‘গালি বিষয়ক কথকতা’
আমার এক বড় ভাই কোরানের হাফেজ । ছোটবেলায় উনি আমার গুরু ছিলেন । আম চুরি জাম চুরির গুরু । তার মাথায় হেভি হেভি সব দুষ্টু আইডিয়া আসতো । দুষ্টুমির কারনে আমার কাকা তাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করে দিয়েছিলেন এবং তার অসাধারণ দুষ্টু বুদ্ধির জন্যই আমি তাকে খুব পছন্দ করতাম । হাফেজ হওয়া সত্ত্বেও এখনও কিছু কিছু দুষ্টুমি তার মাথায় ভর করে । তবে সেগুলো সবই নিরীহ টাইপের এবং পরিচিত গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ থাকে । সেই ভাইয়ের কাছেই শব্দটার অর্থ শিখেছিলাম । শব্দ এবং তার অর্থ বলার আগে শানেনুজুলটা বলে নেই ।
যতদূর মনে পরে রোজার ঈদের পরের দিনের ঘটনা । রাস্তা দিয়ে হাটার জন্য দুই ভাই বের হয়েছি । হাঁটতে হাঁটতে পাশের গ্রামে চলে গিয়েছিলাম । গ্রামের নাম পুরান বেড়া । তবে গ্রামের বেশির ভাগ লোকই বেশ অবস্থাসমপন্ন । হঠাত ঝগড়ার আওয়াজ । গ্রামের ঝগড়া, বুঝতেই পারছেন কি অবস্থা । ঝগড়াতে মাঝে মাঝে এমন সব গালি ব্যবহার করা হচ্ছিল যে কানও শুনতে লজ্জা পাচ্ছিল । সেই ঝগড়ায় অনেকগুল গালির একটি ছিল চুতমারানি । আমাদের ওই দিককার মানে সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের খুবই জনপ্রিয় একটি গালি । এর অর্থ আমি জানি না । যারা গালিটা দেয় তারাও জানে কি না সন্দেহ । যাই হোক আসল কথায় ফিরি । গালিটা কানে আসতেই আমার হুজুর ভাই বললেন ‘তরুণ তুই কি জানিস চুতমারানি ফার্সি শব্দ’ । আমি বললাম ‘না ভাই আমি কোন ফার্সি শব্দই জানি না । চুতমারানি যদি আসলেই ফার্সি শব্দ হয় তাহলে এটাই প্রথম এবং একমাত্র শেখা ফার্সি শব্দ’ । ভাই একটু সিরিয়াস হয়ে বললেন আমি ইয়ার্কি মারতেছিনা । এটা আসলেই ফার্সি শব্দ এবং এর অর্থ খুব সুন্দর । টাসকি খেয়ে গেলাম ।
এবার আপনি একটা দৃশ্য কল্পনা করেন । ধরেন রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন । হঠাত আপনার সামনে একজন সুন্দর স্মার্ট যুবতী পড়ল । আপনার মনে খায়েশ জাগল ফার্সি বয়ানে তার রূপের প্রশংসা করবেন । ফার্সি চুতমারানিতে প্রভাবিত হয়ে আপনি তাকে বললেন ‘আপু আপনি চুতমারানি বা আপনাকে চুতমারানি লাগছে’, তাহলে কি অবস্থা হবে, কল্পনা করতে পেরেছেন? ফার্সিতে বুঝতে গেলে আপনি তার রূপের প্রশংসা করছেন । আর বাংলাতে ভয়ানক গালি । কথাটা বলতে না যতোটুকু সময় লাগবে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বেগে মেয়েটির পায়ের জুতা হাতে উঠে সেখান থেকে আপনার গালে পতিত হবার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে । অথবা অফিসে আপনার বস কে একটু হাওয়া দিতে গিয়ে বললেন ‘স্যার আপনাকে চুতমারানি লাগছে’ মানে সুন্দর লাগছে । ব্যাস, হয়ে গেলো । দিতে যাবেন হাওয়া খেয়ে আসবেন ব্যাম্ব । আপনার ক্যারিয়ার পুরো বাঁশঝাড় । তার মাথার উপরে চাঁদের বদলে সর্ষে ফুল দুলবে । সুতরাং সাবধান ।
এবার ফাজিল শব্দটায় আসেন । মাদ্রাসায় যারা লেখাপড়া করেন ফাজিল শব্দটা তাদের কাছে লোভনীয় একটা ব্যাপার । মাদ্রাসায় যারা লেখাপড়া করেন তারা সবাই ফাজিল হতে চান । মাদ্রাসায় ফাজিল পাস মানে অনার্স পাস করা । ফাজিল আরবি শব্দ যার অর্থ উত্তম । তাহলে ফাজিল হওয়া মানে উত্তম হওয়া । এবার অন্য ফাজিল এ আসি । রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন । হাঁটতে হাঁটতে মুরুব্বি টাইপের কারও লুঙ্গি ধরে টান দিলেন । বেচারা লুঙ্গি সমলাতে গিয়ে আপনাকে ধরতে পারল না ঠিক কিন্তু আপনাকে উদ্দেশ্য করে বলল ফাজিল । কিংবা সোনার বাংলা গাইতে গাইতে ‘আমার সোনার বাংলা…..’ অংশটুকু নিচু গলায় গেয়ে কোন মেয়ের দিকে তাকিয়ে ‘আমি তোমায় ভালবাসি...’ অংশটুকু উচু গলায় তাকে উদ্দেশ্য করে ছুঁড়ে দিলেন । মেয়েটিও আপনার দিকে তাকিয়ে ফাজিল শব্দটা ছুঁড়ে দিল । যার অর্থ আদরের ক্ষেত্রে দুষ্টু আর বাঁদরের ক্ষেত্রে বদমাশ গোছের কিছু একটা । আপনই জানেন আপনি তার কাছে দুষ্টু না বদমাশ তবে অর্থের ভিন্নতা এবং প্রয়োগ নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন । অর্থাৎ মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে ফাজিল হলে আপনি উত্তম আর রাস্তায় কোন মেয়ে দ্বারা ফাজিল পদবী লাভ করলে আপনি দুষ্টু অথবা অধম । তবে ফাজিল শব্দটা যেখানে যেভাবেই ব্যবহৃত হোক না কেন ভুলেও মানপত্র, অভিনন্দন পত্র কিংবা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় ব্যবহার করবেন না কিন্তু । কারন এসব ক্ষেত্রে হে মহান, হে দার্শনিক, হে অমুক, হে তমুক ইত্যাদি বলা বা লেখা হয় । আপনি কোথাও লিখে বা বলে দিলেন হে ফাজিল, হে অমুক, হে তমুক, শুনবে কিন্তু ঐ হে ফাজিলটুকু । নিরীহ কেউ হলে বেঁচে যাবেন । ক্ষমতাধর দাদা টাইপের কেউ হলে কিন্তু রক্ষা নেই । সেক্ষেত্রে পেছনে বাঁশ, বগলে ইতিহাস আর হাতে হ্যারিকেন ।
আমরা যারা ইংলিশ মারপিটের মুভি দেখি তাদের কাছে ‘কাউবয়’ শব্দটা খুব পরিচিত । সাধারানত বন্দুক চালানোয় পারদর্শী ব্যক্তিকে আগের দিনে কাউবয় বলা হতো এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা হ্যাট পরত । কাউবয় নিয়ে আমার নিজের একটা ঘটনা বলি । চাকরি পাওয়ার পরের ঘটনা । আমার অফিসের একজন সিনিয়র পারসন শখ করে হ্যাট পরে এসেছেন । সবাই তার খুব প্রশংসা করছে এবং তার হাসি দেখে বোঝা যাচ্ছিল প্রশংসা শুনে উনি খুব খুশি । আমি তার খুশিকে আরেকটু বেশি উসকে দিতে বললাম স্যার, আপনাকে কাউবয় কাউবয় লাগছে । আমার প্রশংসা বাক্য শোনার সাথে সাথে স্যরের হাসিমাখা মুখটা নিম পাতার রস খেলে মানুষের মুখ যেমন হয় তেমন হয়ে গেলো । বুঝলাম কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে । উনি তখন কিছু বললেন না । লাঞ্চের পর একটু আড়ালে ডেকে নিয়ে বললেন আচ্ছা হ্যাট পরে কি আমাকে গরুর রাখালের মত লাগছিল । বললাম না তো স্যার । স্যার বললেন তবে যে সকালে বললে আমাকে কাউবয় কাউবয় লাগছে । ল্যাও ঠ্যলা সামলাও । অবশ্য সে যাত্রায় জোড়াতালি দিয়ে রক্ষা পেয়েছিলেম । কাউবয় গালি না হলেও ইংলিশ মুভির কল্যানে অনেক গালিই বাঙালি যুবসমাজ রপ্ত করেছে । তার মধ্যে শিট, হলি শিট, বুলশিট, হলি কাউ (মানে জানি না গালিও হতে পারে নাও পারে) এর পাশাপাশি আরও কিছু আছে যেগুলো না লেখাই শ্রেয় । হুমায়ূন আহমেদের লেখা পড়ে জেনেছি শিট মানে পায়খানা শ্রেণীর কিছু একটা । তাহলে বুলশিট মানে ষাঁড়ের পায়খানা আর হলিশিট মানে পবিত্র পায়খানা ।
এইরকম বাংলা, ইংরেজি, উর্দু , ফার্সি, আরবি, হিন্দি, বোধগম্য, অবোধ্য, দুর্বোধ্য বহুত কিসিমের গালি দিয়ে বাঙালির স্টক টইটুম্বুর । আমরা এতটাই গালি প্রিয় জাতি যে, দৈনন্দিন কথাবার্তায়, চলাফেরায়, বন্ধুদের আড্ডায়, ঝগড়ায়, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এমনকি আদর করে ডাকার ক্ষেত্রেও অনেক সময় গালি ব্যবহার করি । গালি আমাদের জীবনের এতটাই অপরিহার্য অংশ যে, আমাদের সংসদ ভবনেও মাঝে মাঝে গালাগালির প্র্যাকটিস চলে এবং এর কল্যাণেই চুদুরবুদুর, চোদনা ইত্যাদি আদি জনপ্রিয় শব্দ নতুন করে জনপ্রিয়তা পেয়েছে । শেষ করছি তবে শেষ করার আগে, বাঙালিকে গালাগালি পরিহার করতে বলছি না । কারন সেটা অসম্ভব একটা ব্যাপার । শুধু এটুকু বলতে চাই, স্থান, কাল, পাত্রভেদে গালির ব্যবহারটা ভেবে দেখা বাঞ্ছনীয় ।
জয় তু বাংলা গালি।
যতদূর মনে পরে রোজার ঈদের পরের দিনের ঘটনা । রাস্তা দিয়ে হাটার জন্য দুই ভাই বের হয়েছি । হাঁটতে হাঁটতে পাশের গ্রামে চলে গিয়েছিলাম । গ্রামের নাম পুরান বেড়া । তবে গ্রামের বেশির ভাগ লোকই বেশ অবস্থাসমপন্ন । হঠাত ঝগড়ার আওয়াজ । গ্রামের ঝগড়া, বুঝতেই পারছেন কি অবস্থা । ঝগড়াতে মাঝে মাঝে এমন সব গালি ব্যবহার করা হচ্ছিল যে কানও শুনতে লজ্জা পাচ্ছিল । সেই ঝগড়ায় অনেকগুল গালির একটি ছিল চুতমারানি । আমাদের ওই দিককার মানে সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের খুবই জনপ্রিয় একটি গালি । এর অর্থ আমি জানি না । যারা গালিটা দেয় তারাও জানে কি না সন্দেহ । যাই হোক আসল কথায় ফিরি । গালিটা কানে আসতেই আমার হুজুর ভাই বললেন ‘তরুণ তুই কি জানিস চুতমারানি ফার্সি শব্দ’ । আমি বললাম ‘না ভাই আমি কোন ফার্সি শব্দই জানি না । চুতমারানি যদি আসলেই ফার্সি শব্দ হয় তাহলে এটাই প্রথম এবং একমাত্র শেখা ফার্সি শব্দ’ । ভাই একটু সিরিয়াস হয়ে বললেন আমি ইয়ার্কি মারতেছিনা । এটা আসলেই ফার্সি শব্দ এবং এর অর্থ খুব সুন্দর । টাসকি খেয়ে গেলাম ।
এবার আপনি একটা দৃশ্য কল্পনা করেন । ধরেন রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন । হঠাত আপনার সামনে একজন সুন্দর স্মার্ট যুবতী পড়ল । আপনার মনে খায়েশ জাগল ফার্সি বয়ানে তার রূপের প্রশংসা করবেন । ফার্সি চুতমারানিতে প্রভাবিত হয়ে আপনি তাকে বললেন ‘আপু আপনি চুতমারানি বা আপনাকে চুতমারানি লাগছে’, তাহলে কি অবস্থা হবে, কল্পনা করতে পেরেছেন? ফার্সিতে বুঝতে গেলে আপনি তার রূপের প্রশংসা করছেন । আর বাংলাতে ভয়ানক গালি । কথাটা বলতে না যতোটুকু সময় লাগবে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বেগে মেয়েটির পায়ের জুতা হাতে উঠে সেখান থেকে আপনার গালে পতিত হবার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে । অথবা অফিসে আপনার বস কে একটু হাওয়া দিতে গিয়ে বললেন ‘স্যার আপনাকে চুতমারানি লাগছে’ মানে সুন্দর লাগছে । ব্যাস, হয়ে গেলো । দিতে যাবেন হাওয়া খেয়ে আসবেন ব্যাম্ব । আপনার ক্যারিয়ার পুরো বাঁশঝাড় । তার মাথার উপরে চাঁদের বদলে সর্ষে ফুল দুলবে । সুতরাং সাবধান ।
এবার ফাজিল শব্দটায় আসেন । মাদ্রাসায় যারা লেখাপড়া করেন ফাজিল শব্দটা তাদের কাছে লোভনীয় একটা ব্যাপার । মাদ্রাসায় যারা লেখাপড়া করেন তারা সবাই ফাজিল হতে চান । মাদ্রাসায় ফাজিল পাস মানে অনার্স পাস করা । ফাজিল আরবি শব্দ যার অর্থ উত্তম । তাহলে ফাজিল হওয়া মানে উত্তম হওয়া । এবার অন্য ফাজিল এ আসি । রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন । হাঁটতে হাঁটতে মুরুব্বি টাইপের কারও লুঙ্গি ধরে টান দিলেন । বেচারা লুঙ্গি সমলাতে গিয়ে আপনাকে ধরতে পারল না ঠিক কিন্তু আপনাকে উদ্দেশ্য করে বলল ফাজিল । কিংবা সোনার বাংলা গাইতে গাইতে ‘আমার সোনার বাংলা…..’ অংশটুকু নিচু গলায় গেয়ে কোন মেয়ের দিকে তাকিয়ে ‘আমি তোমায় ভালবাসি...’ অংশটুকু উচু গলায় তাকে উদ্দেশ্য করে ছুঁড়ে দিলেন । মেয়েটিও আপনার দিকে তাকিয়ে ফাজিল শব্দটা ছুঁড়ে দিল । যার অর্থ আদরের ক্ষেত্রে দুষ্টু আর বাঁদরের ক্ষেত্রে বদমাশ গোছের কিছু একটা । আপনই জানেন আপনি তার কাছে দুষ্টু না বদমাশ তবে অর্থের ভিন্নতা এবং প্রয়োগ নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন । অর্থাৎ মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে ফাজিল হলে আপনি উত্তম আর রাস্তায় কোন মেয়ে দ্বারা ফাজিল পদবী লাভ করলে আপনি দুষ্টু অথবা অধম । তবে ফাজিল শব্দটা যেখানে যেভাবেই ব্যবহৃত হোক না কেন ভুলেও মানপত্র, অভিনন্দন পত্র কিংবা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় ব্যবহার করবেন না কিন্তু । কারন এসব ক্ষেত্রে হে মহান, হে দার্শনিক, হে অমুক, হে তমুক ইত্যাদি বলা বা লেখা হয় । আপনি কোথাও লিখে বা বলে দিলেন হে ফাজিল, হে অমুক, হে তমুক, শুনবে কিন্তু ঐ হে ফাজিলটুকু । নিরীহ কেউ হলে বেঁচে যাবেন । ক্ষমতাধর দাদা টাইপের কেউ হলে কিন্তু রক্ষা নেই । সেক্ষেত্রে পেছনে বাঁশ, বগলে ইতিহাস আর হাতে হ্যারিকেন ।
আমরা যারা ইংলিশ মারপিটের মুভি দেখি তাদের কাছে ‘কাউবয়’ শব্দটা খুব পরিচিত । সাধারানত বন্দুক চালানোয় পারদর্শী ব্যক্তিকে আগের দিনে কাউবয় বলা হতো এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা হ্যাট পরত । কাউবয় নিয়ে আমার নিজের একটা ঘটনা বলি । চাকরি পাওয়ার পরের ঘটনা । আমার অফিসের একজন সিনিয়র পারসন শখ করে হ্যাট পরে এসেছেন । সবাই তার খুব প্রশংসা করছে এবং তার হাসি দেখে বোঝা যাচ্ছিল প্রশংসা শুনে উনি খুব খুশি । আমি তার খুশিকে আরেকটু বেশি উসকে দিতে বললাম স্যার, আপনাকে কাউবয় কাউবয় লাগছে । আমার প্রশংসা বাক্য শোনার সাথে সাথে স্যরের হাসিমাখা মুখটা নিম পাতার রস খেলে মানুষের মুখ যেমন হয় তেমন হয়ে গেলো । বুঝলাম কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে । উনি তখন কিছু বললেন না । লাঞ্চের পর একটু আড়ালে ডেকে নিয়ে বললেন আচ্ছা হ্যাট পরে কি আমাকে গরুর রাখালের মত লাগছিল । বললাম না তো স্যার । স্যার বললেন তবে যে সকালে বললে আমাকে কাউবয় কাউবয় লাগছে । ল্যাও ঠ্যলা সামলাও । অবশ্য সে যাত্রায় জোড়াতালি দিয়ে রক্ষা পেয়েছিলেম । কাউবয় গালি না হলেও ইংলিশ মুভির কল্যানে অনেক গালিই বাঙালি যুবসমাজ রপ্ত করেছে । তার মধ্যে শিট, হলি শিট, বুলশিট, হলি কাউ (মানে জানি না গালিও হতে পারে নাও পারে) এর পাশাপাশি আরও কিছু আছে যেগুলো না লেখাই শ্রেয় । হুমায়ূন আহমেদের লেখা পড়ে জেনেছি শিট মানে পায়খানা শ্রেণীর কিছু একটা । তাহলে বুলশিট মানে ষাঁড়ের পায়খানা আর হলিশিট মানে পবিত্র পায়খানা ।
এইরকম বাংলা, ইংরেজি, উর্দু , ফার্সি, আরবি, হিন্দি, বোধগম্য, অবোধ্য, দুর্বোধ্য বহুত কিসিমের গালি দিয়ে বাঙালির স্টক টইটুম্বুর । আমরা এতটাই গালি প্রিয় জাতি যে, দৈনন্দিন কথাবার্তায়, চলাফেরায়, বন্ধুদের আড্ডায়, ঝগড়ায়, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এমনকি আদর করে ডাকার ক্ষেত্রেও অনেক সময় গালি ব্যবহার করি । গালি আমাদের জীবনের এতটাই অপরিহার্য অংশ যে, আমাদের সংসদ ভবনেও মাঝে মাঝে গালাগালির প্র্যাকটিস চলে এবং এর কল্যাণেই চুদুরবুদুর, চোদনা ইত্যাদি আদি জনপ্রিয় শব্দ নতুন করে জনপ্রিয়তা পেয়েছে । শেষ করছি তবে শেষ করার আগে, বাঙালিকে গালাগালি পরিহার করতে বলছি না । কারন সেটা অসম্ভব একটা ব্যাপার । শুধু এটুকু বলতে চাই, স্থান, কাল, পাত্রভেদে গালির ব্যবহারটা ভেবে দেখা বাঞ্ছনীয় ।
জয় তু বাংলা গালি।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
প্রিয় ২৭/০৯/২০১৭খুব সুন্দর
-
দূরবীণ ০৪/০৪/২০১৫খুব ভালো
-
সাইদুর রহমান ০৪/০৪/২০১৫মুগ্ধ হলেম।
শুভ কামনা। -
তুষার রায় ০২/০৪/২০১৫গালিও সুন্দর তাহলে, স্থান-কাল-পাত্র ভেদে
-
কপিল দেব ০২/০৪/২০১৫ভাল লেখা