমার খোজ নিচ্ছে না । কিন্তু আর কতো আমাকে শেষ সিদ্ধান্তে তাহলে যেতেই হয় !
পরী : চিরকুট লিখছে """"
"জানিনা লেখাগুলো কার হাতে প্রথমে পরবে সে জেনো আমার শ্রদ্ধেয় পিতার কাছে পৌছে দেয় .........বাবা আমিতো তোমার সন্তান ছিলাম আমাকে কেন পাষাণের মতো জীবন্ত মেরেফেললে ,,কাউকে ভালোবাসা কি খুবই পাপ যা মেনে নিতে পারলে না,,আমাকে রাজরাণী দেখতে চাও বাবা তাই নেশাগ্রস্ত ছেলের কাছে তুলে দিলে বাবার টাকা দেখে বুঝলেনা সংসার করতে টাকা না দুটি মনের মিলন হতে হয় ,,,,আমি আজো পারিনি আমার মনে অন্য কারো বসাতে আর পারবও না,,,,আমার মৃত্যুর পর আমার শ্বশুর বাড়ির কারো সাথে জামেলা কর না ওনারা অযষ্ট ভালো মানুষ না হলেও তোমার থেকে ভালো পাষন্ড নয় ,,,,,,,পৃথিবীতে বাঁচতে দিলেনা ,,,,অরন্যেকে কথা দিয়েছিলাম যদি ওরে না পাই পৃথিবীতে থাকবো না ,,তাই শুধু বলছি ক্ষমা করে দিও অরন্যকে ও আমাকে ভালোবাসছিল শত্রুছিলনা আমার রাতের আধাঁরের আলোছিল সেই আলো নিভে গেলো বেঁচে থেকে কি করব ,,,,,আমি চলে যাচ্ছি সবার থেকে বহু দূরে ,পার যদি ক্ষমা করে দিও,,,
ইতি,
তোমার কলঙ্কনী মেয়ে
অরন্য : আজকেন যেনো খুব বেশি মনে পড়ছে পরীকে কিন্তু ফোনটা আর হাতে নিল না ,,,মনে মনে ভাবতে লাগলো ফোন নিলেই পরীকে কল দিতে মন চাইবে ,,,আমি চাইনা আমার জন্য সংসার জীবনে সমস্যা আসুক ভাবতে ভাবতে ,দুই চোখে কয় ফোটা পানি মুছে ড্রাগস নিতে শুরু করলো।
ভোর হতেই আজ পরী উঠছেনা রাতে ছেলেটাও বাসায় আসেনি ভাবতে ভাবতে শ্বাশরী দরজা যেই ধাক্বা দিয়ে খুলল দেখে পরীর দেহ ওরনা দিয়ে ফেনের সাথে ঝুলছে চিৎকার দিয়ে বসে পরল ,,ওমা কি হলো গো ?কে কোথায় আছো? একি সর্বনাশ হলো গো?
শ্বশুর : ঘুমথেকে উঠে এসে দেখে হতবাক কি দেখছে এসব ,,,,,,সাথে সাথে পরীর বাবাকে ফোন দিল !!!
পরীর বাবা : এসে চিরকুটটি পরল আর কাঁদতে কাঁদতে বলল কি করলাম মা ,,,আমি তোর মৃত্যুর জন্য দায়ী ,,,,মা রে আমি তোর জীবনের কালসাপ হয়ে রইলাম বাবা হয়ে ,,,,
চিরকুটটা আর কারো দেখার সৌভাগ্য হয়নি মেয়ের কথা মতো কারো কিছু বলেনি !!!!!!
পরীরদেহ দাফন করে পিতা শান্ত হলো ভালোবাসার সাথে যুদ্ধ করে !!
এক মাস পর
অরন্য : ফোনটা চালু করে ,,,,কাজ আর কাজ প্রোগাম করে সময় চলছে আরকি দিনশেষে রাতে কষ্টগুলো জেগে উঠে!!!
রাফি: হঠাথ এক দিন ফোন খোলা পায় বলে ভাইয়া তোমার কি হয় ফোন অফ করে রাখছ কেন !
অরন্য : পরীদের কোন খবর জানিস?
রাফি ; তোমার ফোনে অনেক ট্রাই করেছি কিন্তু রিস্পন্স পাই নি। শেষ পর্যন্ত পেলাম কিন্তু সব শেষ হওয়ার পর ।
অরন্য ; কেন যা হওয়ার তো আগেই হয়েছে আবার নতুন করে কি হলো ? আর যার জন্য ফোনটা নিয়েছিলাম সেই অন্যকারো তাই বন্ধ করে ফেলছিলাম,,এখন নিজের কিছু প্রয়োজনে ব্যবহার করছি|
রাফি: তুমি জানোনা পরী আত্মহত্যা করেছে এক মাস আগে ফোনটা ওপেন থাকলে আমি তোমাকে বলতে পারতাম !
অরন্য : কি বলিস এসব কেন কেমন করে......
রাফি : সব বলল সংক্ষিপ্ত করে !
অরন্য : চিৎকার করছে আর বলছে আমার পরীরতো সেদিনওই মৃত্যু হয়েছে যেদিন জোর করে বিয়ে দিয়েছে মনকে সান্তনা দিয়ে রাখছিলাম আজ আবার দ্বিতীয়বার এ কি নির্মম মৃত্যু হলো পরীর ,,বলে কান্না করছে তো করছে!
এর কিছুদিন পর মার্কেটে ঘোরাঘুরি করার সময় অর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু মহিব এর সাথে দেখা হয়। দেখতে অনেকটা পাগলের মত লাগছিল বেচারা কোলে একটা দুধের বাচ্চা নিয়ে মানুষের কাছে সাহায্য করছিল। অর কথা শুনে জানলাম অর স্ত্রীর দুটো কিডনিই নষ্ট। অন্তত একটি কিডনি প্রতিস্থাপন না করতে পারলে তাকে আর বাঁচানো যাবে না।
সেখান থেকে আর দেরী নয় সোজা চলে গেলাম হাসপাতালে।।
অরন্য : হাটছে হাটছে সাগরের জলঘেসে আর পরন্ত সূর্য ডোবা দেখছে ........হে সূর্য আমার জীবনথেকে সব আলো নিয়ে গেলে এখন শুধু মৃত্যুর প্রহর ঘুনছি,,,,পরী অপেক্ষা কর আর বেশীদিন দূরে নাই আমিও তোমার কাছে চলে আসবো ,,,তুমি নাই তাই বাঁচার কোন প্রেরণা নাই ,,,,,আমি ইচ্ছেকরে কিডনিটা দান করেছি যেই একটা ছিল প্রতিরাতে তোমায় হারানোর ব্যথায় অশ্রুসিক্ত হয়ে দূষিত হয়ে গেছে ,, আমার মৃত্যুর পর তুমি আমার হবে সেই বিশ্বাসে দিনগুনছি,তোমার মতো পারছিনা নির্মম সাহসীকতার পরিচয় দিয়ে নিজের ভালোবাসা পবিত্র রাখতে,,,,চলতে চলতে মিশে গেল সূর্য ডোবার অন্ধকারে কোন এক অনন্ত কালের আধাঁরে !!এভাবে ঘটে গেল
দুটি জীবনের ভালবাসার ইতি
অরন্য পরীর ইতিকথা
লেখকঃ অরন্য রানা
সংক্ষেপ গল্প সুত্র
গল্পগ্রন্থঃ দূরে গেলেই ভুলে যায় মানুষ
গ্রন্থাকারঃ এম এম মিঠু
প্রকাশকালঃঅমর একুশে বই মেলা ২০১৮
পরী : প্রতি সকালে তার আদরের ,হাসনা হেনা,,গোলাপ ,বেলী ,ঘাসফুল,,,,লজ্জাবতি গাছগুলোকে পানি দিচ্ছে আর ফুল গুলোকে আনমনে দেখছে ,,গুন গুন করে রবীন্দ্র সংগীত গাইছে,,,,,অরন্যের রুম থেকে টিং টিং শব্দ শুনে এগিয়ে গেল দরজার ধারে,,,,মাথায় বালিশ দেখে মিট মিট করে হাসছে,,,,,কিছুক্ষন দেখে সামনে গিয়ে পায়ে চিমটি কেটে বলে ,,,,এই যে কানের কাছে বাঁশি বাজছে আর উনি ঘুমাচ্ছে!
অরন্য : হুম হুম ঘুমের ঘোরেই বলছে!!
পরী : ভাইজান আপনি উঠবেন কি ,আপনার ডান্স ক্লাস কিন্তু আকাশে উঠবে!!
অরন্য : ঐ কেরে বলে ,,লাফ মেরে উঠে,,আরে আমাকে এত আস্তে আস্তে ডাকছো কেন আর জোরে ডাকলেইতো উঠে যেতাম !!
পরী :হুম তোমারে ডাকার জন্য মসজীদের মাইক এনেও কাজ হবে না,,,,
অরন্য : ঠিকই বলেছ ,সকালে ঘুম থেকে উঠতেই মন চায় না,,
পরী :বউ নাই তাতেই এই অবস্তা বউ আসলে বোধয় বোমা মেরে উরাই ফেললেও উঠবা না,,,
অরন্য :কথা বলছে এর ভীতরে রেডী হতে শুরু করেছে,,,,,,,বলে যাই আজ নাস্তা খাওয়ার সময় নাই,,মামীকে
বলে দিও আমি চলে গেছি,,,,
পরী :ঠিক আছে বলব,যাও
অরন্য:সিড়ি দিয়ে নামছে
মামা :উঠছে ছাদে যাবার জন্য ,,,কিরে কোথায় যাস,,,এভাবে দৌড়াইয়???
অরন্য :মামা একটু কাজ আছে,,আপনি ভালো আছেন!
মামা : হুম,,,নাস্তা খেয়ে যাইছ ,
অরন্য : না ,,মামা দেরি করে ফেলছি,ok যাই মামা!
মামা : কিরে পরী তোর গাছগুলোর কি অবস্থা!
পরী : আর বল না বাবা ,,সবকয়টা গাছ বাদর বড় হচ্ছে কিন্ত ফুল ফুটে কিপটামি করে,,
মামা : পরীর বাবা মেয়ের কথা শুনে হাসতে লাগলো,চলে নীচে …
মামা : খাবার টেবিলে আসছে স্ত্রীকে বলছে খাবার দাও ,,,আর ওদের ডাক…..
মামী (পরীর মা):পরী খেতে আস ,,রিমুকে ডেকে আসাসি!
পরী: আপু ভাত খেতে আস মা ডাকছে বলে টেবিলে চলে গেল !
মামা (পরীর বাবা): আব্বু কাল পাবেল ভাইয়ে হলুদ ,আমার কিছু টাকা লাগবে কেনাকাটা আছে,,,,,,,বলে চেয়ারে বসে ভাতের পেলেট এগিয়ে নিল,,,
অরন্য : সবাই খাচ্ছ ভালো সময় আসছি ,,অনেক ক্ষুধা লাগছে মামী জলদী খাবার দাও !
মামা: সারাদিন কই থাকো কই ঘুরিস ,ঠিকমত খাবার দরকার নাই শধু টইটই , বলে খাচ্ছে উনি??
রিমু : পরী তুই এ চেয়ার থেকে উঠ ,,আমি এখানে বসব বলে উঠিয়ে দিল,,,,,মা তুমি এসব কি যাতা রান্না কর ,,,ছোট মাছ আমি খাইনা জানো না!!!
মামী : রাগ না দেখিয়ে তোর বাবাকে বল।
অরন্য : কাল পাবেল এর গায়ে হলুদ তোমরা সবাই কখন যাবে মামী?
রিমু :কখন যাবে যখন হলুদ দিবে গিয়ে দিয়ে এসে পরব সবাই ,,,
পরী :অরন্য ভাই তুমি হলুদে নাচবে কিন্ত ,,সবাই দেখবো ,,,তুমি ভালো নাচ পার সবাই জানে কিন্ত দেখা হয়নি !
মামা :পারবে না লেখাপড়া রেখে ছোটকাল থেকেই শিখছে এই ফালতু কাজ ,আমার বোনটিও সুন্দর ছোট বেলাই নাচের স্কুলে ভর্তি করেছে,,,কি বলব বলার কিছুই নাই,,,উঠে চলে গেল??
অরন্য : পরী যদি শহীদ না হই ইন্নাশাআল্লাহ দেখতে পারবি চিন্তা না করার কোন কারন নাই ,,বলে চলে গেল?
পরী : হুম দেখতে চিন্তা করব না ছাই ,,
*****পরের দিন*******
অরন্য :বীয়ে বাড়িতে ,সবাই সবার কাজ নিয়ে ব্যস্ত ,,,মিটমিট করে রুমে ডুকে এই ,,ভাই কালতো অন্যজনের হয়ে যাবেন শেষ ইচ্ছা থাকলে বলুন??পাভেল : শেষ ইচ্ছা পরে তুই কালকের ঘর সাজানো আর গাড়ী সাজানোর জন্য ফুল কিনতে যা ,,,আসতে যেতে তিন ঘন্টা লেগে যাবে,তোর দায়িত্বে এ কাজ শেষ করবি !!!
অরন্য : টাকা নিয়ে সাথে ছোট দুই তিন জন ছোট ভাইকে নিয়ে চলে গেল!!!সবাই একের পর এক হলুদ লাগিয়ে চলে গেল...
অরন্য :রাত ১২টাই ফুল নিয়ে বাড়ীতে আসলো,,,,,রাস্তায় ঝেম ছিল আবার কয়েক জায়গা ঘুরে ফুল ভালো পেয়েছি!!!
মামী :অরন্য তুমি কাজটা ঠিক করলে না কত আশা করছি সবাই নাচ দেখবো তুমি আসছো অনুষ্ঠান শেষ করে !!!!!
অরন্য :সবার বকাবকি শুনে বলে মামী গো আমার কোন দোষ ছিল না সব দোষ ঐ ফুলের ।
পরের দিন হৈহুল্লর করে বাড়ীতে বউ নিয়ে এসেছে সবাই নতুন বউ দেখতে ছুটছুটি করছে?
অরন্য :নতুন বউয়ে কাছে গিয়ে বসছে ,,,আর মাঝে মাঝে নতুন ভাবীর চীমটি খাচ্ছে,,,নতুন বউ বলছে দেবরমশাই আপনার নাচ দেখবো,,,আমি জানি আপনি সুন্দর নাচ জানেন!!!
মামী : হুম অরন্য আজ নাচতে হবে ,কাল বেঁচে গেছ,,,,,পাশাপাশি আরো কয়েকজন বলে উঠলো?
অরন্য : এর ভীতরে পরীকে অদ্ভুত ভাবে দেখছে ,,এ যেন সত্যিই পরী এত সুন্দর লাগছে,,,আগে কখন এমন করে সৌন্দর্য্য দেখেনি,,ভালোই লাগছে,,,,,,
পরী :জী ভাইয়া নাচো আমরা একটু দেখি ?
অরন্য : যে গানের নাচবো পাটনার লাগবে কারো আমার সাথে নাচতে হবে!!!!
সবাই পরীকে বলতে শুরু করল পরী নাচো সাথে তুমি তো ক্লাসিক গানের তালিম কর আর ভালো রবীন্দ্র সংগীত তুমি পারবে!!!!!
পরী : রাজী হচ্ছিল না ,,,সবার পিরাপিরিতে বলে মা যদি বলে তাহলে?
মামী : মামীকে সবাই ধরে আন্টি আজকের জন্য অনুমতি দিন,,,মামী রাজী হলো?
অরন্য আর পরীর খুব সুন্দর একটা গানের নাচ হলো সবাই খুব পছন্দ করলো?
অরন্য :বিয়ে বাড়ীর হৈ চৈ শেষ রাতে ঘুমাতে যাবে দেখে টেবিলে একটি লাল গোলাপ সাথে একটি চিরকুট" সুন্দর নাচের জন্য ছোট একটি উপহার ,পরী"৷৷ পরে ফুলটি নাকের কাছে নিয়ে একটু শ্বাসনিয়ে বলল ধন্যবাদ পরী এরপর ফুলটা নোটবুকে রেখে দিয়ে বিছানায় গেল ! ডান পাশ বাম পাশ করছে কিন্ত ঘুম আসছে না শুধু ভেসে উঠছে পরীর সেই হাসি মাখা মুখখানি !!
পরী : শুয়ে শুয়ে অরন্যের সেই নাচের সময় যে হাতদুটো স্পর্শ করেছে বার বার মনে করছে ,জীবনে প্রথম কোন পুরুষ আমার হাতদুটো ধরেছে,এ পাশ ও পাশ হচ্ছে আর নিজে নিজেই বলছে ,পরী তুই এসব কি ভাবছিস ঘুমা বলছি বলে গালে দুইটা নিজেই থাপ্পর দিয়ে ঘুমাতে চেষ্টা করল !**৩ দিন পর**
সকালের নাস্তা শেষ করে
রিমু::মা আজ বাবার শরীল ভালো না আমি পরীকে স্কুলে দিয়ে আসব অরন্যকে বলো নিয়ে আসতে!
পরী : আমার সাথে কে যাবে মা,,,,,
রিমু :কেন দেখিস না আমি রেডি হয়ে বসে আছি ,চল এ বলে উঠবে আর অরন্য নাস্তা করতে এসেছে ,,,,,,,
অরন্য : আজ যেন অন্যদিন থেকে অন্য রকম অনুভব করছে কিছুটা লজ্জিত যেন মনের অজান্তেই অপরাধী সে,,আবার পরীর দিকে দুইবার চোখাচোখি হয় ,,
পরী : ইশারা করে বলে কি ,,অরন্য ও মাথা নেরে বুঝায় কিছুনা,,,দুজনে চলে যায় ,,অরন্য খেতে বসে !!
মামী : অরন্য খেয়ে চলে যাবে তখন বলে ,বাবা আজ তোমার মামার শরীলটা ভালো না তুমি পরীকে স্কুল থেকে নিয় আসতে পারবে ??
অরন্য : জী মামী পারবো ,,,টেনশন করনা নিয়ে আসব ,,মামাকে ডাক্তারের কাছে নিয় যেও ??
মামী : আরে ডাক্তারের কাছে নিতে হবেনা সারা বছর আর্মি তে থেকে অনেক কিছুই শিখে আসছে আর শুধু শিখেনি যে বেশি জোরে জোরে কথা বললে পেশার বাড়ে ,আর্মি বলে কথা । রিটায়ার্ড করলে কি হবে ঝাজটা এখনো রয়ে গেছে,,,,,
অরন্য : হুম তাইতো রিমুকে বিয়ে দিয়েছে আর্মির সাথেই দুইজনে আকাশ পাতাল স্বভাবের ,ok মামী আমি যাই কলেজে কাজ আছে ।
পরী : স্কুল ছুটি হয়েছে সাথে তিন চার জন বান্ধবী হাসতে হাসতে বের হচ্ছে ,গেট থেকে একটু দূরেই দেখা যাচ্ছে অরন্য দাড়িয়ে আছে ,,,একজন বান্ধবী বলে আজ তোর ভাই এসেছে,,,আরেকটা বলে তোর ভাইটাকে বাবু বাবু লাগছে,,,,,আরেকটা বলে উঠে তোর ভাইকে বলিশ বিয়ে করার সময় বেবি বিয়ে করে ,যে সুন্দর করে হাসে হা হা হা হা
পরী : দূর তোরা কি বলিস ,,এতদিন নিজের বাড়ী থেকেই প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছে ,আসা যাওয়ায় অনেক সমস্যা ও সময়ের ব্যাপার তাই আমাদের বাসায় থেকেই এ বছর পরীক্ষা দিবে ,,,আর অরন্য ভাইকে সবাই আদর করে, দেখিস আবার তুইও.... হাহহাহা আচ্ছা যাইরে কাল দেখা হবে ।
অরন্য : কিরে আমাকে তোর গার্ড বানিয়ে ছাড়লো মামী ,চল বলে রিক্সা ডাকি,
পরী: আর একটু পরে যাই না ?
অরন্য ; কেন ?
পরী ; না , এমনিতে
দুপুরে খাওনি আজ তাই না,,,,
অরন্য : হুম তোর জন্যই দাড়িয়ে ছিলা১ঃ৩০থেকে ভাবছি তোকে নিয়ে বাসায় গিয়ে খাবার খাবো!
পরী : তুমি জানো না আমার ছুটি হয় ৩ টায় এতক্ষণ পায়ের ব্যায়াম করেছ কেন??
অরন্য : সমস্যা নাই ,,এই রিক্সাওয়ালাকে ডেকে রিক্সায় উঠে যেতে যেতে বলে রিক্সাওয়ালাকে বলছে, ভাই দেইখা চালান ,বিয়ে করিনি চাকার নিচে ফেলে বউকে বিধবা কইরেন না ,,,,
পরী : হাসি দিয়ে বলে ,,,তোমার বউ এখন বেবিই বুঝছ,,,,,
অরন্য : বেবি হলে ত ভালোই ,,এ বলে ওর দিকে চোখ পরে দেখে ও চোখ ছলছল করছে ,,কি যেন বলবে পারছে না
পরী : আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই ,রাগ করবে না বল??
অরন্য : বল কি বলবি ,,,রাগ করব কেন !!!
পরী : আমি তোমাকে ভালবাসি ,,,তোমার ভালোবাসা আমার চাই--
অরন্য : কি বলিস কিভাবে বললি? ,,মাথা ঠিক আছেতো নাকি স্বপ্নে বলছিস??
পরী : হাত দুইটা ধরে কান্নাশুরু করে
বিশ্বাস কর আমি তোমাকে ভালোবাসি
অরন্য : আরে কাঁদছ কেন পাগলী,,ঠিক আছে
বুজলাম কিন্তু এভাবে কি ভালবাসা হয়? তুমি তো কিছু না ভেবেই বলে দিলি কিন্তু আমাকে তো ভাবতে হবে।
পরী : রাতে ছাদে উঠে ,,ওর গাছগুলোকে স্পর্শ করছে আর ভাবছে অরন্য হ্যা বলবেতো ,,না বললে আমি কি করব আমি ওকে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারছিনা !!!!
(কিছুক্ষন একা একা ভেবে ছাদ থেকে নেমে)
মাঝে মাঝে অরন্যর রুমের দিকে উঁকি মারছে আর দেখতে চেষ্টা করছে অরন্য কি করে !!!!!
অরন্য : রুমে বই নিয়ে বসছিল কিছুতে মন বসছে না বলে ধুর বই খুললেই পরীর মুখ যেন পাতায় পাতায় ভেষে উঠছে ,,কি যে করি এ তো দেখি আমাকে সবখানে জালাচ্ছে,,,,এ বলে বই টা ছুড়ে ফেলে দেয় টেবিলে টেবিলে ,তখনই দেখে পরী দাড়িয়ে দরজার একপাশে চোখ গুলো যেন কিছু খুজছে কিন্ত পাচ্ছে না,,,,,,
,
পরী : আসবো কি?
অরন্য : হুম আস ,,,তুমি? কি খবর?
পরী : একবার হুম বলে আস্তে করে আবার বলে না !
অরন্য : তুমি জানো আমাকে একটা মেয়ে ঘুমাতে দিচ্ছে না ,,,চোখ বন্ধ করলে তাকেই দেখি,,,বই খুললে ,,,হাটতে গেলে যেখানেই যাচ্ছি বিচ্ছু হয়ে কামরাচ্ছে বলতো কি করি!!!
পরী :কেন কোন মেয়ে ,তাঁর মানে তুমি অন্য কাউকে ?? আমি তোমাকে ভালোবাসি তুমি অন্য কারো কথা ভাবছ বলে চোখগুলো কান্নামাখা করে ফেলছে আর বলছে আমি এসেছিলাম হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা দেওয়ার জন্য আর তুমি কি না ///
অরন্য : ঐ তুমি কি বোকা কাঁদছ কেন, দেখ নেকা মেয়েদের মতো কাঁদবেনা। যা বলি শোনো, সে যদি তুমি হও খুশি হবে?
পরী: জানি না
অরন্য : সে আর কেউ না। সে হলে তুমি ,,আমার সর্গরাজ্যের পরী ,,তোমাকে আমি হৃদয়ে থেকে সরাতে পারছিনা ।
পরী ; সরালে বুঝি শান্তি পাও ঠিক আছে এই মুখ আর কখনো দেখতে হবে না তোমার । (এই বলে যেই উঠতে যাবে অরন্য হাত ধরে একটা টান দিয়ে বুকের সাথে নিবে) কাঁদাবে না তো আমায়?
পরী : চোখটা মুছে একটু হাসি দিয়ে বলছে সত্যি বলছো? আমি আজ অনেক খুশি ,,,,,,বলে অরন্যকে জরিয়ে ধরে বলে ,I love you so much.....আর কানে কানে বলল এই জীবন কেন পরের জীবনেউ তোমায় ভুলবো না। বলেই একটা দৌড় ------
অরন্য : চুপ করে দাড়িয়ে রইল আর হতবাক হয়ে ভাবল ও কি করছে এ সব? পাগল হবার তো বাকি নাই ,বাকিটা আমাকে করবে ,,বলে শুয়ে পরল ।
পরী : গানের স্কুলে যাবে আজ শুক্রবার বলতেই সারাদিন একাডেমিতে ,সকালে গানের ক্লাস আবার দুপুরের পর থেকে তালিম পাঁচটা পর্যন্ত ,,,,বাড়ী থেকে ছয় সাত কিলোমিটার দূরে তাই একবারেই থেকে যায় ,,,,আজ তাই হবে ,,,,ক্লাশ করছে কোন এক ফাকে দেখে কে যেন বার বার জানালা বরাবর কিছু খুজছে,,,ভালো করে তাকিয়ে দেখে অরন্য বাইসাকেল নিয়ে দাড়িয়ে আছে ?
পরী : মেডাম কে বলে বাহিরে গেটের কাছে গিয়ে বলে তুমি এখানে কেন ,,,আমার তো বিকাল হবে ,,চার পাঁচ ঘন্টা কি দাড়িয়ে থাকবে নাকি ?
অরন্য : খুব খারাপ লাগছিল ,,দেখতে ইচ্ছে করছে তাই এসে পরেছি,,,সমস্যা নাই আমি আছি ক্লাস করো একসাথে নিয়ে যাব?
পরী : থাকো আর হাত পায়ের ব্যায়াম কর ,আমি যাই বলে ক্লাসে চলে গেল !(কিছু গানের ক্লাসের দৃশ্য )
অরন্য : সাইকেলটা পাশে নিয়ে মাথাটা নিচু করে বসেছিল ,
পরী : মাথায় একটু ধ্বাকা দিয়ে ঐ ঘুমাচ্ছ নাকি বলে হাসতেছে?
অরন্য : ওর হাসিমাখা মুখটার দিকে তাকিয়ে ভূলে গেল এতক্ষনের অপেক্ষা ,,,,আসছো চলো আজ তোমাকে সাইকেলে করে নিয়ে যাবো ।
পরী : পড়ে যাই ,,,,,যদি?
অরন্য : শক্ত করে আমাকে ধরে বস পড়বে না,,,এ বলে সাইকেলে উঠে গেল !
পরী : মনে মনে আনন্দ পাচ্ছিল প্রিয় মানুষটির সাথে সাইকেলে চড়ার মজাই আলাদা ।
অরন্য : চালাচ্ছে আর বলছে পরী আমি বোধয় বাঁচবো না ,কিযেন হয়েছে কিছু ভালো লাগেনা!!
পরী : তাহলে আমার কাছে ঔষধ আছে নিবে?
অরন্য : কি বলতেই দেখে পরী একটু পর পর কানের কাছে এসে বলছে চলো আমরা পালিয়ে যাই..(অরন্য এটা শুনেই ধপাশ)
আবার পুনরায় সাইকেলে উঠে বাসায় চলে গেল।
সন্ধ্যার পর জ্যোন্সা রাত্রে
অরন্য :ছাদে দাড়িয়ে পরীটা আসছেনা কেন একটু দেখব ও বুঝোনা!
পরী : অরন্যকে ঐ বলে কানের সামনে এসে ,কি কর ,,,ভালো আছো,,,,
অরন্য : ভালো আর থাকতে পারলাম কিভাবে মাথার পোকাটা যে জালাচ্ছে?
পরী : আমি কি পোকা নাকি হুম তাহলে তুমিতো আমাকে আরো বেশী জালাও তুমিকি ?
অরন্য : আমি তোমার অর্ধেক দেহ যা আলাদা করতে চাইলেও পারবে না !ঠিক ঐ চাঁদ আর জ্যোন্সার মত। এর মাঝে যেমন। পরী অরন্যের হাতে হাত রেখে -
পরী : তখন গুনগুন করে গাইতে লাগলো ,,,,,আমারো প্রারাণে যাহা চাই তুমি তাই গো..................
অরন্য : গান শেষ হতেই দেখে পরীর চোখগুলো ছলছল করছে ,,,,কি হয়েছে কাঁদছো কেন?
পরী : আমি তোমাকে হারাতে চাইনা ,,,বাবা যদি আমাদের সম্পর্ক্টা না মানে কী করব জানো? মরে যাবো।।।।
অরন্য : কি বল এসব? পরীক্ষাটা আর কিছুদিন আছে মাত্র এর পর একটা জব পেয়ে নিই,,আর তুমি আমি ঠিক থাকলে ঠিকই মানবে ?
পরী : বাবা যে কর্কশ রাগী আর কখন আমাদের চাওয়া পাওয়া বুঝেনি আজ বুঝবে কিনা জানি না ,তবে আমি তোমাকে ছারা কিছু বুঝিনা চাইওনা?
অরন্য : টেনশন কর না সব ঠিক হয়ে যাবে?
**দৃশ্য ৯
পরী : রুমাল সেলাই করছে সেখানে অরন্যের নাম লিখছে তার বোন রিমু দেখতে পেয়ে বলে কোন দিকে সুর্য উঠছে তুই রোমাল সেলাই করিস ,,,,,
পরী : না আপী এমনি দেখছি পারি কিনা,,,,,
রিমু : তোকে আজকাল একটু অন্য রকম লাগছে কিছু হয়েছে?দেখ প্রেম টেম এসব লাইফে সিরায়াস করে নিবি না,,,,দেখিসনা আমি রিলেশন করার পরও বাবার ইচ্ছাই নামের আর্মি আর কামের বোকাকে বীয়ে করছি ,,,,,তাই বলে দিলাম লেখাপড়ায় মন দে আর বেশি বাড়িস না ফল ভাল হবে না।
পরী : আরে না কিছু না আপী??
(এর মাঝে একদিন)
রিমু : ছাদে গিয়ে দেখে ফেলে ওরা কথা বলছে কিন্ত দুজনের মুখ দেখে বুঝেতে বাকি রইল না তাদের মাঝে কিছু যে আছে!!পরী তোকে মা ডাকছে নিচে যা।
পরী : চলে যায় !
রিমু : অরন্য তোমার সাথে রিমুর কোন রিলেশন আছে? সত্যি বলবে
অরন্য : হুম ,আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি?আর এটা অন্তত তোমার বোঝা উচিৎ।
রিমু : যদি তাই হয় তবে তোমায় প্রথম আর শেষ বার বলে দিচ্ছি এখানেই থেমে যাও ,আর এ সম্পর্ক কেউ মানবেনা ,,,আমিও না ,,,বলে চলে যায় ...তখন অরন্য বলে দাঁড়াও , রিমু, ভালোবাসা সবার ভেতরে জন্ম নেয় না । জন্ম নিলেও তাঁ অনেকে বাড়তে দেয় না। আর এই গুনটা আর কারো না থাক তোমার আছে ।আশা করি যা বোঝাতে চেয়েচগি সেটা বুঝেছো । এবার তোমার যা করার করো। আর হ্যাঁ এবার আসতে পারো ।
মামী ( পরীর মা ): রিমুর মুখে সব শুনে তেলে বেগুনে জলে মেয়েকে গিয়ে বলে এসব কি শুনছি পরী ,,তোর বাবা কে তো চিনিস কেটে দুই টুকরা করে ফেলবো তারপর ওর কাছে দিবেনা ?
পরী : মায়ের হাতদুটো ধরে বলে ,,মা কেন ,,আমি ওকে অনেক ভালোবাসা please বুঝ, আর আমরা তো এখনি বিয়ে করছি না বা পালিয়েউ যাচ্ছি না আগে ওর একটা জব হোক।, তার পর যা হবার হবে
রিমু : কাজ নাই তো ,বোনের ছেলে আছে ভালো মেয়ের জামাই হিসেবে বাবা মানবেনা ,এমনি বাবা নাচানাচি পছন্দ করেনা আর ও ভিবিন্ন অনুষ্ঠানে নাচে শখ হোক আর যাইহোক ,,,সবাই ভালো চোখে দেখে না,,,
মামী ( পরীর মা ) আজকের পর থেকে তুই ছাদে যাবি না আর ওর সাথে কথা বলবি না ?
পরী : স্কুল থেকে বের হচ্ছে দেখে অরন্য দাড়িয়ে ,,,,,,
অরন্য : কি ব্যাপার তুমি কাল ছাদে যাওনি কেন আমি খুব টেনশনে ছিলাম ফোনও ধরনি!
পরী : কাল মা আপী খুব বকেছে ফোনটা তাই ভয়ে অফ করে রাখছি
অরন্য : এ জন্যই আজ মামী আমার সাথে কথা বলেনি রাগ দেখাচ্ছিল!
পরী : তোমার সাথে বাসায় গেলে জামেলা হবে ,,,রাতে কল দিব কথা হবে যাও ?
মামা (পরীর বাবা): অরন্য বাসায় ঢুকে ওর রুমে যাচ্ছে এমন সময়( মামা) বলছে ,,,এখানে আসোতো শুনে যাও।
অরন্য : জী মামা,,,কিছু বলবেন,,,
মামা : পরীক্ষা শেষ হতে আর কতো দিন বাঁকি আছে?
অরন্য : বেশীদিন না দুই তিন মাস ,
মামা : ঠিক আছে যাও ?পরী তখন দূর থেকে তাদের কথা শুনছিল ?
দুপুরের খাবার টেবিলে সবাই যখন খেতে বসবে অরন্য আসছে খেতে মামা পরীকে বলল তোর রুমে যা পরে আসবি !
অরন্য বুঝেও খাবার টেবিলে বসল সবাই যেন অপরিচিতমত ব্যবহার করছে!
মামী : অরন্য তোমাকে আমি বলে দিলাম আমার মেয়ের সাথে কোন রকম মেলামেশা করবা না,,আর তোমার সাথে মেয়ে দিব ভাবলে কিভাবে?
অরন্য : চুপ করে শুনে উঠে পরল আর ভাত খেল না!!!
পরেরদিন
আবার স্কুলের সামনে দাড়িয়েছিল কিন্ত পরী আর আসল না ,বুঝতে পারল পরীকে স্কুলে আসতে দেইনি!!
অরন্য : কলেজ গেইটে দাড়ানো কয়েকজন ছেলে এসে উড়াধুরা মারতে শুরু করল !!!কিছুই বুঝল না কেন এমন হলো,,,পরে একটা ছেলের যখন আর একজনকে বলছে প্রেমের শখ মিটে যাবে দিছি!! তখন অরন্যর বুঝতে বাঁকি রইল না কার কথায় এটা হলো।
মামা : বসে আছে বারান্দায় অরন্য এসেই ওনার কাছে গিয়ে দাড়ায়?
অরন্য : আপনি আমাকে মানুষদিয়ে মার খাওয়ালেন আপন মামা হয়ে ,,
মামা : তুই যদি আমার বোনের ছেলে না হতিস গুলি করে মেরে নদীতে ফেলে দিতাম আর এ বাড়ীটা আমার মায়ের নামে দেখে তুই আসতে পারিস নইলে কুকুরের মতো বাহির করতাম?
অরন্য : আপনি যা করছেন ঠিক করেননি ,পৃথিবীর কারো সাধ্য নাই আমাদের আলাদা করে ,আমি পরীকে ভালোবাসি ভালোবাসবো....বলার সাথে সাথে মামা
অরন্যের গালে একটা থাপ্পর দিয়ে বসল ,,,,,
অরন্য : গালটা ধরে চুপ করে বের হয়ে।
পরী : খুবই বিষন্ন হয়ে পথের দিকে তাকিয়ে আছে এই বুঝি আসে ,,,,মনে মনে ভাবছে তিন দিন হয়ে গেল অরন্য বাসায় আসে না সেই যে বের হয়েছিল বাবার সাথে জীদ করে ,,,,,,খুব ইচ্ছে করছে অরন্য তোমাকে
,আল্লাহ প্লিজ অরন্য জেনো বাসায় ফিরে আসে মনকে আর মানাতে পারছিনা ।
মামী (পরীর মা):কই গো শুনছ পরীর বাবা বলে ডাকতে ডাকতে রুমে যাচ্ছে ,চোখটা পরল পরীর রুমে দিকে ,,,,,কিরে মন খারাপ করে জানালার ধারে কি করিস ,যা হইছে সব ভুলে যা এতে সবার মঙ্গল নইলে আরো খারাপ হবে বলে চলে গেলেন ।
অরন্য : বিকালে বাসায় আসল ,এসেই শুয়ে শুয়ে ভাবছে কাল ঢাকায় চলো যাবো ঐখান থেকে ইন্ডিয়া জন্য টিকেট কাটবো ১মাসের জন্য ঐখানে থাকতে হবে প্রোগামের জন্য যে করে হোক পরীকে বলতে হবে ,আজ রাতটা থাকি দেখি বলা যায় কিনা ,বলে শুয়ে শুয়ে বই পড়তে লাগলো!!!!
পরী :রাতে সবার ঘুমের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে ,,দেখে এক সময় মায়ের রুমের দরজাটা নক হয় লাইট অফ হয় !এখন বাকি আপীর সেতো সহজে ঘুমাবে মনে হচ্ছেনা যেভাবে কুটনামির হিন্দীসিরিয়াল দেখছে ,
রিমু :টিভি দেখছে আর কিছু একটা খাচ্ছে আর হাসছে ,,,,মনে মনে একবার ভাবছে বাদরটা আজ এসেছে পরীকে আজ চোখে চোখে রাখব,,
পরী :এক ঘন্টা পর দেখল রিমুর লাইট অফ হইছে ,,,,তখন আস্তে আস্তে দরজাটা খুলে যাওয়ার সময় আর লাগালো না চাপিয়ে রেখে গেল………ছাদে উঠেই দেখে অরন্য মাথাটা নিচের দিকে করে ছাদের রেলিং এ হাত দুটি রেখে দাড়িয়ে আছে!
পরী :পিছন দিয়ে অরন্যকে জরীয়ে ধরে কানের কিছে গিয়ে বলে ,আমায় ছেড় থাকতে বুঝি ভাল লাগলো?
অরন্য : মুখটি ঘুরিয়ে তাকায় ছলছল করছে চোখের জলগুলো ,পরীর দুই বাহুতে ধরে বলে উঠে কেমন আছ তুমি ,,,,খুব কষ্ট হচ্ছিল আমার জন্য তাইনা?
পরী : অরন্য আমরা মনে হয় আর একসাথে বাঁচতে পারবো না। ওরা কেন বোঝেনা আমাদের এই পবিত্র ভালবাসা?
অরন্য : please চিন্তা করনা আমি একটা জব নিলে ঠিক হয়ে যাবে আর কাল আমি ঢাকা চলে যাচ্ছি সেখান থেকে প্রোগাম করতে ইন্ডিয়া যাব ,,,,আমার জন্য অপেক্ষা কর প্লিজ,,,,,একটা গান বলনা!!! শেষবারের মতো শুনে যাই!
পরী : গানের সুর ধরল (খেলা ঘর বাধতেলেগেছি আমার মনের ভীতর .....কত রাত তাইতো জেগেছি ....বলব কি তোরে.......প্রভাবাতে পথিক ডেকে যায় .....অবশর পাইনে আমি হায় ....বাহিরে খেলায় ডাকে যাব কি করে.......)
রিমু: এর ভেতরে উঠে খুব চমৎকার মনোরঞ্জন হচ্ছে বলে পরীকে হাতটি ধরে টান মেরে অরন্যের সামনে থেকে একটু দুরে এনে বলতে শুরু করল কত বড় সাহস এত রাতে ওর সাথে দেখা করতে এসেছিস
পরী : আপু প্লিজ আমাকে একটু দয়া কর একটু বুঝ বলতেই ওর গালে চর বসিয়ে দিল যা ঘরে যা !!!
অরন্য : শুধু চেয়ে দেখল চলে যাওয়া চোখের পানি গুলো মুছে রুমে চলে গেল !
অরন্য পরের দিন সকালে ঢাকায় চলে গেলো।
অরন্য : বিমান বন্দর এসে নামল এয়ার পোর্টে আরো কয়েক জন সহকর্মী যাচ্ছিল ,,পাসপোর্টটা হাতে নেওয়ার সময় ফোন টা পকেটে রাখার সময হয়তো কারো নজর পড়েছিল,,কাউন্টারে টিকেট পাসপোর্ট দেখানোর সময় পকেটে হাত দিয়ে দেখে ডেবিট কার্ড টাকা আর ফোন নাই !!! ফোন হারালো এতে সমস্যা নেই ফোনে যতো পরীর স্মৃতি ছিল সেগুলোও হারিয়ে গেল চিরোতরে।
অরন্য : বিমানে উঠার আগ মূহর্তে অন্য একটি ফোন দিয়ে পরীকে কল দিল !!পরী : হ্যালো বলেতে পরী ফোনটি হাত থেকে তার বোন নিয়ে বলল বেয়াদব কোথাকার আবার কেন নির্লজ্জের মতো ফোন করেছিস !
অরন্য : হ্যালো টুকু শুনেছিল কিছু বলার সুযোগ পায়নি ,,এর পর যাত্রা করল অন্যদেশের উদ্দশ্যে ।
পরী : সারাদিন কিছু খাইনি ,,,বিছানায় মূর্মুষ রোগীরমতো শুয়ে আছে !
মামী (পরীর মা) :রিমুকে বলছে তুই যা ওরে কিছু খাওয়াইয়ে রেডী কর সন্ধায় রনির বাবা মা আসবে পছন্দ হলে দিয়ে দিব !!!
রিমু : পরীকে বলে উঠে খেয়েনে ,,শুধু এক জলক তাকিয়ে আবার শুয়ে রইল উঠলো না !!!
রিমু : চেষ্টা করে পারল না চলে গেল
মামা ( পরীর বাবা): পরীর রুমে এসে ডুকল বলে আমার কথা মতো যদি না চলিস খারাপ রূপগুলো দেখতে বাধ্য হবি !!!
পরী : চিৎকার করে পায়ের নীচে পরে বাবা তুমি এমন কিছু করনা please.....
মামা(পরীর বাবা): তুই জীবনেও অরন্যকে পাবিনা আর যদি চেষ্টা করিস আমার মরা মুখ দেখবি সাথে ওর জীবনও আমি ধ্বংস করে দিব । হেরোইন মামলা অস্ত্র মামলা দিয়ে জেলে পচাঁবো এসব করা আমার জন্য ব্যাপার না ,,,যদি ওর ভালো চাস আমাদের কথা মতো চলবি, বলে চলে গেল......
রিমু : এসে কিছু খাবার নিয়ে ওর কান্নাদেখে খাবার হাতে নিয়েই চলে যায় !
সন্ধার পর রনি আর তার মা বাবা আসে দেখার জন্য
পরীকে ! সবাই বসা রনির মা বলে ভাবি (পরীর মায়ের উদ্যেশ্যে) নিয়ে আসেন পরী মাকে যদিও দেখার কিছু নেই পরীতো আমাদেরই মেয়ে।
রিমু : পরীকে গিয়ে বলে চল রেডী হতে হবে না চুলগুলো আচরে একটু ঠিকঠাক করে নিয়ে গেল !! তার পরও সবাই দেখে নিল একনজর
মামা (পরীর বাবা): সবার মতামত যেনে ১ সপ্তাহ বাদেই বিয়ের দিন ঠিক করলো
পরী : রাতে ভাবছে কি করবে
অরন্যকে বিপদের মূখে ফেলতে পারিনা আর যাই করি ,,,,তবে আমার কথা কি রাখতে পারব না মরতে হয় তাকে নিয়ে বাঁচতে হয় তাকে নিয়েই বাঁচবো কিন্ত অরন্যকে বাঁচানোর জন্য আমার ভালোবাসার কবর রচনা করতে হবে এটাই ভালো
কেউ যখন বুঝল না আমাকে ,সবাই তাদের জোর প্রয়োগ করছে আমি হেরে গিয়ে সবাইকে জয়ী করে দেই ,,,বলছে আর অজশ্র চোখের জল ফেলেই চলছে ???????
শুক্রবার সব ঠিকঠাক অনুষ্ঠান হবেনা শধু ছেলের বাসা থেকে কয়েকজন আসবে বিয়ে পড়িয়ে নিয়ে যাবে কারন দুই পক্ষের দূর্বলতা ছিল
পরী : বিয়ের সাজে বসা ফেমিলির কিছু আত্মীয় ছাড়া কাউকে বলা হয়নি ,ওর পাশে বসা ছিল যারা পরীর চিৎকার দেখে সবাই চোখ না মুছেও পারেনি!!!!
সারাটাদিন খুব কান্না করেছে অবশেষে কবুল শব্দটি বলতে বাদ্য হয়েছে !
সবাই পরীকে নিয়ে চলে গেল রনিদের বাসায়
রনি হলো পরীর স্বামী ধনীর দুলাল কিছু করেনা বাবার টাকা ওড়ায় ????
পরী : বাসর ঘরে বসা ঘোমটা দিয়ে !
রনি : এসে বলে কেমন আছো নামকি তোমার !!
পরী : আপনার সাথে কিছু কথা আছে আমার দয়া করে যদি শুনতেন!!!
রনি : কি কথা বলো ?
পরী : আমি একজনকে ভালোবাসি তাকে ভূলার আগ পর্যন্ত আমার সাথে কোন জোরপূর্বক সম্পর্ক করবেন না please
রনি : তুমি যাকে ভালোবাসতে তাকে বীয়ে না করে আমাকে কেন করলে ,,,,বিয়ে কি ছেলে খেলা !!!
পরী : আমি পরিস্থির শিকার বাবা কোনদিন মেনে নিবেন না !
রনি : ঠিক আছে তবে আমি যা করব মেনে নতে হবে
পরী : জী মানবো বলেন, কি??
রনি : আমি নেশা করি ,সবাই জানে তুমি হয়তো দুইদিনপর জানতে ,,,,আমি রুমে বসে নেশা করব কিছু বলবে না!!
পরী : ঠিক আছে আপনি যা মন চায় করুন কিন্ত আমার সাথে কিছু জোর করবেন না !
রনি : পরেরদিন বাসায় আসেনা রাত্রে
পরী : ভাবতেছে বাবা তুমি মেয়ের ভালো বুঝলেনা অর্থ দেখে বিয়ে দিলে কিন্ত মেয়ের জামাই যে নেশা গ্রস্ত রাতভর ক্লাবে বারে থাকে তা জানার সুযোগ হয়নি!!!কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে গেল !!!
শ্বাশরী : পরী দুইমাস তো হয়ে গেল একটা বাচ্ছা নাও আমার ছেলেটা যদি ঘরমুখী হয় !!
পরী : জী আম্মা বলে সরে গেল!!
রনি : রাতে নেশা গ্রস্ত অবস্থায় ডুকে রুমে !!
পরী : রনির অবস্থা দেখে ভয় পেতে শুরু করে ,,হিংস্র জানোয়ারের মতো লাগছে ,,ভয়ে খাটের কোনে চুপকরে বসে রইল !!
রনি: ঐ জমিদারের মেয়ে 2nd ক্লাশ মাল আমার হাতে তোর বাবা ধরিয়ে দিইয়েছে শালার পুতকে পাইলে দেখাইতাম,কিছুক্ষন বক করে শুয়ে পরে ,,,,
পরী : হাত পা সোজা করে দিয়ে মাথায় বালিশটা দিয়ে ঠিকমতো শুয়ে দেয় !
পরী : নীচে একটা বালিশ নিয়ে শুয়ে ভাবতেছে জীবনের সাথে পারছিনা আর অরন্য যদি মেনে না নেয় বিশ্বাস না করে আমাদের স্বামী স্ত্রী কোন রিলেশন হয়নি যে,,,,আর আমার দ্বারা অন্য কারো সাথে দৈহিক সম্পর্ক করা সম্ভব না ,,,,আমার সবটুকু কল্পনা বাস্তবতা জুড়ে শুধু অরন্য ,,,,,,কাঁদতে কাঁদতে আর একটা রাত চলে গেল !!
শ্বাশরী : কিরে মা সেই যে এলি আর তো ভুলেই বাবার বাড়ী যাওয়ার নামও মুখে আনলিনা
পরী : না মা আমি ঐ বাড়ীতে আর যাবনা যদি পারেন আমার লাশটা পাঠাবেন!
শ্বাশরী: এ কেমন কথা বললে ,আর তোমার হাবভাব আমি কিছুই বুঝিনা সারাদিন চুপচাপ থাকো কারো সাথে কিছু বলনা !তবে শোন আমি নাতিনাতনি চাই বলে দিলাম৷৷৷
পরী : রাতে বসে বসে ভাবছে ,,ভাবছিলাম অরন্যের সাথে শেষ কথাটা বলে সিদ্ধান্তে যাব কিন্ত দেখছি না আমাকে সবাই বাদ্য করবে পৃথিবীর আলো বাতাসগুলো ছেরে চলে যেতে ।
অরন্য : দুই মাস পরে দেশে ফোন ফোন কিনে পুরনো.... সীমটা উঠায় !! পরীর নাম্বারে কল ডুকেনা অফ নাম্বার !!
দুই দিনপর অরন্যের কাজীন (রাফি)ফোন দেয় ,,,ভাইয়া আপনার নাম্বার বন্ধকেন আমরা অনেক চেষ্টা করেছি কন্টাক করার জন্য!!
অরন্য : ভাইরে দুঃখের কথা আর বলিসনা আমার সব কিছু airport a© চুরি হয়ে গেছে কারো নাম্বার মুখস্থ ছিলনা যে কল দিব !!নতুন ফোন নিলাম দেশে এসে সীম পুরনো কিন্ত নতুন তুলছি তাই কারো নাম্বারও নাই ,তাছাড়া পরীর নাম্বার অফ।
রাফি: পরীর বীয়ে হয়ে গেছে দুই মাস ধরে তুমিতো জানোনা তাহলে ,,,ও অনেক কান্নাকরছে বীয়ের দিন মামা জোর করে বীয়ে দিয়েছে।
অরন্য : শুনার পর কি বলবে বুঝতে পারছেনা ফোনটা কেটে দিয়ে ভেঙ্গে ফেলল যার জন্য ফোন কিনা সেই নাই ,,,সেই কান্না সারারাত ,,,ঘুম হলো না
পরী : কিছুদিন ধরে বুঝতে শুরু করেছে যার জন্য অপেক্ষা করছি সে আসবে না আর দেশে এসেও হয়তো হতো ভাবছে আমি ওকে ভুলে গেছি। তাই আমার খোজ নিচ্ছে না । কিন্তু আর কতো আমাকে শেষ সিদ্ধান্তে তাহলে যেতেই হয় !
পরী : চিরকুট লিখছে """"
"জানিনা লেখাগুলো কার হাতে প্রথমে পরবে সে জেনো আমার শ্রদ্ধেয় পিতার কাছে পৌছে দেয় .........বাবা আমিতো তোমার সন্তান ছিলাম আমাকে কেন পাষাণের মতো জীবন্ত মেরেফেললে ,,কাউকে ভালোবাসা কি খুবই পাপ যা মেনে নিতে পারলে না,,আমাকে রাজরাণী দেখতে চাও বাবা তাই নেশাগ্রস্ত ছেলের কাছে তুলে দিলে বাবার টাকা দেখে বুঝলেনা সংসার করতে টাকা না দুটি মনের মিলন হতে হয় ,,,,আমি আজো পারিনি আমার মনে অন্য কারো বসাতে আর পারবও না,,,,আমার মৃত্যুর পর আমার শ্বশুর বাড়ির কারো সাথে জামেলা কর না ওনারা অযষ্ট ভালো মানুষ না হলেও তোমার থেকে ভালো পাষন্ড নয় ,,,,,,,পৃথিবীতে বাঁচতে দিলেনা ,,,,অরন্যেকে কথা দিয়েছিলাম যদি ওরে না পাই পৃথিবীতে থাকবো না ,,তাই শুধু বলছি ক্ষমা করে দিও অরন্যকে ও আমাকে ভালোবাসছিল শত্রুছিলনা আমার রাতের আধাঁরের আলোছিল সেই আলো নিভে গেলো বেঁচে থেকে কি করব ,,,,,আমি চলে যাচ্ছি সবার থেকে বহু দূরে ,পার যদি ক্ষমা করে দিও,,,
ইতি,
তোমার কলঙ্কনী মেয়ে
অরন্য : আজকেন যেনো খুব বেশি মনে পড়ছে পরীকে কিন্তু ফোনটা আর হাতে নিল না ,,,মনে মনে ভাবতে লাগলো ফোন নিলেই পরীকে কল দিতে মন চাইবে ,,,আমি চাইনা আমার জন্য সংসার জীবনে সমস্যা আসুক ভাবতে ভাবতে ,দুই চোখে কয় ফোটা পানি মুছে ড্রাগস নিতে শুরু করলো।
ভোর হতেই আজ পরী উঠছেনা রাতে ছেলেটাও বাসায় আসেনি ভাবতে ভাবতে শ্বাশরী দরজা যেই ধাক্বা দিয়ে খুলল দেখে পরীর দেহ ওরনা দিয়ে ফেনের সাথে ঝুলছে চিৎকার দিয়ে বসে পরল ,,ওমা কি হলো গো ?কে কোথায় আছো? একি সর্বনাশ হলো গো?
শ্বশুর : ঘুমথেকে উঠে এসে দেখে হতবাক কি দেখছে এসব ,,,,,,সাথে সাথে পরীর বাবাকে ফোন দিল !!!
পরীর বাবা : এসে চিরকুটটি পরল আর কাঁদতে কাঁদতে বলল কি করলাম মা ,,,আমি তোর মৃত্যুর জন্য দায়ী ,,,,মা রে আমি তোর জীবনের কালসাপ হয়ে রইলাম বাবা হয়ে ,,,,
চিরকুটটা আর কারো দেখার সৌভাগ্য হয়নি মেয়ের কথা মতো কারো কিছু বলেনি !!!!!!
পরীরদেহ দাফন করে পিতা শান্ত হলো ভালোবাসার সাথে যুদ্ধ করে !!
এক মাস পর
অরন্য : ফোনটা চালু করে ,,,,কাজ আর কাজ প্রোগাম করে সময় চলছে আরকি দিনশেষে রাতে কষ্টগুলো জেগে উঠে!!!
রাফি: হঠাথ এক দিন ফোন খোলা পায় বলে ভাইয়া তোমার কি হয় ফোন অফ করে রাখছ কেন !
অরন্য : পরীদের কোন খবর জানিস?
রাফি ; তোমার ফোনে অনেক ট্রাই করেছি কিন্তু রিস্পন্স পাই নি। শেষ পর্যন্ত পেলাম কিন্তু সব শেষ হওয়ার পর ।
অরন্য ; কেন যা হওয়ার তো আগেই হয়েছে আবার নতুন করে কি হলো ? আর যার জন্য ফোনটা নিয়েছিলাম সেই অন্যকারো তাই বন্ধ করে ফেলছিলাম,,এখন নিজের কিছু প্রয়োজনে ব্যবহার করছি|
রাফি: তুমি জানোনা পরী আত্মহত্যা করেছে এক মাস আগে ফোনটা ওপেন থাকলে আমি তোমাকে বলতে পারতাম !
অরন্য : কি বলিস এসব কেন কেমন করে......
রাফি : সব বলল সংক্ষিপ্ত করে !
অরন্য : চিৎকার করছে আর বলছে আমার পরীরতো সেদিনওই মৃত্যু হয়েছে যেদিন জোর করে বিয়ে দিয়েছে মনকে সান্তনা দিয়ে রাখছিলাম আজ আবার দ্বিতীয়বার এ কি নির্মম মৃত্যু হলো পরীর ,,বলে কান্না করছে তো করছে!
এর কিছুদিন পর মার্কেটে ঘোরাঘুরি করার সময় অর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু মহিব এর সাথে দেখা হয়। দেখতে অনেকটা পাগলের মত লাগছিল বেচারা কোলে একটা দুধের বাচ্চা নিয়ে মানুষের কাছে সাহায্য করছিল। অর কথা শুনে জানলাম অর স্ত্রীর দুটো কিডনিই নষ্ট। অন্তত একটি কিডনি প্রতিস্থাপন না করতে পারলে তাকে আর বাঁচানো যাবে না।
সেখান থেকে আর দেরী নয় সোজা চলে গেলাম হাসপাতালে।।
অরন্য : হাটছে হাটছে সাগরের জলঘেসে আর পরন্ত সূর্য ডোবা দেখছে ........হে সূর্য আমার জীবনথেকে সব আলো নিয়ে গেলে এখন শুধু মৃত্যুর প্রহর ঘুনছি,,,,পরী অপেক্ষা কর আর বেশীদিন দূরে নাই আমিও তোমার কাছে চলে আসবো ,,,তুমি নাই তাই বাঁচার কোন প্রেরণা নাই ,,,,,আমি ইচ্ছেকরে কিডনিটা দান করেছি যেই একটা ছিল প্রতিরাতে তোমায় হারানোর ব্যথায় অশ্রুসিক্ত হয়ে দূষিত হয়ে গেছে ,, আমার মৃত্যুর পর তুমি আমার হবে সেই বিশ্বাসে দিনগুনছি,তোমার মতো পারছিনা নির্মম সাহসীকতার পরিচয় দিয়ে নিজের ভালোবাসা পবিত্র রাখতে,,,,চলতে চলতে মিশে গেল সূর্য ডোবার অন্ধকারে কোন এক অনন্ত কালের আধাঁরে !!এভাবে ঘটে গেল
দুটি জীবনের ভালবাসার ইতি
অরন্য পরীর ইতিকথা
লেখকঃ অরন্য রানা
সংক্ষেপ গল্প সুত্র
গল্পগ্রন্থঃ দূরে গেলেই ভুলে যায় মানুষ
গ্রন্থাকারঃ এম এম মিঠু
প্রকাশকালঃঅমর একুশে বই মেলা ২০১৮
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সোহরাব রিপন ১৪/১০/২০১৮nice
-
ন্যান্সি দেওয়ান ৩০/০৯/২০১৮Sweet End just carry on.